ঢাকা ০৩:৫৭ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১৬ নভেম্বর ২০২৫, ১ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

এক বছরে ঋণ বেড়েছে আড়াই লাখ কোটি টাকা

অনলাইন ডেস্ক
  • আপডেট সময় : ০২:২১:১৭ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১৬ নভেম্বর ২০২৫
  • / 1

অনলাইন ডেস্ক: কাঙ্ক্ষিতমাত্রায় বাড়ছে না রাজস্ব আহরণ। বিরাজমান রাজনৈতিক অস্থিতিশীল পরিবেশ, অর্থনৈতিক সংকট, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অবনতিসহ নানা কারণে দেশে ব্যবসায় বাণিজ্যে গতি ফিরছে না। উন্নয়ন কর্মকাণ্ডও স্থবিরতার মুখে। এর প্রভাবে কমছে রাজস্ব আয়। ফলে সরকার রাষ্ট্র পরিচালনা করতে গিয়ে ঋণগ্রস্ত বেশি হচ্ছে। সে ঋণ ও সুদ পরিশোধ করতে গিয়ে পুনরায় ঋণ করতে হচ্ছে। গত এক বছরের ব্যবধানে সরকারের ঋণ বেড়েছে আড়াই লাখ কোটি টাকা। ২০২৫ সালের জুন পর্যন্ত ঋণ ২১ লাখ ৪৪ হাজার কোটি টাকা ছুঁয়েছে। এর মধ্যে বৈদেশিক ঋণ ৯ লাখ ৪৯ হাজার ১৮১ কোটি টাকা এবং অভ্যন্তরীণ ঋণ (ব্যাংক খাত এবং নন ব্যাংক খাত) হলো প্রায় ১১ লাখ ৯৫ হাজার কোটি টাকা। এক বছর আগে অর্থাৎ ২০২৪ সালের জুন পর্যন্ত ঋণের অঙ্ক ছিল ১৮ লাখ ৮৯ হাজার কোটি টাকা এবং ২০২০ সালে ছিল ২৩ লাখ ৪৪ হাজার কোটি টাকা। অর্থ বিভাগের ঋণ বুলেটিন পর্যালোচনা করে পাওয়া গেছে এ তথ্য।

গত মাসে এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংকের (এডিবি) এক প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশের বৈদেশিক ঋণের বৃদ্ধির হার সবচেয়ে দ্রুত, যেখানে সরকারি ও সরকারি-গ্যারান্টিযুক্ত ঋণ ১৩ বছরে বেড়েছে তিনগুণেরও বেশি।

তবে সাম্প্রতিকালে ঋণবৃদ্ধির কারণ হিসাবে উন্নয়ন সহযোগী দেশগুলো থেকে পাওয়া বাজেট সহায়তা এবং রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র, ঢাকা মেট্রোরেল ও মাতারবাড়ী কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রসহ বড় প্রকল্পগুলোর জন্য প্রাপ্ত সহায়তাকে মনে করা হচ্ছে। পাশাপাশি কমছে রাজস্ব আহরণ। সে ঘাটতি পূরণ করতে গিয়েও বেশি মাত্রায় সরকারকে ঋণ করতে হচ্ছে।

অবশ্য ঋণ নিয়ে সরকার কিছুটা সতর্ক আছে মর্মে উপদেষ্টার বক্তব্যে তুলে ধরা হয়েছে। সম্প্রতি অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ যুগান্তরকে বলেছিলেন, এখন বিদেশি ঋণ নেওয়ার ব্যাপারেও সতর্ক আছি। চট করে ঋণ নেওয়া হবে না। কারণ ঋণের চাপ জনগণের ওপর পড়বে। এখন বাজেট সাপোর্ট হিসেবেও ঋণ নেব না। নিজেরাই চেষ্টা করব রাজস্ব আহরণ বাড়াতে। তিনি আরও বলেন, ঋণ নিতে গিয়ে নানা শর্ত পালন করতে গিয়ে নিজস্ব স্বাধীনতা থাকছে না। চীনের ঋণ নিয়ে আমরা সতর্ক। কারণ চীনের ঋণ নিয়ে আফ্রিকা সমস্যায় পড়ছে। ভারতের লাইন অব ক্রেডিট (এলওসি) ৫ থেকে ৬টি ঋণ সুবিধা বাতিল করে দিয়েছি।

