ঢাকা ০৪:১১ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১ আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
ছক্কার রেকর্ড তামিমের, এক বছরে এত ছয় মারেনি বাংলাদেশও জামালপুরে শহর রক্ষা বাঁধে ধস, ২০ ফুট জায়গাজুড়ে গর্ত উত্তর সিটির প্রশাসক এজাজকে ঘুষের প্রস্তাব, কর্মকর্তা বরখাস্ত পাঁচ ব্যাংক চূড়ান্তভাবে একীভূত হচ্ছে, বসছে প্রশাসক আন্তর্জাতিক সহযোগিতা ছাড়া ওজোনস্তর রক্ষা সম্ভব নয় : পরিবেশ উপদেষ্টা ধর্ম, মত বা অর্থনৈতিক অবস্থার ভিত্তিতে কাউকে বঞ্চিত করা যাবে না: প্রধান উপদেষ্টা শেখ হাসিনার মামলায় আমিই হয়তো শেষ সাক্ষী: নাহিদ ইসলাম কিছু আসনের লোভে পিআর চাইলে জাতীয় জীবনে ভয়ংকর পরিণতি আসবে : সালাহউদ্দিন ঝিনাইদহে শিশুদের জন্য পরিবেশ কর্মশালা অনুষ্ঠিত সদরপুরে সহকারী শিক্ষা অফিসার ওয়াহিদ খানের বিদায় সংবর্ধনা

মধ্যরাতে ভ্রাম্রমান আদালত হানা দিয়ে সাংবাদিক ধরে নেয়ার অভিযোগ

অনলাইন ডেস্ক
  • আপডেট সময় : ০৭:৫৩:০০ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৪ মার্চ ২০২০
  • / 37

সাংবাদিক আরিফ

প্রাইমটিভি বাংলা(অনলাইন)ঃ

মধ্যরাতে বাড়িতে হানা দিয়ে ধরে নিয়ে অনলাইন নিউজ পোর্টাল বাংলা ট্রিবিউনের কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি আরিফুল ইসলামকে এক বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন জেলা প্রশাসনের মোবাইল কোর্ট। শুক্রবার (১৩ মার্চ) মধ্য রাতে ডিসি অফিসের দুই-তিন জন ম্যাজিস্ট্রেট ১৫-১৬ জন আনসার সদস্যকে নিয়ে দরজা ভেঙে তার বাসায় প্রবেশ করেন। তবে তারা কোনও তল্লাশি অভিযান চালাননি। পরে ডিসি অফিসে নেওয়ার পর তারা দাবি করেন, আরিফুলের বাসায় আধা বোতল মদ ও দেড়শ’ গ্রাম গাঁজা পাওয়া গেছে।

আরিফুল ইসলামকে কারাদণ্ড দেওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কুড়িগ্রামের জেলার লুৎফর রহমান। তাকে কুড়িগ্রাম জেলা কারাগারে রাখা হয়েছে।

‘তুই অনেক জ্বালাচ্ছিস’ বলে ধরে নিয়ে যায়

সাংবাদিক আরিফুলের স্ত্রী মোস্তারিমা সরদার নিতু জানান, ‘শুক্রবার রাত সাড়ে ১২টার দিকে খাওয়া শেষে ঘুমানোর প্রস্তুতি নিচ্ছিলাম। এ সময় হঠাৎ কয়েকজন দরজা ধাক্কাধাক্কি শুরু করলে আমার স্বামী ফোনে স্বজনদের বিষয়টি জানান। সদর থানার ওসি মাহফুজুর ইসলামকেও ফোন করেন। এসময় তারা বাইরে থেকে গালাগাল করতে করতে একপর্যায়ে দরজা ভেঙে ঘরে ঢোকে। তারা আমার স্বামীকে মারধর শুরু করে। আমি বাধা দিতে গেলে তারা আমাকেও মারতে উদ্ধত হয়। পরে আমার স্বামীকে তুলে নিয়ে যায়। তাকে একটা শার্ট পরারও সময় দেওয়া হয়নি। মাত্র পাঁচ-সাত মিনিটের মধ্যে এই ঘটনা ঘটে যায়। বাসায় কোনও তল্লাশি অভিযানও চালানো হয়নি। অথচ দাবি করা হয়েছে তার কাছে মদ ও গাঁজা পেয়েছে।’

