ঢাকা ১১:১৭ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ০৪ জুন ২০২৫, ২১ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

নবাবগঞ্জে পূর্ব শত্রুতার জেরে মোখলেছকে পিটিয়ে হত্যা, হামলায় আহত ৭ জন

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • আপডেট সময় : ০৫:০৪:৫৮ অপরাহ্ন, শনিবার, ৩১ মে ২০২৫ ৮ বার পড়া হয়েছে

 

ঢাকা জেলার নবাবগঞ্জ থানার নয়াকান্দা গ্রামে পূর্ব শত্রুতার জেরে মোখলেছ নামের এক ব্যক্তিকে দেশীয় অস্ত্র দিয়ে নির্মমভাবে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে। ঘটনাটি ঘটে গত রবিবার (১১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫) বিকাল আনুমানিক ৪টায়।

প্রত্যক্ষদর্শীদের ভাষ্যমতে, স্থানীয় প্রভাবশালী আওয়ামী লীগপন্থী চিহ্নিত সন্ত্রাসী ও ভূমিদস্যু মোজাম্মেল বিল্লাল এবং তার সহযোগী রাজিব, রাসেল, তানভীর, সোহরাবসহ আরও কয়েকজন মিলে মোখলেছকে লোহার রড ও হাতুড়ি দিয়ে এলোপাথাড়ি মারধর করে। পরে তাকে গুরুতর আহত অবস্থায় ফেলে রেখে পালিয়ে যায় তারা।

জানা গেছে, একটি মোটরসাইকেল চাওয়াকে কেন্দ্র করে শুরু হওয়া কথাকাটাকাটির একপর্যায়ে এই নৃশংস হামলার ঘটনা ঘটে। নিহত মোখলেছের স্ত্রী নবাবগঞ্জ থানায় মামলা দায়ের করেছেন। মামলা নম্বর ১২, তারিখ ১২/০২/২০২৫, ধারা ১৪৩/৩২৩/৩২৪/৩২৫/৩২৬/৩০৭/৩০২/৫০৬/১১৪/৩৪ পেনাল কোডে মামলা রুজু হয়। মামলাটি বর্তমানে তদন্তাধীন রয়েছে।

এই হত্যাকাণ্ডের পরেও থেমে থাকেনি হামলাকারীরা। জামিনে মুক্ত হয়ে গত ২৫ মে ২০২৫, বিকাল ৪:৩০ মিনিটে ৭-৮টি মোটরসাইকেলযোগে নয়াকান্দা গ্রামে এসে পুনরায় হামলা চালায় অভিযুক্তরা। তারা লাঠি, লোহার পাইপ, দা, চাপাতি ও চাইনিজ কুড়ালসহ দেশীয় অস্ত্র নিয়ে এমদাদুল দেওয়ান নামের যুবককে হত্যার উদ্দেশ্যে মারধর করে। তার পিঠে কুড়ালের কোপে রক্তাক্ত জখম হয় এবং মাথায় লাঠির আঘাতে মারাত্মক আহত হন তিনি।

এ সময় আত্মরক্ষার জন্য আহতরা বাড়ির দিকে পালিয়ে গেলে সন্ত্রাসীরা পেছন পেছন তাড়া করে বাড়ির সামনে হানা দেয়। বাধা দিতে গেলে খালেক দেওয়ান, মাইনুদ্দিন দেওয়ান, মহাব দেওয়ান, ইয়াছিন দেওয়ান, নাজমা বেগম ও রুমান আলীসহ আরও কয়েকজন হামলার শিকার হন।

মাইনুদ্দিন দেওয়ানকে মাথায় কুড়াল দিয়ে কোপানো হয় এবং লোহার রড দিয়ে তার শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাত করা হয়। খালেক দেওয়ানকে পেটের বাম পাশে কোপ দিয়ে গুরুতর আহত করা হয়। হামলায় নাজমা বেগমের গলায় থাকা এক ভরি ওজনের স্বর্ণের চেইন (মূল্য আনুমানিক ১,৬০,০০০ টাকা) ছিনিয়ে নেওয়া হয় এবং একটি সুজুকি জিক্সার মোটরসাইকেল ভাংচুর করে প্রায় ১,০০,০০০ টাকার ক্ষতিসাধন করা হয়।

প্রাণভয়ে স্থানীয়রা এগিয়ে এলে হামলাকারীরা প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে পালিয়ে যায়। আহতদের মধ্যে জাবেদ দেওয়ান, মহাব দেওয়ান, মাইনুদ্দিন দেওয়ানকে স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। খালেক দেওয়ানের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। অন্য আহতরা নবাবগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

এ ঘটনায় এলাকায় চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে। পুলিশ জানিয়েছে, তদন্ত শেষে দোষীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।


📌 উল্লেখযোগ্য বিষয়:

  • পূর্ব শত্রুতা ও রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে নির্মম হত্যাকাণ্ড

  • একাধিক ব্যক্তি গুরুতর আহত

  • স্বর্ণালংকার ও সম্পত্তির ক্ষয়ক্ষতি

  • এলাকায় চরম আতঙ্ক

নতুন প্রজন্মের অনলাইন টিভি

নিউজটি শেয়ার করুন

ট্যাগস :