অর্থনীতিবিদ এম কে মুজেরী যুগান্তরকে জানান, ঋণ ডিডিপির অনুপাতে উদ্বেগজনক না হলেও পরিশোধের ক্ষমতা কতটুকু সেটি বিবেচনা করতে হবে। আমরা যদি ঋণের অর্থ উৎপাদনশীল খাতে ব্যবহার না করে অপচয় করি, সেক্ষেত্রে পরিশোধের সক্ষমতা থাকবে না। আর ঋণ সঠিক ব্যবহার না হলে সেটি উদ্বেগজনক হবে। কারণ বাজেটের একটি অংশ চলে যাচ্ছে ঋণ পরিশোধে। তিনি আরও বলেন, এজন্য ঋণ নেওয়ার ক্ষেত্রে সিলেক্টিভ ও সতর্ক হতে হবে। দ্বিতীয়ত হচ্ছে, ঋণের অর্থের সঠিক ব্যবহার করতে হবে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রমতে, ২০২৫ সালের জুন পর্যন্ত অভ্যন্তরীণ যে ঋণ নেওয়া হয়েছে তার মধ্যে ব্যাংক খাত থেকে আসছে পৌনে ৮ লাখ কোটি টাকা এবং সঞ্চয়পত্রসহ অন্য খাত থেকে নেওয়া হয়েছে চার লাখ ২০ হাজার কোটি টাকা। তবে ২০২৫ সালের জুন পর্যন্ত মোট ২১ লাখ ৪৪ হাজার ৩৪ কোটি টাকা যে ঋণের অঙ্ক দাঁড়িয়েছে, সেটি জিডিপির ৩৮ দশমিক ৬১ শতাংশ।

ঋণসংক্রান্ত বুলেটিনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের বৈদেশিক ঋণ জিডিপি অনুপাত এখনো মধ্যম পর্যায়ে এবং আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) ‘সুরক্ষিত সীমা’র মধ্যে রয়েছে। তবে কিছু অর্থনৈতিক সূচক এখন সতর্কতার সঙ্কেত দিচ্ছে। দীর্ঘমেয়াদে ঋণ টেকসই রাখার ক্ষেত্রে বুলেটিনে সতর্ক করে বলা হয়েছে, আরও শৃঙ্খলাবদ্ধ ঋণ ব্যবস্থাপনা, নতুন উন্নয়ন প্রকল্পের কঠোর যাচাই, বাস্তবায়ন দক্ষতার উন্নয়ন, রাজস্ব আহরণের ত্বরান্বিত ব্যবস্থা এবং রপ্তানি আয় সম্প্রসারণ ও বৈচিত্র্যকরণের প্রতি আরও গভীর মনোযোগ প্রয়োজন।

