ঢাকা ০৬:২৪ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ০৩ নভেম্বর ২০২৫, ১৯ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

সাংবাদিক তুহিন হত্যার প্রতিবাদে খাগড়াছড়িতে বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ সভা

সাংবাদিক তুহিন হত্যার প্রতিবাদে খাগড়াছড়িতে বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ সভা

অনলাইন ডেস্ক
  • আপডেট সময় : ০৫:৫৬:৫১ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৮ অগাস্ট ২০২৫
  • / 104

জেলা প্রতিনিধিঃ সাংবাদিক তুহিন হত্যার প্রতিবাদে খাগড়াছড়িতে বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ সভা, গাজীপুরে সাংবাদিক আসাদুজ্জামান তুহিনকে নির্মমভাবে হত্যার, প্রতিবাদে এবং অপরাধীদের দ্রুত গ্রেফতার ও বিচার নিশ্চিতের দাবিতে, খাগড়াছড়িতে বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

শুক্রবার (৮ আগস্ট) সকাল ১১টায় খাগড়াছড়ি প্রেসক্লাব চত্বর থেকে এই প্রতিবাদ মিছিল শুরু হয়। মিছিলটি শহরের প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে আবার প্রেসক্লাব প্রাঙ্গণে এসে এক প্রতিবাদ সমাবেশে পরিণত হয়।

প্রতিবাদ সভায় সাংবাদিক নেতারা বলেন, একজন সাংবাদিককে প্রকাশ্যে এমন নৃশংসভাবে হত্যা শুধু ব্যক্তি তুহিনের উপর হামলা নয়, এটি পুরো সাংবাদিক সমাজ ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতার উপর আঘাত। তারা এই ঘটনাকে বাংলাদেশে গণমাধ্যমের স্বাধীনতা ও নিরাপত্তার জন্য এক ভয়াবহ বার্তা হিসেবে অভিহিত করেন।

সভায় সভাপতিত্ব করেন খাগড়াছড়ি প্রেসক্লাব সভাপতি তরুণ ভট্টাচার্য। সভা সঞ্চালনা করেন প্রেসক্লাবের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক সমীর মল্লিক। সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন প্রেসক্লাবের সহ-সভাপতি জহরুল আলম, সাধারণ সম্পাদক এইচ এম প্রফুল্ল, সাংগঠনিক সম্পাদক দিদারুল আলম, সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি শাহরিয়ার ইউনুস, সহ-সভাপতি কানন আচার্য, সহ-সাধারণ সম্পাদক বিপ্লব তালুকদার, অর্থ সম্পাদক নুরুচ্ছাফা মানিক, দীঘিনালা প্রেসক্লাব সভাপতি আল আমিন, সাধারণ সম্পাদক এম মহসিন মিয়া, পানছড়ি প্রেসক্লাবের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মোফাজ্জল হোসেন ইলিয়াস, প্রচার সম্পাদক আরিফুল ইসলাম মহিনসহ জেলা ও উপজেলার বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকবৃন্দ।

বক্তারা বলেন, সাংবাদিকদের ওপর একের পর এক হামলা, হয়রানি, মামলা ও হত্যা প্রমাণ করে দেশে গণমাধ্যমকর্মীরা ঝুঁকির মধ্যে রয়েছেন। এর জন্য দায়ী কেবল হত্যাকারী নয়, রাষ্ট্রযন্ত্রের উদাসীনতাও এর একটি বড় কারণ।

তারা বলেন, “আজ যদি তুহিন হত্যার বিচার দ্রুত না হয়, তাহলে আগামীতে আরও অনেক সাংবাদিক হামলার শিকার হবেন।” তারা এও হুঁশিয়ারি দেন, “যদি দ্রুত সময়ের মধ্যে অপরাধীদের আইনের আওতায় না আনা হয়, তাহলে সারাদেশব্যাপী সাংবাদিকরা কঠোর আন্দোলনে যেতে বাধ্য হবেন।”

বক্তারা প্রধানমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলেন, সাংবাদিক হত্যা যেন সাধারণ ঘটনা না হয়ে যায়, সেদিকে সতর্ক থাকতে হবে সরকারকে। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে আরও সক্রিয় হওয়ার পরামর্শ দেন তাঁরা।

