স্পিকারের নেতৃত্বে গঠিত হবে ইসি, সব দল একমত
স্পিকারের নেতৃত্বে গঠিত হবে ইসি, সব দল একমত

- আপডেট সময় : ০৭:২০:২৪ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৩ জুলাই ২০২৫
- / 80
নিজস্ব প্রতিবেদনঃ প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) নিয়োগ ও নির্বাচন কমিশন (ইসি), গঠনের বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলো একমত হয়েছে বলে জানিয়েছেন জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ, স্পিকারের নেতৃত্বে ইসি গঠনে সব রাজনৈতিক দল একমত হয়েছে বলেও জানান তিনি।
বুধবার দুপুরে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে ১৮তম দিনের আলোচনা শেষে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে তিনি এ কথা জানান।
প্রধান নির্বাচন কমিশনারসহ অন্যান্য কমিশনারের নিয়োগের বিষয়ে ঐকমত্য প্রতিষ্ঠিত হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, বিদ্যমান সংবিধানের ১১৮ (১) সংশোধন করে নতুন সংশোধিত প্রস্তাব উত্থাপন করা হয়েছে। সংশোধিত প্রস্তাবে প্রধান নির্বাচন কমিশনার এবং আইনে নির্ধারিত সংখ্যক নির্বাচন কমিশনার সমন্বয়ে একটি পূর্ণাঙ্গ নির্বাচন কমিশন থাকবে।
তিনি আরও বলেন, স্পিকারের নেতৃত্বে ৫ সদস্যবিশিষ্ট একটি বাছাই কমিটি গঠিত হবে। এই কমিটি বিদায়ী নির্বাচন কমিশনের প্রধান এবং অন্যান্য কমিশনারদের মেয়াদ শেষ হওয়ার ৯০ দিন পূর্বে পরবর্তী ৫ বছরের জন্য প্রধান নির্বাচন কমিশনার এবং অন্যান্য কমিশনারদেরকে নিয়োগ করার উদ্দেশ্যে সংসদে প্রণীত আইনের দ্বারা নির্ধারিত পদ্ধতিতে ‘ইচ্ছাপত্র’ ও প্রার্থীর সংশ্লিষ্ট তথ্যাদি আহ্বান করাসহ নিজস্ব উদ্যোগে উপযুক্ত প্রার্থী অনুসন্ধান কার্যক্রম পরিচালনা করবেন।
কমিশনের সহসভাপতি বলেন, স্পিকারের নেতৃত্বে বাছাই কমিটির অন্যান্য সদস্যরা হবেন বিরোধীদলীয় ডেপুটি স্পিকার, প্রধানমন্ত্রী, বিরোধী দলের নেতা ও প্রধান বিচারপতির প্রতিনিধি হিসেবে আপিল বিভাগের একজন বিচারপতি।
আলী রীয়াজ জানান, এই কমিটি আইনের দ্বারা নির্ধারিত পদ্ধতিতে অনুসন্ধানে প্রাপ্ত ব্যক্তিদের জীবনবৃত্তান্তগুলো স্বচ্ছ প্রক্রিয়ায় যাচাই-বাছাই করে সর্বসম্মতিক্রমে তাদের মধ্য থেকে একজনকে প্রধান নির্বাচন কমিশনার এবং নির্ধারিত প্রতিটি পদের বিপরীতে একজন করে নির্বাচন কমিশনার হিসেবে নিয়োগের জন্য রাষ্ট্রপতির কাছে পাঠাবেন এবং রাষ্ট্রপতি তাদেরকে কার্যভার গ্রহণের তারিখ থেকে পরবর্তী ৫ বছরের জন্য নিয়োগ দেবেন।
এ সময় তিনি আরও জানান, স্পিকারের তত্ত্বাবধানে জাতীয় সংসদ সচিবালয় এই কমিটিকে সাচিবিক সহায়তা দেবে। বিদায়ী কমিশনের মেয়াদ শেষ হলে অথবা অন্য কোনো কারণে পদ শূন্য হলে পরবর্তী দিন থেকে নবনিযুক্ত প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও অন্যান্য কমিশনাররা দায়িত্ব গ্রহণ করবেন।
এছাড়া আজকের আলোচনার পর জাতীয় সংসদ কর্তৃক নির্বাচন কমিশনের ওপর জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে পৃথক আইন ও আচরণবিধি প্রণয়নের বাধ্যবাধকতা সংযুক্ত করা হয়েছে বলে জানান অধ্যাপক আলী রীয়াজ। তবে বিদ্যমান সংবিধানের উপানুচ্ছেদ ২, ৩, ৪, ৫ ও ৬ অপরিবর্তিত থাকবে বলেও জানান তিনি।
জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে আজকের আলোচনায় বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি), বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী, জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি), গণঅধিকার পরিষদ, গণসংহতি, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি), বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি ও আমার বাংলাদেশ (এবি) পার্টিসহ ৩০টি রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিরা অংশ নেন।
এ আলোচনায় কমিশনের সদস্য হিসেবে বিচারপতি মো. এমদাদুল হক, ড. ইফতেখারুজ্জামান, ড. বদিউল আলম মজুমদার, সফর রাজ হোসেন, ড. মো. আইয়ুব মিয়া ও প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দার উপস্থিত ছিলেন।
কমিশন সূত্রে জানা গেছে, দ্রুত জুলাই সনদ প্রণয়নের লক্ষ্যে রাষ্ট্রের জন্য গুরুত্বপূর্ণ অমীমাংসিত সব বিষয়ে ঐকমত্য গড়তে আগামী কিছুদিন কমিশনের সঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলোর আলোচনা চলমান থাকবে।