ঢাকা ০২:১৮ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ৩০ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
সদরপুরে সহকারী শিক্ষা অফিসার ওয়াহিদ খানের বিদায় সংবর্ধনা নেপালের প্রধানমন্ত্রী হলেন সুশীলা কার্কি শৈলকুপায় বেণীপুর স্কুলের ১২০ বছরে ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্প বাংলাদেশ–শ্রীলঙ্কার পর এবার নেপাল নিয়ে দুশ্চিন্তায় ভারত ডাকসুতে বিজয়ীদের অভিনন্দন জানাল পাকিস্তান জামায়াত সব সরকারি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের র‌্যাংকিং করতে হবে : প্রধান উপদেষ্টা পাঁচ ট্রলারসহ ৩০ বাংলাদেশি জেলেকে ধরে নিয়ে গেল আরাকান আর্মি হেলিকপ্টারের দড়িতে ঝুলে পালিয়েছেন নেপালের মন্ত্রীরা যেদিন রাস্তায় নামবো, সেদিন বন্দুকও কিছু করতে পারবে না: কাদের সিদ্দিকী ডাকসু নির্বাচন : ভোটের দিন ঢাবিতে মোতায়েন থাকবে ২০৯৬ পুলিশ সদস্য

তীব্র বিক্ষোভের মুখে ইরানের নৈতিকতা পুলিশকে বিলুপ্ত ঘোষণা

অনলাইন ডেস্ক
  • আপডেট সময় : ১১:০৭:২৩ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ৪ ডিসেম্বর ২০২২
  • / 33

অনলাইন ডেস্ক: হিজাব পরার বিধান লঙ্ঘনের দায়ে মাহসা আমিনীর গ্রেপ্তার ও মৃত্যুর প্রতিবাদে দুই মাসের বেশি সময় ধরে চলমান বিক্ষোভের জেরে নৈতিকতা পুলিশকে ভেঙে দিয়েছে ইরান। ইরানের অ্যাটর্নি জেনারেল মোহাম্মদ জাফর মনতাজেরির বরাত দিয়ে রোববার দেশটির গণমাধ্যমের খবরে বিতর্কিত এই পুলিশ শাখাকে ভেঙে দেওয়ার তথ্য জানানো হয়েছে।

তেহরানে হিজাব না পরার কারণে গত সেপ্টেম্বরের মাঝের দিকে ইরানের নৈতিকতা পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হয়েছিলেন ২২ বছর বয়সী মাহসা আমিনী। এর তিন দিন পর পুলিশি জিম্মায় থাকা অবস্থায় গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন কুর্দি বংশোদ্ভূত এই তরুণী। পরে কোমায় নেওয়া হলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি।

এই তরুণীর মৃত্যুর পর দেশটিতে হিজাববিরোধী আন্দোলন শুরু হয়; যা বর্তমানে সরকারবিরোধী আন্দোলনে রূপ নিয়েছে। এই আন্দোলনে এখন পর্যন্ত ২০০ জন নিহত হয়েছেন বলে দেশটির সরকার স্বীকার করেছে। তবে আন্তর্জাতিক বিভিন্ন মানবাধিকার সংস্থা বলেছে, হিজাববিরোধী আন্দোলনে আইনশৃঙ্খলাবাহিনীর সহিংসতায় ৪০০ জনের বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন।

দেশটির আধা-সরকারি সংবাদ সংস্থা আইএসএনএর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইরানের অ্যাটর্নি জেনারেল মোহাম্মদ জাফর মনতাজেরি বলেছেন, বিচার বিভাগের সাথে নৈতিকতা পুলিশের কোনও সম্পর্ক নেই এবং এই পুলিশকে বিলুপ্ত করা হয়েছে।

তেহরানে ধর্মীয় এক সম্মেলনে একজন অংশগ্রহণকারী ‘কেন নৈতিকতা পুলিশ বাতিল করা হচ্ছে’ জানতে চাইলে অ্যাটর্নি জেনারেল ওই মন্তব্য করেন।

ইরানের নৈতিকতা পুলিশ— যা আনুষ্ঠানিকভাবে গাশত-ই এরশাদ বা ‘গাইডেন্স পেট্রোল’ নামে পরিচিত। দেশটির সাবেক কট্টরপন্থী প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আহমাদিনেজাদের আমলে ‘শালীনতা এবং হিজাবের সংস্কৃতি’ ছড়িয়ে দেওয়ার লক্ষ্যে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল পুলিশের এই শাখা।

দেশটির পুলিশের বিশেষ এই শাখা ২০০৬ সালে প্রথমবারের মতো টহল শুরু করেছিল। নারীদের মাথা ঢেকে রাখার আইন পরিবর্তন করা দরকার কিনা সে বিষয়ে সংসদ এবং বিচার বিভাগ— উভয়ই কাজ করছে বলে মনতাজেরির মন্তব্যের একদিন পর নৈতিকতা পুলিশ বিলুপ্তির ঘোষণা এসেছে।

এর আগে, শনিবার দেশটির প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি টেলিভিশনে দেওয়া ভাষণে বলেন, ইরানের প্রজাতন্ত্র ও ইসলামিক ভিত্তি সাংবিধানিকভাবে প্রতিষ্ঠিত। তবে সংবিধান বাস্তবায়নের পদ্ধতি নমনীয় করা হতে পারে।

১৯৭৯ সালের বিপ্লবের চার বছর পর ইরানে হিজাব বাধ্যতামূলক করা হয়। ওই বিপ্লবের মাধ্যমে মার্কিন-সমর্থিত তৎকালীন ক্ষমতাসীন সরকারকে উৎখাত এবং ইরানে ইসলামি প্রজাতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করা হয়।

