ঢাকা ১২:০০ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৫, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

নির্বাচিত সরকার যে সিদ্ধান্ত নিতে পারে, অন্তর্বর্তীও তা পারবে

অনলাইন ডেস্ক
  • আপডেট সময় : ০৯:৪৭:১১ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৫
  • / 6

অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী এবং মন্ত্রিপরিষদ যে কাজ করতে পারেন, সংবিধান অনুযায়ী অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা এবং উপদেষ্টারা তা করতে পারেন। নির্বাচিত রাজনৈতিক সরকার যেসব সিদ্ধান্ত নিতে পারে, অন্তর্বর্তী সরকারও একই সিদ্ধান্ত নিতে পারে।

মঙ্গলবার (২৫ নভেম্বর) চট্রগ্রাম বন্দরের পরিচালনা নিয়ে রুল শুনানির পর অ্যাটর্নি জেনারেল কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।

বন্দরের নিউমুরিং কনটেইনার টার্মিনাল (এনসিটি) পরিচালনায় কর্তৃপক্ষের বিদেশি কোম্পানির সঙ্গে চুক্তি প্রসঙ্গে অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, ‘রিট আবেদনকারী পক্ষের দাবি, এই ধরনের সিদ্ধান্ত নিতে হলে পিপিপি আইনের ৭ ধারার অধীনে প্রধানমন্ত্রী এবং মন্ত্রিপরিষদ থাকতে হবে। যেহেতু প্রধানমন্ত্রী এবং মন্ত্রিপরিষদ নেই, সেই কারণে এনসিটির ক্ষেত্রে কোনো পদক্ষেপ নিতে পারে না। আমরা বলেছি— প্রধানমন্ত্রী এবং মন্ত্রিপরিষদ যে কাজ করতে পারেন, সংবিধান অনুযায়ী অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা এবং উপদেষ্টারা তা করতে পারেন।’

অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, এনসিটি নিয়ে একটি কোম্পানির সঙ্গে প্রাথমিক কথাবার্তা চলছে। সেটি নিয়ে জনস্বার্থের একটি মামলা করে জাতির সামনে বিভ্রান্তিমূলক একটি তথ্য উপস্থাপন করা হচ্ছে যে, চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে দেওয়া হচ্ছে। আমরা কোর্টকে বলেছি, কয়েকটা কারণে রিট আবেদনটি খারিজ হতে পারে। ইতোপূর্বে এই কোর্টই অন্য একটি টার্মিনাল পরিচালনার দায়িত্ব বিদেশি কোম্পানিকে দেওয়া নিয়ে রিট আবেদন খারিজ করেছিলেন। ফলে এই রিটের ক্ষেত্রে আদালত দ্বৈত নীতি নিতে পারেন না।

তিনি আরও বলেন, দ্বিতীয়ত কারণটি হচ্ছে— রিটে কার্যকারিতা তখনই তৈরি হয়, যখন কার্যকারিতা তৈরি হওয়ার মতো বিষয়টি চূড়ান্ত হয়। এনসিটি নিয়ে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি, প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে। সুপ্রিম কোর্টের অনেক রায় আছে, অপরিণত স্টেজে কোনো জুডিশিয়াল রিভিউ এন্টারটেইন করার সুযোগ নেই। তৃতীয়ত বলেছি, দেশীয় কোম্পানিকে না দিয়ে কেন বিদেশি কোম্পানিকে দেওয়া হচ্ছে? আমরা বলেছি, আইন আমাকে সেই কর্তৃত্ব দিয়েছে। ফলে একদিকে যেমন আইনের বৃত্তের মধ্যে আছি, যা করছি সংবিধান-আইনের মধ্যে থেকে করছি।

ব্যারিস্টার কায়সার কামালসহ রিটের পক্ষের আইনজীবীরা বলেছেন, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানসহ সব রাজনৈতিক দলের নেতারা চান, নির্বাচিত সরকার এসে বন্দরের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে। এ বিষয়ে আপনি কী বলবেন?

জবাবে অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, এটা তাদের বক্তব্য। আমরা বলেছি, নির্বাচিত রাজনৈতিক সরকার যেসব সিদ্ধান্ত পারে, অন্তর্বর্তী সরকারও একই সিদ্ধান্ত নিতে পারে।

এদিন বন্দরের নিউমুরিং কনটেইনার টার্মিনাল (এনসিটি) পরিচালনায় কর্তৃপক্ষের বিদেশি কোম্পানির সঙ্গে চুক্তির চলমান প্রক্রিয়ার বৈধতা প্রশ্নে জারি করা রুলের শুনানি শেষ হয়েছে। এ বিষয়ে আগামী ৪ ডিসেম্বর রায় ঘোষণা করবেন হাইকোর্ট। বিচারপতি ফাতেমা নজীব ও বিচারপতি ফাতেমা আনোয়ারের হাইকোর্ট বেঞ্চ রায়ের জন্য এই দিন ধার্য করেন।

আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার জমির উদ্দিন সরকার, অ্যাডভোকেট আহসানুল করিম, ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন, ব্যারিস্টার কায়সার কামাল। সঙ্গে ছিলেন অ্যাডভোকেট মাকসুদ উল্লাহ, ব্যারিস্টার আনোয়ার হোসেন। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান, অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল অনীক আর হক।

