সাখাওয়াত ও মাসুদের চেয়ে জনপ্রিয় কালাম!
- আপডেট সময় : ১০:৪৮:৫৪ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৫
- / 6
নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনের দলীয় প্রার্থী হিসেবে মডেল গ্রুপের চেয়ারম্যান মাসুদুজ্জামান ও মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন খানের নাম বেশ জোরেসুরেই শোনা যাচ্ছে। একজনকে অর্থ্যাৎ মাসুদুজ্জামানকে গত ০৩ নভেম্বর নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনের দলীয় প্রার্থী হিসেবে তার নাম ঘোষণা করেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। অপরজন অ্যাডভোকেট সাখাওয়াতকে ২০ ডিসেম্বর দলীয় মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে বলে জানাগেছে। তবে অ্যাডভোকেট সাখাওয়াতের নাম এখনও আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা করেনি দলটি।
বিগত আন্দোলন সংগ্রামে অ্যাডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন খানের ব্যাপক ভূমিকা ছিলো। একাধীক হামলা মামলার শিকার হয়ে কারানির্যাতন থেকে শুরু নানাভাবে দলের জন্য ত্যাগ শিকার করেছেন তিনি। তবে ত্যাগের খাতায় নাম লিখালেও এখনও তেমনভাবে দলের নেতাকর্মীদের আস্থা কুড়াতে পারেন নি তিনি। তবে দিনে দিনে তার প্রতি নেতাকর্মীদের আস্থা ও জনপ্রিয়তা গড়ে উঠতে দেখা গেছে।
অপরজন মাসুদুজ্জামান হলেন ব্যাপক বির্তকীত ও সমালোচিত। ৫ আগস্টের পর থেকেই মাসুদুজ্জামানকে নিয়ে দলীয় নেতাকর্মীদের মাঝে অসন্তুষ দেখা যায়। বিএনপি নেতাকর্মীদের সাথে কথা বলে জানাযায়, বিগত আন্দোলন সংগ্রামে তার কোন ভূমিকাই ছিলো না। না ছিলেন প্রতিবাদে, না ছিলেন মিছিলে, না ছিলেন হামলায়, না ছিলেন মামলায়। আওয়ামী লীগের পুরোটা শাষনামল তিনি ছিলেন তাদের সাথেই। তাদের সাথে থেকে তিনি ছিলেন বীরদর্পে। তিনি মূলত ওসমানদের দোসর। আর এ কারণেই তিনি দলীয় মনোনয়ন পাওয়ার পরও মহানগর বিএনপির বৃহৎ একটা অংশ এখনও তার থেকে দূরে। সুতরাং কিছু সুবিধাবাদী নেতা আর তার গার্মেন্টস প্রতিষ্ঠানের শ্রমিক ছাড়া তার পাশে তেমন কেউ নেই বলে দাবি করেন বিএনপি নেতাকর্মীরা। সুতরাং জনপ্রিয়তার দিক দিয়ে তিনি সাখাওয়াতের চাইতেও অনেক পিছিয়ে আছেন এতে কোন সন্দেহ নেই।
তবে নারায়ণগঞ্জ মহানগরে এমন একজন বিএনপি নেতা রয়েছেন যিনি এখনও তার জনপ্রিয়তা ধরে রাখতে সক্ষম হয়েছেন এবং এখনও তার জনপ্রিয়তা বেড়েই চলেছে। তিনি হলেন, নারায়ণগঞ্জ বিএনপির ঐতিহ্যবাহী পরিবারের সন্তান মহানগর বিএনপির সাবেক সভাপতি ও সাবেক সাংসদ অ্যাডভোকেট আবুল কালাম। তার বাবা ছিলেন হাজী জালাল উদ্দিন আহমেদ (জালাল হাজী)। তিনি ছিলেন বিএনপির অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা এবং সাবেক সাংসদ।
জালাল হাজী বিএনপির নারায়ণগঞ্জ শহর কমিটির প্রতিষ্ঠাতা আহ্বায়ক এবং বিএনপির প্রার্থী হিসেবে জাতীয় সংসদের নারায়ণগঞ্জ-৫ আসন থেকে ১৯৭৮ সালে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন। তিনি দীর্ঘ দিন ঐতিহ্যবাহী নারায়ণগঞ্জ পৌরসভার কমিশনার ও ভাইস চেয়ারম্যান ছিলেন। তিনি নারায়ণগঞ্জ বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ, শহরের গণবিদ্যা নিকেতন উচ্চ বিদ্যালয়, কদমরসূলের হাজী সিরাজউদ্দিন মেমোরিয়াল উচ্চবিদ্যালয়সহ বহু শিক্ষা ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠা করেন। তাই আজও নারায়ণগঞ্জবাসী তাঁকে গভীর শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করে।
সেই জালাল হাজীর ছেলে অ্যাডভোকেট আবুল কালাম নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনে ৩ বার বিএনপি থেকে এমপি নির্বাচিত হন। দীর্ঘ প্রায় ৩৫ বছর ধরে বিএনপির রাজনীতির সাথে যুক্ত থাকলেও কখনো তাকে বিতর্কীত কর্মকান্ডের সাথে যুক্ত থাকতে দেখা যায়নি। তাই নারায়ণগঞ্জের বিভিন্ন রাজনৈতিক নেতাদের নিয়ে নানা প্রশ্ন থাকলেও আবুল কালামকে নিয়ে তেমন কোন প্রশ্ন নেই বললেই চলে। একাধীকবার এমপি থাকার পরও তার বিরুদ্ধে ছিলো না কোন দুর্নীতির অভিযোগও। অত্যান্ত সততার সহিত জনপ্রতিনিধিত্ব করে গেছেন। এমপি থাকা অবস্থায় তিনি নারায়ণগঞ্জে বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কর্মকান্ডেও ভূমিকা রাখেন। শুধু তাই নয়, সর্বশেষ মহানগর বিএনপির সভাপতি থাকাকালিন সময়েও তিনি অত্যান্ত নিষ্ঠা ও বলিষ্ঠ নেতৃত্বের মাধ্যমে দলকে শক্তিশালী করার ভূমিকা রেখে গেছেন এবং ৫ আগস্টে আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হলেও তিনি এখনও পর্যন্ত নিজেকে সকল বিতর্কের বাইরে রেখে দিন দিন জনপ্রিয়তা আরও বাড়িয়ে তোলেছেন। তাই দলটির নেতাকর্মীরা এখনও চাচ্ছে, দলীয় মনোনয়ন যেন তার মত একজন জনপ্রিয় ও কর্মীবান্ধব নেতাকেই দেয়া হয়। কারণ, তাকে মনোনয়ন দিলে দলের সুনাম দিন দিন বাড়বে এবং সেই সাথে দলও হবে শক্তিশালী।





















