ঢাকা ১০:৪৫ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৩০ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৬ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

দেশের স্বার্থে খালেদা জিয়া যেসব পদক্ষেপ নিয়েছিলেন

অনলাইন ডেস্ক
  • আপডেট সময় : ০৮:৫০:০৯ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৩০ ডিসেম্বর ২০২৫
  • / 6

তিনবারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া আজ মঙ্গলবার (৩০ ডিসেম্বর) ভোরে মৃত্যুবরণ করেছেন। মৃত্যুর পর ভারতীয় সংবাদমাধ্যমগুলো তাকে ভারতবিরোধী বাংলাদেশি প্রধানমন্ত্রী হিসেবে অভিহিত করছে। তিনি বাংলাদেশের স্বার্থ রক্ষায় ভারতের বিরুদ্ধে কোন কোন পদক্ষেপ নিয়েছেন সেগুলো তুলে ধরছে তারা।

সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়া টুডে জানিয়েছে, খালেদা জিয়া তিনবার বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী হলেও তিনি সবচেয়ে বড় প্রতিবেশী দেশ ভারতে গিয়েছিলেন মাত্র দুইবার।

ইন্ডিয়া টুডে বলেছে, সাবেক প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান নিহত হওয়ার পর বিএনপির দায়িত্ব নেন খালেদা জিয়া। এরপর তিনি বিএনপিকে শুধুমাত্র শক্তিশালীই করেননি, তিনবার দেশের প্রধানমন্ত্রী হয়েছেন।

এরমধ্যে প্রথমবার ১৯৯১ সালে বাংলাদেশের প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী হয়ে ইতিহাস গড়েন তিনি। এরপর ১৯৯৬ সালে দ্বিতীয়বার প্রধানমন্ত্রী হলেও এটির মেয়াদ ছিল খুবই কম। সর্বশেষ ২০০১ সালে তৃতীয়বার প্রধানমন্ত্রী হন এবং ওই সময়টাতেই সবচেয়ে বেশি শক্তিশালী ছিলেন তিনি।

ভারতের বিরুদ্ধে যেসব অবস্থান নিয়েছিলেন খালেদা জিয়া

ইন্ডিয়া টুডে বলেছে, খালেদা জিয়ার শাসনামলে ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক ছিল উত্তপ্ত। তিনি ভারতের বদলে চীন ও মুসলিম দেশের সঙ্গে ভালো সম্পর্ক রাখতেন।

প্রথমবার প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর ভারতের বদলে তিনি চীন ও ইসলামিক বিশ্বের দেশগুলোর সঙ্গে সুসম্পর্ক গড়ার দিকে মনোযোগ দেন।

এছাড়া গঙ্গার পানির ন্যায্য হিস্যা নিয়ে তিনি ভারতের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নেন। খালেদা জিয়া সবসময় বলতেন ভারতের ফারাক্কা বাঁধের কারণে বাংলাদেশ তার প্রাপ্য গঙ্গার পানি পাচ্ছে না। কলকাতা বন্দরে পানি সরবরাহ নিরবিচ্ছিন্ন রাখতে ফারাক্কা বাঁধ দিয়ে হুগলি নদীতে গঙ্গার পানির প্রবাহ ঘুরিয়ে দেয় ভারত।

গঙ্গার পানির ন্যায্য হিস্যা পেতে তিনি জাতিসংঘ এবং ইসলামিক দেশগুলোর কাছে এ ব্যাপারে বাংলাদেশের অবস্থান উত্থাপন করতেন এবং ভারতকে চাপ দিতে বলতেন।

১৯৯২ সালের প্রথম ভারত সফরে তাকে তৎকালীন ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরসিমা রাও বলেন, অনেক বাংলাদেশি অবৈধভাবে ভারতে বাস করেন। জবাবে খালেদা জিয়া সরাসরি বলেছিলেন, “ভারতের বাঙ্গালিরাও বাংলা বোঝেন, বাংলায় কথা বলেন— যার অর্থ এই নয় যে তারা বাংলাদেশি।”

২০০১ সালে জামায়াতে ইসলামীর সঙ্গে জোট করে তৃতীয়বার তিনি যখন ক্ষমতায় আসলেন তখন ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক সবচেয়ে খারাপ হয় বলে জানিয়েছে ইন্ডিয়া টুডে।

ওই মেয়াদে ২০০২ সালে ভারতকে বাদ দিয়ে চীনের সঙ্গে সামরিক চুক্তি করেন খালেদা জিয়া। ওই চুক্তির ফলে বাংলাদেশের সশস্ত্র বাহিনীর জন্য ট্যাংক, যুদ্ধজাহাজ এবং অন্যান্য সামরিক সরঞ্জাম সরবরাহের দায়িত্ব পায় চীন।

এছাড়া বাংলাদেশ ভূখণ্ডের ওপর দিয়ে ভারতকে ট্রানজিট সুবিধা দেওয়ার তীব্র বিরোধী ছিলেন খালেদা জিয়া। তিনি বলেছিলেন, টোল ছাড়া ভারতীয় ট্রাক প্রবেশের যে সুযোগ ভারত চায় এটি বাংলাদেশের জন্য ‘দাসত্বের’ সমান।

নিজের শাসনামলে বাংলাদেশের ভূখণ্ড দিয়ে ভারতকে তাদের উত্তরপূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যগুলোতে পণ্য সরবরাহের জন্য তিনি কোনো ট্রানজিট সুবিধা দেননি। খালেদা জিয়া বলেছিলেন, ভারতকে এমন সুবিধা দিলে এটি বাংলাদেশের নিরাপত্তাকে হুমকিতে ফেলে দেবে।

