ঢাকা ০৮:৪৯ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ০৬ নভেম্বর ২০২৫, ২২ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

দুই কর্তার দূর্নীতির বলি বছরে ১৮জন শিক্ষক, দেখার কেউ নেই!

অনলাইন ডেস্ক
  • আপডেট সময় : ০৩:০৬:১৫ অপরাহ্ন, রবিবার, ১০ জানুয়ারী ২০২১
  • / 78

সোনারগাঁও (নারায়ণগঞ্জ) সংবাদদাতাঃ
বাণিজ্যিক নিয়মনীতি অনুসরণ করে পরিচালিত বেসরকারী প্রতিষ্ঠান সোনারগাঁ স্টার ফ্লাওয়ার এসআর স্কুল ও কলেজ সরকারি নির্দেশনা ভাঙ্গাটাই নিয়মে পরিণত করে ফেলেছে। ২০১৭ সাল থেকে এই পর্যন্ত সোনারগাঁও সরকারি কলেজের প্রভাষক শাহ আলী ও মেঘনা শিল্পনগরী উচ্চ বিদ্যালয়ের সিনিয়র শিক্ষক রফিকুল ইসলামের স্বেচ্ছাচারিতা ও দূর্নীতির বিরুদ্ধে কথা বলে ন্যায় বিচার না পাওয়ায় স্ব-ইচ্ছায় ৭জন অধ্যক্ষ শিক্ষক চাকরি ছেড়ে চলে গেছেন।
এ ছাড়াও গত ২০২০ সালে এক বছরে ১৮জন শিক্ষক স্ব-ইচ্ছায় চাকুরী ছেড়ে চলে যাওয়ার কারণে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি দিন দিন শিক্ষক শূন্য হয়ে যাচ্ছে। এতে করে শিক্ষার মান নিয়ে শিক্ষার্থীদের অভিবাবকরা চিন্তিত। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটির সাবেক একাধিক শিক্ষক জানান, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটির পরিচালকেরা করোনা কালিন শিক্ষকদেরকে নামে মাত্র সামান্য কিছু বেতন হিসেবে টাকা দেয়। অথচ প্রতিষ্ঠানটির পরিচালকেরা শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে মাসিক বেতন পুরো টাকা আদায় করেছেন। এছাড়াও অনেকের সঙ্গে দুর্ব্যবহার কারণে এক এক করে এক বছরে ১৮জন শিক্ষক চাকুরি ছেড়ে চলে যান।
চকটদারি বিজ্ঞপ্তি প্রচার প্রচারণায় করে শিক্ষার্থীদের অভিভাভকদেরকে বোকা বানানোর পাশাপাশি অতিরিক্ত অর্থ নিয়ে শিক্ষক নিয়োগের অভিযোগ ও রয়েছে স্কুল ও কলেজের পরিচালকদের বিরুদ্ধে। সোনারগাঁও উপজেলার পিরোজপুর ইউনিয়নের মেঘনা শিল্পনগরীতে গড়ে উঠা সোনারগাঁ স্টার ফ্লাওয়ার এসআর হাই স্কুলের বিরুদ্ধে গত এসএসসি-২০২০ পরীক্ষাকে কেন্দ্র করে পরীক্ষার্থীদের ফরম ফিলাপে এ অনিয়ম হয়েছে বলে শতাধিক অভিযোগ।

সরকারী নির্দেশনা অমান্য করে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত অর্থ আদায় ও বাড়ী বাড়ী গিয়ে পরিক্ষা নেয়ার অভিযোগ উঠেছে উপজেলার মেঘনা শিল্পাঞ্চলের লিটল ফ্লাওয়ার কিন্ডার গার্টেন ও এসআর হাই স্কুল কলেজ কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে। করোনা কালে তাদের এহেন স্বেচ্চাচারিতায় বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও শিক্ষার্থীদের অভিভাবকরা। জানাগেছে, বাংলাদেশে করোনা প্রাদূর্ভাব শুরু হওয়ার পর থেকে গত ১৭ মার্চ থেকে দেশের সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষনা করা হয়। এরপর করোনা ভাইরাসের প্রাদূর্ভাব না কমায় এখনো শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো খোলার অনুমতি দেয়নি শিক্ষা মন্ত্রণালয়।
করোনার প্রাদূর্ভাব না কমা পর্যন্ত সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান অনিদিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষনা করা হয়।
সোনারগাঁ স্টার ফ্লাওয়ার এসআর স্কুলের পরিচালক শাহ আলী ও মো. রফিকুল ইসলাম সকল অভিযোগ অস্বীকার করে জানান, আমরা সরকার নির্ধারিত ফি’র বেশী নেইনি। তবে, কোচিং ও উন্নয়নসহ অন্যান্য খাতে পরীক্ষার্থীদের কাছ থেকে পাওনা টাকা আদায় করা হচ্ছে।
এ ব্যাপারে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা নিখিল চন্দ্র জানান, বাড়িতে গিয়ে পরিক্ষা নেয়া ও বকেয়া বেতন আদায় সরকারী ভাবে সর্ম্পূন নিষেধ। তারপর যদি কোন কেউ এ সিদ্ধান্ত অমান্য করে তার সেই সকল প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার জন্য উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের অবহিত করা হবে।

