ঢাকা ০৬:৫৪ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২২ জুন ২০২৫, ৮ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
দৌলতপুরে ডাঃ ছামসুল আরিফিন সুলভ বিরুদ্ধে অপপ্রচারের বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলন বয়স বৈষম্যে চাকরি বঞ্চনা, এনটিআরসিএর বিরুদ্ধে রোববার প্রতিবাদ25 চাঁপাইনবাবগঞ্জে জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে নাগরিক সংলাপ অনুষ্ঠিত25 জয়পুরহাটে ছাত্রদের কাছে মাদক বিক্রি, সেনা অভিযানে আটক৩ রোববার থেকে নিয়মিত বিচারিক কার্যক্রমে ফিরছে সুপ্রিম কোর্ট25 ৫টি কারণে ইরানে ইসরায়েলি আগ্রাসনের নিন্দা জানালেন আরব পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা মোসাদের ৫৪ গুপ্তচরকে গ্রেপ্তার করল ইরান25 ৪টি প্রকল্পে ১৩০ কোটি ডলার ঋণ দেবে এডিবি ইসরায়েলকে হামলা বন্ধে চাপ না দেওয়ার ইঙ্গিত ট্রাম্পের25 ময়মনসিংহে পৃথক সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত১১

বগুড়ার শেরপুর পৌরসভায় ভুয়া ভাউচারে এডিপির টাকা আত্মসাতের অভিযোগ

অনলাইন ডেস্ক
  • আপডেট সময় : ০৫:৩০:১৬ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৬ ডিসেম্বর ২০২০ ১১ বার পড়া হয়েছে

বগুড়া প্রতিনিধি: ঠিকাদার নিযুক্ত করে কাগজ কলমে কার্যাদেশ দিয়েই বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির(এডিপি) বরাদ্দের টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে প্রকল্প সংশ্লিষ্ট বগুড়ার শেরপুর পৌরসভায় কতিপয় কর্মকর্তার বিরুদ্ধে। ভুয়া বিল ভাউচার তৈরির মাধ্যমে দরপত্র অনুযায়ী মালামাল ক্রয় না করে প্রায় চার লাখ টাকা লোপাট করা হয়েছে। এ ঘটনায় ২৩ ডিসেম্বর ওই প্রকল্পের ঠিকাদার প্রীতম কনস্ট্রাকশনের স্বত্বাধিকারী আহসানুল হক জেলা প্রশাসকের কাছে লিখিত অভিযোগ করেন। সেইসঙ্গে সরকারি টাকা আত্মসাতের ঘটনার বিচার দাবি করে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়, রাজশাহী বিভাগীয় কমিশনারসহ একাধিক সরকারি দফতরে লিখিত অভিযোগও দিয়েছেন ওই ঠিকাদার।

