ভারত-পাকিস্তান সংঘাতের প্রভাব দেশের পুঁজিবাজারে

অনলা্ইন ডেস্ক: দেশের পুঁজিবাজারে এমনিতেই দীর্ঘমেয়াদি মন্দা বিরাজ করছে। এর মধ্যে গতকাল ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে পাল্টাপাল্টি হামলার খবরে পুঁজিবাজারে বড় ধরনের ধস নেমেছে। এদিন ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) সার্বিক সূচক ডিএসইএক্স ৩ শতাংশ কমেছে। দেশের আরেক পুঁজিবাজার চিটাগং স্টক এক্সচেঞ্জেও বড় দরপতন হয়েছে।

বাজার পর্যলোচনায় দেখা যায়, গতকাল সকাল ১০টায় লেনদেন শুরুর পর থেকেই আতঙ্কিত বিনিয়োগকারীরা শেয়ার বিক্রি করতে থাকেন। এর প্রভাবে দিনভর পয়েন্ট হারায় সূচক। গতকাল দিন শেষে ডিএসইএক্স সূচক ৩ শতাংশ কমে ৪ হাজার ৮০২ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। নির্বাচিত কোম্পানির সূচক ডিএস-৩০ দিনের ব্যবধানে ২ শতাংশের বেশি কমে ১ হাজার ৪৮ পয়েন্টে অবস্থান করছে। শরিয়াহ সূচক ডিএসইএস গতকাল প্রায় ৪ শতাংশ কমে ১ হাজার ১৯৩ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। গতকাল সূচকের পতনে সবচেয়ে বেশি ভূমিকা রেখেছে ইসলামী ব্যাংক, ওয়ালটন হাই-টেক ইন্ডাস্ট্রিজ, আল-আরাফাহ ইসলামী ব্যাংক, ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকো বাংলাদেশ কোম্পানি (বিএটিবিসি) ও বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালসের শেয়ার।

ডিএসইতে গতকাল ৫১৬ কোটি টাকার সিকিউরিটিজ লেনদেন হয়েছে। এর আগের কার্যদিবসে যা ছিল ৫৫০ কোটি টাকা। এদিন লেনদেন হওয়া ৩৯৯টি কোম্পানি, মিউচুয়াল ফান্ড ও করপোরেট বন্ডের মধ্যে দিন শেষে দর বেড়েছে নয়টির, কমেছে ৩৮৫টির আর অপরিবর্তিত ছিল পাঁচটির বাজারদর।

ডিএসই ব্রোকার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ডিবিএ) প্রেসিডেন্ট সাইফুল ইসলাম বণিক বার্তাকে বলেন, ‘ভারত-পাকিস্তান সংঘাতের কারণে ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীরা আতঙ্কিত হয়ে শেয়ার বিক্রি করেছেন। পাশাপাশি প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের মধ্যেও আতঙ্ক দেখা গেছে। প্রকৃতপক্ষে এ ধরনের আতঙ্কের পেছনে কোনো ভিত্তি নেই। আশা করছি, আজ থেকে পুঁজিবাজার স্বাভাবিক আচরণ করবে।’

খাতভিত্তিক লেনদেনচিত্রে দেখা যায়, গতকাল ডিএসইর মোট লেনদেনের ২২ দশমিক ৯ শতাংশ দখলে নিয়ে শীর্ষে অবস্থান করছে ব্যাংক খাত। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ১২ দশমিক ৬ শতাংশ দখলে নিয়েছে খাদ্য ও আনুষঙ্গিক খাত। ১১ দশমিক ২ শতাংশ লেনদেনের ভিত্তিতে তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে জ্বালানি ও বিদ্যুৎ খাত। ওষুধ ও রসায়ন খাত ১০ শতাংশ লেনদেনের ভিত্তিতে চতুর্থ অবস্থানে ছিল। পঞ্চম অবস্থানে থাকা বস্ত্র খাতের দখলে ছিল লেনদেনের ৬ দশমিক ৮ শতাংশ।

গতকাল ডিএসইতে সব খাতের শেয়ারেই নেতিবাচক রিটার্ন এসেছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ৭ দশমিক ৭ শতাংশ নেতিবাচক রিটার্ন এসেছে কাগজ ও মুদ্রণ খাতে। এছাড়া পাট খাতে ৬ দশমিক ৬ শতাংশ, সিরামিক খাতে ৬ দশমিক ৩ শতাংশ, মিউচুয়াল ফান্ড খাতে ৬ দশমিক ১ শতাংশ এবং তথ্যপ্রযুক্তি খাতে ৬ শতাংশ নেতিবাচক রিটার্ন এসেছে।

সিএসইর নির্বাচিত সূচক সিএসসিএক্স গতকাল প্রায় ২ শতাংশ কমে ৮ হাজার ৩০৬ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। সিএসইর সব শেয়ারের সূচক সিএএসপিআই গতকাল ২ শতাংশ কমে ১৩ হাজার ৫৯০ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। এদিন এক্সচেঞ্জটিতে লেনদেন হওয়া ২১৭টি কোম্পানি ও মিউচুয়াল ফান্ডের মধ্যে দর বেড়েছে ২০টির, কমেছে ১৮৭টির আর অপরিবর্তিত ছিল ১০টির বাজারদর। গতকাল সিএসইতে ৬ কোটি ৫৩ লাখ টাকার সিকিউরিটিজ হাতবদল হয়েছে, এর আগের কার্যদিবসে যা ছিল ১১ কোটি ৮৮ লাখ টাকা।

Leave A Reply

Your email address will not be published.

Title