শির হাতেই ভূরাজনৈতিক ‘কার্ড’, একমঞ্চে আনছেন কিম-পুতিনকে

- আপডেট সময় : ১১:৪৩:৪৩ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৯ অগাস্ট ২০২৫
- / 35
আন্তর্জাতিক ডেস্ক: আগামী বুধবার বেইজিংয়ে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে বিশেষ এক সামরিক কুচকাওয়াজ। যেখানে উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং উন ও রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে একসঙ্গে মঞ্চে আনতে যাচ্ছেন চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে জাপানের আত্মসমর্পণের ৮০ বছর পূর্তিকে ঘিরে আয়োজিত হচ্ছে এ কুচকাওয়াজ। বিশ্লেষকরা বলছেন, এটি শুধু চীনের সামরিক শক্তির প্রদর্শনীই নয়, বরং প্রেসিডেন্ট শির জন্য বড় কূটনৈতিক সাফল্যও।
কুচকাওয়াজে পুতিনের অংশগ্রহণ আগে থেকেই নির্ধারিত ছিল। তবে হঠাৎ করেই ঘোষণা এসেছে, একই অনুষ্ঠানে অংশ নেবেন কিম জং উনও। চীনের এই ঘোষণা আন্তর্জাতিক অঙ্গনে আলোড়ন তুলেছে।
পুতিনসহ মোট ২৬ রাষ্ট্রপ্রধান এই কুচকাওয়াজে যোগ দেবেন বলে আশা করা হচ্ছে। যদিও যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প তাদের মধ্যে থাকছেন না। বেইজিংয়ের কেন্দ্রে আয়োজিত কুচকাওয়াজে পুতিন ও জিনপিংয়ের পাশে কিমের দাঁড়ানো নিঃসন্দেহে এক বিশেষ ছবি হয়ে উঠবে। চীনের এই পদক্ষেপ এখানে ইঙ্গিত দিচ্ছে, এই খেলার ভূরাজনৈতিক কার্ড তার হাতেই থাকছে। দুই নেতার ওপরই তার প্রভাব রয়েছে, যদিও তা সীমিত।
ট্রাম্প সম্প্রতি দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্টের সঙ্গে বৈঠকে কিমের সঙ্গে আলোচনার আগ্রহ প্রকাশ করেছিলেন। যদিও তাদের আগের দুটি শীর্ষ বৈঠক কোনো উল্লেখযোগ্য ফল আনতে পারেনি।
বিশ্লেষকরা বলছেন, এমন অবস্থায় কিমকে পাশে দাঁড় করিয়ে শি প্রমাণ করতে চাইছেন, উত্তর কোরিয়ার ওপর তার প্রভাব এখনও গুরুত্বপূর্ণ।
পুতিনকে আমন্ত্রণ জানানোর মধ্য দিয়ে ইউক্রেন যুদ্ধকে কেন্দ্র করে কূটনৈতিক পাল্লা ভারী করলেন শি। ডোনাল্ড ট্রাম্প এখনও রাশিয়ার সঙ্গে যুদ্ধবিরতির বিষয়ে কোনো সমঝোতায় পৌঁছতে পারেননি। অথচ পুতিনকে বেইজিংয়ে স্বাগত জানানোর প্রস্তুতি নিচ্ছেন শি। বিশ্লেষকদের মতে, এতে শির হাতে ট্রাম্পের তুলনায় শক্তিশালী কূটনৈতিক কার্ড চলে এসেছে।
চীন এরই মধ্যে বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্থনীতি হিসেবে বাণিজ্যে স্থিতিশীল অংশীদারিত্বের বার্তা দিতে চাইছে। ট্রাম্পের আরোপিত শুল্কনীতির কারণে যে টানাপোড়েন তৈরি হয়েছে, তা কাটাতে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে নতুন চুক্তির আলোচনাও চলছে।
হোয়াইট হাউস জানিয়েছে, অক্টোবরের শেষে ট্রাম্পের এশিয়া সফরে শির সঙ্গে বৈঠকের সম্ভাবনা রয়েছে। সেখানে শুল্ক চুক্তি, টিকটক বিক্রি থেকে শুরু করে ইউক্রেন ইস্যুতে সমাধানের বিষয় আলোচনায় আসতে পারে।
চীন প্রকাশ্যে ইউক্রেন যুদ্ধে নিরপেক্ষ অবস্থান নিয়েছে। তবে পশ্চিমা দেশগুলোর অভিযোগ, রাশিয়াকে সামরিক যন্ত্রাংশ সরবরাহ করে সহায়তা করছে বেইজিং। অন্যদিকে কিমের বেইজিং সফরের ঘোষণা প্রমাণ করেছে, দুই দেশের সম্পর্ক এখনও দৃঢ়।