চিলমারীতে দূর্গম চরাঞ্চলে অপরাধ দমনে ড্রোন নজরদারি নৌপথে টহল জোরদার25
চিলমারীতে দূর্গম চরাঞ্চলে অপরাধ দমনে ড্রোন নজরদারি নৌ-পথে টহল জোরদার25

- আপডেট সময় : ০৬:৩২:২১ অপরাহ্ন, সোমবার, ৩০ জুন ২০২৫ ৪ বার পড়া হয়েছে
কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি: চিলমারী উপজেলার দূর্গম চরাঞ্চল ও নদীপথে অপরাধ ঠেকাতে অভিনব ও কৌশলী উদ্যোগ নিয়েছে জেলা পুলিশ প্রশাসন। সম্প্রতি আকাশে ড্রোন উড়িয়ে এবং নৌ-পথে বিশেষ নজরদারি চালিয়ে এই এলাকায় নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। পাশাপাশি গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি), নৌপুলিশ ও থানা পুলিশের সম্মিলিত টহলে ভয় কমেছে ব্যবসায়ী ও যাত্রীদের।
জেলার তিনটি উপজেলা—চিলমারী, রৌমারী ও রাজিবপুর—ব্রহ্মপুত্র নদ ও এর শাখা নদী ঘিরে গঠিত হওয়ায় যোগাযোগের বড় একটি অংশ নির্ভর করে নৌ-পথের ওপর। বিভিন্ন সময় এই পথগুলোতে বিশেষ করে হাটবারে ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। এ ধরনের ঘটনাগুলো প্রতিরোধ করতে পুলিশ ড্রোন প্রযুক্তি ব্যবহার করে নজরদারির মাত্রা বাড়িয়েছে।
ড্রোন প্রযুক্তির ব্যবহার
উপজেলার গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্ট যেমন—জোড়গাছ হাট, রমনা ঘাট, কাঁচকোল, ফকিরের হাট এবং চরাঞ্চলগুলোতে প্রতিদিন আকাশে উড়ানো হচ্ছে নজরদারি ড্রোন। ড্রোনের সাহায্যে ঝোপঝাড় ও গহীন স্থানে যেকোনো ধরনের সন্দেহজনক গতিবিধি শনাক্ত করা সম্ভব হচ্ছে বলে জানায় পুলিশ।
চিলমারী ইউনিয়নের স্থানীয় বাসিন্দা মাইদুল ইসলাম জানান,
“আগে হাটে যাওয়ার আগে মনে ভয় কাজ করতো। এখন আকাশে ড্রোন দেখলেই মনে হয় পুলিশ সজাগ আছে। ডাকাতি আগের চেয়ে অনেক কমে গেছে।”
নৌ-পথে বাড়তি সতর্কতা
নদীপথে টহল দিতে দেখা যাচ্ছে স্পিডবোটে থাকা পুলিশ সদস্যদের। বিশেষ করে হাটের দিন রবিবার ও বুধবারের আগে-পরে ব্যবসায়ীরা নিরাপদে যাতায়াত করতে পারছেন। নৌ-পথে অপরাধীরা যাতে পালিয়ে যেতে না পারে সে জন্য বাড়তি নজরদারি করা হচ্ছে। চরাঞ্চল থেকে হাটে আসা ব্যবসায়ীরা এখন অনেকটাই নিশ্চিন্ত।
স্থানীয় ব্যবসায়ী মাহফুজার রহমান বলেন,
“আগে হাটে পণ্য নিয়ে আসতে ভয় করতাম। এখন পুলিশ আর ড্রোন দুটোই দেখে মনে সাহস পাই।”
ডাকাতি কমে আসার ইতিবাচক ফল
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, এক সময় নিয়মিত ডাকাতির খবর পাওয়া যেত চিলমারী-রৌমারী-রাজিবপুর রুটে। এখন সেই হার অনেকটাই কমেছে। জেলা পুলিশ সুপার মাহফুজুর রহমান বলেন,
“চিলমারী নদীবন্দর ও নৌ-রুটে সার্বক্ষণিক ড্রোন মনিটরিং চলছে। টহল জোরদার করার পাশাপাশি গোয়েন্দা তথ্য বিশ্লেষণ করে ঝুঁকিপূর্ণ স্থানে আগেই ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।”
স্থানীয় জনগণের ভূমিকাও গুরুত্বপূর্ণ
চিলমারীর স্থানীয় জনগণ এবং হাট কমিটিগুলোও পুলিশকে সহায়তা করছেন। তারা সন্দেহজনক কাউকে দেখলে সঙ্গে সঙ্গে জানাচ্ছেন প্রশাসনকে। পুলিশের পক্ষ থেকে তথ্যদাতাদের পরিচয় গোপন রাখা হয়।
টেকনোলজি নির্ভর নজরদারি ভবিষ্যতের দিকনির্দেশনা
ড্রোন ব্যবহারের মাধ্যমে চরাঞ্চল ও নদী পথে নজরদারির এই উদ্যোগটি বাংলাদেশের অন্যান্য দুর্জ্ঞেয় অঞ্চলেও রোল মডেল হিসেবে দেখা যেতে পারে। প্রযুক্তিকে কাজে লাগিয়ে পুলিশের এই পদক্ষেপ এলাকাবাসীর কাছে স্বস্তি এনে দিয়েছে।
উপসংহার:
চিলমারী উপজেলার নিরাপত্তা ব্যবস্থা এখন অনেক বেশি সুসংগঠিত ও আধুনিক। প্রযুক্তির ব্যবহার, পুলিশি তৎপরতা এবং জনসম্পৃক্ততার মাধ্যমে এই অঞ্চলকে নিরাপদ রাখার প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। জেলা পুলিশের এ ধরনের উদ্ভাবনী উদ্যোগ সারাদেশে একটি অনুসরণীয় মডেল হিসেবে বিবেচিত হতে পারে।