ঢাকা ০৪:২৭ অপরাহ্ন, শনিবার, ২১ জুন ২০২৫, ৭ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ভাঙ্গায় বাবা-মাকে দেখতে এসে দুই ভাই খুন

অনলাইন ডেস্ক
  • আপডেট সময় : ১০:৫৮:২০ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৪ আগস্ট ২০২০ ১৫ বার পড়া হয়েছে

ফরিদপুরের ভাঙ্গায় বাবা-মাকে দেখতে এসে প্রতিপক্ষের হাতে খুন হলেন আপন দুই ভাই। নির্মম ঘটনাটি ঘটেছে আজ সোমবার (২৪ আগস্ট) ভোর সোয়া ৬টার দিকে উপজেলার নুরুল্লাগঞ্জ ইউনিয়নের হাবেলী গঙ্গাধরদি গ্রামে। নিহতরা হলেন বড় ভাই শামিম মাতুব্বর (২৬) ও তার ছোট ভাই রাকিব মাতুব্বর (১৮)। শামিম মাতুব্বর গতকাল বাবা-মা-ছোট ভাইকে দেখতে ঢাকা থেকে গ্রামের বাড়িতে আসে। রাকিব মাতুব্বর স্থানীয় বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণীর ছাত্র। শামিম মাতুব্বর ঢাকায় একটি বে-সরকারী ফার্মে চাকুরী করেন। নিহত শামিম ও রকিব ওই গ্রামের গিয়াসউদ্দিন মাতুব্বরের ছেলে।

এদিকে খবর পেয়ে জোড়াখুনের ঘটনাস্থল সরজমিনে পরিদর্শন করেছেন ফরিদপুরের পুলিশ সুপার আলিমুজ্জামান। এসময় তিনি গিয়াসউদ্দিন মাতুব্বরের পরিবারের সাথে দেখা করেন এবং হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িতদের নিশ্চিত গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনা হবে পরিবারটিকে আশ্বস্ত করেন। পাশাপাশি খবর পেয়ে ভাঙ্গা থানার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার গাজী রবিউল ইসলাম, ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো: শফিকুর রহমান সঙ্গীয় পুলিশ সদস্যরা ঘটনা স্থলে ছুটে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনলেও ততক্ষণে ঘটনার সাথে জড়িত অপরাধীরা গ্রাম ছেড়ে পালিয়ে যায়। স্থানীয় পুলিশ জানায়, জোড়াখুনের ঘটনায় সন্দেহভাজন একজনকে আটক করা হয়েছে এবং ঘটনার সাথে জড়িত পলাতকদের সনাক্ত করে পুলিশের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

স্থানীয় সূত্র ও গ্রামবাসীরা জানায়, গতকাল রোববার বিকেলে শামিম ও রাকিব বাড়ির পাঁশের চকের নতুন পানিতে মাছ ধরার জাল পাততে গেলে স্থানীয় আব্দুর ছাত্তারের ছেলে জামাল ও আবজাল দুই ব্যক্তি তাদের বাধা দেয় এবং চকের পানি থেকে তাদের জাল উঠিয়ে ফেলে। এই নিয়ে প্রতিপক্ষের সাথে সংঘাতে জড়িয়ে পরে দুই ভাই। ওই ঘটনাকে কেন্দ্র করে আজ ভোরে প্রতিপক্ষের লোকজন দেশীয় অস্ত্রে সজ্জিত হয়ে লোকবল নিয়ে গিয়াসউদ্দিন মাতুব্বরের বাড়িতে হামলা করে। এসময় শামিম মাতুব্বর ও তার ছোট ভাই রাকিব মাতুব্বর তাদের বাঁধা দিতেই প্রতিপক্ষের লোকজন উত্তেজিত মুহূর্তে ধারালা অস্ত্র দিয়ে মা-বাবা ও ভাইবোনের সামনে শামিম মাতুব্বর ও তার ছোট ভাই রাকিব মাতুব্বরকে নির্দয়ভাবে কুপিয়ে জখম করে পালিয়ে যায়। তাতক্ষনিকভাবে মুমূর্ষু অবস্থায় গ্রামের লোকজনের সহযোগিতায় স্বজনেরা গুরুত্বর রক্তাত্ত অবস্থায় দুই ভাইকে উদ্ধার করে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার সময় পথেমধ্যে তাদের মৃত্যু হয়।

ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ডা. সাইফুল ইসলাম জানান, অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে তাদের মৃত্যু হয়েছে। নিহতদের মাথায় ও বুকে একাধিক কোপের আঘাত রয়েছে।

নিহতদের পিতা গিয়াসউদ্দিন মাতুব্ব সাংবাদিকদের বলেন, আমার চার ছেলে ১ মেয়ে। এরমধ্যে শামিম গতকাল ঢাকা থেকে আমাদের দেখতে এসেছিল। কিন্তু খুনীরা এভাবে আমার ছেলেকে খুন করবে আমি বুঝি নাই। এভাবে আমার ছেলেদের যারা খুন করেছে আমি তাদের ফাঁসি চাই। আমার মত করে যেন এই বয়সে সন্তারের লাশ কোন পিতার কাঁধে উঠাতে হয় বলেই নিহত ছেলেদের জন্য তিনি হাউমাউ কেঁদে উঠে মূর্ছা জান।

এই বিষয়ে ভাঙ্গা থানার ওসি (ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা) মো: শফিকুর রহমান সাংবাদিকদের তাৎক্ষণিক জানান, এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে পুলিশ একজনকে আটক করেছে। এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে। এ ব্যাপারে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে তিনি জানান।