তিনি জানান, ভোকেশনাল মোড় চড়ুয়াপাড়ায় তাদের বাসা থেকে ডিসি অফিস যেতে ১৫ মিনিটের মতো লাগে।

আরিফুলের স্ত্রী বলেন, ‘তুই অনেক জ্বালাচ্ছিস−এই কথা বলেই মারধর শুরু করে আরিফকে। বাড়িতে আমার স্বামী, আমি আর আমার দুই শিশু সন্তান ছাড়া আর কেউ ছিল না তখন। তাকে ধরে নিয়ে যাওয়ার পর এডিশনাল এসপি ও ওসি সাহেব আমাদের বাসা পরিদর্শন করেছেন। তারা বলেছেন, এ বিষয়ে কিছুই জানেন না।’

তিনি আরও জানান, বাড়িতে প্রবেশ করা ৭/৮ জন আনসার বাহিনীর পোশাক পরা ছিল। এছাড়া বাইরে আরও ৪০ থেকে ৫০ জন দাঁড়িয়েছিল। আশপাশের লোকজন যাতে বাইরে বেরুতে না পারে, সেজন্য প্রতিটি বাড়ির গেটের সামনে ২/৪ জন করে দাঁড়িয়েছিল।

আরিফুলের স্ত্রী জানান, ‘ডিসি অফিসে রাত ২টার সময় মোবাইল কোর্ট বসানো হয়। এক বছরের কারাদণ্ড দিয়ে তাকে রাত আড়াইটার দিকে জেলখানায় পঠিয়ে দেয়।’ কুড়িগ্রাম সদর থানার ওসি মাহফুজুর ইসলাম বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘আমরা জানতে পেরেছি ডিসি অফিসের লোকজন মোবাইল কোর্টের জন্য আরিফুলকে নিয়ে যায়।’

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, জেলা প্রশাসক মোছা. সুলতানা পারভীন একটি পুকুর সংস্কার করে নিজের নামে নামকরণ করতে চেয়েছিলেন। আরিফুল এ বিষয়ে নিউজ করার পর থেকেই তার ওপর ক্ষুব্ধ ছিলেন ডিসি। এছাড়া, সম্প্রতি জেলা প্রশাসনের বিভিন্ন অনিয়ম নিয়ে রিপোর্ট করতে চেয়েছিলেন সাংবাদিক আরিফ। এ বিষয়ে জানতে পেরে জেলা প্রশাসকের অফিস থেকে তাকে বেশ কয়েকবার ডেকে নিয়ে সতর্ক করা হয়। তবে এ বিষয়ে জানতে জেলা প্রশাসক সুলতানা পারভীনের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাকে ফোনে পাওয়া যায়নি।

নতুন প্রজন্মের অনলাইন টিভি

নিউজটি শেয়ার করুন

ট্যাগস :

মধ্যরাতে ভ্রাম্রমান আদালত হানা দিয়ে সাংবাদিক ধরে নেয়ার অভিযোগ

আপডেট সময় : ০৭:৫৩:০০ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৪ মার্চ ২০২০

প্রাইমটিভি বাংলা(অনলাইন)ঃ

মধ্যরাতে বাড়িতে হানা দিয়ে ধরে নিয়ে অনলাইন নিউজ পোর্টাল বাংলা ট্রিবিউনের কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি আরিফুল ইসলামকে এক বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন জেলা প্রশাসনের মোবাইল কোর্ট। শুক্রবার (১৩ মার্চ) মধ্য রাতে ডিসি অফিসের দুই-তিন জন ম্যাজিস্ট্রেট ১৫-১৬ জন আনসার সদস্যকে নিয়ে দরজা ভেঙে তার বাসায় প্রবেশ করেন। তবে তারা কোনও তল্লাশি অভিযান চালাননি। পরে ডিসি অফিসে নেওয়ার পর তারা দাবি করেন, আরিফুলের বাসায় আধা বোতল মদ ও দেড়শ’ গ্রাম গাঁজা পাওয়া গেছে।