নবাবগঞ্জে পূর্ব শত্রুতার জেরে মোখলেছকে পিটিয়ে হত্যা, হামলায় আহত ৭ জন

আপডেট সময় : ০৫:০৪:৫৮ অপরাহ্ন, শনিবার, ৩১ মে ২০২৫

 

ঢাকা জেলার নবাবগঞ্জ থানার নয়াকান্দা গ্রামে পূর্ব শত্রুতার জেরে মোখলেছ নামের এক ব্যক্তিকে দেশীয় অস্ত্র দিয়ে নির্মমভাবে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে। ঘটনাটি ঘটে গত রবিবার (১১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫) বিকাল আনুমানিক ৪টায়।

প্রত্যক্ষদর্শীদের ভাষ্যমতে, স্থানীয় প্রভাবশালী আওয়ামী লীগপন্থী চিহ্নিত সন্ত্রাসী ও ভূমিদস্যু মোজাম্মেল বিল্লাল এবং তার সহযোগী রাজিব, রাসেল, তানভীর, সোহরাবসহ আরও কয়েকজন মিলে মোখলেছকে লোহার রড ও হাতুড়ি দিয়ে এলোপাথাড়ি মারধর করে। পরে তাকে গুরুতর আহত অবস্থায় ফেলে রেখে পালিয়ে যায় তারা।

জানা গেছে, একটি মোটরসাইকেল চাওয়াকে কেন্দ্র করে শুরু হওয়া কথাকাটাকাটির একপর্যায়ে এই নৃশংস হামলার ঘটনা ঘটে। নিহত মোখলেছের স্ত্রী নবাবগঞ্জ থানায় মামলা দায়ের করেছেন। মামলা নম্বর ১২, তারিখ ১২/০২/২০২৫, ধারা ১৪৩/৩২৩/৩২৪/৩২৫/৩২৬/৩০৭/৩০২/৫০৬/১১৪/৩৪ পেনাল কোডে মামলা রুজু হয়। মামলাটি বর্তমানে তদন্তাধীন রয়েছে।

এই হত্যাকাণ্ডের পরেও থেমে থাকেনি হামলাকারীরা। জামিনে মুক্ত হয়ে গত ২৫ মে ২০২৫, বিকাল ৪:৩০ মিনিটে ৭-৮টি মোটরসাইকেলযোগে নয়াকান্দা গ্রামে এসে পুনরায় হামলা চালায় অভিযুক্তরা। তারা লাঠি, লোহার পাইপ, দা, চাপাতি ও চাইনিজ কুড়ালসহ দেশীয় অস্ত্র নিয়ে এমদাদুল দেওয়ান নামের যুবককে হত্যার উদ্দেশ্যে মারধর করে। তার পিঠে কুড়ালের কোপে রক্তাক্ত জখম হয় এবং মাথায় লাঠির আঘাতে মারাত্মক আহত হন তিনি।

এ সময় আত্মরক্ষার জন্য আহতরা বাড়ির দিকে পালিয়ে গেলে সন্ত্রাসীরা পেছন পেছন তাড়া করে বাড়ির সামনে হানা দেয়। বাধা দিতে গেলে খালেক দেওয়ান, মাইনুদ্দিন দেওয়ান, মহাব দেওয়ান, ইয়াছিন দেওয়ান, নাজমা বেগম ও রুমান আলীসহ আরও কয়েকজন হামলার শিকার হন।

মাইনুদ্দিন দেওয়ানকে মাথায় কুড়াল দিয়ে কোপানো হয় এবং লোহার রড দিয়ে তার শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাত করা হয়। খালেক দেওয়ানকে পেটের বাম পাশে কোপ দিয়ে গুরুতর আহত করা হয়। হামলায় নাজমা বেগমের গলায় থাকা এক ভরি ওজনের স্বর্ণের চেইন (মূল্য আনুমানিক ১,৬০,০০০ টাকা) ছিনিয়ে নেওয়া হয় এবং একটি সুজুকি জিক্সার মোটরসাইকেল ভাংচুর করে প্রায় ১,০০,০০০ টাকার ক্ষতিসাধন করা হয়।

প্রাণভয়ে স্থানীয়রা এগিয়ে এলে হামলাকারীরা প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে পালিয়ে যায়। আহতদের মধ্যে জাবেদ দেওয়ান, মহাব দেওয়ান, মাইনুদ্দিন দেওয়ানকে স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। খালেক দেওয়ানের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। অন্য আহতরা নবাবগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

এ ঘটনায় এলাকায় চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে। পুলিশ জানিয়েছে, তদন্ত শেষে দোষীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।


📌 উল্লেখযোগ্য বিষয়:

  • পূর্ব শত্রুতা ও রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে নির্মম হত্যাকাণ্ড

  • একাধিক ব্যক্তি গুরুতর আহত

  • স্বর্ণালংকার ও সম্পত্তির ক্ষয়ক্ষতি

  • এলাকায় চরম আতঙ্ক