ঢাকা ১০:২১ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৫, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

কীটনাশকে হুমকিতে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ : নীতিতে সমন্বয়ের দাবি উপদেষ্টার

অনলাইন ডেস্ক
  • আপডেট সময় : ০৯:৪০:৩৬ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৫
  • / 7

দেশে কৃষিতে নির্বিচারে কীটনাশক ব্যবহারের প্রভাবে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ খাত সরাসরি ঝুঁকিতে পড়ছে বলে সতর্ক করেছেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার। তিনি মনে করেন, বিষয়টিকে শুধু কৃষি খাতের সমস্যা হিসেবে দেখলে হবে না; মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ নীতিতেও কীটনাশকের নিয়ন্ত্রণ স্পষ্টভাবে অন্তর্ভুক্ত করা এখন সময়ের দাবি।

সোমবার (২৪ নভেম্বর) ঢাকার সিরডাপ মিলনায়তনে অ্যাগ্রোইকোলজি কোয়ালিশন বাংলাদেশ, পিকেএসএফ, ওয়েল্ট হাঙ্গার হিলফে, ওয়েভ ফাউন্ডেশন ও এফআইভিডিবি-এর যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত ‘মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ খাতের মৌলিক নীতিমালা : বাস্তবায়নের চ্যালেঞ্জ ও উত্তরণ’ শীর্ষক পলিসি ডায়ালগে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন।

মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার জানান, কৃষিতে ব্যবহৃত কীটনাশক এখন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ খাতে গুরুতর হুমকি তৈরি করছে। তাই নীতিগত সমন্বয় ছাড়া এই সংকট মোকাবিলা সম্ভব নয়।

উপদেষ্টা বলেন, মাছ ধরার নিয়ম মানলেই হবে না, প্রাকৃতিক জলাশয়ের পরিবেশগত ভারসাম্য রক্ষা এখন অত্যন্ত জরুরি। দেশীয় মাছ রক্ষায় জরুরি পদক্ষেপ নিতে হবে। তিনি হাওর–বাওরের অভয়াশ্রম সুরক্ষায় দায়িত্বজ্ঞানহীন পর্যটনকে বড়ো বাধা হিসেবে চিহ্নিত করেন। তার মতে, অভয়াশ্রম ঘোষণা করলেই হবে না; পর্যটন নীতিতেও সুস্পষ্ট নিয়ন্ত্রণ না থাকলে উদ্যোগ সফল হয় না।

তিনি আরও বলেন, খাদ্য উৎপাদনে কৃষি যত গুরুত্ব পায়, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ খাত ততটা পায় না। এই অসম দৃষ্টিভঙ্গি বদলানো জরুরি। বরেন্দ্র অঞ্চলে তাপমাত্রা বৃদ্ধি এবং জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে মাছ মরার ঘটনায় দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ারও আহ্বান জানান তিনি।

ডায়ালগে সভাপতিত্ব করেন পিকেএসএফের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. ফজলুল কাদের। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন এফএও’র বাংলাদেশ প্রতিনিধি শি জিয়াওকুন এবং বাংলাদেশ প্রাণিসম্পদ গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক ড. শাকিলা ফারুক। স্বাগত বক্তব্য দেন অ্যাগ্রোইকোলজি কোয়ালিশনের আহ্বায়ক ও ওয়েভ ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক মহসিন আলী। গবেষণাপত্র উপস্থাপন করেন সেন্টার ফর সোশ্যাল রিসার্চের গবেষণা পরিচালক আহমেদ বোরহান, সঞ্চালনা করেন ওয়েভ ফাউন্ডেশনের উপ-পরিচালক কানিজ ফাতেমা।

সরকারি-বেসরকারি সংস্থা, এনজিও প্রতিনিধি, খামারি ও বিশেষজ্ঞসহ বিভিন্ন স্টেকহোল্ডার এই আলোচনায় অংশ নেন। আলোচকদের মতে, কীটনাশকের যৌথ প্রভাব, জলবায়ু পরিবর্তন, প্রাকৃতিক জলাশয়ের সংকোচন এবং অনিয়ন্ত্রিত পর্যটন—সব মিলিয়ে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ খাত এখন একটি জটিল সংকটের দিকে এগোচ্ছে। নীতি–সমন্বয় ছাড়া এই খাতের বাস্তব সমস্যা সমাধান সম্ভব নয়।

