জয়পুরহাটে মাদ্রাসার প্রতিষ্ঠাতা সদস্য আহমদ ইশতিয়াক এর বিরুদ্ধে অর্থ আত্বসাৎ ও জালিয়াতির অভিযোগ

আবু রায়হান, জয়পুরহাটঃ জয়পুরহাটের কড়ই নুরুলহুদা কামিল মাদ্রাসার প্রতিষ্ঠাতা সদস্য আহমদ ইশতিয়াক এর বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাৎ ও জালিয়াতির অভিযোগ পাওয়া গেছে।

প্রথম পর্বে উল্লেখিত সূত্র মোতাবেক ২০১৭ইং সালে কড়ই নুরুলহুদা কামিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ নিয়োগের সময় প্রতিষ্ঠাতা সদস্য আহমদ ইশতিয়াক ও তার চাচাতো ভাই অত্র মাদ্রাসার দাতা সদস্য আহমদ আল ফারুক, ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মোঃ নূরুন্নবী মন্ডল ও সহকারী শিক্ষক মোঃ দেলওয়ার হোসেন মিলে জয়পুরহাট জেলার কালাই পুর ফাজিল মাদ্রাসার ভাইচ-প্রিন্সিপাল মোঃ আনছার আলীর কাছ থেকে অধ্যক্ষ পদে নিয়োগের জন্য ২১ লক্ষ টাকা নিয়েছিল এবং এ বিষয়ে বম্বু ইউনিয়ন পরিষদে বিচার শালিসে স্বীকারও করেছেন।

উল্লেখ্য উক্ত শালিসে উপস্থিত সকলের সামনে আহমদ আল ফারুক অধ্যক্ষ নিয়োগের টাকা থেকে ৫ লক্ষ টাকা তার কাছে বলে স্বীকার করেছিল।
পরে জয়পুরহাট জেলা সদরে ইউপি চেয়ারম্যানসহ স্থানীয় গণ্যমাণ্য ব্যক্তিবর্গের উপস্থিতিতে ষ্টাপ পেপারে লিখিত আপোষনামায় আমরা ১ম পক্ষ ২য় পক্ষ মোঃ আনছার আলী ভাইচ-প্রিন্সিপাল পুর ফাজিল মাদ্রাসা কালাই জয়পুরহাট এর নিকট থেকে কড়ই নুরুলহুদা কামিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ পদে নিয়োগের জন্য জমাকৃত সমুদয় টাকা ফেরৎ প্রদান করলাম মর্মে নিজ নিজ নামের স্বাক্ষর করেন। এবস থেকে পরিষ্কার ভাবেই বোঝা যায় যে, আহমদ ইশতিয়াক এর বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাৎ ও জালিয়াতির অভিযোগ সত্য।

তারা মনে করে প্রতিষ্ঠানটি তাদের পৈত্রিক সম্পত্তি। অথচ যতটুকু প্রয়োজন তারা ততটুকুই দিলেও সেই জমির ওয়ারীশগণের পক্ষে কড়ই হাজিপাড়া এলাকার ওমর আলীর ছেলে মমতাজ উদ্দিন জেলা প্রশাসক বরাবর কড়ই নুরুল হুদা কামিল মাদ্রাসার গভনিং বডির প্রতিষ্ঠাতা সদস্য আহমদ ইশতিয়াক অন্য ওয়ারিশের জমি দান করে সদস্য হয়েছেন মর্মে উক্ত জমি প্রকৃত ওয়ারিশের নিকট ফেরত প্রদান প্রসঙ্গে একটি লিখিত অভিযোগ করেছেন।

অভিযোগ পত্রে উলেখ করা হয়েছে মাদ্রাসার প্রতিষ্ঠাতা সদস্য হওয়ার জন্য আহমদ ইশতিয়াক কড়ই মৌজায় ৮০৩ দাগে পঁচিশ হাজার টাকা সমমানে ১৪ শতক জমি দান করেছেন। উক্ত দাগে তাদের মোট জমির প্রাপ্যতা হলো ৮ শতক। যা রেকর্ডে প্রমানিত। তারা দুই ভাই, এক বোন, উপরোন্ত তাদের বোন উক্ত দাগ থেকে ১০ শতক জমি অন্যত্র বিক্রি করেছেন। তিনি দলিলে দেখিয়েছেন ৮০৩ দাগে ৪৮ শতকের কাত ১৪ শতাংশ জমি দান করেছেন বাস্তবে তা সঠিক নয়। কারণ ৮০৩ দাগে ৪৮ শতক জমিতে অনেক ওয়ারিশের প্রাপ্যতা রয়েছে যা সি,এস,এ আর,এস খতিয়ান দ্বারা প্রমানিত। আহমদ ইশতিয়াক তথ্য গোপন করে ওয়ারিশদের না জানিয়ে ১৯৯৭ সাল থেকে প্রতিষ্ঠাতা সদস্য পদ দখল করে আছেন যা দীর্ঘদিন গোপন ছিল। বিষয়টি জানা জানি হওয়ার পর সদস্য পদ রক্ষার জন্য তিনি রেকর্ড সংশোধনের কথা বলে অদ্যাবদি পর্যন্ত বিভিন্ন কৌশল চালিয়ে যাচ্ছেন।

