ঢাকা ০৪:১৪ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৩০ অক্টোবর ২০২৫, ১৪ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

একদিনে ১০০০ মিমি বৃষ্টিপাত, ভয়াবহ বন্যা-লক্ষাধিক ঘরবাড়ি প্লাবিত

অনলাইন ডেস্ক
  • আপডেট সময় : ০২:০৯:৩৫ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৯ অক্টোবর ২০২৫
  • / 6

দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশ ভিয়েতনামে ২৪ ঘণ্টায় রেকর্ড ১০০০ মিলিমিটারের বেশি বৃষ্টিপাত হয়েছে। এতে দেশটির মধ্যাঞ্চলে ভয়াবহ বন্যা দেখা দিয়েছে। এ ঘটনায় মৃত্যু হয়েছে অন্তত ৯ জনের।

বৃষ্টিপাতের জেরে হুয়ে ও হোই আনসহ ঐতিহাসিক পর্যটন নগরীগুলোর পাশাপাশি বহু এলাকা তলিয়ে গেছে। এছাড়া বৃষ্টিপাতের পর ১ লাখের বেশি ঘরবাড়ি পানির নিচে চলে গেছে। বুধবার (২৯ অক্টোবর) এক প্রতিবদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স।

বার্তাসংস্থাটি বলছে, রেকর্ড পরিমাণ বৃষ্টিতে সৃষ্ট ভয়াবহ বন্যায় মধ্য ভিয়েতনামে অন্তত ৯ জনের মৃত্যু হয়েছে এবং আরও ৫ জনের খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না বলে বুধবার সরকারি এক বিবৃতিতে জানিয়েছে দেশটির প্রশাসন।

সরকারি বিবৃতিতে বলা হয়েছে, নিহতদের মধ্যে ৬ জন দা নাং শহর ও প্রাচীন নগরী হোই আন এলাকায় মারা গেছেন। উভয় স্থানই ভিয়েতনামের জনপ্রিয় পর্যটনকেন্দ্র। দেশটির দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সংস্থার এক পৃথক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, ১ লাখ ৩ হাজারেরও বেশি বাড়ি বন্যায় প্লাবিত হয়েছে, যার বেশিরভাগই পর্যটননগরী হুয়ে ও হোই আন এলাকায়।

ভিয়েতনামে প্রায় প্রতি বছরই ঝড় ও বন্যায় প্রাণহানি ও সম্পদের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি ঘটে থাকে। বিশেষ করে জুন থেকে অক্টোবর মাস পর্যন্ত বর্ষা মৌসুমে এই ধরনের পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে হয়।

দেশটির সরকারি আবহাওয়া সংস্থা জানায়, ইউনেস্কো স্বীকৃত ঐতিহাসিক নগরী হুয়ে ও হোই আন-এ এখনো ভারী বৃষ্টি অব্যাহত রয়েছে। সোমবার রাত পর্যন্ত সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় বৃষ্টিপাতের পরিমাণ ১০০০ মিলিমিটারের বেশি। আর এটি স্থানীয় ইতিহাসে একদিনে সর্বোচ্চ।

রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমে প্রকাশিত ছবিতে দেখা গেছে, হোই আন শহরের বড় অংশ পানিতে তলিয়ে গেছে, এমনকি অনেক বাড়ির ছাদ পর্যন্ত ডুবে আছে। অন্যদিকে হুয়ে শহরের ৪০টি উপজেলার মধ্যে ৩২টিই এখন পানির নিচে। সেখানে পানির গভীরতা ১ থেকে ২ মিটার।

এছাড়া দা নাং শহরের বেশিরভাগ জলাধার ইতোমধ্যেই সর্বোচ্চ ধারণক্ষমতায় পৌঁছেছে। আর নদীগুলোর পানির উচ্চতাও ক্রমেই বাড়ছে। সরকারি এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, “নদী ও নগর এলাকার নিচু অংশে এখনো বিস্তৃত এলাকাজুড়ে বন্যা চলছে। পাশাপাশি পাহাড়ি অঞ্চলে হঠাৎ বন্যা ও ভূমিধসের আশঙ্কা রয়ে গেছে।”

দেশটির দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সংস্থা জানায়, কয়েকটি এলাকায় ভূমিধসে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে এবং বিদ্যুৎ সরবরাহ বিচ্ছিন্ন হয়েছে। রাজধানী হ্যানয় ও বাণিজ্যিক নগরী হো চি মিন সিটির মধ্যে রেল যোগাযোগও মঙ্গলবার থেকে বন্ধ রয়েছে। এটি এখনো চালু করা সম্ভব হয়নি।

আবহাওয়া অধিদপ্তরের পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, আগামী দুই দিনও ভারী বৃষ্টি অব্যাহত থাকবে এবং কিছু এলাকায় বুধবার সকাল থেকে বৃহস্পতিবার রাত পর্যন্ত বৃষ্টিপাতের পরিমাণ ৪০০ মিলিমিটারেরও বেশি হতে পারে।

