ঢাকা ০১:২৪ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১২ ডিসেম্বর ২০২৫, ২৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

খুলনায় ১৫ মাসে ৬২ হত্যা

অনলাইন ডেস্ক
  • আপডেট সময় : ১০:৫৪:২৩ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১২ ডিসেম্বর ২০২৫
  • / 9
খুলনা জেলার ৯ উপজেলায় গেল ১৫ মাসে ৬২টি হত্যার ঘটনা ঘটেছে। এর মধ্যে ৪৩ হত্যার রহস্য উন্মোচন করেছে জেলা পুলিশ। এসব হত্যার নেপথ্যে যেমন রয়েছে পরকীয়া, পূর্বশত্রুতা, তেমনি রয়েছে মাদক কারবার ও আধিপত্য নিয়ে বিরোধ। সর্বোচ্চ ১৫টি হত্যার ঘটনা ঘটেছে জেলার রূপসা উপজেলায়।

আর সবচেয়ে কম দুটি হত্যার ঘটনা ঘটে তেরখাদা উপজেলায়। নির্বাচনী তফসিল ঘোষণার পর আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি খারাপের শঙ্কা প্রকাশ করেছে নাগরিক নেতারা।তবে পুলিশের দাবি, জেলার আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। তারা বেশির ভাগ ঘটনারই রহস্য উন্মোচন করেছে

খুলনা জেলা পুলিশ সুপারের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৪ সালের আগস্ট থেকে চলতি বছরের নভেম্বর পর্যন্ত জেলায় ৬২টি হত্যার ঘটনা ঘটে। রূপসা থানায় ১৫টি, তেরখাদা থানায় দুটি, দিঘলিয়া থানায় চারটি, ফুলতলা থানায় ১০টি, ডুমুরিয়া থানায় ১১টি, বটিয়াঘাটা থানায় চারটি, দাকোপ থানায় সাতটি, পাইকগাছা থানায় চারটি ও কয়রা থানায় পাঁচটি হত্যার ঘটনা ঘটে। হত্যাগুলোর মধ্যে গুলি করে পাঁচটি, গুরুতর জখম করে তিনটি, অজ্ঞাত কারণে ৯টি, শ্বাসরোধে দুটি, পরকীয়ার কারণে পাঁচটি, আর্থিক ও ব্যাবসায়িক কারণে পাঁচটি ঘটনা ঘটে। তদান্তাধীন ১৯টি ঘটনার মধ্যে জেলা পুলিশ ১১টি ও নৌ পুলিশ আটটি ঘটনা তদন্ত করছে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে জেলা পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা জানান, জেলার ক্রাইমের ক্ষেত্রে ‘হটজোন রূপসা’। শহরতলির এই উপজেলাটিতে আধিপত্য নিয়ে প্রায়ই হতাহতের ঘটনা ঘটে। নদী ও সড়ক বেষ্টিত উপজেলায় অপরাধ সংঘটনের পর সহজে সরে পড়া সহজ। এ ছাড়া মাদক কারবারের অন্যতম পথ। ফলে এখানেই বেশি অপরাধের ঘটনা ঘটছে।

জানা গেছে, জেলার ফুলতলা, দিঘলিয়া, রূপসা, ডুমুরিয়া ও বটিয়াঘাটা থানা এলাকায় রয়েছে প্রায় অর্ধশত মাদকের স্পট। এই কারবারিদের শক্তিশালী নেটওয়ার্ক রয়েছে। তারা কতিপয় অসাধু পুলিশ কর্মকর্তাকে ম্যানেজ করে এই কারবার পরিচালনা করছে।

নবাগত পুলিশ সুপারের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, খুলনা জেলার ৫৩১টি কেন্দ্রের মধ্যে ১৩৫টি ঝুঁকিপূর্ণ। তালিকার শীর্ষে রয়েছে পাইকগাছা। এ উপজেলায় ঝুঁকিপূর্ণ রয়েছে ৩৫টি কেন্দ্র। এ ছাড়া কয়রার ১৪টি, ডুমুরিয়ার ২৭টি, ফুলতলার চারটি, দিঘলিয়ার আটটি, তেরখাদার ছয়টি, রূপসার ২৩টি, দাকোপের ১৩টি ও বটিয়াঘাটার পাঁচটি কেন্দ্র ঝুঁকিপূর্ণ।

খুলনা জেলা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আনিসুজ্জামান জানান, এরই মধ্যে হত্যাসহ বেশির ভাগ ঘটনার রহস্য উন্মোচন করেতে পুলিশ সমর্থ্য হয়েছে। অভিযুক্তদের গ্রেপ্তার করেছে। মাদক কারবারিদের কোনো ছাড়া দেওয়া হচ্ছে না। ফলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে।

খুলনা নাগরিক সমাজের সদস্যসচিব অ্যাডভোকেট বাবুল হাওলদার বলেন, বর্তমানে মানুষ নিরাপত্তাহীন ও শঙ্কায় রয়েছে। নির্বাচনী তফসিলের পর সব দলই মাঠে থাকবে। তাই আইন-শৃঙ্খলা নিয়ে উদ্বেগ রয়েছে।

সংবাদকর্মীদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে খুলনার নবাগত পুলিশ সুপার মাহাবুবুর রহমান জানান, নির্বাচনকালীন যেকোনো পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের জন্য পুলিশ প্রস্তুত আছে।