তারা দাবি করেন—
আসাদুজ্জামান তুহিন হত্যাকাণ্ডের দ্রুত তদন্ত, জড়িতদের চিহ্নিত করে দ্রুত গ্রেফতার, দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা
সাংবাদিকদের জন্য সুরক্ষা নীতিমালা প্রণয়ন, সকল সাংবাদিক হত্যার বিচারের অগ্রগতি প্রকাশ, বক্তব্যে একাধিক সাংবাদিক বলেন, “আমরা সাংবাদিকতা করি জনস্বার্থে, আমরা রাষ্ট্রের চতুর্থ স্তম্ভ। অথচ আমাদের জীবন আজ নিরাপদ নয়। এর দায় কে নেবে?” প্রতিবাদ সভা শেষে খাগড়াছড়ির সাংবাদিকরা তুহিনের স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালন করেন।

এসময় বক্তারা বলেন, “এই প্রতিবাদ এখানেই শেষ নয়। প্রয়োজন হলে আমরা জাতীয় প্রেসক্লাব, মন্ত্রীসভা কিংবা রাষ্ট্রপতির কাছেও যাব। কিন্তু বিচারের জন্য থেমে থাকব না।”

খাগড়াছড়িতে অনুষ্ঠিত বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ সভা ছিল সাংবাদিক সমাজের একসঙ্গে জেগে ওঠার দৃঢ় বার্তা। তুহিন হত্যাকাণ্ড কেবল একজন পেশাদার সাংবাদিককে হারানো নয়, বরং গণমাধ্যমের স্বাধীনতা ও সাংবাদিকদের নিরাপত্তার উপর বড় প্রশ্নচিহ্ন রেখে দিয়েছে।

এই হত্যাকাণ্ডের পর শুধু প্রতিবাদ নয়, একটি স্থায়ী সমাধান জরুরি। সাংবাদিকদের জন্য আলাদা সুরক্ষা আইন, মিডিয়া সুরক্ষা ফান্ড, এবং দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল প্রতিষ্ঠা এখন সময়ের দাবি।

নতুন প্রজন্মের অনলাইন টিভি

নিউজটি শেয়ার করুন

সাংবাদিক তুহিন হত্যার প্রতিবাদে খাগড়াছড়িতে বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ সভা

সাংবাদিক তুহিন হত্যার প্রতিবাদে খাগড়াছড়িতে বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ সভা

আপডেট সময় : ০৫:৫৬:৫১ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৮ অগাস্ট ২০২৫

জেলা প্রতিনিধিঃ সাংবাদিক তুহিন হত্যার প্রতিবাদে খাগড়াছড়িতে বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ সভা, গাজীপুরে সাংবাদিক আসাদুজ্জামান তুহিনকে নির্মমভাবে হত্যার, প্রতিবাদে এবং অপরাধীদের দ্রুত গ্রেফতার ও বিচার নিশ্চিতের দাবিতে, খাগড়াছড়িতে বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

শুক্রবার (৮ আগস্ট) সকাল ১১টায় খাগড়াছড়ি প্রেসক্লাব চত্বর থেকে এই প্রতিবাদ মিছিল শুরু হয়। মিছিলটি শহরের প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে আবার প্রেসক্লাব প্রাঙ্গণে এসে এক প্রতিবাদ সমাবেশে পরিণত হয়।

প্রতিবাদ সভায় সাংবাদিক নেতারা বলেন, একজন সাংবাদিককে প্রকাশ্যে এমন নৃশংসভাবে হত্যা শুধু ব্যক্তি তুহিনের উপর হামলা নয়, এটি পুরো সাংবাদিক সমাজ ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতার উপর আঘাত। তারা এই ঘটনাকে বাংলাদেশে গণমাধ্যমের স্বাধীনতা ও নিরাপত্তার জন্য এক ভয়াবহ বার্তা হিসেবে অভিহিত করেন।

