ঢাকা ১০:০৬ অপরাহ্ন, শনিবার, ১২ জুলাই ২০২৫, ২৮ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
জয়পুরহাটে এক বিষয়ে পরীক্ষা দিয়ে, দুই বিষয়ে ফেল আমার স্বামীকে কেন এমন নির্মমভাবে মেরে ফেলল, প্রশ্ন নিহত সোহাগের স্ত্রীর সাকিবের জন্য দরজা খোলা বলছে বিসিবি বিক্ষোভে উত্তাল রংপুর, খুনিদের সর্বোচ্চ শাস্তি দাবি ছাত্র–জনতার অভ্যুত্থান এর পর নতুন খেলায় লেদা জমি জিপ গোপন তহবিল পুতুলকে বাধ্যতামূলক ছুটিতে পাঠাল বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা আজকের আবহাওয়া: বিকেলে বজ্রসহ বৃষ্টির সম্ভাবনা, গরম থাকবে দিনভর নাহিদ ইসলাম খুলনা: এনসিপির সভায় চাঁদাবাজ-সন্ত্রাস বিরোধী বার্তা লিড নিয়েও জাপানকে হারাতে পারল না বাংলাদেশ তিস্তায় পানি বাড়ছে, কুড়িগ্রামের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হওয়ার শঙ্কা

আমার স্বামীকে কেন এমন নির্মমভাবে মেরে ফেলল, প্রশ্ন নিহত সোহাগের স্ত্রীর

আমার স্বামীকে কেন এমন নির্মমভাবে মেরে ফেলল, প্রশ্ন নিহত সোহাগের স্ত্রীর

অনলাইন ডেস্ক
  • আপডেট সময় : ০৬:৪৬:০৫ অপরাহ্ন, শনিবার, ১২ জুলাই ২০২৫ ৪ বার পড়া হয়েছে

জেলা প্রতিনিধিঃ ঢাকার মিটফোর্ড এলাকায় নির্মম ও নৃশংস হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছেন বরগুনার লাল চাঁদ ওরফে সোহাগ (৩৯)। পাষাণদের আঘাতে জীবন হারানো এই ব্যবসায়ীর মৃত্যুতে তার পরিবারে নেমে এসেছে শোকের ছায়া।

বাবার কবরের সামনে নির্বাক দাঁড়িয়ে আছে চতুর্থ শ্রেণির শিক্ষার্থী সোহান এবং তার একমাত্র বোন, ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্রী সোহানা। কিছু বলার মতো শক্তি নেই, চোখে যেন জমে আছে না বলা শত প্রশ্ন।

তারা জানে বাবা আর কখনোই ফিরবেন না।
কান্নাজড়িত কণ্ঠে সোহাগের ছোট ছেলে সোহান (১১) বলছে, ‘আমাদের এতিম বানাইয়া ফালাইছে, আমরা কোথায় থাকব।’

তার বড় বোন সোহানা (১৪) কান্না জড়িত কণ্ঠে বলে, ‘আমার বাবাকে ব্যবসার জন্য মেরে ফেলেছে। তারা বাবার কাছে টাকা চাইছিল।

বাবা বলেছিল, আমি কষ্ট করে রোজগার করি, তোদের কেন টাকা দেব। তাই ওরা বাবাকে হত্যা করেছে। এই নরপিশাচদের ফাঁসি চাই।’
স্বামীর কবরের পাশে বারবার মূর্ছা যাচ্ছেন স্ত্রী লাকী আক্তার।
কান্নাজড়িত কণ্ঠে তিনি বলেন, ‘আমার স্বামীকে কেন এমন নির্মমভাবে মেরে ফেলল। আমার ছেলেমেয়েদের এতিম করে দিল। আমি ওদের কিভাবে মানুষ করব। এই নির্মমতার বিচার কি হবে না।’
স্বজনরা জানান, ঢাকার মিটফোর্ড এলাকায় ‘মেসার্স সোহানা মেটাল’ নামে একটি দোকান চালাতেন সোহাগ।

দীর্ঘদিন ধরেই তার কাছে মাসিক দুই লাখ টাকা চাঁদা দাবি করছিল একটি সন্ত্রাসী চক্র। চাঁদা দিতে অস্বীকৃতি জানালে তার দোকান বন্ধ করে দেওয়া হয়। এরপর গত বুধবার বিকেলে তাকে বাসা থেকে ডেকে নিয়ে চাঁদার দাবিতে আটকে রাখা হয় এবং দফায় দফায় চাপ দেওয়া হয়। শেষমেশ পাষাণের মতো পাথর দিয়ে মারধর করে সোহাগকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়।
এদিকে শুক্রবার (১১ জুলাই) সকালে ঢাকার মিটফোর্ড হাসপাতাল থেকে মরদেহ নিয়ে আসা হয় বরগুনায়। পরে সদর উপজেলার ঢলুয়া ইউনিয়নের ইসলামপুর গ্রামে তার মায়ের কবরের পাশে দাফন সম্পন্ন হয়। তার মৃত্যুর খবরে বরগুনার আকাশ-বাতাস ভারি হয়ে ওঠে স্বজনদের আহাজারিতে।
মাত্র সাত মাস বয়সে বজ্রাঘাতে বাবা আইউব আলীকে হারান সোহাগ। জীবিকার তাগিদে মা আলেয়া বেগম তিন সন্তানকে নিয়ে বরগুনা থেকে ঢাকায় চলে আসেন। ছোটবেলা থেকেই সোহাগ ঢাকায় বড় হন এবং পরিশ্রম করে একটি ব্যবসা দাঁড় করান। সেই ব্যবসাই আজ তার প্রাণ কেড়ে নিল।
নিহতের স্বজন ও এলাকাবাসী দ্রুত খুনিদের গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন। তারা চান, এ নৃশংসতার যেন বিচার হয় এবং আর কোনো শিশু যেন এভাবে পিতৃহারা না হয়।
নিহতের পরিবারের পাশে দাঁড়াতে বরগুনা জেলা বিএনপির নেতারা সোহাগের বাড়িতে ছুটে যান। জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি নজরুল ইসলাম মোল্লা বলেন, ‘আমরা সোহাগের পরিবারের পাশে আছি, আইনি সহায়তাসহ যেকোনো প্রয়োজনীয় সহায়তা দিতে প্রস্তুত বিএনপি।’