ঋণের পরিমাণ বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে সুদ পরিশোধের পরিমাণও বেড়ে গেছে। গত অর্থবছরে সরকার সুদ হিসেবে এক লাখ ৩২ হাজার ৪৬০ কোটি টাকা পরিশোধ করেছে, যা এক বছরের ব্যবধানে ১৭ শতাংশ বেড়েছে। বৈদেশিক ঋণের সুদের অর্থ পরিশোধ ২১ শতাংশ বেড়েছে, আর দেশীয় ঋণের সুদ ১৬ শতাংশ বেড়েছে। ২০১৬ সালে সুদের অর্থ পরিশোধের পরিমাণ ছিল ৩১ হাজার ৬৬৯ কোটি টাকা; ২০২১ সালে এটি প্রায় দ্বিগুণ হয়ে ৬৩ হাজার ৮২৩ কোটি টাকায় দাঁড়ায়। ট্রেজারি বিল ও বন্ডের মাধ্যমে বাণিজ্যিক ব্যাংক থেকে নেওয়া ঋণের সুদের অর্থ পরিশোধের পরিমাণ গত বছরে ৪৩ শতাংশ বেড়েছে তার আগের বছরের তুলনায়। সেই ধারাবাহিকতায় শুধু সুদ পরিশোধের জন্য ২০২৫-২৬ অর্থবছরে এক লাখ ২২ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে, যার মধ্যে এক লাখ কোটি টাকা অভ্যন্তরীণ ঋণের সুদ ব্যয় ধরা হয়েছে।

অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, ‘রাশিয়া থেকে গৃহীত ঋণ এবং মেগা প্রকল্পের বৃহৎ ঋণ পরিশোধের জন্য নির্ধারিত থাকায় ২০২৬-২৭ অর্থবছরে ঋণ পরিশোধের পরিমাণ বৃদ্ধি পাবে। ২০৩০ সাল পর্যন্ত বৃদ্ধির এ ধারা অব্যাহত থাকলেও আগামী ২০৩৪ সালের পর ঋণ পরিশোধের পরিমাণ কমে আসবে।’

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, জিডিপির অনুপাত হারে ঋণ কম হলেও রাজস্ব আয়, রপ্তানি, রেমিট্যান্স বাড়ানো এবং ডলারের মূল্য স্থিতিশীল আনতে না পারলে ঝুঁকির মধ্যে পড়ার শঙ্কা থাকবে। এসব খাতে আয় না বাড়ালে এবং বিদেশি ঋণের প্রবাহ কমিয়ে আনতে না পারলে এ ঋণের বিশাল চাপ আগামী কয়েক বছর ধরেই অব্যাহত থাকতে পারে।

নতুন প্রজন্মের অনলাইন টিভি

নিউজটি শেয়ার করুন

ট্যাগস :

এক বছরে ঋণ বেড়েছে আড়াই লাখ কোটি টাকা

আপডেট সময় : ০২:২১:১৭ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১৬ নভেম্বর ২০২৫

অনলাইন ডেস্ক: কাঙ্ক্ষিতমাত্রায় বাড়ছে না রাজস্ব আহরণ। বিরাজমান রাজনৈতিক অস্থিতিশীল পরিবেশ, অর্থনৈতিক সংকট, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অবনতিসহ নানা কারণে দেশে ব্যবসায় বাণিজ্যে গতি ফিরছে না। উন্নয়ন কর্মকাণ্ডও স্থবিরতার মুখে। এর প্রভাবে কমছে রাজস্ব আয়। ফলে সরকার রাষ্ট্র পরিচালনা করতে গিয়ে ঋণগ্রস্ত বেশি হচ্ছে। সে ঋণ ও সুদ পরিশোধ করতে গিয়ে পুনরায় ঋণ করতে হচ্ছে। গত এক বছরের ব্যবধানে সরকারের ঋণ বেড়েছে আড়াই লাখ কোটি টাকা। ২০২৫ সালের জুন পর্যন্ত ঋণ ২১ লাখ ৪৪ হাজার কোটি টাকা ছুঁয়েছে। এর মধ্যে বৈদেশিক ঋণ ৯ লাখ ৪৯ হাজার ১৮১ কোটি টাকা এবং অভ্যন্তরীণ ঋণ (ব্যাংক খাত এবং নন ব্যাংক খাত) হলো প্রায় ১১ লাখ ৯৫ হাজার কোটি টাকা। এক বছর আগে অর্থাৎ ২০২৪ সালের জুন পর্যন্ত ঋণের অঙ্ক ছিল ১৮ লাখ ৮৯ হাজার কোটি টাকা এবং ২০২০ সালে ছিল ২৩ লাখ ৪৪ হাজার কোটি টাকা। অর্থ বিভাগের ঋণ বুলেটিন পর্যালোচনা করে পাওয়া গেছে এ তথ্য।