ইসলামিক বিপ্লবের পর এবারই প্রথম সবচেয়ে বড় ধরনের চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হয়েছে ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনি নেতৃত্বাধীন দেশটির ক্ষমতাসীন শাসকগোষ্ঠী। ব্যাপক দমনপীড়নের মাধ্যমে ইরানি কর্তৃপক্ষ সরকারবিরোধী এই বিক্ষোভ মোকাবিলার চেষ্টা করছে।

সূত্র: এএফপি।

নতুন প্রজন্মের অনলাইন টিভি

নিউজটি শেয়ার করুন

ট্যাগস :

তীব্র বিক্ষোভের মুখে ইরানের নৈতিকতা পুলিশকে বিলুপ্ত ঘোষণা

আপডেট সময় : ১১:০৭:২৩ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ৪ ডিসেম্বর ২০২২

অনলাইন ডেস্ক: হিজাব পরার বিধান লঙ্ঘনের দায়ে মাহসা আমিনীর গ্রেপ্তার ও মৃত্যুর প্রতিবাদে দুই মাসের বেশি সময় ধরে চলমান বিক্ষোভের জেরে নৈতিকতা পুলিশকে ভেঙে দিয়েছে ইরান। ইরানের অ্যাটর্নি জেনারেল মোহাম্মদ জাফর মনতাজেরির বরাত দিয়ে রোববার দেশটির গণমাধ্যমের খবরে বিতর্কিত এই পুলিশ শাখাকে ভেঙে দেওয়ার তথ্য জানানো হয়েছে।

তেহরানে হিজাব না পরার কারণে গত সেপ্টেম্বরের মাঝের দিকে ইরানের নৈতিকতা পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হয়েছিলেন ২২ বছর বয়সী মাহসা আমিনী। এর তিন দিন পর পুলিশি জিম্মায় থাকা অবস্থায় গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন কুর্দি বংশোদ্ভূত এই তরুণী। পরে কোমায় নেওয়া হলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি।

এই তরুণীর মৃত্যুর পর দেশটিতে হিজাববিরোধী আন্দোলন শুরু হয়; যা বর্তমানে সরকারবিরোধী আন্দোলনে রূপ নিয়েছে। এই আন্দোলনে এখন পর্যন্ত ২০০ জন নিহত হয়েছেন বলে দেশটির সরকার স্বীকার করেছে। তবে আন্তর্জাতিক বিভিন্ন মানবাধিকার সংস্থা বলেছে, হিজাববিরোধী আন্দোলনে আইনশৃঙ্খলাবাহিনীর সহিংসতায় ৪০০ জনের বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন।

দেশটির আধা-সরকারি সংবাদ সংস্থা আইএসএনএর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইরানের অ্যাটর্নি জেনারেল মোহাম্মদ জাফর মনতাজেরি বলেছেন, বিচার বিভাগের সাথে নৈতিকতা পুলিশের কোনও সম্পর্ক নেই এবং এই পুলিশকে বিলুপ্ত করা হয়েছে।

তেহরানে ধর্মীয় এক সম্মেলনে একজন অংশগ্রহণকারী ‘কেন নৈতিকতা পুলিশ বাতিল করা হচ্ছে’ জানতে চাইলে অ্যাটর্নি জেনারেল ওই মন্তব্য করেন।

ইরানের নৈতিকতা পুলিশ— যা আনুষ্ঠানিকভাবে গাশত-ই এরশাদ বা ‘গাইডেন্স পেট্রোল’ নামে পরিচিত। দেশটির সাবেক কট্টরপন্থী প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আহমাদিনেজাদের আমলে ‘শালীনতা এবং হিজাবের সংস্কৃতি’ ছড়িয়ে দেওয়ার লক্ষ্যে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল পুলিশের এই শাখা।

দেশটির পুলিশের বিশেষ এই শাখা ২০০৬ সালে প্রথমবারের মতো টহল শুরু করেছিল। নারীদের মাথা ঢেকে রাখার আইন পরিবর্তন করা দরকার কিনা সে বিষয়ে সংসদ এবং বিচার বিভাগ— উভয়ই কাজ করছে বলে মনতাজেরির মন্তব্যের একদিন পর নৈতিকতা পুলিশ বিলুপ্তির ঘোষণা এসেছে।

এর আগে, শনিবার দেশটির প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি টেলিভিশনে দেওয়া ভাষণে বলেন, ইরানের প্রজাতন্ত্র ও ইসলামিক ভিত্তি সাংবিধানিকভাবে প্রতিষ্ঠিত। তবে সংবিধান বাস্তবায়নের পদ্ধতি নমনীয় করা হতে পারে।

১৯৭৯ সালের বিপ্লবের চার বছর পর ইরানে হিজাব বাধ্যতামূলক করা হয়। ওই বিপ্লবের মাধ্যমে মার্কিন-সমর্থিত তৎকালীন ক্ষমতাসীন সরকারকে উৎখাত এবং ইরানে ইসলামি প্রজাতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করা হয়।

ইসলামিক বিপ্লবের পর এবারই প্রথম সবচেয়ে বড় ধরনের চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হয়েছে ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনি নেতৃত্বাধীন দেশটির ক্ষমতাসীন শাসকগোষ্ঠী। ব্যাপক দমনপীড়নের মাধ্যমে ইরানি কর্তৃপক্ষ সরকারবিরোধী এই বিক্ষোভ মোকাবিলার চেষ্টা করছে।

সূত্র: এএফপি।