নতুন প্রজন্মের অনলাইন টিভি

নিউজটি শেয়ার করুন

আমার স্বামীকে কেন এমন নির্মমভাবে মেরে ফেলল, প্রশ্ন নিহত সোহাগের স্ত্রীর

আমার স্বামীকে কেন এমন নির্মমভাবে মেরে ফেলল, প্রশ্ন নিহত সোহাগের স্ত্রীর

আপডেট সময় : ০৬:৪৬:০৫ অপরাহ্ন, শনিবার, ১২ জুলাই ২০২৫

জেলা প্রতিনিধিঃ ঢাকার মিটফোর্ড এলাকায় নির্মম ও নৃশংস হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছেন বরগুনার লাল চাঁদ ওরফে সোহাগ (৩৯)। পাষাণদের আঘাতে জীবন হারানো এই ব্যবসায়ীর মৃত্যুতে তার পরিবারে নেমে এসেছে শোকের ছায়া।

বাবার কবরের সামনে নির্বাক দাঁড়িয়ে আছে চতুর্থ শ্রেণির শিক্ষার্থী সোহান এবং তার একমাত্র বোন, ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্রী সোহানা। কিছু বলার মতো শক্তি নেই, চোখে যেন জমে আছে না বলা শত প্রশ্ন।

তারা জানে বাবা আর কখনোই ফিরবেন না।
কান্নাজড়িত কণ্ঠে সোহাগের ছোট ছেলে সোহান (১১) বলছে, ‘আমাদের এতিম বানাইয়া ফালাইছে, আমরা কোথায় থাকব।’

তার বড় বোন সোহানা (১৪) কান্না জড়িত কণ্ঠে বলে, ‘আমার বাবাকে ব্যবসার জন্য মেরে ফেলেছে। তারা বাবার কাছে টাকা চাইছিল।

বাবা বলেছিল, আমি কষ্ট করে রোজগার করি, তোদের কেন টাকা দেব। তাই ওরা বাবাকে হত্যা করেছে। এই নরপিশাচদের ফাঁসি চাই।’
স্বামীর কবরের পাশে বারবার মূর্ছা যাচ্ছেন স্ত্রী লাকী আক্তার।
কান্নাজড়িত কণ্ঠে তিনি বলেন, ‘আমার স্বামীকে কেন এমন নির্মমভাবে মেরে ফেলল। আমার ছেলেমেয়েদের এতিম করে দিল। আমি ওদের কিভাবে মানুষ করব। এই নির্মমতার বিচার কি হবে না।’
স্বজনরা জানান, ঢাকার মিটফোর্ড এলাকায় ‘মেসার্স সোহানা মেটাল’ নামে একটি দোকান চালাতেন সোহাগ।

দীর্ঘদিন ধরেই তার কাছে মাসিক দুই লাখ টাকা চাঁদা দাবি করছিল একটি সন্ত্রাসী চক্র। চাঁদা দিতে অস্বীকৃতি জানালে তার দোকান বন্ধ করে দেওয়া হয়। এরপর গত বুধবার বিকেলে তাকে বাসা থেকে ডেকে নিয়ে চাঁদার দাবিতে আটকে রাখা হয় এবং দফায় দফায় চাপ দেওয়া হয়। শেষমেশ পাষাণের মতো পাথর দিয়ে মারধর করে সোহাগকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়।
এদিকে শুক্রবার (১১ জুলাই) সকালে ঢাকার মিটফোর্ড হাসপাতাল থেকে মরদেহ নিয়ে আসা হয় বরগুনায়। পরে সদর উপজেলার ঢলুয়া ইউনিয়নের ইসলামপুর গ্রামে তার মায়ের কবরের পাশে দাফন সম্পন্ন হয়। তার মৃত্যুর খবরে বরগুনার আকাশ-বাতাস ভারি হয়ে ওঠে স্বজনদের আহাজারিতে।
মাত্র সাত মাস বয়সে বজ্রাঘাতে বাবা আইউব আলীকে হারান সোহাগ। জীবিকার তাগিদে মা আলেয়া বেগম তিন সন্তানকে নিয়ে বরগুনা থেকে ঢাকায় চলে আসেন। ছোটবেলা থেকেই সোহাগ ঢাকায় বড় হন এবং পরিশ্রম করে একটি ব্যবসা দাঁড় করান। সেই ব্যবসাই আজ তার প্রাণ কেড়ে নিল।
নিহতের স্বজন ও এলাকাবাসী দ্রুত খুনিদের গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন। তারা চান, এ নৃশংসতার যেন বিচার হয় এবং আর কোনো শিশু যেন এভাবে পিতৃহারা না হয়।
নিহতের পরিবারের পাশে দাঁড়াতে বরগুনা জেলা বিএনপির নেতারা সোহাগের বাড়িতে ছুটে যান। জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি নজরুল ইসলাম মোল্লা বলেন, ‘আমরা সোহাগের পরিবারের পাশে আছি, আইনি সহায়তাসহ যেকোনো প্রয়োজনীয় সহায়তা দিতে প্রস্তুত বিএনপি।’