লিখিত অভিযোগ থেকে জানা যায়, চলতি ২০১৯-২০ অর্থ বছরে বগুড়ার শেরপুর পৌরসভায় বৈশ্বিক মহামারি করোনাভাইরাস প্রতিরোধে জীবাণুনাশক ওষুধ ছিটানোর ফগার মেশিন ও ডেঙ্গু প্রতিরোধে মশা নিধনের স্প্রে মেশিন, পেট্রোল, ওষুধ, শ্রমিক ব্যয় ও খুচরা মালামাল কেনার জন্য বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির (এডিপি) মাধ্যমে ৬ লাখ ৭৫ হাজার টাকা বরাদ্দ আসে। সে অনুযায়ী পৌরসভার পক্ষ থেকে দরপত্র আহ্বান করা হয়। বিগত ২০১৯ সালের ১৫ অক্টোবর পৌরসভার সেই দরপত্রে অংশ নেন প্রীতম কনস্ট্রাকশন। ওই টেন্ডারের আইডি নং- ৩৬৯১৪৪।
পরে ৩ লাখ ৯০ হাজার ৪৯৫ টাকায় সর্বনিম্ন দরদাতা হিসেবে ওই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে পৌরসভায় এডিপি প্রকল্পের সাপ্লাই/সরবরাহ করার জন্য নির্বাচন করা হয়। পাশাপাশি একই বছরের ১১ ডিসেম্বর প্রতিষ্ঠানটিকে পৌরসভার টেন্ডার কমিটির নির্বাহী প্রকৌশলী (ইনচার্জ) শফিকুল ইসলাম স্বাক্ষরিত কার্যাদেশ দেয়া হয়। কিন্তু দরপত্রের কার্যাদেশ পাওয়ার পর থেকে সেই অনুযায়ী মালামাল সরবরাহ করতে চাইলে নিচ্ছেন না। দীর্ঘদিন থেকে এসব মালামাল গ্রহণে তালবাহানা করছেন পৌরসভার সংশ্লিষ্ট কর্তা ব্যক্তিরা।
ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান প্রীতম কনস্ট্রাকশনের স্বত্বাধিকারী আহসানুল হক অভিযোগ করে বলেন, তিনি কিছুই না জানলেও তার প্রতিষ্ঠানের নাম ব্যবহার করে টেন্ডার কমিটির সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা মালামাল না কিনেই ভুয়া বিল ভাউচার তৈরির মাধ্যমে প্রকল্পের টাকা উত্তোলন করে আত্মসাৎ করেছেন। তাই দরপত্রের কার্যাদেশ অনুযায়ী কেনা মালামাল গ্রহণ করেনি ।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে শেরপুর পৌরসভার সচিব ইমরোজ মুজিব ও হিসাবরক্ষক রেজাউল করিম ওই ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের নামে টাকা উত্তোলনের কথা স্বীকার করেন। এছাড়া তার স্বাক্ষর ছাড়াই মালামাল না কিনে ভুয়া বিল ভাউচার তৈরির মাধ্যমে এই কাজ করা হয়েছে বলেও তাকে জানানো হয়। তাই সরকারি টাকা আত্মসাতসহ এই দুর্নীতির বিচার চেয়ে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন কাজ বঞ্চিত ঠিকাদার।
এ ব্যাপারে শেরপুর পৌরসভার উপ-সহকারি প্রকৌশলী বলেন, ওই ঠিকাদার কার্যাদাশের পরও মালামাল দিতে পারেনি। তাই জরুরী প্রয়োজনে পৌর কমিটির মাধ্যমে ১ লাখ ৩০ হাজার টাকায় একটি ফগার মেশিনসহ অন্যান্য মালামাল ক্রয় করা হয়েছে। তাছাড়া বিনা টেন্ডারেও কিন্তু পৌর কর্তৃপক্ষ প্রায় ২৫ লাখ টাকার মালামাল সামগ্রী ক্রয়ের ক্ষমতার রাখেন বলে জোর দাবী করেন।
এ প্রসঙ্গে শেরপুর পৌরসভার সচিব ইমরোজ মুজিব বলেন, টেন্ডার ও মালামাল গ্রহণের বিষয়টি ইঞ্জিনিয়ার শফিকুল ইসলাম ও হুমায়ুন কবীর সাহেব বলতে পারবেন। তবে এডিপির ওই প্রকল্পের মালামাল কেনার বিল দেয়া হয়েছে। তবে মালামাল কেনা হয়েছে কিনা তা বলতে পারবো না। তবে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের নামে টাকা উত্তোলন করা হয়েছে বলে একই মন্তব্য করেন পৌরসভার হিসাবরক্ষক রেজাউল করিম।
এ ব্যাপারে শেরপুর পৌরসভার প্রকৌশলী এসএম শফিকুল ইসলাম (শামিম) বলেন, এই ধরনের কোনো লিখিত অভিযোগের বিষয়ে জানা নেই। তাই বিষয়টি নিয়ে কোনো মন্তব্য করতে পারছি না।

নতুন প্রজন্মের অনলাইন টিভি

নিউজটি শেয়ার করুন

আপলোডকারীর তথ্য
ট্যাগস :

বগুড়ার শেরপুর পৌরসভায় ভুয়া ভাউচারে এডিপির টাকা আত্মসাতের অভিযোগ

আপডেট সময় : ০৫:৩০:১৬ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৬ ডিসেম্বর ২০২০

বগুড়া প্রতিনিধি: ঠিকাদার নিযুক্ত করে কাগজ কলমে কার্যাদেশ দিয়েই বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির(এডিপি) বরাদ্দের টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে প্রকল্প সংশ্লিষ্ট বগুড়ার শেরপুর পৌরসভায় কতিপয় কর্মকর্তার বিরুদ্ধে। ভুয়া বিল ভাউচার তৈরির মাধ্যমে দরপত্র অনুযায়ী মালামাল ক্রয় না করে প্রায় চার লাখ টাকা লোপাট করা হয়েছে। এ ঘটনায় ২৩ ডিসেম্বর ওই প্রকল্পের ঠিকাদার প্রীতম কনস্ট্রাকশনের স্বত্বাধিকারী আহসানুল হক জেলা প্রশাসকের কাছে লিখিত অভিযোগ করেন। সেইসঙ্গে সরকারি টাকা আত্মসাতের ঘটনার বিচার দাবি করে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়, রাজশাহী বিভাগীয় কমিশনারসহ একাধিক সরকারি দফতরে লিখিত অভিযোগও দিয়েছেন ওই ঠিকাদার।

