যারা সংস্কারের কথা বেশি বলতো, তারা সংস্কার বিরোধী রাজনীতিতে ঢুকে গেছে
- আপডেট সময় : ১০:৩৯:০২ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৭ নভেম্বর ২০২৫
- / 4
অন্তর্বর্তী সরকারের স্থানীয় সরকার এবং যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া বলেছেন, আমরা দেখেছি যারা সংস্কারের কথা বেশি বলতো কিন্তু কেন জানি তারা সংস্কার বিরোধী রাজনীতিতে ঢুকে গেছে। আমরা আসলে জানি না, তাদের এই সংস্কার বিরোধী রাজনীতির আউটকামটা আসলে তাদের জন্য কি। আমাদের দেশের জন্য তো অবশ্যই ক্ষতিকর। কিন্তু তাদের জন্য এটা কিভাবে সুফল বয়ে আনতেছে সেটা আমি জানি না।
শুক্রবার (৭ নভেম্বর) জাতীয় প্রেস ক্লাবে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের উদ্যোগে আয়োজিত এক গোলটেবিল বৈঠকে তিনি এসব কথা বলেন।
আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া বলেন, ২০২৪ এর গণঅভ্যুত্থানের আউটকামের বিষয় নিয়ে আলাপ আসে তাহলে আমরা তো- গণঅভ্যুত্থানের পরপর তিনটি বিষয় নিয়ে আলোচনা চলছিল যে, সংস্কার, বিচার এবং গণতান্ত্রিক রুপান্তর। বিচারের বিষয়ে আমি যতটুকু অবগত আছি, বিচারের অগ্রগতি হচ্ছে। আগামী ১৩ নভেম্বর একটা রায়ও হওয়ার কথা। এর প্রেক্ষিতে ফ্যাসিবাদী শক্তি ঢাকায় আবার লকডাউন ডেকেছে।
তিনি বলেন, গণতান্ত্রিক রূপান্তরের ক্ষেত্রে ঘুরে ফিরে আমরা আবার একই জায়গায় চলে যাই কিনা। এই যে আমরা গণতান্ত্রিক রূপান্তরের কথা বলি, সংসদে ৩০০ জন যাবেন। ৩০০ জনের মধ্যে একটা প্রশ্ন হয়ে বসে যে, কয়জনের কাছে ২০ কোটি টাকা আছে। ২০ কোটি টাকা না থাকলে তো কেউ নির্বাচন করতে পারবে না। বাংলাদেশের বর্তমান যে বাস্তবতা, এই বাস্তবতায় ১০-২০ কোটি টাকা না থাকলে আসলে নির্বাচন করার সুযোগ নেই। যাদের কাছে কালো টাকা আছে তাদের নির্বাচন করার সুযোগ আছে।
আবার কারো থেকে যদি টাকা নিয়ে নির্বাচন করা হয়, তাহলে তো নির্বাচিত হয়ে আসার পর আপনাকে তার স্বার্থ বাস্তবায়ন করতে হবে। সে জন্য আমাদেরকে বারবার চিন্তা করতে হয় নির্বাচন করবো কি করবো না। আর নির্বাচনই বা কিভাবে করবো… মানুষ টাকা ছাড়া ভোট দেবে কিনা। বিদ্যমান যে কাঠামো, এই কাঠামোতে আমাদের জন্য ইলেকশন করা কতটুকু বাস্তবসম্মত।
তিনি বলেন, জোহরান মামদানির কথা অনেকে বলেন যে, সম্ভব। এটা এক্সেপশনাল কেস। এটা তো ৩০০ আসেন ঘটা সম্ভব না। এই ইলেকশনে হয়তো দু-একজনের ক্ষেত্রে এটা ঘটতে পারে।
রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতি প্রশ্ন রেখে তিনি বলেন, ৫ আগস্টের পরে আমাদের রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে যারা বিপ্লবের স্টেক হোল্ডার, তাদের মধ্যে কেউ কেউ সংস্কার বিরোধী রাজনীতিটা করলো, এটার আসলে দেশের জন্য আউটকাম কি? কেউ কেউ রিয়েকশনালি পলিটিক্সে ঢুকে গেছে। রিয়েকশনালি পলিটিক্সে ঢুকার মাধ্যমে তারা মুজিববাদী রাজনীতিকে আবার প্রাসঙ্গিক করে তুললো। এটা দিয়ে আমাদের কি উপকার হলো এবং এর দায় আসলে কার?
অন্তর্বর্তী সরকারের এই উপদেষ্টা বলেন, খুব জনপ্রিয় শব্দ হলো- নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্ত। দুঃখজনক বিষয় হলো আমরা আসলে জানি না, এই নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্ত আসলে কি। কিছু পপুলার কার্যক্রম করলে তো আর রাজনৈতিক নতুন বন্দোবস্ত হয়ে যায় না। এটার রূপরেখা কি? যারা নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্তের রাজনীতি করছেন বা নির্মাণ করার চেষ্টা করছেন, তারা এটা আসলে দিতে পেরেছেন কিনা। আমিও রাজনীতি করবো, আমাকেও খুঁজতে হবে আসলে নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্ত কি। আমাকে কেউ যদি একটা লিফলেট বা একটা প্রোপার না দিতে পারে, তাহলে আমি কিসের আশায় নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্তের দিকে যাবো। কিছু পপুলিস্ট একটিভিস্ট দিয়ে তো নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্ত হয় না। এটার রূপরেখাটা পরিষ্কার করা প্রয়োজন।
গোলটেবিল বৈঠকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সভাপতি রিফাত রশীদের সঞ্চালনায় আরও উপস্থিত ছিলেন, কবি ও রাষ্ট্রচিন্তক ফরহাদ মজাহার, কর্নেল (অব.) হাসিনুর রহমান, এবি পার্টির চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান মঞ্জু, বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মুখ্য সমন্বয়ক হাসিব আল ইসলাম প্রমুখ।






















