ঢাকা ০৩:০৯ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ০৭ অগাস্ট ২০২৫, ২৩ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
অন্তু পাড়ায় বিজিবির শিক্ষা ও ক্রীড়া উপকরণ বিতরণ নির্বাচন আয়োজনে ইসিকে প্রধান উপদেষ্টার চিঠি বার এসোসিয়েশনে আইন, বই বিতরণ করল কবির হোসেন স্মৃতি সংঘ রোদের মেয়ে, নিয়ে ফিরছেন তমালিকা, নতুন গানে মুগ্ধ হবে নতুন প্রজন্ম কক্সবাজারে গোপন বৈঠকের পর পিটার হাসের ঢাকা ত্যাগ, নতুন রাজনৈতিক সমীকরণের ইঙ্গিত? এক বছর ধরে মর্গে পড়ে আছেন ৬ জন, পরিচয় মেলেনি, অজ্ঞাত হিসেবে আজ হবে দাফন কুড়িগ্রামে বিএনপির বিজয় র‍্যালি ও পথসভা, স্বৈরাচারের পতনের ডাক শিক্ষার্থী রাসেল হত্যার বিচার দাবিতে কুড়িগ্রামে মানববন্ধন নাগেশ্বরীতে বিএনপি নেতার বিরুদ্ধে জনতার বিক্ষোভ কুষ্টিয়া মিরপুর মাদকবিরোধী অভিযানে ফেন্সিডিল, ইয়াবা ও পলিথিন উদ্ধার

নির্বাচন আয়োজনে ইসিকে প্রধান উপদেষ্টার চিঠি

নির্বাচন আয়োজনে ইসিকে প্রধান উপদেষ্টার চিঠি

অনলাইন ডেস্ক
  • আপডেট সময় : ১২:১৭:৫১ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৭ আগস্ট ২০২৫ ৩ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদনঃ নির্বাচন আয়োজনে ইসিকে প্রধান উপদেষ্টার চিঠি, আগামী বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে রোজা শুরুর আগেই জাতীয় সংসদ নির্বাচন আয়োজনের, লক্ষ্যে নির্বাচন কমিশনকে প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি নেওয়ার জন্য, আনুষ্ঠানিকভাবে অনুরোধ করেছে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়, নির্বাচন পরিচালনার এই গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশনার মাধ্যমে সরকারের পক্ষ থেকে, নির্বাচন কমিশনের প্রতি নির্বাচনী কার্যক্রম শুরু করার আহ্বান জানানো হয়েছে।

বুধবার (৬ আগস্ট) প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে দেওয়া এক বার্তায় বিষয়টি গণমাধ্যমে জানানো হয়। চিঠিটি পাঠানো হয়েছে নির্বাচন কমিশনের সিনিয়র সচিবের বরাবর।

চিঠিতে প্রধান উপদেষ্টার মুখ্য সচিব এম সিরাজ উদ্দিন মিয়া বলেন, “প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস জাতির উদ্দেশ্যে প্রদত্ত ভাষণে যে নির্বাচনের সময়সীমার কথা বলেছেন, তা বাস্তবায়নে এখনই প্রস্তুতি গ্রহণ করা প্রয়োজন। এই নির্বাচনের মাধ্যমে দেশের নাগরিকরা যেন অবশেষে একটি সত্যিকারের গণতান্ত্রিক উৎসবে অংশ নিতে পারে—সেই লক্ষ্যে নির্বাচন কমিশনকে দায়িত্ব নিতে হবে।”

চিঠিতে আরও বলা হয়েছে, গত ১৫ বছর ধরে দেশের নাগরিকরা প্রকৃত অর্থে ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারেনি। সেই অভিজ্ঞতা থেকে শিক্ষা নিয়ে এবার যেন একটি ‘মহা-আনন্দের ভোট উৎসব’ আয়োজন করা যায়, সে দিকেই দৃষ্টি রাখতে হবে।

প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস গতকাল মঙ্গলবার (৫ আগস্ট), জুলাই গণঅভ্যুত্থান দিবসে জাতির উদ্দেশ্যে দেওয়া ভাষণে, নির্বাচন কমিশনকে দ্রুত চিঠি দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছিলেন। তার বক্তব্যে একটি স্বাধীন ও নিরপেক্ষ নির্বাচন আয়োজনের বিষয়ে জোর দেওয়া হয়।

চিঠিতে আরও উল্লেখ করা হয়, নির্বাচন যেন হয় শান্তিপূর্ণ, অবাধ, সুষ্ঠু, অংশগ্রহণমূলক এবং উৎসবমুখর—এমন প্রত্যাশা রয়েছে সরকারের। সেই সঙ্গে জনগণের আস্থা অর্জন, জাতীয় ঐক্য গঠন ও গণতান্ত্রিক ধারাবাহিকতা রক্ষা করাই এই নির্বাচনের মূল লক্ষ্য।