আরিফুল ইসলামকে কারাদণ্ড দেওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কুড়িগ্রামের জেলার লুৎফর রহমান। তাকে কুড়িগ্রাম জেলা কারাগারে রাখা হয়েছে।

‘তুই অনেক জ্বালাচ্ছিস’ বলে ধরে নিয়ে যায়

সাংবাদিক আরিফুলের স্ত্রী মোস্তারিমা সরদার নিতু জানান, ‘শুক্রবার রাত সাড়ে ১২টার দিকে খাওয়া শেষে ঘুমানোর প্রস্তুতি নিচ্ছিলাম। এ সময় হঠাৎ কয়েকজন দরজা ধাক্কাধাক্কি শুরু করলে আমার স্বামী ফোনে স্বজনদের বিষয়টি জানান। সদর থানার ওসি মাহফুজুর ইসলামকেও ফোন করেন। এসময় তারা বাইরে থেকে গালাগাল করতে করতে একপর্যায়ে দরজা ভেঙে ঘরে ঢোকে। তারা আমার স্বামীকে মারধর শুরু করে। আমি বাধা দিতে গেলে তারা আমাকেও মারতে উদ্ধত হয়। পরে আমার স্বামীকে তুলে নিয়ে যায়। তাকে একটা শার্ট পরারও সময় দেওয়া হয়নি। মাত্র পাঁচ-সাত মিনিটের মধ্যে এই ঘটনা ঘটে যায়। বাসায় কোনও তল্লাশি অভিযানও চালানো হয়নি। অথচ দাবি করা হয়েছে তার কাছে মদ ও গাঁজা পেয়েছে।’

তিনি জানান, ভোকেশনাল মোড় চড়ুয়াপাড়ায় তাদের বাসা থেকে ডিসি অফিস যেতে ১৫ মিনিটের মতো লাগে।

আরিফুলের স্ত্রী বলেন, ‘তুই অনেক জ্বালাচ্ছিস−এই কথা বলেই মারধর শুরু করে আরিফকে। বাড়িতে আমার স্বামী, আমি আর আমার দুই শিশু সন্তান ছাড়া আর কেউ ছিল না তখন। তাকে ধরে নিয়ে যাওয়ার পর এডিশনাল এসপি ও ওসি সাহেব আমাদের বাসা পরিদর্শন করেছেন। তারা বলেছেন, এ বিষয়ে কিছুই জানেন না।’

তিনি আরও জানান, বাড়িতে প্রবেশ করা ৭/৮ জন আনসার বাহিনীর পোশাক পরা ছিল। এছাড়া বাইরে আরও ৪০ থেকে ৫০ জন দাঁড়িয়েছিল। আশপাশের লোকজন যাতে বাইরে বেরুতে না পারে, সেজন্য প্রতিটি বাড়ির গেটের সামনে ২/৪ জন করে দাঁড়িয়েছিল।

আরিফুলের স্ত্রী জানান, ‘ডিসি অফিসে রাত ২টার সময় মোবাইল কোর্ট বসানো হয়। এক বছরের কারাদণ্ড দিয়ে তাকে রাত আড়াইটার দিকে জেলখানায় পঠিয়ে দেয়।’ কুড়িগ্রাম সদর থানার ওসি মাহফুজুর ইসলাম বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘আমরা জানতে পেরেছি ডিসি অফিসের লোকজন মোবাইল কোর্টের জন্য আরিফুলকে নিয়ে যায়।’

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, জেলা প্রশাসক মোছা. সুলতানা পারভীন একটি পুকুর সংস্কার করে নিজের নামে নামকরণ করতে চেয়েছিলেন। আরিফুল এ বিষয়ে নিউজ করার পর থেকেই তার ওপর ক্ষুব্ধ ছিলেন ডিসি। এছাড়া, সম্প্রতি জেলা প্রশাসনের বিভিন্ন অনিয়ম নিয়ে রিপোর্ট করতে চেয়েছিলেন সাংবাদিক আরিফ। এ বিষয়ে জানতে পেরে জেলা প্রশাসকের অফিস থেকে তাকে বেশ কয়েকবার ডেকে নিয়ে সতর্ক করা হয়। তবে এ বিষয়ে জানতে জেলা প্রশাসক সুলতানা পারভীনের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাকে ফোনে পাওয়া যায়নি।