এ ব্যাপারে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম বলেন, বেসরকারী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গুলো কোন প্রকার অনিয়ম করলে, তাদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া হবে এবং শিক্ষক নিয়োগের বিষয়টি বেসরকারী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পরিচালকদের ব্যাপার। তবে যদি কোন শিক্ষকদের সঙ্গে বেসরকারী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পরিচালকরা কোন অনিয়ম করেছে কি না আমার জানা নেই। যদি কোন শিক্ষক আমাদের কাছে অভিযোগ করেন, তাহলে প্রতিষ্ঠানের পরিচালকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

এদিকে সোনারগাঁ স্টার ফ্লাওয়ার এসআর স্কুল ও কলেজের একাধিক শিক্ষকদের সঙ্গে কথা হলে তারা জানান, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটির শিক্ষকদের মধ্যে গ্রুপিং রয়েছে। এছাড়া শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পরিচালক শাহ আলী ও রফিকুল ইসলাম অনেক সময়ই বোর্ড মিটিংয়ে শিক্ষকদের সঙ্গে খারাপ আচরণ করার কারণে অনেক শিক্ষকই চাকুরী ছেড়ে চলে গেছে।
বর্তমানে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি ১১জন শিক্ষক নিয়োগের জন্য পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি দিয়েছে।

নতুন প্রজন্মের অনলাইন টিভি

নিউজটি শেয়ার করুন

ট্যাগস :

দুই কর্তার দূর্নীতির বলি বছরে ১৮জন শিক্ষক, দেখার কেউ নেই!

আপডেট সময় : ০৩:০৬:১৫ অপরাহ্ন, রবিবার, ১০ জানুয়ারী ২০২১

সোনারগাঁও (নারায়ণগঞ্জ) সংবাদদাতাঃ
বাণিজ্যিক নিয়মনীতি অনুসরণ করে পরিচালিত বেসরকারী প্রতিষ্ঠান সোনারগাঁ স্টার ফ্লাওয়ার এসআর স্কুল ও কলেজ সরকারি নির্দেশনা ভাঙ্গাটাই নিয়মে পরিণত করে ফেলেছে। ২০১৭ সাল থেকে এই পর্যন্ত সোনারগাঁও সরকারি কলেজের প্রভাষক শাহ আলী ও মেঘনা শিল্পনগরী উচ্চ বিদ্যালয়ের সিনিয়র শিক্ষক রফিকুল ইসলামের স্বেচ্ছাচারিতা ও দূর্নীতির বিরুদ্ধে কথা বলে ন্যায় বিচার না পাওয়ায় স্ব-ইচ্ছায় ৭জন অধ্যক্ষ শিক্ষক চাকরি ছেড়ে চলে গেছেন।
এ ছাড়াও গত ২০২০ সালে এক বছরে ১৮জন শিক্ষক স্ব-ইচ্ছায় চাকুরী ছেড়ে চলে যাওয়ার কারণে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি দিন দিন শিক্ষক শূন্য হয়ে যাচ্ছে। এতে করে শিক্ষার মান নিয়ে শিক্ষার্থীদের অভিবাবকরা চিন্তিত। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটির সাবেক একাধিক শিক্ষক জানান, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটির পরিচালকেরা করোনা কালিন শিক্ষকদেরকে নামে মাত্র সামান্য কিছু বেতন হিসেবে টাকা দেয়। অথচ প্রতিষ্ঠানটির পরিচালকেরা শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে মাসিক বেতন পুরো টাকা আদায় করেছেন। এছাড়াও অনেকের সঙ্গে দুর্ব্যবহার কারণে এক এক করে এক বছরে ১৮জন শিক্ষক চাকুরি ছেড়ে চলে যান।
চকটদারি বিজ্ঞপ্তি প্রচার প্রচারণায় করে শিক্ষার্থীদের অভিভাভকদেরকে বোকা বানানোর পাশাপাশি অতিরিক্ত অর্থ নিয়ে শিক্ষক নিয়োগের অভিযোগ ও রয়েছে স্কুল ও কলেজের পরিচালকদের বিরুদ্ধে। সোনারগাঁও উপজেলার পিরোজপুর ইউনিয়নের মেঘনা শিল্পনগরীতে গড়ে উঠা সোনারগাঁ স্টার ফ্লাওয়ার এসআর হাই স্কুলের বিরুদ্ধে গত এসএসসি-২০২০ পরীক্ষাকে কেন্দ্র করে পরীক্ষার্থীদের ফরম ফিলাপে এ অনিয়ম হয়েছে বলে শতাধিক অভিযোগ।

