ঢাকা ০২:২৯ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১২ ডিসেম্বর ২০২৫, ২৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

বিএনপি ক্ষমতায় গেলে দলীয় সরকার হবে না

অনলাইন ডেস্ক
  • আপডেট সময় : ১২:০৫:৫০ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১২ ডিসেম্বর ২০২৫
  • / 7
আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে যত সহজ ভাবা হচ্ছে, তত সহজ হবে না বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। তিনি ‘নির্বাচনী যুদ্ধ’ মোকাবেলায় দলের নেতাকর্মীদের একযোগে মাঠে নামার আহবান জানিয়ে বলেন, ‘আপনারা পরীক্ষিত, শত অত্যাচার-নির্যাতনের মধ্যেও আপনারা দলকে ধরে রেখেছেন। সেই ওয়ান-ইলেভেনের ষড়যন্ত্র থেকে শুরু করে গত স্বৈরাচারের ১৫ বছরের ষড়যন্ত্র সব আপনারা মোকাবেলা করেছেন। তাহলে এখন কেন এই সামনের যেই নির্বাচনী যুদ্ধ, এই যুদ্ধ মোকাবেলা করতে পারবেন না? আপনার দলের যে পরিকল্পনা জনগণকে ঘিরে, দেশকে ঘিরে, কেন সেটা জনগণের কাছে তুলে ধরতে পারবেন না? চাইলেই আপনারা এটা করতে পারবেন, এটা করতে হবে।

গতকাল বৃহস্পতিবার রাজধানীর ফার্মগেটে কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে বিএনপি আয়োজিত ‘দেশ গড়ার পরিকল্পনা’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। বিএনপির বিভাগীয় সাংগঠনিক ইউনিটগুলোর নেতারা এ অনুষ্ঠানে যোগ দেন।

তারেক রহমান বলেন, ‘এক বছর, সোয়া বছর আগে বলেছিলাম যে, সামনের নির্বাচন যা ভাবছেন তা নয়। আজকে আস্তে আস্তে আমার কথাটা প্রমাণিত হচ্ছে।

এখনো যদি আমরা সিরিয়াস না হই, সামনে এ দেশের অস্তিত্ব, সার্বভৌমত্ব হুমকির সম্মুখীন হবে। এটা একমাত্র বাঁচাতে পারে গণতন্ত্র এবং সেই গণতন্ত্রের ভিত্তিকে মজবুত করতে পারেন আপনারা, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের প্রত্যেকটি মানুষ।’বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, ‘বিএনপির পরিকল্পনাগুলো জানাতে মানুষের দুয়ারে দুয়ারে যেতে হবে। তাহলে নিশ্চয়ই মানুষ বিএনপিকে রাষ্ট্র পরিচালনার সুযোগ দেবে।

বিএনপি ক্ষমতায় গেলে দলীয় সরকার হবে না। যারা বিএনপিকে ভোট দিয়েছেন, তাঁদের পাশাপাশি যাঁরা ভোট দেননি, তাঁদের জন্যও কাজ করতে হবে। নির্দিষ্ট কারো জন্য কাজ করা যাবে না।’অন্য রাজনৈতিক দলগুলো মিথ্যা কথা বলে মানুষকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছে দাবি করে তিনি বলেন, ‘বিএনপির নেতাকর্মীদের মিথ্যা বলার দরকার নেই। বাস্তবভিত্তিক যে পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে, সেটা জনগণের কাছে পৌঁছে দিলেই হবে।

এই কাজ করা কঠিন। তবে সবাই মিলে চেষ্টা করলে সেটি করা সম্ভব হবে। দল যাঁর হাতে ধানের শীষ দিয়েছে, তাঁদের পক্ষে থাকতে হবে। প্রার্থী আসবে, প্রার্থী পরিবর্তন হবে, তবে দল ও আদর্শ রয়ে যাবে।’নেতাদের উদ্দেশ করে তারেক রহমান বলেন, ‘আপনি নিজের এলাকায় যাবেন, আপনি কষ্ট করবেন আপনার দলের পরিকল্পনাগুলোকে সফল করার জন্য। আপনার সামনে থাকবে ধানের শীষ। আপনার সামনে কোনো ব্যক্তি থাকবে না। ধানের শীষকে আপনি বের করে নিয়ে আসবেন, ধানের শীষের পক্ষে আপনি জনগণের মতামতকে ঐক্যবদ্ধ করবেন। ধানের শীষের জন্য আপনি জনগণের মতামতকে এক জায়গায় ব্যালট বক্সের ভেতরে নিয়ে আসবেন।’

