চ্যালেঞ্জের মধ্যেও কমিশন অবাধ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন উপহার দিতে প্রস্তুত: সিইসি
- আপডেট সময় : ০২:১০:১৩ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৮ নভেম্বর ২০২৫
- / 2
;নানাবিধ প্রতিবন্ধকতা ও চ্যালেঞ্জ থাকা সত্ত্বেও নির্বাচন কমিশন (ইসি) জাতিকে সুষ্ঠু, অবাধ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন উপহার দিতে প্রস্তুত বলে জানিয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দীন। তিনি বলেন, কমিশন ‘স্লো অ্যান্ড স্টেডি’ নীতি অনুসরণ করে এগিয়ে চলছে।
নির্বাচন কমিশন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রস্তুতি হিসেবে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংলাপ শুরু করেছে। আজ সোমবার দুপুরে রাজধানীর আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে তৃতীয় দিনের দ্বিতীয় 11;ধাপের সংলাপ অনুষ্ঠিত হয়েছে।
সিইসি এ এম এম নাসির উদ্দীন বলেন, কমিশন প্রবাসী, সরকারি কর্মকর্তা ও কারাগারে থাকা ব্যক্তিদের ভোটাধিকার নিশ্চিত করতে বিশেষ উদ্যোগ নিয়েছে। প্রবাসীদের ভোটের জন্য গ্রহণ করা হয়েছে ‘হাইব্রিড মডেল’। যেখানে অনলাইনে রেজিস্ট্রেশন ও ডাকযোগে ভোট প্রদান হবে।
সিইসি রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতি আচরণবিধি মেনে চলার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, আচরণবিধির খসড়া নিয়ে জনগণের মতামত নেওয়া হয়েছে এবং প্রাসঙ্গিক বিষয় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। ভোটারদের ওপর রাজনৈতিক দলের প্রভাব গুরুত্বপূর্ণ, তাই দলগুলো নিজেদের প্রভাব ব্যবহার করে ভোটারদের সচেতন করতে সাহায্য করবে। এতে একটি নিরপেক্ষ, স্বচ্ছ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন নিশ্চিত হবে।
সংলাপে জাকের পার্টির মহাসচিব শামীম হায়দার কমিশনের স্বাধীনতা ও স্বচ্ছতা নিশ্চিতের ওপর জোর দেন। তিনি বলেন, কালোটাকা ও পেশিশক্তির প্রভাব নির্মূল না হলে নির্বাচন গ্রহণযোগ্য হবে না। তরুণ ভোটারদের ভোট উৎসবমুখর এবং অংশগ্রহণমূলক করতে হবে। ২৫ লাখ টাকার ব্যয়সীমা কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ ও প্রয়োজনে স্বাধীন তদন্ত কমিশন গঠন জরুরি। আচরণবিধি মেনে চলার বিষয়ে জাকের পার্টি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট পার্টির চেয়ারম্যান এ কে এম আনোয়ারুল ইসলাম নির্বাচনী আচরণবিধি, প্রচারণা ও ভোট প্রক্রিয়ার স্বচ্ছতার ওপর গুরুত্ব আরোপ করেন। তিনি বলেন, কমিশনকে বিলবোর্ড, ব্যানার, স্টিকার ও পোস্টারের ব্যবহার, প্রিসাইডিং ও পুলিং কর্মকর্তাদের নিরাপদ থাকার ব্যবস্থা, ভোটা গ্রহণ পর্যবেক্ষণ, অস্ত্র জমা ও প্রশাসনের নিরপেক্ষতা নিশ্চিত করতে হবে। প্রবাসী ও সরকারি কর্মকর্তাদের ভোটাধিকার এবং গণভোট ও জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ব্যালট কার্যকর বাস্তবায়নের গুরুত্ব তুলে ধরেন।
বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্টের মহাসচিব মোহাম্মদ আবদুস সামাদ নির্বাচন কমিশনের স্বাধীনতা ও দৃঢ়তা নিশ্চিত করার গুরুত্বের ওপর জোর দেন। তিনি বলেন, নির্বাচন গ্রহণযোগ্য ও সুষ্ঠু করতে কমিশনকে স্বাধীনভাবে পদক্ষেপ নিতে হবে। প্রার্থী ও দলের সমান সুযোগ নিশ্চিত করতে উচ্চকক্ষের ভোটে ছোট দলগুলোর প্রতীক বরাদ্দ রাখা জরুরি। তিনি আশা করেন, এই নির্বাচন জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে উদাহরণ স্থাপন করবে।
খেলাফত মজলিসের যুগ্ম মহাসচিব মুহাম্মদ মুনতাছির আলী নির্বাচন কমিশনের স্বাধীনতা, নিরাপদ ভোট প্রক্রিয়া ও প্রিসাইডিং-পুলিং কর্মকর্তাদের নিরাপত্তার ওপর গুরুত্ব আরোপ করেন। তিনি স্বচ্ছ নির্বাচন নিশ্চিত করতে তফসিল ঘোষণার দিন থেকেই যৌথ বাহিনী মাঠে থাকার প্রয়োজনীয়তা, অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার, প্রবাসী ভোটারদের প্রভাবিতকরণ এবং গণভোট ও জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ব্যালটের সঠিক বাস্তবায়নের দাবি জানান।
জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টির (জাগপা) সহসভাপতি ও দলীয় মুখপাত্র রাশেদ প্রধান বলেন, ‘বড় রাজনৈতিক দলের জন্য নির্বাচন করাটা সহজ। বিভিন্ন ছোট দল এবং যারা স্বতন্ত্রভাবে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে চান, তাঁদের জন্য সবকিছু কঠিন। আমরা যেটা জানতে পেরেছি, জামানতের জন্য ৫০ হাজার টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। গ্রাম অঞ্চলে অনেক মানুষ স্বতন্ত্রভাবে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে চান। তাঁদের কথা বিবেচনা করে বিবেচনা করে জামানত আগের মতো ২০ হাজার টাকা করলে ভালো হয়। গণভোট প্রদান বাধ্যতামূলক করারও আহ্বান জানান রাশেদ প্রধান।
আমার বাংলাদেশ (এবি) পার্টির সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান ফুয়াদ নির্বাচনের বাস্তবসম্মত কাঠামো, ভোটার সচেতনতা ও প্রচারণার স্বাধীনতা নিশ্চিত করার প্রয়োজনীয়তা উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, কমিশনের বিধিমালা প্রার্থী ও দলকে লক্ষ্য করে হলেও ভোটারদের প্রতি যথেষ্ট নজর নেই। প্রচারণার জন্য নিরাপত্তা, অর্থের ব্যবহার, ভ্রাম্যমাণ প্রচারণা, সামাজিক ও অনলাইন মিডিয়ায় কার্যকর নিয়ন্ত্রণ প্রয়োজন। কমিশনকে বাস্তব পরিস্থিতি অনুযায়ী কাঠামো ঠিক করতে হবে, যাতে সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন সম্ভব হয়।
সংলাপে অন্যদের মধ্যে নির্বাচন কমিশনার আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ, তাহমিদা আহমেদ, কমিশন জ্যেষ্ঠ সচিব আখতার আহমেদ এবং রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিরা অংশ নেন।

