লিখিত অভিযোগ থেকে জানা যায়, চলতি ২০১৯-২০ অর্থ বছরে বগুড়ার শেরপুর পৌরসভায় বৈশ্বিক মহামারি করোনাভাইরাস প্রতিরোধে জীবাণুনাশক ওষুধ ছিটানোর ফগার মেশিন ও ডেঙ্গু প্রতিরোধে মশা নিধনের স্প্রে মেশিন, পেট্রোল, ওষুধ, শ্রমিক ব্যয় ও খুচরা মালামাল কেনার জন্য বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির (এডিপি) মাধ্যমে ৬ লাখ ৭৫ হাজার টাকা বরাদ্দ আসে। সে অনুযায়ী পৌরসভার পক্ষ থেকে দরপত্র আহ্বান করা হয়। বিগত ২০১৯ সালের ১৫ অক্টোবর পৌরসভার সেই দরপত্রে অংশ নেন প্রীতম কনস্ট্রাকশন। ওই টেন্ডারের আইডি নং- ৩৬৯১৪৪।
পরে ৩ লাখ ৯০ হাজার ৪৯৫ টাকায় সর্বনিম্ন দরদাতা হিসেবে ওই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে পৌরসভায় এডিপি প্রকল্পের সাপ্লাই/সরবরাহ করার জন্য নির্বাচন করা হয়। পাশাপাশি একই বছরের ১১ ডিসেম্বর প্রতিষ্ঠানটিকে পৌরসভার টেন্ডার কমিটির নির্বাহী প্রকৌশলী (ইনচার্জ) শফিকুল ইসলাম স্বাক্ষরিত কার্যাদেশ দেয়া হয়। কিন্তু দরপত্রের কার্যাদেশ পাওয়ার পর থেকে সেই অনুযায়ী মালামাল সরবরাহ করতে চাইলে নিচ্ছেন না। দীর্ঘদিন থেকে এসব মালামাল গ্রহণে তালবাহানা করছেন পৌরসভার সংশ্লিষ্ট কর্তা ব্যক্তিরা।
ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান প্রীতম কনস্ট্রাকশনের স্বত্বাধিকারী আহসানুল হক অভিযোগ করে বলেন, তিনি কিছুই না জানলেও তার প্রতিষ্ঠানের নাম ব্যবহার করে টেন্ডার কমিটির সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা মালামাল না কিনেই ভুয়া বিল ভাউচার তৈরির মাধ্যমে প্রকল্পের টাকা উত্তোলন করে আত্মসাৎ করেছেন। তাই দরপত্রের কার্যাদেশ অনুযায়ী কেনা মালামাল গ্রহণ করেনি ।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে শেরপুর পৌরসভার সচিব ইমরোজ মুজিব ও হিসাবরক্ষক রেজাউল করিম ওই ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের নামে টাকা উত্তোলনের কথা স্বীকার করেন। এছাড়া তার স্বাক্ষর ছাড়াই মালামাল না কিনে ভুয়া বিল ভাউচার তৈরির মাধ্যমে এই কাজ করা হয়েছে বলেও তাকে জানানো হয়। তাই সরকারি টাকা আত্মসাতসহ এই দুর্নীতির বিচার চেয়ে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন কাজ বঞ্চিত ঠিকাদার।
এ ব্যাপারে শেরপুর পৌরসভার উপ-সহকারি প্রকৌশলী বলেন, ওই ঠিকাদার কার্যাদাশের পরও মালামাল দিতে পারেনি। তাই জরুরী প্রয়োজনে পৌর কমিটির মাধ্যমে ১ লাখ ৩০ হাজার টাকায় একটি ফগার মেশিনসহ অন্যান্য মালামাল ক্রয় করা হয়েছে। তাছাড়া বিনা টেন্ডারেও কিন্তু পৌর কর্তৃপক্ষ প্রায় ২৫ লাখ টাকার মালামাল সামগ্রী ক্রয়ের ক্ষমতার রাখেন বলে জোর দাবী করেন।
এ প্রসঙ্গে শেরপুর পৌরসভার সচিব ইমরোজ মুজিব বলেন, টেন্ডার ও মালামাল গ্রহণের বিষয়টি ইঞ্জিনিয়ার শফিকুল ইসলাম ও হুমায়ুন কবীর সাহেব বলতে পারবেন। তবে এডিপির ওই প্রকল্পের মালামাল কেনার বিল দেয়া হয়েছে। তবে মালামাল কেনা হয়েছে কিনা তা বলতে পারবো না। তবে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের নামে টাকা উত্তোলন করা হয়েছে বলে একই মন্তব্য করেন পৌরসভার হিসাবরক্ষক রেজাউল করিম।
এ ব্যাপারে শেরপুর পৌরসভার প্রকৌশলী এসএম শফিকুল ইসলাম (শামিম) বলেন, এই ধরনের কোনো লিখিত অভিযোগের বিষয়ে জানা নেই। তাই বিষয়টি নিয়ে কোনো মন্তব্য করতে পারছি না।