গত মাসে এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংকের (এডিবি) এক প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশের বৈদেশিক ঋণের বৃদ্ধির হার সবচেয়ে দ্রুত, যেখানে সরকারি ও সরকারি-গ্যারান্টিযুক্ত ঋণ ১৩ বছরে বেড়েছে তিনগুণেরও বেশি।

তবে সাম্প্রতিকালে ঋণবৃদ্ধির কারণ হিসাবে উন্নয়ন সহযোগী দেশগুলো থেকে পাওয়া বাজেট সহায়তা এবং রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র, ঢাকা মেট্রোরেল ও মাতারবাড়ী কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রসহ বড় প্রকল্পগুলোর জন্য প্রাপ্ত সহায়তাকে মনে করা হচ্ছে। পাশাপাশি কমছে রাজস্ব আহরণ। সে ঘাটতি পূরণ করতে গিয়েও বেশি মাত্রায় সরকারকে ঋণ করতে হচ্ছে।

অবশ্য ঋণ নিয়ে সরকার কিছুটা সতর্ক আছে মর্মে উপদেষ্টার বক্তব্যে তুলে ধরা হয়েছে। সম্প্রতি অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ যুগান্তরকে বলেছিলেন, এখন বিদেশি ঋণ নেওয়ার ব্যাপারেও সতর্ক আছি। চট করে ঋণ নেওয়া হবে না। কারণ ঋণের চাপ জনগণের ওপর পড়বে। এখন বাজেট সাপোর্ট হিসেবেও ঋণ নেব না। নিজেরাই চেষ্টা করব রাজস্ব আহরণ বাড়াতে। তিনি আরও বলেন, ঋণ নিতে গিয়ে নানা শর্ত পালন করতে গিয়ে নিজস্ব স্বাধীনতা থাকছে না। চীনের ঋণ নিয়ে আমরা সতর্ক। কারণ চীনের ঋণ নিয়ে আফ্রিকা সমস্যায় পড়ছে। ভারতের লাইন অব ক্রেডিট (এলওসি) ৫ থেকে ৬টি ঋণ সুবিধা বাতিল করে দিয়েছি।

অর্থনীতিবিদ এম কে মুজেরী যুগান্তরকে জানান, ঋণ ডিডিপির অনুপাতে উদ্বেগজনক না হলেও পরিশোধের ক্ষমতা কতটুকু সেটি বিবেচনা করতে হবে। আমরা যদি ঋণের অর্থ উৎপাদনশীল খাতে ব্যবহার না করে অপচয় করি, সেক্ষেত্রে পরিশোধের সক্ষমতা থাকবে না। আর ঋণ সঠিক ব্যবহার না হলে সেটি উদ্বেগজনক হবে। কারণ বাজেটের একটি অংশ চলে যাচ্ছে ঋণ পরিশোধে। তিনি আরও বলেন, এজন্য ঋণ নেওয়ার ক্ষেত্রে সিলেক্টিভ ও সতর্ক হতে হবে। দ্বিতীয়ত হচ্ছে, ঋণের অর্থের সঠিক ব্যবহার করতে হবে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রমতে, ২০২৫ সালের জুন পর্যন্ত অভ্যন্তরীণ যে ঋণ নেওয়া হয়েছে তার মধ্যে ব্যাংক খাত থেকে আসছে পৌনে ৮ লাখ কোটি টাকা এবং সঞ্চয়পত্রসহ অন্য খাত থেকে নেওয়া হয়েছে চার লাখ ২০ হাজার কোটি টাকা। তবে ২০২৫ সালের জুন পর্যন্ত মোট ২১ লাখ ৪৪ হাজার ৩৪ কোটি টাকা যে ঋণের অঙ্ক দাঁড়িয়েছে, সেটি জিডিপির ৩৮ দশমিক ৬১ শতাংশ।

