যুদ্ধবিরতির অনুরোধ ভারতের পক্ষ থেকেই এসেছে: পাকিস্তান সেনাবাহিনী
যুদ্ধবিরতির অনুরোধ ভারতের পক্ষ থেকেই এসেছে: পাকিস্তান সেনাবাহিনী
আন্তর্জাতিক ডেস্ক : পাকিস্তান সেনাবাহিনী জানিয়েছে, সাম্প্রতিক উত্তেজনার মধ্যে যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব তারা নয়, ভারতই দিয়েছে। দেশটির আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তরের (আইএসপিআর) মহাপরিচালক (ডিজি) লেফটেন্যান্ট জেনারেল আহমেদ শরিফ চৌধুরী বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় নয়াদিল্লি এ অনুরোধ জানায়।
তিনি বলেছেন, দুই পরমাণু শক্তিধর দেশের মধ্যে সংঘর্ষ হলে তা গোটা অঞ্চলের জন্য ভয়াবহ পরিণতি ডেকে আনবে।
এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, এটি এমন এক সংঘাত ছিল, যা ১.৬ বিলিয়ন মানুষের জীবনকে প্রভাবিত করতে পারত। পাকিস্তান দায়িত্বশীলতা ও পরিপক্বতার সঙ্গে কাজ করেছে।
তিনি বলেন, যারা যুদ্ধ চায়, তারা কেবল নিজেদের স্বার্থসিদ্ধির জন্যই তা করে। শান্তি দুই দেশের জন্যই মঙ্গলজনক। যুদ্ধের পেছনে যারা আছে, তাদের লক্ষ্য সংকীর্ণ রাজনৈতিক স্বার্থ।
ডিজি আইএসপিআর বলেন, কাশ্মীর একটি আন্তর্জাতিক স্বীকৃত বিরোধ এবং তা জাতিসংঘ সনদ ও কাশ্মীরিদের ইচ্ছার ভিত্তিতে সমাধান হতে হবে।
তিনি বলেন, ভারত একে অভ্যন্তরীণ বিষয় হিসেবে উপস্থাপন করার চেষ্টা করলেও এটি এখনও জাতিসংঘে বিবেচনাধীন একটি আন্তর্জাতিক বিরোধ।
তিনি জানান, ভারতের একতরফা সাংবিধানিক পরিবর্তন ও দমন-পীড়ন পরিস্থিতির বাস্তবতা বদলাতে পারবে না। হাজারো ঘরবাড়ি ধ্বংস হয়েছে, জোরপূর্বক জনমত পরিবর্তন ঘটানো হচ্ছে।
সিন্ধু পানিচুক্তি প্রসঙ্গে
তিনি বলেন, সিন্ধু পানিচুক্তি নিয়ে পাকিস্তানের অবস্থান স্পষ্ট ও সুসংহত। এ বিষয়ে সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে নতুন করে কিছু বলার দরকার নেই।
যুদ্ধবিরতি চেয়েছিল ভারতই
সাম্প্রতিক উত্তেজনা নিয়ে ডিজি আইএসপিআর বলেন, পাকিস্তান কোনো যুদ্ধবিরতির আবেদন করেনি, বরং ভারতই সংঘর্ষ কমাতে চেয়েছিল। আমরা আমাদের মিত্র ও মধ্যস্থতাকারীদের জানিয়ে দিয়েছিলাম, উপযুক্ত জবাব না দিয়ে কোনো আলোচনায় আমরা অংশ নেব না।
ভারতীয় নারী পাইলট বন্দির খবর ভিত্তিহীন
তিনি সাফ জানিয়ে দেন, পাকিস্তানের হেফাজতে কোনো ভারতীয় পাইলট নেই। সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়ানো গুজব মিথ্যা ও ভিত্তিহীন।
সীমান্ত লঙ্ঘনের অভিযোগ অস্বীকার
ডিজি আইএসপিআর বলেন, পাকিস্তান নিয়ন্ত্রণ রেখা লঙ্ঘন করেনি। আমরা শান্তিপ্রিয় জাতি, তবে আগ্রাসনের জবাব দিতে জানি। আমরা জবাব দিয়েছি এবং ভবিষ্যতেও জাতির রক্ষায় সর্বোচ্চ প্রস্তুত আছি।
তিনি আরও জানান, ভারতীয় হামলায় কিছু অবকাঠামো ও বিমান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, তবে ক্ষতি ছিল সীমিত এবং বিমানগুলো দ্রুতই আবার চালু হয়ে যাবে।
জাতীয় ঐক্যের প্রতিফলন
সংবাদ সম্মেলনের শেষ দিকে ডিজি আইএসপিআর বলেন, পাকিস্তানের প্রতিক্রিয়া ছিল পেশাদারিত্বের নিদর্শন। উভয় দেশের সেনাবাহিনী পেশাদার এবং আমরা সংযমের মাধ্যমে উত্তেজনা নিয়ন্ত্রণে রেখেছি।