নতুন প্রজন্মের অনলাইন টিভি

নিউজটি শেয়ার করুন

ট্যাগস :

নির্বাচিত সরকার যে সিদ্ধান্ত নিতে পারে, অন্তর্বর্তীও তা পারবে

আপডেট সময় : ০৯:৪৭:১১ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৫

অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী এবং মন্ত্রিপরিষদ যে কাজ করতে পারেন, সংবিধান অনুযায়ী অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা এবং উপদেষ্টারা তা করতে পারেন। নির্বাচিত রাজনৈতিক সরকার যেসব সিদ্ধান্ত নিতে পারে, অন্তর্বর্তী সরকারও একই সিদ্ধান্ত নিতে পারে।

মঙ্গলবার (২৫ নভেম্বর) চট্রগ্রাম বন্দরের পরিচালনা নিয়ে রুল শুনানির পর অ্যাটর্নি জেনারেল কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।

বন্দরের নিউমুরিং কনটেইনার টার্মিনাল (এনসিটি) পরিচালনায় কর্তৃপক্ষের বিদেশি কোম্পানির সঙ্গে চুক্তি প্রসঙ্গে অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, ‘রিট আবেদনকারী পক্ষের দাবি, এই ধরনের সিদ্ধান্ত নিতে হলে পিপিপি আইনের ৭ ধারার অধীনে প্রধানমন্ত্রী এবং মন্ত্রিপরিষদ থাকতে হবে। যেহেতু প্রধানমন্ত্রী এবং মন্ত্রিপরিষদ নেই, সেই কারণে এনসিটির ক্ষেত্রে কোনো পদক্ষেপ নিতে পারে না। আমরা বলেছি— প্রধানমন্ত্রী এবং মন্ত্রিপরিষদ যে কাজ করতে পারেন, সংবিধান অনুযায়ী অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা এবং উপদেষ্টারা তা করতে পারেন।’

অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, এনসিটি নিয়ে একটি কোম্পানির সঙ্গে প্রাথমিক কথাবার্তা চলছে। সেটি নিয়ে জনস্বার্থের একটি মামলা করে জাতির সামনে বিভ্রান্তিমূলক একটি তথ্য উপস্থাপন করা হচ্ছে যে, চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে দেওয়া হচ্ছে। আমরা কোর্টকে বলেছি, কয়েকটা কারণে রিট আবেদনটি খারিজ হতে পারে। ইতোপূর্বে এই কোর্টই অন্য একটি টার্মিনাল পরিচালনার দায়িত্ব বিদেশি কোম্পানিকে দেওয়া নিয়ে রিট আবেদন খারিজ করেছিলেন। ফলে এই রিটের ক্ষেত্রে আদালত দ্বৈত নীতি নিতে পারেন না।

তিনি আরও বলেন, দ্বিতীয়ত কারণটি হচ্ছে— রিটে কার্যকারিতা তখনই তৈরি হয়, যখন কার্যকারিতা তৈরি হওয়ার মতো বিষয়টি চূড়ান্ত হয়। এনসিটি নিয়ে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি, প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে। সুপ্রিম কোর্টের অনেক রায় আছে, অপরিণত স্টেজে কোনো জুডিশিয়াল রিভিউ এন্টারটেইন করার সুযোগ নেই। তৃতীয়ত বলেছি, দেশীয় কোম্পানিকে না দিয়ে কেন বিদেশি কোম্পানিকে দেওয়া হচ্ছে? আমরা বলেছি, আইন আমাকে সেই কর্তৃত্ব দিয়েছে। ফলে একদিকে যেমন আইনের বৃত্তের মধ্যে আছি, যা করছি সংবিধান-আইনের মধ্যে থেকে করছি।

ব্যারিস্টার কায়সার কামালসহ রিটের পক্ষের আইনজীবীরা বলেছেন, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানসহ সব রাজনৈতিক দলের নেতারা চান, নির্বাচিত সরকার এসে বন্দরের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে। এ বিষয়ে আপনি কী বলবেন?

জবাবে অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, এটা তাদের বক্তব্য। আমরা বলেছি, নির্বাচিত রাজনৈতিক সরকার যেসব সিদ্ধান্ত পারে, অন্তর্বর্তী সরকারও একই সিদ্ধান্ত নিতে পারে।

এদিন বন্দরের নিউমুরিং কনটেইনার টার্মিনাল (এনসিটি) পরিচালনায় কর্তৃপক্ষের বিদেশি কোম্পানির সঙ্গে চুক্তির চলমান প্রক্রিয়ার বৈধতা প্রশ্নে জারি করা রুলের শুনানি শেষ হয়েছে। এ বিষয়ে আগামী ৪ ডিসেম্বর রায় ঘোষণা করবেন হাইকোর্ট। বিচারপতি ফাতেমা নজীব ও বিচারপতি ফাতেমা আনোয়ারের হাইকোর্ট বেঞ্চ রায়ের জন্য এই দিন ধার্য করেন।

আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার জমির উদ্দিন সরকার, অ্যাডভোকেট আহসানুল করিম, ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন, ব্যারিস্টার কায়সার কামাল। সঙ্গে ছিলেন অ্যাডভোকেট মাকসুদ উল্লাহ, ব্যারিস্টার আনোয়ার হোসেন। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান, অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল অনীক আর হক।