নতুন প্রজন্মের অনলাইন টিভি

নিউজটি শেয়ার করুন

ট্যাগস :

খুলনায় ১৫ মাসে ৬২ হত্যা

আপডেট সময় : ১০:৫৪:২৩ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১২ ডিসেম্বর ২০২৫
খুলনা জেলার ৯ উপজেলায় গেল ১৫ মাসে ৬২টি হত্যার ঘটনা ঘটেছে। এর মধ্যে ৪৩ হত্যার রহস্য উন্মোচন করেছে জেলা পুলিশ। এসব হত্যার নেপথ্যে যেমন রয়েছে পরকীয়া, পূর্বশত্রুতা, তেমনি রয়েছে মাদক কারবার ও আধিপত্য নিয়ে বিরোধ। সর্বোচ্চ ১৫টি হত্যার ঘটনা ঘটেছে জেলার রূপসা উপজেলায়।

আর সবচেয়ে কম দুটি হত্যার ঘটনা ঘটে তেরখাদা উপজেলায়। নির্বাচনী তফসিল ঘোষণার পর আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি খারাপের শঙ্কা প্রকাশ করেছে নাগরিক নেতারা।তবে পুলিশের দাবি, জেলার আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। তারা বেশির ভাগ ঘটনারই রহস্য উন্মোচন করেছে

খুলনা জেলা পুলিশ সুপারের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৪ সালের আগস্ট থেকে চলতি বছরের নভেম্বর পর্যন্ত জেলায় ৬২টি হত্যার ঘটনা ঘটে। রূপসা থানায় ১৫টি, তেরখাদা থানায় দুটি, দিঘলিয়া থানায় চারটি, ফুলতলা থানায় ১০টি, ডুমুরিয়া থানায় ১১টি, বটিয়াঘাটা থানায় চারটি, দাকোপ থানায় সাতটি, পাইকগাছা থানায় চারটি ও কয়রা থানায় পাঁচটি হত্যার ঘটনা ঘটে। হত্যাগুলোর মধ্যে গুলি করে পাঁচটি, গুরুতর জখম করে তিনটি, অজ্ঞাত কারণে ৯টি, শ্বাসরোধে দুটি, পরকীয়ার কারণে পাঁচটি, আর্থিক ও ব্যাবসায়িক কারণে পাঁচটি ঘটনা ঘটে। তদান্তাধীন ১৯টি ঘটনার মধ্যে জেলা পুলিশ ১১টি ও নৌ পুলিশ আটটি ঘটনা তদন্ত করছে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে জেলা পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা জানান, জেলার ক্রাইমের ক্ষেত্রে ‘হটজোন রূপসা’। শহরতলির এই উপজেলাটিতে আধিপত্য নিয়ে প্রায়ই হতাহতের ঘটনা ঘটে। নদী ও সড়ক বেষ্টিত উপজেলায় অপরাধ সংঘটনের পর সহজে সরে পড়া সহজ। এ ছাড়া মাদক কারবারের অন্যতম পথ। ফলে এখানেই বেশি অপরাধের ঘটনা ঘটছে।

জানা গেছে, জেলার ফুলতলা, দিঘলিয়া, রূপসা, ডুমুরিয়া ও বটিয়াঘাটা থানা এলাকায় রয়েছে প্রায় অর্ধশত মাদকের স্পট। এই কারবারিদের শক্তিশালী নেটওয়ার্ক রয়েছে। তারা কতিপয় অসাধু পুলিশ কর্মকর্তাকে ম্যানেজ করে এই কারবার পরিচালনা করছে।

নবাগত পুলিশ সুপারের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, খুলনা জেলার ৫৩১টি কেন্দ্রের মধ্যে ১৩৫টি ঝুঁকিপূর্ণ। তালিকার শীর্ষে রয়েছে পাইকগাছা। এ উপজেলায় ঝুঁকিপূর্ণ রয়েছে ৩৫টি কেন্দ্র। এ ছাড়া কয়রার ১৪টি, ডুমুরিয়ার ২৭টি, ফুলতলার চারটি, দিঘলিয়ার আটটি, তেরখাদার ছয়টি, রূপসার ২৩টি, দাকোপের ১৩টি ও বটিয়াঘাটার পাঁচটি কেন্দ্র ঝুঁকিপূর্ণ।

খুলনা জেলা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আনিসুজ্জামান জানান, এরই মধ্যে হত্যাসহ বেশির ভাগ ঘটনার রহস্য উন্মোচন করেতে পুলিশ সমর্থ্য হয়েছে। অভিযুক্তদের গ্রেপ্তার করেছে। মাদক কারবারিদের কোনো ছাড়া দেওয়া হচ্ছে না। ফলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে।

খুলনা নাগরিক সমাজের সদস্যসচিব অ্যাডভোকেট বাবুল হাওলদার বলেন, বর্তমানে মানুষ নিরাপত্তাহীন ও শঙ্কায় রয়েছে। নির্বাচনী তফসিলের পর সব দলই মাঠে থাকবে। তাই আইন-শৃঙ্খলা নিয়ে উদ্বেগ রয়েছে।

সংবাদকর্মীদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে খুলনার নবাগত পুলিশ সুপার মাহাবুবুর রহমান জানান, নির্বাচনকালীন যেকোনো পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের জন্য পুলিশ প্রস্তুত আছে।