সরকারী নির্দেশনা অমান্য করে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত অর্থ আদায় ও বাড়ী বাড়ী গিয়ে পরিক্ষা নেয়ার অভিযোগ উঠেছে উপজেলার মেঘনা শিল্পাঞ্চলের লিটল ফ্লাওয়ার কিন্ডার গার্টেন ও এসআর হাই স্কুল কলেজ কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে। করোনা কালে তাদের এহেন স্বেচ্চাচারিতায় বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও শিক্ষার্থীদের অভিভাবকরা। জানাগেছে, বাংলাদেশে করোনা প্রাদূর্ভাব শুরু হওয়ার পর থেকে গত ১৭ মার্চ থেকে দেশের সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষনা করা হয়। এরপর করোনা ভাইরাসের প্রাদূর্ভাব না কমায় এখনো শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো খোলার অনুমতি দেয়নি শিক্ষা মন্ত্রণালয়।
করোনার প্রাদূর্ভাব না কমা পর্যন্ত সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান অনিদিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষনা করা হয়।
সোনারগাঁ স্টার ফ্লাওয়ার এসআর স্কুলের পরিচালক শাহ আলী ও মো. রফিকুল ইসলাম সকল অভিযোগ অস্বীকার করে জানান, আমরা সরকার নির্ধারিত ফি’র বেশী নেইনি। তবে, কোচিং ও উন্নয়নসহ অন্যান্য খাতে পরীক্ষার্থীদের কাছ থেকে পাওনা টাকা আদায় করা হচ্ছে।
এ ব্যাপারে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা নিখিল চন্দ্র জানান, বাড়িতে গিয়ে পরিক্ষা নেয়া ও বকেয়া বেতন আদায় সরকারী ভাবে সর্ম্পূন নিষেধ। তারপর যদি কোন কেউ এ সিদ্ধান্ত অমান্য করে তার সেই সকল প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার জন্য উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের অবহিত করা হবে।

এ ব্যাপারে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম বলেন, বেসরকারী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গুলো কোন প্রকার অনিয়ম করলে, তাদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া হবে এবং শিক্ষক নিয়োগের বিষয়টি বেসরকারী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পরিচালকদের ব্যাপার। তবে যদি কোন শিক্ষকদের সঙ্গে বেসরকারী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পরিচালকরা কোন অনিয়ম করেছে কি না আমার জানা নেই। যদি কোন শিক্ষক আমাদের কাছে অভিযোগ করেন, তাহলে প্রতিষ্ঠানের পরিচালকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

এদিকে সোনারগাঁ স্টার ফ্লাওয়ার এসআর স্কুল ও কলেজের একাধিক শিক্ষকদের সঙ্গে কথা হলে তারা জানান, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটির শিক্ষকদের মধ্যে গ্রুপিং রয়েছে। এছাড়া শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পরিচালক শাহ আলী ও রফিকুল ইসলাম অনেক সময়ই বোর্ড মিটিংয়ে শিক্ষকদের সঙ্গে খারাপ আচরণ করার কারণে অনেক শিক্ষকই চাকুরী ছেড়ে চলে গেছে।
বর্তমানে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি ১১জন শিক্ষক নিয়োগের জন্য পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি দিয়েছে।