নতুন প্রজন্মের অনলাইন টিভি

নিউজটি শেয়ার করুন

ট্যাগস :

কীটনাশকে হুমকিতে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ : নীতিতে সমন্বয়ের দাবি উপদেষ্টার

আপডেট সময় : ০৯:৪০:৩৬ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৫

দেশে কৃষিতে নির্বিচারে কীটনাশক ব্যবহারের প্রভাবে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ খাত সরাসরি ঝুঁকিতে পড়ছে বলে সতর্ক করেছেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার। তিনি মনে করেন, বিষয়টিকে শুধু কৃষি খাতের সমস্যা হিসেবে দেখলে হবে না; মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ নীতিতেও কীটনাশকের নিয়ন্ত্রণ স্পষ্টভাবে অন্তর্ভুক্ত করা এখন সময়ের দাবি।

সোমবার (২৪ নভেম্বর) ঢাকার সিরডাপ মিলনায়তনে অ্যাগ্রোইকোলজি কোয়ালিশন বাংলাদেশ, পিকেএসএফ, ওয়েল্ট হাঙ্গার হিলফে, ওয়েভ ফাউন্ডেশন ও এফআইভিডিবি-এর যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত ‘মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ খাতের মৌলিক নীতিমালা : বাস্তবায়নের চ্যালেঞ্জ ও উত্তরণ’ শীর্ষক পলিসি ডায়ালগে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন।

মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার জানান, কৃষিতে ব্যবহৃত কীটনাশক এখন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ খাতে গুরুতর হুমকি তৈরি করছে। তাই নীতিগত সমন্বয় ছাড়া এই সংকট মোকাবিলা সম্ভব নয়।

উপদেষ্টা বলেন, মাছ ধরার নিয়ম মানলেই হবে না, প্রাকৃতিক জলাশয়ের পরিবেশগত ভারসাম্য রক্ষা এখন অত্যন্ত জরুরি। দেশীয় মাছ রক্ষায় জরুরি পদক্ষেপ নিতে হবে। তিনি হাওর–বাওরের অভয়াশ্রম সুরক্ষায় দায়িত্বজ্ঞানহীন পর্যটনকে বড়ো বাধা হিসেবে চিহ্নিত করেন। তার মতে, অভয়াশ্রম ঘোষণা করলেই হবে না; পর্যটন নীতিতেও সুস্পষ্ট নিয়ন্ত্রণ না থাকলে উদ্যোগ সফল হয় না।

তিনি আরও বলেন, খাদ্য উৎপাদনে কৃষি যত গুরুত্ব পায়, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ খাত ততটা পায় না। এই অসম দৃষ্টিভঙ্গি বদলানো জরুরি। বরেন্দ্র অঞ্চলে তাপমাত্রা বৃদ্ধি এবং জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে মাছ মরার ঘটনায় দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ারও আহ্বান জানান তিনি।

ডায়ালগে সভাপতিত্ব করেন পিকেএসএফের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. ফজলুল কাদের। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন এফএও’র বাংলাদেশ প্রতিনিধি শি জিয়াওকুন এবং বাংলাদেশ প্রাণিসম্পদ গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক ড. শাকিলা ফারুক। স্বাগত বক্তব্য দেন অ্যাগ্রোইকোলজি কোয়ালিশনের আহ্বায়ক ও ওয়েভ ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক মহসিন আলী। গবেষণাপত্র উপস্থাপন করেন সেন্টার ফর সোশ্যাল রিসার্চের গবেষণা পরিচালক আহমেদ বোরহান, সঞ্চালনা করেন ওয়েভ ফাউন্ডেশনের উপ-পরিচালক কানিজ ফাতেমা।

সরকারি-বেসরকারি সংস্থা, এনজিও প্রতিনিধি, খামারি ও বিশেষজ্ঞসহ বিভিন্ন স্টেকহোল্ডার এই আলোচনায় অংশ নেন। আলোচকদের মতে, কীটনাশকের যৌথ প্রভাব, জলবায়ু পরিবর্তন, প্রাকৃতিক জলাশয়ের সংকোচন এবং অনিয়ন্ত্রিত পর্যটন—সব মিলিয়ে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ খাত এখন একটি জটিল সংকটের দিকে এগোচ্ছে। নীতি–সমন্বয় ছাড়া এই খাতের বাস্তব সমস্যা সমাধান সম্ভব নয়।