তিনি বলেন, ‘আপনাদের মিটিং করে বললে হবে না। ছোট ছোট গ্রুপ করে ঘরে ঘরে যেতে হবে, মাঠে মাঠে যেতে হবে। কৃষকের ক্ষেতে যেতে হবে। মসজিদের ইমাম-মুয়াজ্জিনদের কাছে যেতে হবে, প্রাইমারি স্কুল, হাই স্কুলের শিক্ষকদের কাছে যেতে হবে, ঘরে ঘরে মা-বোনদের কাছে যেতে হবে, স্কুল-কলেজের তরুণ-তরুণীদের কাছে যেতে হবে, যুবকদের কাছে যেতে হবে। আপনারা পেরেছেন স্বৈরাচারকে মোকাবেলা করতে; আপনারা পেরেছেন ওয়ান-ইলেভেনের ষড়যন্ত্রকে মোকাবেলা করতে। গণতন্ত্রের ভিত্তি স্থাপনের কাজেও আপনারা সফল হবেন, এই প্রত্যাশা আমি করছি।’

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, ‘আমাদের পরিকল্পনাগুলো জনগণকে জানাতে হবে। আপনারা ছাড়া জনগণের পক্ষে জানা সম্ভব নয়। আপনি যদি না যান, আরেকজন যাচ্ছে, সে গিয়ে মিথ্যা ও বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে জনগণের মাঝে। কাজেই এই মিথ্যা ও বিভ্রান্তি বন্ধ তখনই হবে, যখন আপনি মাঠে হাজির হয়ে যাবেন।’

নিয়ম সবার জন্য সমান হতে হবে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আমি বিভিন্ন জায়গায় দেখলাম, কিছু ব্যক্তি মসজিদে গিয়ে তাঁদের কথা বলছেন। তাঁরা যদি বলতে পারেন, আপনি কেন বলতে পারবেন না। বললে সবাই বলবে, না বললে কেউ বলতে পারবে না। আপনি, আপনার এলাকায় সেভাবে ব্যবস্থা গ্রহণ করুন।’

‘দেশ গড়ার পরিকল্পনা’ শীর্ষক কর্মসূচি বাস্তবায়ন কমিটির আহ্বায়ক ও দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবীর রিজভীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানের উদ্বোধক ছিলেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন দলের যুগ্ম মহাসচিব হাবিব-উন-নবী খান সোহেল।

নতুন প্রজন্মের অনলাইন টিভি

নিউজটি শেয়ার করুন

ট্যাগস :

বিএনপি ক্ষমতায় গেলে দলীয় সরকার হবে না

আপডেট সময় : ১২:০৫:৫০ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১২ ডিসেম্বর ২০২৫
আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে যত সহজ ভাবা হচ্ছে, তত সহজ হবে না বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। তিনি ‘নির্বাচনী যুদ্ধ’ মোকাবেলায় দলের নেতাকর্মীদের একযোগে মাঠে নামার আহবান জানিয়ে বলেন, ‘আপনারা পরীক্ষিত, শত অত্যাচার-নির্যাতনের মধ্যেও আপনারা দলকে ধরে রেখেছেন। সেই ওয়ান-ইলেভেনের ষড়যন্ত্র থেকে শুরু করে গত স্বৈরাচারের ১৫ বছরের ষড়যন্ত্র সব আপনারা মোকাবেলা করেছেন। তাহলে এখন কেন এই সামনের যেই নির্বাচনী যুদ্ধ, এই যুদ্ধ মোকাবেলা করতে পারবেন না? আপনার দলের যে পরিকল্পনা জনগণকে ঘিরে, দেশকে ঘিরে, কেন সেটা জনগণের কাছে তুলে ধরতে পারবেন না? চাইলেই আপনারা এটা করতে পারবেন, এটা করতে হবে।

গতকাল বৃহস্পতিবার রাজধানীর ফার্মগেটে কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে বিএনপি আয়োজিত ‘দেশ গড়ার পরিকল্পনা’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। বিএনপির বিভাগীয় সাংগঠনিক ইউনিটগুলোর নেতারা এ অনুষ্ঠানে যোগ দেন।

তারেক রহমান বলেন, ‘এক বছর, সোয়া বছর আগে বলেছিলাম যে, সামনের নির্বাচন যা ভাবছেন তা নয়। আজকে আস্তে আস্তে আমার কথাটা প্রমাণিত হচ্ছে।

