ঢাকা ০৮:২৩ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৬ জুন ২০২৫, ১২ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

এনবিআরের গেট বন্ধ, ঢুকতে পারছেন না ঐক্য পরিষদের নেতারা

অনলাইন ডেস্ক
  • আপডেট সময় : ০২:০৩:৫৭ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৬ জুন ২০২৫ ৫ বার পড়া হয়েছে

আন্দোলনে থাকা এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদের নেতাদের জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) প্রধান কার্যালয়ে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না। বর্তমানে এনবিআরের প্রধান গেট বন্ধ করে রেখেছেন আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। কেউ ঢুকতে বা বের হতে পারছেন না।

বৃহস্পতিবার (২৬ জুন) বেলা ১২টার দিকে আগারগাঁওয়ে প্রধান কার্যালয়ের প্রধান গেট বন্ধ রাখায় অনেকটা অবরুদ্ধ অবস্থায় রয়েছে এনবিআর।

এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদের নেতারা বলছেন, এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদের সভাপতি হাসান মোহাম্মদ তারেক রিকাবদারসহ নেতাদের এনবিআর প্রাঙ্গণে প্রবেশে বাধা দিয়ে বলা হচ্ছে আলোচনা করে সমাধান করা হবে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে এনবিআর ঐক্য পরিষদের সভাপতি অতিরিক্ত কমিশনার হাছান মুহম্মদ তারেক রিকাবদার বলেন, অর্থ উপদেষ্টা ডাকার সঙ্গে সঙ্গে আমরা সবাই মিলে সিদ্ধান্ত নিয়ে আলোচনায় বসবো। আমরা সব প্রকার আইন মেনে নিয়মতান্ত্রিক আন্দোলন করছি। আমার অফিসে আমি কেন ঢুকতে পারবো না? আমরা কোনো প্রকার দাঙ্গা-হাঙ্গামা করি নাই। আমরা আলোচনা প্রত্যাখ্যান করি নাই, প্রকৃত বিষয় হচ্ছে আমাদের আলোচনায় ডাকা হয় নাই। আজ যাদের ডাকা হয়েছে কর ও কাস্টমস ক্যাডারের প্রতিনিধিদের। কিন্তু প্রতিনিধি মনোনয়ন দেন প্রতিষ্ঠানের প্রধান চেয়ারম্যান। তিনি তাদেরই মনোনয়ন দিয়েছেন যারা আন্দোলনের সঙ্গে সম্পৃক্ত নন এবং আন্দোলনকে নানাভাবে ব্যাহত করার চেষ্টা করেছেন। আমাদের ডাকলে আমরা আলোচনায় বসে সিদ্ধান্ত নিয়ে অবশ্যই যাবে।

এর আগে গতকাল এনবিআর চেয়ারম্যান অপসারণের এক দফা দাবি আদায়ে ২৮ জুন লাগাতার কমপ্লিট শাটডাউনের পাশাপাশি ‘মার্চ টু এনবিআর’ কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়। সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, অর্থ উপদেষ্টা আজ ২৬ জুন বিকাল ৫টায় বিসিএস (কর) ও সিসিএস (কাস্টমস ও এক্সাইজ) ক্যাডারের প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলোচনার আহ্বান জানিয়েছে। আমরা বরাবরই আলোচনার পক্ষে। আর আলোচনার পক্ষে ছিলাম বলেই ২০ মে উপদেষ্টার সঙ্গে আলোচনায় অংশগ্রহণ করি। সংস্কার ঐক্য পরিষদের ১৩ জন প্রতিনিধিসহ মোট ২৬ জনের সভায় উপস্থিত ছিলেন। এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদের দুই জন প্রতিনিধিকে মোট ১০ মিনিট সময় দেওয়া হয়। আলোচনা ফলপ্রসূ না হওয়ায় পরও আলোচনা শেষে আলোচনা জলপ্রসূ হয়েছে বলে অর্থ উপদেষ্টা সাংবাদিকদের জানান। অর্থাৎ আমাদের আলোচনার অভিজ্ঞতা সুখকর নয়।
অন্যদিকে এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদের প্রতিনিধিদের আজকের আলোচনার জন্য আহ্বান করেননি, সেহেতু কর্মসূচী পালনকারী এনবিআর ঐক্য পরিষদ থেকে কোনো প্রতিনিধি উক্ত আলোচনায় অংশগ্রহণ করার সুযোগ না রাখায় উক্ত আলোচনায় অংশগ্রহণ করবে না। আমাদের দাবি অনতিবিলম্বে পতিত ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের অ্যাজেন্ডা বাস্তবায়নকারী ৪৪ আমলার তালিকায় ৩ নম্বরে থাকা বর্তমান এনবিআর চেয়ারম্যানের অপসারণের মধ্য দিয়েই সরকারের রাজস্ব ব্যবস্থা সংস্কারের যাত্রা শুরু হবে। এর আগে কোনো আলোচনা নয়।