প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় থেকে পাঠানো চিঠিতে তথ্য-প্রযুক্তি ব্যবহারের গুরুত্বও তুলে ধরা হয়েছে। নির্বাচনে আধুনিক প্রযুক্তির মাধ্যমে স্বচ্ছতা নিশ্চিত করার দিকেও ইসিকে উদ্যোগ নিতে বলা হয়েছে।

সরকার পক্ষ থেকে নির্বাচন কমিশনকে সর্বাত্মক সহযোগিতা প্রদানের প্রতিশ্রুতিও চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে। বলা হয়েছে, একটি বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন আয়োজনের জন্য যেকোনো সহায়তায় সরকার প্রস্তুত থাকবে।

প্রধান উপদেষ্টার মুখ্য সচিব চিঠির শেষে বলেন, “প্রধান উপদেষ্টার ঘোষণার ভিত্তিতে উল্লিখিত সময়সীমার মধ্যে জাতীয় সংসদ নির্বাচন আয়োজনের জন্য প্রয়োজনীয় সব প্রস্তুতি গ্রহণ করুন।”

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, এই চিঠি প্রমাণ করে যে বর্তমান তত্ত্বাবধায়ক সরকার দ্রুততম সময়ের মধ্যেই নির্বাচন আয়োজনের পরিকল্পনায় রয়েছে এবং তা বাস্তবায়নে প্রয়োজনীয় রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক সদিচ্ছা বিদ্যমান।

একজন নির্বাচন বিশ্লেষক বলেন, “চিঠির ভাষা ও বার্তা দেখে মনে হচ্ছে, এটি কেবল একটি প্রশাসনিক নির্দেশ নয়—বরং একটি রাজনৈতিক প্রতিশ্রুতি রূপে কাজ করবে। দেশের জনগণ বহু বছর ধরে একটি অবাধ নির্বাচনের জন্য অপেক্ষা করছে। এই উদ্যোগ সেই প্রতীক্ষার প্রাথমিক সাড়া।”

নির্বাচন কমিশন সূত্র জানিয়েছে, তারা খুব শিগগিরই চিঠির ভিত্তিতে নির্বাচনী পরিকল্পনা ও প্রস্তুতি নিয়ে আলোচনায় বসবেন এবং নির্বাচনী রোডম্যাপ প্রকাশ করবেন।

ইতোমধ্যেই দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে নির্বাচন নিয়ে আলোচনার হাওয়া প্রবল হয়ে উঠেছে। বিশেষ করে নির্বাচনকালীন সরকারের নিরপেক্ষতা ও সব রাজনৈতিক দলের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা এই মুহূর্তে বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখা দিচ্ছে।

তবে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে বর্তমান সরকার যে নির্বাচন আয়োজনের বিষয়ে আন্তরিক, এই চিঠি তারই বহিঃপ্রকাশ।

আশা করা হচ্ছে, নির্বাচন কমিশন এই দায়িত্বশীল ও গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালনে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা দ্রুত গ্রহণ করবে এবং দেশের জনগণ অবশেষে একটি প্রকৃত ভোটের মাধ্যমে তাদের নেতৃত্ব নির্বাচন করতে পারবে।

নতুন প্রজন্মের অনলাইন টিভি

নিউজটি শেয়ার করুন

নির্বাচন আয়োজনে ইসিকে প্রধান উপদেষ্টার চিঠি

নির্বাচন আয়োজনে ইসিকে প্রধান উপদেষ্টার চিঠি

আপডেট সময় : ১২:১৭:৫১ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৭ আগস্ট ২০২৫

নিজস্ব প্রতিবেদনঃ নির্বাচন আয়োজনে ইসিকে প্রধান উপদেষ্টার চিঠি, আগামী বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে রোজা শুরুর আগেই জাতীয় সংসদ নির্বাচন আয়োজনের, লক্ষ্যে নির্বাচন কমিশনকে প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি নেওয়ার জন্য, আনুষ্ঠানিকভাবে অনুরোধ করেছে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়, নির্বাচন পরিচালনার এই গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশনার মাধ্যমে সরকারের পক্ষ থেকে, নির্বাচন কমিশনের প্রতি নির্বাচনী কার্যক্রম শুরু করার আহ্বান জানানো হয়েছে।

বুধবার (৬ আগস্ট) প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে দেওয়া এক বার্তায় বিষয়টি গণমাধ্যমে জানানো হয়। চিঠিটি পাঠানো হয়েছে নির্বাচন কমিশনের সিনিয়র সচিবের বরাবর।

চিঠিতে প্রধান উপদেষ্টার মুখ্য সচিব এম সিরাজ উদ্দিন মিয়া বলেন, “প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস জাতির উদ্দেশ্যে প্রদত্ত ভাষণে যে নির্বাচনের সময়সীমার কথা বলেছেন, তা বাস্তবায়নে এখনই প্রস্তুতি গ্রহণ করা প্রয়োজন। এই নির্বাচনের মাধ্যমে দেশের নাগরিকরা যেন অবশেষে একটি সত্যিকারের গণতান্ত্রিক উৎসবে অংশ নিতে পারে—সেই লক্ষ্যে নির্বাচন কমিশনকে দায়িত্ব নিতে হবে।”