এখনো যদি আমরা সিরিয়াস না হই, সামনে এ দেশের অস্তিত্ব, সার্বভৌমত্ব হুমকির সম্মুখীন হবে। এটা একমাত্র বাঁচাতে পারে গণতন্ত্র এবং সেই গণতন্ত্রের ভিত্তিকে মজবুত করতে পারেন আপনারা, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের প্রত্যেকটি মানুষ।’বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, ‘বিএনপির পরিকল্পনাগুলো জানাতে মানুষের দুয়ারে দুয়ারে যেতে হবে। তাহলে নিশ্চয়ই মানুষ বিএনপিকে রাষ্ট্র পরিচালনার সুযোগ দেবে।

বিএনপি ক্ষমতায় গেলে দলীয় সরকার হবে না। যারা বিএনপিকে ভোট দিয়েছেন, তাঁদের পাশাপাশি যাঁরা ভোট দেননি, তাঁদের জন্যও কাজ করতে হবে। নির্দিষ্ট কারো জন্য কাজ করা যাবে না।’অন্য রাজনৈতিক দলগুলো মিথ্যা কথা বলে মানুষকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছে দাবি করে তিনি বলেন, ‘বিএনপির নেতাকর্মীদের মিথ্যা বলার দরকার নেই। বাস্তবভিত্তিক যে পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে, সেটা জনগণের কাছে পৌঁছে দিলেই হবে।

এই কাজ করা কঠিন। তবে সবাই মিলে চেষ্টা করলে সেটি করা সম্ভব হবে। দল যাঁর হাতে ধানের শীষ দিয়েছে, তাঁদের পক্ষে থাকতে হবে। প্রার্থী আসবে, প্রার্থী পরিবর্তন হবে, তবে দল ও আদর্শ রয়ে যাবে।’নেতাদের উদ্দেশ করে তারেক রহমান বলেন, ‘আপনি নিজের এলাকায় যাবেন, আপনি কষ্ট করবেন আপনার দলের পরিকল্পনাগুলোকে সফল করার জন্য। আপনার সামনে থাকবে ধানের শীষ। আপনার সামনে কোনো ব্যক্তি থাকবে না। ধানের শীষকে আপনি বের করে নিয়ে আসবেন, ধানের শীষের পক্ষে আপনি জনগণের মতামতকে ঐক্যবদ্ধ করবেন। ধানের শীষের জন্য আপনি জনগণের মতামতকে এক জায়গায় ব্যালট বক্সের ভেতরে নিয়ে আসবেন।’

তিনি বলেন, ‘আপনাদের মিটিং করে বললে হবে না। ছোট ছোট গ্রুপ করে ঘরে ঘরে যেতে হবে, মাঠে মাঠে যেতে হবে। কৃষকের ক্ষেতে যেতে হবে। মসজিদের ইমাম-মুয়াজ্জিনদের কাছে যেতে হবে, প্রাইমারি স্কুল, হাই স্কুলের শিক্ষকদের কাছে যেতে হবে, ঘরে ঘরে মা-বোনদের কাছে যেতে হবে, স্কুল-কলেজের তরুণ-তরুণীদের কাছে যেতে হবে, যুবকদের কাছে যেতে হবে। আপনারা পেরেছেন স্বৈরাচারকে মোকাবেলা করতে; আপনারা পেরেছেন ওয়ান-ইলেভেনের ষড়যন্ত্রকে মোকাবেলা করতে। গণতন্ত্রের ভিত্তি স্থাপনের কাজেও আপনারা সফল হবেন, এই প্রত্যাশা আমি করছি।’

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, ‘আমাদের পরিকল্পনাগুলো জনগণকে জানাতে হবে। আপনারা ছাড়া জনগণের পক্ষে জানা সম্ভব নয়। আপনি যদি না যান, আরেকজন যাচ্ছে, সে গিয়ে মিথ্যা ও বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে জনগণের মাঝে। কাজেই এই মিথ্যা ও বিভ্রান্তি বন্ধ তখনই হবে, যখন আপনি মাঠে হাজির হয়ে যাবেন।’

নিয়ম সবার জন্য সমান হতে হবে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আমি বিভিন্ন জায়গায় দেখলাম, কিছু ব্যক্তি মসজিদে গিয়ে তাঁদের কথা বলছেন। তাঁরা যদি বলতে পারেন, আপনি কেন বলতে পারবেন না। বললে সবাই বলবে, না বললে কেউ বলতে পারবে না। আপনি, আপনার এলাকায় সেভাবে ব্যবস্থা গ্রহণ করুন।’

‘দেশ গড়ার পরিকল্পনা’ শীর্ষক কর্মসূচি বাস্তবায়ন কমিটির আহ্বায়ক ও দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবীর রিজভীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানের উদ্বোধক ছিলেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন দলের যুগ্ম মহাসচিব হাবিব-উন-নবী খান সোহেল।