মুহাম্মদ (সা.)-এর ব্যঙ্গচিত্র সরকারি প্রকল্প ছিল না, বেসরকারি ‘স্বাধীন ও স্বতন্ত্র’ সংবাদপত্রের কাজ: ম্যাক্রোঁ

মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর ব্যঙ্গচিত্র প্রকাশে সমর্থন ও ইসলামবিদ্বেষী মন্তব্যের কারণে সৃষ্ট বিশ্বজুড়ে তীব্র প্রতিক্রিয়া ও চাপের মুখে সুর নরম করেছেন ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ। মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)-কে অবমাননা করে কার্টুন প্রকাশ করায় মুসলমানদের অনুভূতি কেমন হতে পারে, তা তিনি বুঝেন বলেও মন্তব্য করেছেন ম্যাক্রোঁ।

কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরাকে দেয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে ফরাসি প্রেসিডেন্ট এ কথা বলেন। শনিবার (৩১ অক্টোবর) আল জাজিরা সাক্ষাৎকারটি প্রকাশ করে।

সাক্ষাৎকারে ফরাসি প্রেসিডেন্ট ম্যাক্রোঁ বলেন, ‘মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর ব্যঙ্গচিত্র প্রদর্শন করা ফ্রান্সের কোনো সরকারি প্রকল্প ছিল না। এটি একটি বেসরকারি ‘স্বাধীন ও স্বতন্ত্র’ সংবাদপত্রের কাজ। পত্রিকাগুলো সরকারের অনুগত নয়। কার্টুন এঁকে রাসূলের (সা.) অবমাননা করায় মুসলমানদের অনুভূতি কেমন হতে পারে, তা আমি বুঝতে পারি।’

মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর কার্টুন আঁকাকে সমর্থন করেন না জানিয়ে ম্যাক্রোঁ দাবি করেন, তার সরকার এ কার্টুন আঁকাকে সমর্থন করবে না বলে জোর দিয়েছিল। কিন্তু আমার কথা বিকৃতভাবে উপস্থাপিত হয়েছে, তাই মানুষ মনে করেছে, তিনি (ম্যাক্রোঁ) কার্টুনগুলো সমর্থন করেন। যারা ইসলাম বিকৃত করে তাদের আচরণে মুসলমানরা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হয় বলেও মন্তব্য করেন ফরাসি প্রেসিডেন্ট।

উল্লেখ্য, কয়েকদিন আগে হত্যাকাণ্ডের শিকার হওয়া বিতর্কিত ফরাসি শিক্ষক স্যামুয়েল প্যাটিকে সম্মান জানাতে একটি অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে দেশটির প্রেসিডেন্ট ম্যাক্রোঁ বলেন, ইসলাম ধর্ম ও বিশ্বনবী হযরত মোহাম্মদ (সা.)-কে নিয়ে ব্যঙ্গচিত্র প্রদর্শন বন্ধ করা হবে না। এরপরই ফ্রান্সের মুসলিমরা ম্যাক্রোঁর বিরুদ্ধে ইসলাম ধর্মকে দমন করা ও ইসলামফোবিয়াকে বৈধতা দিতে চেষ্টা করছেন বলে অভিযোগ তেলেন।

ম্যাঁক্রোর এমন বিতর্কিত মন্তব্যের পরই পাকিস্তান ও তুরস্কসহ বেশ কয়েকটি আরব দেশ নিন্দা জানায়। প্রতিবাদে ফেটে পড়েন সারা বিশ্বের মুসলমানরা। এরপর মুসলিম বিশ্ব থেকে ফরাসি পণ্য বয়কটের ডাক আসে। এরই মাঝে তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়েব এরদোগান সমগ্র বিশ্বের মুসলমানদের প্রতি ফ্রান্সের পণ্য ও সেবা বয়কটের ডাক দিলে বিশ্বজুড়ে ফরাসি পণ্য বয়কট কর্মকাণ্ড নতুন মাত্রা পায়। এরপরই শুধু আরব বিশ্বেই নয় পুরো মুসলিম বিশ্বেই ফরাসি পণ্য বয়কটের হিড়িক পড়ে গেছে। দোকান থেকে ফরাসি পণ্য সরিয়ে ফেলছে অনেক খ্যাতনামা চেইন শপসহ বহু ব্যবসা প্রতিষ্ঠান।

আর করোনা মহামারীকালে এই বয়কটের সুদূরপ্রসারী প্রভাব আঁচ করতে পেরে আরব দেশগুলোর প্রতি পণ্য বয়কট বন্ধের অনুরোধ জানায় ফ্রান্স। আর ফরাসি পণ্য বয়কটসহ বিশ্বজুড়ে ধর্মীয়, বাণিজ্যিক ও রাজনৈতিক চাপের কারণে সুর নরম করতে বাধ্য হলেন ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ।
সূত্র: আলজাজিরা

Leave A Reply

Your email address will not be published.

Title