প্রসঙ্গত, বুধবার এক বিবৃতিতে অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ আজ বৃহস্পতিবার বিকেল ৫টায় বিসিএস (কর) এবং বিসিএস (কাস্টমস ও এক্সাইজ) ক্যাডারের প্রতিনিধিদের তার সঙ্গে আলোচনার আহ্বান জানিয়েছেন। একই সঙ্গে সব কর্মকর্তা-কর্মচারীদের যার যার দপ্তরে অবস্থান করে অর্থবছরের শেষ কর্মদিবসগুলোতে রাজস্ব আহরণ কার্যক্রমে মনোনিবেশ করার জন্য  অনুরোধ করে বিবৃতি দেওয়া হয়।

আজও দুপুর ১২টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত আন্তর্জাতিক যাত্রীসেবা ও রপ্তানি ব্যতীত আয়কর, কাস্টমস ও ভ্যাট বিভাগের ঢাকার সব দপ্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের রাজস্ব ভবনে অবস্থান কর্মসূচি ও কলম-বিরতি এবং ঢাকার বাইরে অ-স্ব দপ্তরে অবস্থান কর্মসূচি ও কলম-বিরতি কর্মসূচী পালন করা হচ্ছে।

গত ২১ জুন সংবাদ সম্মেলনে করে ২৩ জুন থেকে অবস্থান কর্মসূচি ও কলম বিরতি কর্মসূচী পালন করছেন এনবিআরের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।

সরকার গত ১২মে এনবিআরকে দুই ভাগ করার অধ্যাদেশ জারি করে। এর বিরোধিতা করে গত ২৬ মে পর্যন্ত অবস্থান কর্মসূচি ও কলম বিরতির আন্দোলন করে এনবিআরের অধীন কাস্টমস, ভ্যাট ও আয়কর বিভাগের কর্মকর্তারা। আর ২৫ মে রাতে এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে অর্থমন্ত্রণালয় জানায়, এনবিআর বিলুপ্ত নয়, বরং এ প্রতিষ্ঠানকে ‘স্বাধীন ও বিশেষায়িত বিভাগের মর্যাদায় উন্নীত করা হবে। এর ফলে ২৬ মে কলম বিরতির কর্মসূচি প্রত্যাহার করে এনবিআর। তবে এনবিআর চেয়ারম্যানকে অপসারণ ও চেয়ারম্যান কে অসহযোগিতা করার ঘোষণা দেয় এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদ।

নতুন প্রজন্মের অনলাইন টিভি

নিউজটি শেয়ার করুন

ট্যাগস :

এনবিআরের গেট বন্ধ, ঢুকতে পারছেন না ঐক্য পরিষদের নেতারা

আপডেট সময় : ০২:০৩:৫৭ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৬ জুন ২০২৫

আন্দোলনে থাকা এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদের নেতাদের জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) প্রধান কার্যালয়ে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না। বর্তমানে এনবিআরের প্রধান গেট বন্ধ করে রেখেছেন আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। কেউ ঢুকতে বা বের হতে পারছেন না।

বৃহস্পতিবার (২৬ জুন) বেলা ১২টার দিকে আগারগাঁওয়ে প্রধান কার্যালয়ের প্রধান গেট বন্ধ রাখায় অনেকটা অবরুদ্ধ অবস্থায় রয়েছে এনবিআর।

এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদের নেতারা বলছেন, এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদের সভাপতি হাসান মোহাম্মদ তারেক রিকাবদারসহ নেতাদের এনবিআর প্রাঙ্গণে প্রবেশে বাধা দিয়ে বলা হচ্ছে আলোচনা করে সমাধান করা হবে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে এনবিআর ঐক্য পরিষদের সভাপতি অতিরিক্ত কমিশনার হাছান মুহম্মদ তারেক রিকাবদার বলেন, অর্থ উপদেষ্টা ডাকার সঙ্গে সঙ্গে আমরা সবাই মিলে সিদ্ধান্ত নিয়ে আলোচনায় বসবো। আমরা সব প্রকার আইন মেনে নিয়মতান্ত্রিক আন্দোলন করছি। আমার অফিসে আমি কেন ঢুকতে পারবো না? আমরা কোনো প্রকার দাঙ্গা-হাঙ্গামা করি নাই। আমরা আলোচনা প্রত্যাখ্যান করি নাই, প্রকৃত বিষয় হচ্ছে আমাদের আলোচনায় ডাকা হয় নাই। আজ যাদের ডাকা হয়েছে কর ও কাস্টমস ক্যাডারের প্রতিনিধিদের। কিন্তু প্রতিনিধি মনোনয়ন দেন প্রতিষ্ঠানের প্রধান চেয়ারম্যান। তিনি তাদেরই মনোনয়ন দিয়েছেন যারা আন্দোলনের সঙ্গে সম্পৃক্ত নন এবং আন্দোলনকে নানাভাবে ব্যাহত করার চেষ্টা করেছেন। আমাদের ডাকলে আমরা আলোচনায় বসে সিদ্ধান্ত নিয়ে অবশ্যই যাবে।