নতুন প্রজন্মের অনলাইন টিভি

নিউজটি শেয়ার করুন

আপলোডকারীর তথ্য
ট্যাগস :

ভাঙ্গায় বাবা-মাকে দেখতে এসে দুই ভাই খুন

আপডেট সময় : ১০:৫৮:২০ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৪ আগস্ট ২০২০

ফরিদপুরের ভাঙ্গায় বাবা-মাকে দেখতে এসে প্রতিপক্ষের হাতে খুন হলেন আপন দুই ভাই। নির্মম ঘটনাটি ঘটেছে আজ সোমবার (২৪ আগস্ট) ভোর সোয়া ৬টার দিকে উপজেলার নুরুল্লাগঞ্জ ইউনিয়নের হাবেলী গঙ্গাধরদি গ্রামে। নিহতরা হলেন বড় ভাই শামিম মাতুব্বর (২৬) ও তার ছোট ভাই রাকিব মাতুব্বর (১৮)। শামিম মাতুব্বর গতকাল বাবা-মা-ছোট ভাইকে দেখতে ঢাকা থেকে গ্রামের বাড়িতে আসে। রাকিব মাতুব্বর স্থানীয় বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণীর ছাত্র। শামিম মাতুব্বর ঢাকায় একটি বে-সরকারী ফার্মে চাকুরী করেন। নিহত শামিম ও রকিব ওই গ্রামের গিয়াসউদ্দিন মাতুব্বরের ছেলে।

এদিকে খবর পেয়ে জোড়াখুনের ঘটনাস্থল সরজমিনে পরিদর্শন করেছেন ফরিদপুরের পুলিশ সুপার আলিমুজ্জামান। এসময় তিনি গিয়াসউদ্দিন মাতুব্বরের পরিবারের সাথে দেখা করেন এবং হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িতদের নিশ্চিত গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনা হবে পরিবারটিকে আশ্বস্ত করেন। পাশাপাশি খবর পেয়ে ভাঙ্গা থানার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার গাজী রবিউল ইসলাম, ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো: শফিকুর রহমান সঙ্গীয় পুলিশ সদস্যরা ঘটনা স্থলে ছুটে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনলেও ততক্ষণে ঘটনার সাথে জড়িত অপরাধীরা গ্রাম ছেড়ে পালিয়ে যায়। স্থানীয় পুলিশ জানায়, জোড়াখুনের ঘটনায় সন্দেহভাজন একজনকে আটক করা হয়েছে এবং ঘটনার সাথে জড়িত পলাতকদের সনাক্ত করে পুলিশের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

স্থানীয় সূত্র ও গ্রামবাসীরা জানায়, গতকাল রোববার বিকেলে শামিম ও রাকিব বাড়ির পাঁশের চকের নতুন পানিতে মাছ ধরার জাল পাততে গেলে স্থানীয় আব্দুর ছাত্তারের ছেলে জামাল ও আবজাল দুই ব্যক্তি তাদের বাধা দেয় এবং চকের পানি থেকে তাদের জাল উঠিয়ে ফেলে। এই নিয়ে প্রতিপক্ষের সাথে সংঘাতে জড়িয়ে পরে দুই ভাই। ওই ঘটনাকে কেন্দ্র করে আজ ভোরে প্রতিপক্ষের লোকজন দেশীয় অস্ত্রে সজ্জিত হয়ে লোকবল নিয়ে গিয়াসউদ্দিন মাতুব্বরের বাড়িতে হামলা করে। এসময় শামিম মাতুব্বর ও তার ছোট ভাই রাকিব মাতুব্বর তাদের বাঁধা দিতেই প্রতিপক্ষের লোকজন উত্তেজিত মুহূর্তে ধারালা অস্ত্র দিয়ে মা-বাবা ও ভাইবোনের সামনে শামিম মাতুব্বর ও তার ছোট ভাই রাকিব মাতুব্বরকে নির্দয়ভাবে কুপিয়ে জখম করে পালিয়ে যায়। তাতক্ষনিকভাবে মুমূর্ষু অবস্থায় গ্রামের লোকজনের সহযোগিতায় স্বজনেরা গুরুত্বর রক্তাত্ত অবস্থায় দুই ভাইকে উদ্ধার করে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার সময় পথেমধ্যে তাদের মৃত্যু হয়।

ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ডা. সাইফুল ইসলাম জানান, অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে তাদের মৃত্যু হয়েছে। নিহতদের মাথায় ও বুকে একাধিক কোপের আঘাত রয়েছে।

নিহতদের পিতা গিয়াসউদ্দিন মাতুব্ব সাংবাদিকদের বলেন, আমার চার ছেলে ১ মেয়ে। এরমধ্যে শামিম গতকাল ঢাকা থেকে আমাদের দেখতে এসেছিল। কিন্তু খুনীরা এভাবে আমার ছেলেকে খুন করবে আমি বুঝি নাই। এভাবে আমার ছেলেদের যারা খুন করেছে আমি তাদের ফাঁসি চাই। আমার মত করে যেন এই বয়সে সন্তারের লাশ কোন পিতার কাঁধে উঠাতে হয় বলেই নিহত ছেলেদের জন্য তিনি হাউমাউ কেঁদে উঠে মূর্ছা জান।

এই বিষয়ে ভাঙ্গা থানার ওসি (ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা) মো: শফিকুর রহমান সাংবাদিকদের তাৎক্ষণিক জানান, এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে পুলিশ একজনকে আটক করেছে। এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে। এ ব্যাপারে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে তিনি জানান।