খাগড়াছড়িতে ঐতিহাসিক গণঅভ্যুত্থান দিবস পালনে বিএনপির বিশাল বিজয় র্যালি
খাগড়াছড়িতে ঐতিহাসিক গণঅভ্যুত্থান দিবস পালনে বিএনপির বিশাল বিজয় র্যালি

- আপডেট সময় : ০৬:৩৮:২৯ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৫ আগস্ট ২০২৫ ৫ বার পড়া হয়েছে
জেলা প্রতিনিধি: খাগড়াছড়িতে ঐতিহাসিক গণঅভ্যুত্থান দিবস পালনে বিএনপির বিশাল বিজয় র্যালি, গণতান্ত্রিক আন্দোলনের ইতিহাসে স্মরণীয় ৫ আগস্ট—ঐতিহাসিক, ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থান দিবস। এই দিনটি স্মরণে ও ফ্যাসিস্ট সরকারের পতনের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে খাগড়াছিতে, এক বিশাল বিজয় র্যালির আয়োজন করে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)।
মঙ্গলবার (৫ আগস্ট ২০২৫) বিকেল সাড়ে ৪টায় খাগড়াছড়ি শহরের কলাবাগান এলাকা থেকে র্যালিটি শুরু হয়।
সদর উপজেলা বিএনপি ও পৌর বিএনপি’র নেতৃত্বে আয়োজিত র্যালিটিতে অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের শত শত নেতাকর্মী অংশ নেন। জেলা বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দসহ তৃণমূল কর্মীরা র্যালিটিকে একটি শক্তিশালী ঐক্যের বহিঃপ্রকাশে পরিণত করেন।
র্যালিটি শহরের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে মুক্তমঞ্চের সামনে এসে শেষ হয়। সেখানেই এক সংক্ষিপ্ত সমাবেশের আয়োজন করা হয়।
উপস্থিত নেতাদের বক্তব্য:
সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন খাগড়াছি জেলা বিএনপি’র সাধারণ সম্পাদক এম. এন. আবছার। তিনি বলেন: “৫ আগস্ট একটি ঐতিহাসিক দিন। এই দিন ছাত্র ও জনতার মিলিত প্রতিরোধে পতন ঘটে একদলীয় ফ্যাসিস্ট সরকারের। আজ সেই চেতনায় উজ্জীবিত হয়ে আমাদের নতুন যাত্রা শুরু করতে হবে। গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার, মানুষের ভোটাধিকার ও মৌলিক অধিকার ফিরিয়ে আনার সংগ্রামে খাগড়াছড়ির মাটি থেকে নতুন প্রত্যয় জন্ম নিচ্ছে।”
তিনি আরও বলেন,
“দেশজুড়ে যে দমন-পীড়ন, বিচারবহির্ভূত হত্যা, গুম-খুন চলছে, তার বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানো আজ সময়ের দাবি। এই বিজয় র্যালি তারই এক প্রতীক।”
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন জেলা বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোশাররফ হোসেন, সহ-সভাপতি অনিমেষ চাকমা রিংকু, এবং সাংগঠনিক সম্পাদক আ. রব রাজা।
তারা সবাই বলেন,
“গণঅভ্যুত্থান একটি রাজনৈতিক পরিক্রমার অংশ। ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট শুধু একটি দিন নয়, এটি ইতিহাসের বাঁক ঘোরানো মুহূর্ত, যেখানে জনগণ তাদের অধিকার আদায়ের পথে এক কণ্ঠে আওয়াজ তুলেছিলো। আজ আবারও আমাদের সেই ঐক্য প্রয়োজন, যাতে করে গণতন্ত্রের বিজয় নিশ্চিত করা যায়।”
রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট ও জনসম্পৃক্ততা:
র্যালিতে খাগড়াছড়ি শহরের বিভিন্ন ওয়ার্ড, ইউনিয়ন, ও উপজেলার নেতা-কর্মীরা অংশগ্রহণ করেন। ছাত্রদল, যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল, মহিলা দল ও শ্রমিক দলের কর্মীরাও এই কর্মসূচিতে সরব উপস্থিতি জানান দেন।
আয়োজকরা জানান,
“এই দিবসটি শুধুমাত্র একটি স্মৃতি নয়; বরং এটি বর্তমান রাজনৈতিক সংকটে ছাত্র ও জনতার সম্মিলিত প্রতিরোধের প্রতীক। আজকের বিজয় র্যালি প্রমাণ করে জনগণ গণতন্ত্র চায়, সুশাসন চায়, আর সেই প্রত্যাশা পূরণে বিএনপি নিরন্তর সংগ্রাম চালিয়ে যাবে।”
এদিকে মাঠ পর্যায়ের নেতাকর্মীদের মধ্যে ব্যাপক উদ্দীপনা লক্ষ্য করা যায়। তারা এই কর্মসূচিকে নতুন প্রেরণা হিসেবে দেখছেন। খাগড়াছড়ি শহরের বিভিন্ন সড়কে সাধারণ মানুষও র্যালিটি উৎসাহের সঙ্গে প্রত্যক্ষ করেন।
র্যালি চলাকালীন সময়ে শহরের বিভিন্ন স্থানে “গণতন্ত্র চাই”, “স্বৈরাচার নিপাত যাক”, “জনতার অধিকার চাই”—এমন স্লোগানে মুখর হয়ে ওঠে রাজপথ। কর্মীরা জাতীয় পতাকা, বিএনপির পতাকা ও শহীদদের ছবি নিয়ে র্যালিতে অংশ নেন। এতে করে পুরো আয়োজনটি এক প্রকার গণজাগরণে রূপ নেয়।
সমাবেশ শেষে গণঅভ্যুত্থানে শহীদদের স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয় এবং দেশব্যাপী চলমান আন্দোলনের সফলতা কামনায় দোয়া করা হয়।
নেতৃবৃন্দ কর্মীদের প্রতি আহ্বান জানান—
“আমরা ২০২৪ সালে বিজয় অর্জন করেছি, কিন্তু এই বিজয়কে ধরে রাখতে হলে গণতান্ত্রিক কাঠামো পুনঃপ্রতিষ্ঠা এবং জনগণের ন্যায্য অধিকারের বাস্তবায়ন নিশ্চিত করতে হবে। আগামী দিনে আমাদের লড়াই হবে শান্তিপূর্ণ, কিন্তু অবিচল।”