নতুন প্রজন্মের অনলাইন টিভি

নিউজটি শেয়ার করুন

ট্যাগস :

একদিনে ১০০০ মিমি বৃষ্টিপাত, ভয়াবহ বন্যা-লক্ষাধিক ঘরবাড়ি প্লাবিত

আপডেট সময় : ০২:০৯:৩৫ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৯ অক্টোবর ২০২৫

দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশ ভিয়েতনামে ২৪ ঘণ্টায় রেকর্ড ১০০০ মিলিমিটারের বেশি বৃষ্টিপাত হয়েছে। এতে দেশটির মধ্যাঞ্চলে ভয়াবহ বন্যা দেখা দিয়েছে। এ ঘটনায় মৃত্যু হয়েছে অন্তত ৯ জনের।

বৃষ্টিপাতের জেরে হুয়ে ও হোই আনসহ ঐতিহাসিক পর্যটন নগরীগুলোর পাশাপাশি বহু এলাকা তলিয়ে গেছে। এছাড়া বৃষ্টিপাতের পর ১ লাখের বেশি ঘরবাড়ি পানির নিচে চলে গেছে। বুধবার (২৯ অক্টোবর) এক প্রতিবদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স।

বার্তাসংস্থাটি বলছে, রেকর্ড পরিমাণ বৃষ্টিতে সৃষ্ট ভয়াবহ বন্যায় মধ্য ভিয়েতনামে অন্তত ৯ জনের মৃত্যু হয়েছে এবং আরও ৫ জনের খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না বলে বুধবার সরকারি এক বিবৃতিতে জানিয়েছে দেশটির প্রশাসন।

সরকারি বিবৃতিতে বলা হয়েছে, নিহতদের মধ্যে ৬ জন দা নাং শহর ও প্রাচীন নগরী হোই আন এলাকায় মারা গেছেন। উভয় স্থানই ভিয়েতনামের জনপ্রিয় পর্যটনকেন্দ্র। দেশটির দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সংস্থার এক পৃথক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, ১ লাখ ৩ হাজারেরও বেশি বাড়ি বন্যায় প্লাবিত হয়েছে, যার বেশিরভাগই পর্যটননগরী হুয়ে ও হোই আন এলাকায়।

ভিয়েতনামে প্রায় প্রতি বছরই ঝড় ও বন্যায় প্রাণহানি ও সম্পদের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি ঘটে থাকে। বিশেষ করে জুন থেকে অক্টোবর মাস পর্যন্ত বর্ষা মৌসুমে এই ধরনের পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে হয়।

দেশটির সরকারি আবহাওয়া সংস্থা জানায়, ইউনেস্কো স্বীকৃত ঐতিহাসিক নগরী হুয়ে ও হোই আন-এ এখনো ভারী বৃষ্টি অব্যাহত রয়েছে। সোমবার রাত পর্যন্ত সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় বৃষ্টিপাতের পরিমাণ ১০০০ মিলিমিটারের বেশি। আর এটি স্থানীয় ইতিহাসে একদিনে সর্বোচ্চ।

রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমে প্রকাশিত ছবিতে দেখা গেছে, হোই আন শহরের বড় অংশ পানিতে তলিয়ে গেছে, এমনকি অনেক বাড়ির ছাদ পর্যন্ত ডুবে আছে। অন্যদিকে হুয়ে শহরের ৪০টি উপজেলার মধ্যে ৩২টিই এখন পানির নিচে। সেখানে পানির গভীরতা ১ থেকে ২ মিটার।

এছাড়া দা নাং শহরের বেশিরভাগ জলাধার ইতোমধ্যেই সর্বোচ্চ ধারণক্ষমতায় পৌঁছেছে। আর নদীগুলোর পানির উচ্চতাও ক্রমেই বাড়ছে। সরকারি এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, “নদী ও নগর এলাকার নিচু অংশে এখনো বিস্তৃত এলাকাজুড়ে বন্যা চলছে। পাশাপাশি পাহাড়ি অঞ্চলে হঠাৎ বন্যা ও ভূমিধসের আশঙ্কা রয়ে গেছে।”

দেশটির দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সংস্থা জানায়, কয়েকটি এলাকায় ভূমিধসে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে এবং বিদ্যুৎ সরবরাহ বিচ্ছিন্ন হয়েছে। রাজধানী হ্যানয় ও বাণিজ্যিক নগরী হো চি মিন সিটির মধ্যে রেল যোগাযোগও মঙ্গলবার থেকে বন্ধ রয়েছে। এটি এখনো চালু করা সম্ভব হয়নি।

আবহাওয়া অধিদপ্তরের পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, আগামী দুই দিনও ভারী বৃষ্টি অব্যাহত থাকবে এবং কিছু এলাকায় বুধবার সকাল থেকে বৃহস্পতিবার রাত পর্যন্ত বৃষ্টিপাতের পরিমাণ ৪০০ মিলিমিটারেরও বেশি হতে পারে।