সদস্য পদ রক্ষার জন্য তিনি রেকর্ড সংশোধনের কথা বলে বিভিন্ন কৌশল চালিয়ে গেলেও কড়ই নুরুল হুদা কামিল মাদ্রাসার প্রতিষ্ঠাতা সদস্য পদ হাল রেকর্ড সংষোধন না হওয়া পর্যন্ত স্থগিত করণের জন্য জেলা প্রশাসক বরাবর আরও একটি লিখিত অভিযোগ দেওয়া হয়েছে।
অত্র প্রতিষ্ঠানের গর্ভনিং বডির সহ-সভাপতি আহমদ ইশতিয়াক, দাতা সদস্য আহমদ আল ফারুক ও সহকারি শিক্ষক (প্রদর্শক) দেলোয়ার হোসেন যোগসাযসে ব্যক্তিগণ এলাকার ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের ধর্মীয় বিভিন্ন যুক্তিবাক্য শুনিয়ে তিনশত বিঘা সম্পত্তির ব্যাৎসরিক আয়ের উল্টাপাল্টা হিসাব দিয়ে কড়ই নুরুলহুদা কামিল মাদ্রাসার টেন্ডার বিহীন প্রশাসনিক ভবন নির্মানের জন্য বিল্ডি কোড অমান্য করে ইতিপূর্বে একটি ত্রিতল ভবন নির্মান করে লক্ষ লক্ষ টাকা আত্মসাৎ করার পর তারা পুনরায় আরএকটি টেন্ডার বিহীন নতুন প্রশাসনিক বিল্ডিং এর কাজ শুরু করে। বিল্ডিং এর কাজ চলাকালে একতলা ছাদের রড যে পরিমান লাগে সে পরিমান না ব্যবহার করে ছাদ দেওয়ার প্রস্তুতি গ্রহন করে। বিষয়টি এলাকার লোকজনের মধ্যে জানাজানি হলে গর্ভনিং বডির সহ-সভাপতি আহমদ ইশতিয়াক ও দাতা সদস্য আহমদ আল ফারুকের পরামর্শক্রমে ০৪ সেপ্টেম্বর ২০১০ইং তারিখে ভোর রাতে মিস্ত্রী ছাড়াই সহকারি শিক্ষক (প্রদর্শক) দেলোয়ার হোসেনকে দিয়ে ছাদে বিছানো রডের বাধন খুলে আরও রড ঢুকানোর চেষ্টা করলে এলাকার লোকজন তাকে হাতেনাতে ধরে ফেললে আহমদ ইশতিয়াক ও  আহমদ আল ফারুক তাদের ভাড়াটে কিছু লোকজনসহ দোলোয়ার হোসেনকে এলাকাবাসির হাত থেকে উদ্ধার করে জয়পুরহাট পাঠিয়ে দেয়। কমিটির এই দুইজন সদস্যের অর্থ আত্মসাৎ ও জালিয়াতির বিরুদ্ধে বিরুদ্ধে কড়ই এলাকাবাসি ২০১০ সালে অর্থ আত্মসাৎ ও জালিয়াতির অভিযোগে গণস্বাক্ষর দিয়ে তৎকালীন জয়পুরহাট জেলা প্রশাসক বরারবর একটি লিখিত অভিযোগে করেছিলেন।

অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে তৎকালীন জেলা প্রশাসক কর্তৃক তদন্ত কমিটি গঠণ করে তথ্য ও প্রমান পাওয়া গেলে উক্ত সময়ে কমিটির দাতা সদস্য আহমদ আল ফারুক সহকারি শিক্ষক (প্রদর্শক) দেলোয়ার হোসেনের পক্ষ থেকে এলাকাবাসির নিকট ভুল স্বিকার করে ক্ষতি পুরুন দিতে চেয়েছিলেন।

এ বিষয়ে কমিটির দাতা সদস্য আহমদ আল ফারুক এর সাথে যোগাযোগ করলে উপরোক্ত অভিযোগ অস্বীকার করে জানান, সহকারি শিক্ষক (প্রদর্শক) দেলোয়ার হোসেনের পক্ষ থেকে এলাকাবাসির নিকট ভুল স্বিকার করে ক্ষতি পুরুন দেওয়ার কথা আমি বলিনি।

কড়ই নুরুলহুদা কামিল মাদ্রাসার টেন্ডার বিহীন প্রশাসনিক ভবন নির্মানের জন্য বিল্ডি কোড অমান্য করে বিল্ডিং নির্মানের বিষয়ে জানতে চাইলে আহমদ আল ফারুক বলেন, যেহেতু উক্ত প্রতিষ্ঠানটি বেসরকারি তাই গর্ভনিং বডির রেজুলেশন মোতাবেক বিল্ডিং নির্মানের কাজ করা হয়েছে এবং বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্টানের বিল্ডিং নির্মান করতে আমার মনে হয় টেন্ডারের প্রয়োজন হয় না।

কড়ই নুরুলহুদা কামিল মাদ্রাসার বিষয়ে জয়পুরহাট জেলা প্রশাসক মোঃ শরীফুল ইসলাম এর সাথে যোগাযোগ করলে তিনি জানান উপরোল্লেখীত বিষয়ে একটি লিখিত অভিযোগ তিনি পেয়েছেন এবং তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

Leave A Reply

Your email address will not be published.

Title