ঋণসংক্রান্ত বুলেটিনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের বৈদেশিক ঋণ জিডিপি অনুপাত এখনো মধ্যম পর্যায়ে এবং আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) ‘সুরক্ষিত সীমা’র মধ্যে রয়েছে। তবে কিছু অর্থনৈতিক সূচক এখন সতর্কতার সঙ্কেত দিচ্ছে। দীর্ঘমেয়াদে ঋণ টেকসই রাখার ক্ষেত্রে বুলেটিনে সতর্ক করে বলা হয়েছে, আরও শৃঙ্খলাবদ্ধ ঋণ ব্যবস্থাপনা, নতুন উন্নয়ন প্রকল্পের কঠোর যাচাই, বাস্তবায়ন দক্ষতার উন্নয়ন, রাজস্ব আহরণের ত্বরান্বিত ব্যবস্থা এবং রপ্তানি আয় সম্প্রসারণ ও বৈচিত্র্যকরণের প্রতি আরও গভীর মনোযোগ প্রয়োজন।

ঋণের পরিমাণ বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে সুদ পরিশোধের পরিমাণও বেড়ে গেছে। গত অর্থবছরে সরকার সুদ হিসেবে এক লাখ ৩২ হাজার ৪৬০ কোটি টাকা পরিশোধ করেছে, যা এক বছরের ব্যবধানে ১৭ শতাংশ বেড়েছে। বৈদেশিক ঋণের সুদের অর্থ পরিশোধ ২১ শতাংশ বেড়েছে, আর দেশীয় ঋণের সুদ ১৬ শতাংশ বেড়েছে। ২০১৬ সালে সুদের অর্থ পরিশোধের পরিমাণ ছিল ৩১ হাজার ৬৬৯ কোটি টাকা; ২০২১ সালে এটি প্রায় দ্বিগুণ হয়ে ৬৩ হাজার ৮২৩ কোটি টাকায় দাঁড়ায়। ট্রেজারি বিল ও বন্ডের মাধ্যমে বাণিজ্যিক ব্যাংক থেকে নেওয়া ঋণের সুদের অর্থ পরিশোধের পরিমাণ গত বছরে ৪৩ শতাংশ বেড়েছে তার আগের বছরের তুলনায়। সেই ধারাবাহিকতায় শুধু সুদ পরিশোধের জন্য ২০২৫-২৬ অর্থবছরে এক লাখ ২২ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে, যার মধ্যে এক লাখ কোটি টাকা অভ্যন্তরীণ ঋণের সুদ ব্যয় ধরা হয়েছে।

অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, ‘রাশিয়া থেকে গৃহীত ঋণ এবং মেগা প্রকল্পের বৃহৎ ঋণ পরিশোধের জন্য নির্ধারিত থাকায় ২০২৬-২৭ অর্থবছরে ঋণ পরিশোধের পরিমাণ বৃদ্ধি পাবে। ২০৩০ সাল পর্যন্ত বৃদ্ধির এ ধারা অব্যাহত থাকলেও আগামী ২০৩৪ সালের পর ঋণ পরিশোধের পরিমাণ কমে আসবে।’

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, জিডিপির অনুপাত হারে ঋণ কম হলেও রাজস্ব আয়, রপ্তানি, রেমিট্যান্স বাড়ানো এবং ডলারের মূল্য স্থিতিশীল আনতে না পারলে ঝুঁকির মধ্যে পড়ার শঙ্কা থাকবে। এসব খাতে আয় না বাড়ালে এবং বিদেশি ঋণের প্রবাহ কমিয়ে আনতে না পারলে এ ঋণের বিশাল চাপ আগামী কয়েক বছর ধরেই অব্যাহত থাকতে পারে।