সূত্র: ইন্ডিয়া টুডে

নতুন প্রজন্মের অনলাইন টিভি

নিউজটি শেয়ার করুন

ট্যাগস :

দেশের স্বার্থে খালেদা জিয়া যেসব পদক্ষেপ নিয়েছিলেন

আপডেট সময় : ০৮:৫০:০৯ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৩০ ডিসেম্বর ২০২৫

তিনবারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া আজ মঙ্গলবার (৩০ ডিসেম্বর) ভোরে মৃত্যুবরণ করেছেন। মৃত্যুর পর ভারতীয় সংবাদমাধ্যমগুলো তাকে ভারতবিরোধী বাংলাদেশি প্রধানমন্ত্রী হিসেবে অভিহিত করছে। তিনি বাংলাদেশের স্বার্থ রক্ষায় ভারতের বিরুদ্ধে কোন কোন পদক্ষেপ নিয়েছেন সেগুলো তুলে ধরছে তারা।

সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়া টুডে জানিয়েছে, খালেদা জিয়া তিনবার বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী হলেও তিনি সবচেয়ে বড় প্রতিবেশী দেশ ভারতে গিয়েছিলেন মাত্র দুইবার।

ইন্ডিয়া টুডে বলেছে, সাবেক প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান নিহত হওয়ার পর বিএনপির দায়িত্ব নেন খালেদা জিয়া। এরপর তিনি বিএনপিকে শুধুমাত্র শক্তিশালীই করেননি, তিনবার দেশের প্রধানমন্ত্রী হয়েছেন।

এরমধ্যে প্রথমবার ১৯৯১ সালে বাংলাদেশের প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী হয়ে ইতিহাস গড়েন তিনি। এরপর ১৯৯৬ সালে দ্বিতীয়বার প্রধানমন্ত্রী হলেও এটির মেয়াদ ছিল খুবই কম। সর্বশেষ ২০০১ সালে তৃতীয়বার প্রধানমন্ত্রী হন এবং ওই সময়টাতেই সবচেয়ে বেশি শক্তিশালী ছিলেন তিনি।

ভারতের বিরুদ্ধে যেসব অবস্থান নিয়েছিলেন খালেদা জিয়া

ইন্ডিয়া টুডে বলেছে, খালেদা জিয়ার শাসনামলে ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক ছিল উত্তপ্ত। তিনি ভারতের বদলে চীন ও মুসলিম দেশের সঙ্গে ভালো সম্পর্ক রাখতেন।

প্রথমবার প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর ভারতের বদলে তিনি চীন ও ইসলামিক বিশ্বের দেশগুলোর সঙ্গে সুসম্পর্ক গড়ার দিকে মনোযোগ দেন।

এছাড়া গঙ্গার পানির ন্যায্য হিস্যা নিয়ে তিনি ভারতের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নেন। খালেদা জিয়া সবসময় বলতেন ভারতের ফারাক্কা বাঁধের কারণে বাংলাদেশ তার প্রাপ্য গঙ্গার পানি পাচ্ছে না। কলকাতা বন্দরে পানি সরবরাহ নিরবিচ্ছিন্ন রাখতে ফারাক্কা বাঁধ দিয়ে হুগলি নদীতে গঙ্গার পানির প্রবাহ ঘুরিয়ে দেয় ভারত।

গঙ্গার পানির ন্যায্য হিস্যা পেতে তিনি জাতিসংঘ এবং ইসলামিক দেশগুলোর কাছে এ ব্যাপারে বাংলাদেশের অবস্থান উত্থাপন করতেন এবং ভারতকে চাপ দিতে বলতেন।

১৯৯২ সালের প্রথম ভারত সফরে তাকে তৎকালীন ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরসিমা রাও বলেন, অনেক বাংলাদেশি অবৈধভাবে ভারতে বাস করেন। জবাবে খালেদা জিয়া সরাসরি বলেছিলেন, “ভারতের বাঙ্গালিরাও বাংলা বোঝেন, বাংলায় কথা বলেন— যার অর্থ এই নয় যে তারা বাংলাদেশি।”

২০০১ সালে জামায়াতে ইসলামীর সঙ্গে জোট করে তৃতীয়বার তিনি যখন ক্ষমতায় আসলেন তখন ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক সবচেয়ে খারাপ হয় বলে জানিয়েছে ইন্ডিয়া টুডে।

ওই মেয়াদে ২০০২ সালে ভারতকে বাদ দিয়ে চীনের সঙ্গে সামরিক চুক্তি করেন খালেদা জিয়া। ওই চুক্তির ফলে বাংলাদেশের সশস্ত্র বাহিনীর জন্য ট্যাংক, যুদ্ধজাহাজ এবং অন্যান্য সামরিক সরঞ্জাম সরবরাহের দায়িত্ব পায় চীন।

এছাড়া বাংলাদেশ ভূখণ্ডের ওপর দিয়ে ভারতকে ট্রানজিট সুবিধা দেওয়ার তীব্র বিরোধী ছিলেন খালেদা জিয়া। তিনি বলেছিলেন, টোল ছাড়া ভারতীয় ট্রাক প্রবেশের যে সুযোগ ভারত চায় এটি বাংলাদেশের জন্য ‘দাসত্বের’ সমান।

নিজের শাসনামলে বাংলাদেশের ভূখণ্ড দিয়ে ভারতকে তাদের উত্তরপূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যগুলোতে পণ্য সরবরাহের জন্য তিনি কোনো ট্রানজিট সুবিধা দেননি। খালেদা জিয়া বলেছিলেন, ভারতকে এমন সুবিধা দিলে এটি বাংলাদেশের নিরাপত্তাকে হুমকিতে ফেলে দেবে।

সূত্র: ইন্ডিয়া টুডে