এর আগে গতকাল এনবিআর চেয়ারম্যান অপসারণের এক দফা দাবি আদায়ে ২৮ জুন লাগাতার কমপ্লিট শাটডাউনের পাশাপাশি ‘মার্চ টু এনবিআর’ কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়। সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, অর্থ উপদেষ্টা আজ ২৬ জুন বিকাল ৫টায় বিসিএস (কর) ও সিসিএস (কাস্টমস ও এক্সাইজ) ক্যাডারের প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলোচনার আহ্বান জানিয়েছে। আমরা বরাবরই আলোচনার পক্ষে। আর আলোচনার পক্ষে ছিলাম বলেই ২০ মে উপদেষ্টার সঙ্গে আলোচনায় অংশগ্রহণ করি। সংস্কার ঐক্য পরিষদের ১৩ জন প্রতিনিধিসহ মোট ২৬ জনের সভায় উপস্থিত ছিলেন। এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদের দুই জন প্রতিনিধিকে মোট ১০ মিনিট সময় দেওয়া হয়। আলোচনা ফলপ্রসূ না হওয়ায় পরও আলোচনা শেষে আলোচনা জলপ্রসূ হয়েছে বলে অর্থ উপদেষ্টা সাংবাদিকদের জানান। অর্থাৎ আমাদের আলোচনার অভিজ্ঞতা সুখকর নয়।
অন্যদিকে এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদের প্রতিনিধিদের আজকের আলোচনার জন্য আহ্বান করেননি, সেহেতু কর্মসূচী পালনকারী এনবিআর ঐক্য পরিষদ থেকে কোনো প্রতিনিধি উক্ত আলোচনায় অংশগ্রহণ করার সুযোগ না রাখায় উক্ত আলোচনায় অংশগ্রহণ করবে না। আমাদের দাবি অনতিবিলম্বে পতিত ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের অ্যাজেন্ডা বাস্তবায়নকারী ৪৪ আমলার তালিকায় ৩ নম্বরে থাকা বর্তমান এনবিআর চেয়ারম্যানের অপসারণের মধ্য দিয়েই সরকারের রাজস্ব ব্যবস্থা সংস্কারের যাত্রা শুরু হবে। এর আগে কোনো আলোচনা নয়।

প্রসঙ্গত, বুধবার এক বিবৃতিতে অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ আজ বৃহস্পতিবার বিকেল ৫টায় বিসিএস (কর) এবং বিসিএস (কাস্টমস ও এক্সাইজ) ক্যাডারের প্রতিনিধিদের তার সঙ্গে আলোচনার আহ্বান জানিয়েছেন। একই সঙ্গে সব কর্মকর্তা-কর্মচারীদের যার যার দপ্তরে অবস্থান করে অর্থবছরের শেষ কর্মদিবসগুলোতে রাজস্ব আহরণ কার্যক্রমে মনোনিবেশ করার জন্য  অনুরোধ করে বিবৃতি দেওয়া হয়।

আজও দুপুর ১২টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত আন্তর্জাতিক যাত্রীসেবা ও রপ্তানি ব্যতীত আয়কর, কাস্টমস ও ভ্যাট বিভাগের ঢাকার সব দপ্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের রাজস্ব ভবনে অবস্থান কর্মসূচি ও কলম-বিরতি এবং ঢাকার বাইরে অ-স্ব দপ্তরে অবস্থান কর্মসূচি ও কলম-বিরতি কর্মসূচী পালন করা হচ্ছে।

গত ২১ জুন সংবাদ সম্মেলনে করে ২৩ জুন থেকে অবস্থান কর্মসূচি ও কলম বিরতি কর্মসূচী পালন করছেন এনবিআরের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।

সরকার গত ১২মে এনবিআরকে দুই ভাগ করার অধ্যাদেশ জারি করে। এর বিরোধিতা করে গত ২৬ মে পর্যন্ত অবস্থান কর্মসূচি ও কলম বিরতির আন্দোলন করে এনবিআরের অধীন কাস্টমস, ভ্যাট ও আয়কর বিভাগের কর্মকর্তারা। আর ২৫ মে রাতে এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে অর্থমন্ত্রণালয় জানায়, এনবিআর বিলুপ্ত নয়, বরং এ প্রতিষ্ঠানকে ‘স্বাধীন ও বিশেষায়িত বিভাগের মর্যাদায় উন্নীত করা হবে। এর ফলে ২৬ মে কলম বিরতির কর্মসূচি প্রত্যাহার করে এনবিআর। তবে এনবিআর চেয়ারম্যানকে অপসারণ ও চেয়ারম্যান কে অসহযোগিতা করার ঘোষণা দেয় এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদ।