বড়াইগ্রাম পৌর নির্বাচনে যে কারণে বিএনপি’র ভরাডুবি

নাটোরের বড়াইগ্রাম পৌর নির্বাচন রোববার সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশে সম্পন্ন হয়েছে। এ নির্বাচনে মেয়র পদে বিপুল ভোটের ব্যবধানে বিজয়ী হয়েছেন নৌকা প্রতীক নিয়ে আওয়ামীলীগের প্রার্থী আলহাজ¦ মাজেদুল বারী নয়ন। তিনি পেয়েছেন ১০০২৪ ভোট এবং তার প্রতিদ্বন্দি ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে বিএনপি প্রার্থী পেয়েছেন ১৩৪৩ ভোট। নির্বাচনে আওয়ামীলীগের এমন সাফল্য ও বিএনপি’র ভরাডুবির পেছনে রয়েছে অনেকগুলো কারণ। বিশ্লেষকদের মতে, বড়াইগ্রাম পৌর নির্বাচনে মনোনয়নের জন্য আবেদন করেছিলো আওয়ামীলীগের ৪ নেতা। এদের মধ্যে তরুণ নেতা ও জেলা আ’লীগের সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধার সন্তান মাজেদুল বারী নয়ন মনোনয়ন পেলেও মন খারাপ করে পিছুটান দেননি মনোনয়ন বঞ্চিত তিন নেতা যথাক্রমে বর্তমান মেয়র ও পৌর আ’লীগের সদস্য আব্দুল বারেক সরদার, পৌর আ’লীগের সাধারণ সম্পাদক অধ্যক্ষ মাহাবুবুল হক বাচ্চু এবং উপজেলা যুবলীগের যুগ্ম আহবায়ক ও জেলা পরিষদ সদস্য আবুল কালাম জোয়ার্দার। তারা সকলেই দলের সিদ্ধান্ত মেনে সার্বক্ষণিক মাঠে নৌকার পক্ষে প্রচারণা চালিয়েছেন। নির্বাচনী প্রচারণা গতিশীল ও দলীয় ভূমিকা অর্থবহ রাখতে সবচাইতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন একই উপজেলার বনপাড়া পৌরসভার মেয়র ও বনপাড়া পৌর আ’লীগের সভাপতি কেএম জাকির হোসেন। তিনি এই নির্বাচনের পরিচালনা কমিটির প্রধান সমম্বয়ক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তার নেতৃত্বে উপজেলা আ’লীগ ও এর অঙ্গ সংগঠনের সকল স্তরের নেতা-কর্মীরা একতাবদ্ধ থেকে প্রচার-প্রচারণায় অংশ নেয়। যার ফলে নির্বাচনী পুরো মাঠ চলে যায় নৌকা প্রতীকের দখলে। অপরদিকে বিএনপি প্রার্থী ইসাহাক আলী নির্বাচনে অংশ নিলেও তিনি তার দলের নেতা কর্মীদের সাথে কোন সমম্বয় রাখেননি বলে জানান স্থানীয় বিএনপি’র একাধিক নেতা। তাদের অভিযোগ, একজন মেয়র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে যে অর্থ বরাদ্দ বা ব্যয় করার কথা ছিলো তার ৫ শতাংশ অর্থ প্রার্থী ব্যয় করেননি। যার ফলে নির্বাচনী এলাকায় ধানের শীষ প্রতীকের পোস্টার তেমন একটা চোখে পড়েনি। প্রচারণার জন্য কর্মী বাহিনী তৈরী হয়নি। এমনকি নির্বাচনের দিনে অধিকাংশ কেন্দ্রগুলোতে পোলিং এজেন্ট নিয়োগ করতে সক্ষম হননি। নির্বাচনে মাঠ প্রস্তুত করতে না পারায় এবং পরাজয় নিশ্চিত জেনে বিএনপি প্রার্থী ইসাহাক আলী নির্বাচন শেষ হওয়ার দুই ঘন্টা আগে তার অনুসারী কয়েকজন সংবাদকর্মী ডেকে ভোট বর্জনের ঘোষণা দেন। নির্বাচন প্রচারণার শুরুর দিন থেকে ১৪ ফেব্রæয়ারী ভোট গ্রহণ চলাকাল পর্যন্ত বিএনপি’র জন্য কোন প্রকার প্রতিকুল পরিবেশ বা প্রতিবন্ধকতার ঘটনা না থাকলেও কেন এই ভোট বর্জন তা জানতে চাইলে প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক্স সংবাদ কর্মীরা প্রার্থী ইসাহাক আলীর সাক্ষাত লাভের চেষ্টাসহ মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করলেও তিনি সাক্ষাত দেননি ও কারো ফোন রিসিভ করেননি।
ভোট বর্জন ঘোষণার পর নৌকার সমম্বয়ক কেএম জাকির হোসেন সংবাদ সম্মেলন করে সাংবাদিকদের জানান, বিএনপি প্রার্থীর এ ভোট বর্জন পূর্ব পরিকল্পিত ও উদ্দেশ্যপ্রণেদিত।
পৌরসভার ৯টি ওয়ার্ডে মোট ভোটার ১৪৬০৬ জন। এর মধ্যে ভোট পড়েছে ১১৪০৯ (৭৮ শতাংশ)। নির্বাচনে ৬ জন সংরক্ষিত মহিলা ও ৩৮জন সাধারন কাউন্সিলর প্রার্থী ভোট যুদ্ধে অংশ নেয়।

অমর ডি কস্তা
নাটোর প্রতিনিধি

Leave A Reply

Your email address will not be published.

Title