দীর্ঘদিন পলাতক মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি মিলন সরকার রাজধানী থেকে গ্রেপ্তার
পালিয়ে থাকা মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি গ্রেপ্তার

- আপডেট সময় : ০৬:০৩:১৪ অপরাহ্ন, রবিবার, ১০ আগস্ট ২০২৫ ৫ বার পড়া হয়েছে
জেলা প্রতিনিধি: পালিয়ে থাকা মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি গ্রেপ্তার, অবশেষে দীর্ঘদিন পলাতক থাকার পর মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত এক আসামিকে রাজধানী ঢাকা থেকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়েছে, গাইবান্ধার সাঘাটা থানা পুলিশ, পুলিশের নিরবিচ্ছিন্ন গোয়েন্দা নজরদারি ও গোপন সংবাদের ভিত্তিতে পরিচালিত, এই অভিযানটি ছিল অত্যন্ত চ্যালেঞ্জিং ও কৌশলগতভাবে সফল।
গ্রেফতার হওয়া আসামির নাম মোঃ মিলন সরকার। তিনি গাইবান্ধার সাঘাটা উপজেলার রামনগর গ্রামের বাসিন্দা। তার পিতা নজরুল ইসলাম সরকার। সিরাজগঞ্জ জেলার সলঙ্গা থানায় দায়ের হওয়া একটি হত্যাকাণ্ড মামলায় আদালত তাকে মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত করেন। তবে রায় ঘোষণার পর থেকেই তিনি আত্মগোপনে চলে যান এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর চোখ ফাঁকি দিয়ে দীর্ঘদিন পলাতক ছিলেন।
সাঘাটা থানার ওসি মোঃ বাদশা আলম নিশ্চিত করেছেন যে, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে গতকাল রবিবার (৪ আগস্ট) ভোররাত আনুমানিক আড়াইটার দিকে, পুলিশের একটি বিশেষ টিম রাজধানীর মোহাম্মদপুর থানাধীন এলাকায় অভিযান চালায়। অভিযানে মিলন সরকারকে একটি বাসা থেকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারের সময় তিনি নিজের পরিচয় গোপন রাখার চেষ্টা করেন এবং ভুয়া তথ্য দিতে থাকেন। তবে পুলিশের কাছে থাকা গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে তাকে শনাক্ত করে গ্রেফতার করা হয়।
গ্রেফতারের পর আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে তাকে সংশ্লিষ্ট আদালতে হাজির করা হয় এবং আদালতের নির্দেশে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
একজন মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিকে গ্রেফতার করাকে পুলিশ প্রশাসনের একটি বড় সফলতা হিসেবে দেখছেন অনেকেই। সাঘাটা থানা পুলিশের ওসি মোঃ বাদশা আলম বলেন,
“আইনের হাত অনেক লম্বা। কেউই আইনের চোখ ফাঁকি দিয়ে চিরকাল পালিয়ে থাকতে পারে না। আমরা জনগণের নিরাপত্তা ও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে সবসময় সচেষ্ট।”
তিনি আরও জানান, এই ধরনের পলাতক ও সাজাপ্রাপ্ত আসামিদের খুঁজে বের করতে পুলিশের অভিযান অব্যাহত থাকবে। আন্তজেলা সমন্বয়ে এমন অভিযান আরও জোরদার করা হবে।
সিরাজগঞ্জের রক্তাক্ত অধ্যায়
সিরাজগঞ্জ জেলার সলঙ্গা থানার সংশ্লিষ্ট মামলাটি একটি চাঞ্চল্যকর হত্যাকাণ্ড। মামলার তদন্ত শেষে আদালতে চার্জশিট দাখিল করা হয় এবং বিচার শেষে মোঃ মিলন সরকারকে মৃত্যুদণ্ড প্রদান করা হয়। তবে রায়ের পরপরই তিনি পলাতক হয়ে যান এবং নিজ এলাকায় না থেকে রাজধানীসহ বিভিন্ন স্থানে অবস্থান করে নাম, পরিচয় বদলে আত্মগোপনে থাকেন।
এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী আবারও প্রমাণ করলো—দীর্ঘ সময় পেরিয়ে গেলেও অপরাধীরা আইনের হাত থেকে রেহাই পায় না। এ বিষয়ে গাইবান্ধা জেলার পুলিশ প্রশাসনের একাধিক কর্মকর্তা জানান, পলাতক আসামিদের তালিকা করে নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে। গ্রেফতার হওয়া প্রতিটি আসামিকে আইনের আওতায় এনে বিচারের সম্মুখীন করা হবে।
এ ধরনের সফল অভিযানে পুলিশের সাহসিকতা ও পেশাদারিত্ব প্রশংসিত হচ্ছে সর্বমহলে। স্থানীয়রা জানান,
“এই আসামি দীর্ঘদিন ধরে পলাতক থাকায় আমরা ভয়ভীতির মধ্যে ছিলাম। এখন তাকে গ্রেফতার করায় স্বস্তি পেয়েছি। পুলিশকে ধন্যবাদ জানাই।”
আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় পুলিশ প্রশাসনের অবিরাম প্রচেষ্টা আবারও প্রমাণিত হলো মোঃ মিলন সরকারের গ্রেফতারের মাধ্যমে। দীর্ঘদিন পর হলেও যখন একটি সাজাপ্রাপ্ত অপরাধী ধরা পড়ে, তখন সমাজে ন্যায়বিচারের বার্তা পৌঁছে যায়। এর ফলে অপরাধীরা যেমন সতর্ক হয়, তেমনি সাধারণ মানুষও আশ্বস্ত হয় যে, আইন সবার জন্য সমান। সাঘাটা থানা পুলিশসহ সংশ্লিষ্ট সব সদস্যদের পেশাদারিত্ব ও নিষ্ঠার জন্য কৃতজ্ঞতা জানিয়েছে সাধারণ জনগণ এবং আইন-শৃঙ্খলা বিশ্লেষকরা।