সভায় সভাপতিত্ব করেন খাগড়াছড়ি প্রেসক্লাব সভাপতি তরুণ ভট্টাচার্য। সভা সঞ্চালনা করেন প্রেসক্লাবের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক সমীর মল্লিক। সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন প্রেসক্লাবের সহ-সভাপতি জহরুল আলম, সাধারণ সম্পাদক এইচ এম প্রফুল্ল, সাংগঠনিক সম্পাদক দিদারুল আলম, সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি শাহরিয়ার ইউনুস, সহ-সভাপতি কানন আচার্য, সহ-সাধারণ সম্পাদক বিপ্লব তালুকদার, অর্থ সম্পাদক নুরুচ্ছাফা মানিক, দীঘিনালা প্রেসক্লাব সভাপতি আল আমিন, সাধারণ সম্পাদক এম মহসিন মিয়া, পানছড়ি প্রেসক্লাবের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মোফাজ্জল হোসেন ইলিয়াস, প্রচার সম্পাদক আরিফুল ইসলাম মহিনসহ জেলা ও উপজেলার বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকবৃন্দ।

বক্তারা বলেন, সাংবাদিকদের ওপর একের পর এক হামলা, হয়রানি, মামলা ও হত্যা প্রমাণ করে দেশে গণমাধ্যমকর্মীরা ঝুঁকির মধ্যে রয়েছেন। এর জন্য দায়ী কেবল হত্যাকারী নয়, রাষ্ট্রযন্ত্রের উদাসীনতাও এর একটি বড় কারণ।

তারা বলেন, “আজ যদি তুহিন হত্যার বিচার দ্রুত না হয়, তাহলে আগামীতে আরও অনেক সাংবাদিক হামলার শিকার হবেন।” তারা এও হুঁশিয়ারি দেন, “যদি দ্রুত সময়ের মধ্যে অপরাধীদের আইনের আওতায় না আনা হয়, তাহলে সারাদেশব্যাপী সাংবাদিকরা কঠোর আন্দোলনে যেতে বাধ্য হবেন।”

বক্তারা প্রধানমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলেন, সাংবাদিক হত্যা যেন সাধারণ ঘটনা না হয়ে যায়, সেদিকে সতর্ক থাকতে হবে সরকারকে। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে আরও সক্রিয় হওয়ার পরামর্শ দেন তাঁরা।

তারা দাবি করেন—
আসাদুজ্জামান তুহিন হত্যাকাণ্ডের দ্রুত তদন্ত, জড়িতদের চিহ্নিত করে দ্রুত গ্রেফতার, দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা
সাংবাদিকদের জন্য সুরক্ষা নীতিমালা প্রণয়ন, সকল সাংবাদিক হত্যার বিচারের অগ্রগতি প্রকাশ, বক্তব্যে একাধিক সাংবাদিক বলেন, “আমরা সাংবাদিকতা করি জনস্বার্থে, আমরা রাষ্ট্রের চতুর্থ স্তম্ভ। অথচ আমাদের জীবন আজ নিরাপদ নয়। এর দায় কে নেবে?” প্রতিবাদ সভা শেষে খাগড়াছড়ির সাংবাদিকরা তুহিনের স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালন করেন।

এসময় বক্তারা বলেন, “এই প্রতিবাদ এখানেই শেষ নয়। প্রয়োজন হলে আমরা জাতীয় প্রেসক্লাব, মন্ত্রীসভা কিংবা রাষ্ট্রপতির কাছেও যাব। কিন্তু বিচারের জন্য থেমে থাকব না।”

খাগড়াছড়িতে অনুষ্ঠিত বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ সভা ছিল সাংবাদিক সমাজের একসঙ্গে জেগে ওঠার দৃঢ় বার্তা। তুহিন হত্যাকাণ্ড কেবল একজন পেশাদার সাংবাদিককে হারানো নয়, বরং গণমাধ্যমের স্বাধীনতা ও সাংবাদিকদের নিরাপত্তার উপর বড় প্রশ্নচিহ্ন রেখে দিয়েছে।

এই হত্যাকাণ্ডের পর শুধু প্রতিবাদ নয়, একটি স্থায়ী সমাধান জরুরি। সাংবাদিকদের জন্য আলাদা সুরক্ষা আইন, মিডিয়া সুরক্ষা ফান্ড, এবং দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল প্রতিষ্ঠা এখন সময়ের দাবি।