নতুন নিষেধাজ্ঞা কি থামাতে পারবে ইরানের পরমাণু অভিযাত্রা?
নতুন নিষেধাজ্ঞা কি থামাতে পারবে ইরানের পরমাণু অভিযাত্রা
অনলাইন ডেস্ক : যুক্তরাষ্ট্র ও ইরানের মধ্যে পরমাণু ইস্যুতে এক মাস ধরে চার দফা সংলাপ চললেও সংকট নিরসনের পরিবর্তে উত্তেজনা আরও বাড়ছে। এমন আলোচনার মাঝেই ওয়াশিংটন তেহরানের বিরুদ্ধে নতুন করে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। সোমবার (১২ মে) এক বিবৃতিতে এ তথ্য নিশ্চিত করে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর।
নতুন নিষেধাজ্ঞার মূল লক্ষ্য ইরানের সামরিক বাহিনীর অস্ত্র উন্নয়ন গবেষণা সংস্থা অরগানাইজেশন অব ডিফেন্সিভ ইনোভেশন অ্যান্ড রিসার্চ (এসপিএনডি)। সংস্থাটির সঙ্গে যুক্ত তিন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা ও একটি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে।
যদিও তাদের নাম-পরিচয় প্রকাশ করা হয়নি, তবে যুক্তরাষ্ট্র জানিয়েছে- তাদের দেশে থাকা সব সম্পদ ইতোমধ্যে জব্দ (ফ্রিজ) করা হয়েছে। একইসঙ্গে, তারা যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ করতে পারবেন না এবং কোনো মার্কিন প্রতিষ্ঠান তাদের সঙ্গে আর্থিক বা বাণিজ্যিক লেনদেনে যুক্ত হতে পারবে না।
সোমবার মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে বলেছে, ইরান তার পারমাণবিক কর্মসূচিকে উল্লেখযোগ্যভাবে সম্প্রসারিত করছে এবং পরমাণু অস্ত্র তৈরির জন্য গবেষণা ও উন্নয়ন অব্যাহত রেখেছে।
বিশেষ করে, ইরান বর্তমানে এমন একটি মাত্রায় ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ করছে যা কেবল অস্ত্র নির্মাণেই ব্যবহার হয়। বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়, বিশ্বে ইরানই একমাত্র দেশ, যাদের পারমাণবিক অস্ত্র নেই কিন্তু তারা ইতোমধ্যেই ৬০ শতাংশ পর্যন্ত ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ করেছে।
এ ছাড়া ইরান নানা ‘ফ্রন্ট কোম্পানি’ এবং ক্রয় এজেন্টদের ব্যবহার করে বিদেশি সরবরাহকারীদের কাছ থেকে দ্বৈত ব্যবহারের প্রযুক্তি সংগ্রহের প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে বলে অভিযোগ করেছে যুক্তরাষ্ট্র।
ওয়াশিংটনের ভাষ্য, এই নিষেধাজ্ঞার উদ্দেশ্য হলো- এসপিএনডি’র মাধ্যমে পরিচালিত সম্ভাব্য পারমাণবিক গবেষণা ও অস্ত্র উন্নয়ন কার্যক্রমকে দেরি করানো এবং ক্ষমতা হ্রাস করা। এতে ইরানকে পারমাণবিক অস্ত্র অর্জন থেকে বিরত রাখার মার্কিন প্রতিশ্রুতি আবারও স্পষ্ট হয়েছে।
তবে বিশ্লেষকদের মতে, যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা ও কূটনৈতিক তৎপরতার মধ্যেও ইরান তার অবস্থান থেকে সরে আসার তেমন কোনো ইঙ্গিত দিচ্ছে না। বরং দেশটি নিজস্ব অবস্থানকে আরও দৃঢ় করছে এবং পশ্চিমাদের ওপর আস্থার অভাব বারবার প্রকাশ করছে।
ফলে প্রশ্ন থেকেই যায়—নতুন এই নিষেধাজ্ঞা ইরানকে আদৌ থামাতে পারবে কি তার পরমাণু অভিযাত্রায়? বিশ্বরাজনীতির পটপরিবর্তনের প্রেক্ষাপটে এই প্রশ্নের উত্তরই নির্ধারণ করবে মধ্যপ্রাচ্যের পরবর্তী নিরাপত্তা চিত্র।