চিঠিতে আরও বলা হয়েছে, গত ১৫ বছর ধরে দেশের নাগরিকরা প্রকৃত অর্থে ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারেনি। সেই অভিজ্ঞতা থেকে শিক্ষা নিয়ে এবার যেন একটি ‘মহা-আনন্দের ভোট উৎসব’ আয়োজন করা যায়, সে দিকেই দৃষ্টি রাখতে হবে।

প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস গতকাল মঙ্গলবার (৫ আগস্ট), জুলাই গণঅভ্যুত্থান দিবসে জাতির উদ্দেশ্যে দেওয়া ভাষণে, নির্বাচন কমিশনকে দ্রুত চিঠি দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছিলেন। তার বক্তব্যে একটি স্বাধীন ও নিরপেক্ষ নির্বাচন আয়োজনের বিষয়ে জোর দেওয়া হয়।

চিঠিতে আরও উল্লেখ করা হয়, নির্বাচন যেন হয় শান্তিপূর্ণ, অবাধ, সুষ্ঠু, অংশগ্রহণমূলক এবং উৎসবমুখর—এমন প্রত্যাশা রয়েছে সরকারের। সেই সঙ্গে জনগণের আস্থা অর্জন, জাতীয় ঐক্য গঠন ও গণতান্ত্রিক ধারাবাহিকতা রক্ষা করাই এই নির্বাচনের মূল লক্ষ্য।

প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় থেকে পাঠানো চিঠিতে তথ্য-প্রযুক্তি ব্যবহারের গুরুত্বও তুলে ধরা হয়েছে। নির্বাচনে আধুনিক প্রযুক্তির মাধ্যমে স্বচ্ছতা নিশ্চিত করার দিকেও ইসিকে উদ্যোগ নিতে বলা হয়েছে।

সরকার পক্ষ থেকে নির্বাচন কমিশনকে সর্বাত্মক সহযোগিতা প্রদানের প্রতিশ্রুতিও চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে। বলা হয়েছে, একটি বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন আয়োজনের জন্য যেকোনো সহায়তায় সরকার প্রস্তুত থাকবে।

প্রধান উপদেষ্টার মুখ্য সচিব চিঠির শেষে বলেন, “প্রধান উপদেষ্টার ঘোষণার ভিত্তিতে উল্লিখিত সময়সীমার মধ্যে জাতীয় সংসদ নির্বাচন আয়োজনের জন্য প্রয়োজনীয় সব প্রস্তুতি গ্রহণ করুন।”

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, এই চিঠি প্রমাণ করে যে বর্তমান তত্ত্বাবধায়ক সরকার দ্রুততম সময়ের মধ্যেই নির্বাচন আয়োজনের পরিকল্পনায় রয়েছে এবং তা বাস্তবায়নে প্রয়োজনীয় রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক সদিচ্ছা বিদ্যমান।

একজন নির্বাচন বিশ্লেষক বলেন, “চিঠির ভাষা ও বার্তা দেখে মনে হচ্ছে, এটি কেবল একটি প্রশাসনিক নির্দেশ নয়—বরং একটি রাজনৈতিক প্রতিশ্রুতি রূপে কাজ করবে। দেশের জনগণ বহু বছর ধরে একটি অবাধ নির্বাচনের জন্য অপেক্ষা করছে। এই উদ্যোগ সেই প্রতীক্ষার প্রাথমিক সাড়া।”

নির্বাচন কমিশন সূত্র জানিয়েছে, তারা খুব শিগগিরই চিঠির ভিত্তিতে নির্বাচনী পরিকল্পনা ও প্রস্তুতি নিয়ে আলোচনায় বসবেন এবং নির্বাচনী রোডম্যাপ প্রকাশ করবেন।

ইতোমধ্যেই দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে নির্বাচন নিয়ে আলোচনার হাওয়া প্রবল হয়ে উঠেছে। বিশেষ করে নির্বাচনকালীন সরকারের নিরপেক্ষতা ও সব রাজনৈতিক দলের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা এই মুহূর্তে বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখা দিচ্ছে।

তবে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে বর্তমান সরকার যে নির্বাচন আয়োজনের বিষয়ে আন্তরিক, এই চিঠি তারই বহিঃপ্রকাশ।

আশা করা হচ্ছে, নির্বাচন কমিশন এই দায়িত্বশীল ও গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালনে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা দ্রুত গ্রহণ করবে এবং দেশের জনগণ অবশেষে একটি প্রকৃত ভোটের মাধ্যমে তাদের নেতৃত্ব নির্বাচন করতে পারবে।