মার্কিন সাময়িকী ফরেইন পলিসির প্রতিবেদন : হট সিটে ড. ইউনূস

- আপডেট সময় : ১২:০২:৪৪ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৩০ মে ২০২৫ ১৬ বার পড়া হয়েছে
দক্ষিণ এশিয়া বিষয়ক এই বিশ্লেষকের মতে, ইউনূস এখন গুরুত্বপূর্ণ অংশীজনদের সঙ্গে সংঘাতের পথে এগিয়ে যাচ্ছেন। তিনি ছাত্রনেতাদের সিদ্ধান্তে সমর্থন দিয়েছেন এবং তাঁদের নীতিগত অবস্থানকেও সমর্থন করেছেন। আর তাঁরা নির্বাচনের সময় পেছালেও সংস্কার কার্যক্রম সম্পন্ন করতে বদ্ধপরিকর। কিন্তু বাংলাদেশ সেনাবাহিনী, বিএনপি, ব্যবসায়ী মহল এবং সম্ভবত বেশির ভাগ সাধারণ জনগণ যত তাড়াতাড়ি সম্ভব নির্বাচনের পক্ষে। এই ক্রমবর্ধমান জটিল রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে নতুন বিভাজনরেখা তৈরি হতে পারে। আগাম নির্বাচনের দাবিতে থাকা বিএনপির সঙ্গে এখন এনসিপি এবং প্রভাবশালী ইসলামী দল জামায়াতে ইসলামীর মতো অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ দলগুলোর সঙ্গে দ্বন্দ্ব দেখা যাচ্ছে। নানা মতাদর্শী দল যখন নিজেদের দাবি নিয়ে রাজপথে নামে, তখন রাজনৈতিক সহিংসতার আশঙ্কা সত্যিই বেড়ে যায়।
অন্তর্বর্তী সরকার সেনাবাহিনীর সঙ্গে কোনো টানাপোড়েনের কথা অস্বীকার করলেও জেনারেল ওয়াকারের নির্বাচনী আহ্বানকে ‘তাৎপর্যপূর্ণ’ উল্লেখ করে কুগলম্যান লিখেছেন, শেখ হাসিনার অপসারণের পর থেকে সাধারণত রাজনৈতিক বিষয়ে চুপ থাকা ওয়াকারের এমন মন্তব্য জরুরি পরিস্থিতির ইঙ্গিত দেয়। ওয়াকার সরকারের আরও কিছু সিদ্ধান্ত, যেমন ইলন মাস্কের স্টারলিংক পরিষেবা চালুর বিরুদ্ধেও অবস্থান নিয়েছেন।
এ সময়ে বিএনপি এবং আওয়ামী লীগের মধ্যে শত্রুতা আরও বেড়েছে। আওয়ামী লীগের দুর্নীতির দায় শেখ হাসিনা অস্বীকার করায় বাংলাদেশের অনেক মানুষের মধ্যে ক্ষোভ রয়েছে, যা হয়ত অন্তর্বর্তী সরকারের আওয়ামী লীগকে নির্বাচন থেকে বাদ দেওয়ার সিদ্ধান্তের পেছনে প্রভাব ফেলেছে। দলটির শীর্ষ নেতৃত্ব বিদেশে পালিয়ে গেছে। কিন্তু দলের যে অংশ এখনো রয়ে গেছে, তারা এই সিদ্ধান্ত ভালোভাবে নেয়নি।
মাইকেল কুগলম্যানের মতে, সবচেয়ে খারাপ পরিস্থিতিতে এই অস্থিতিশীলতা সহিংসতায় রূপ নিতে পারে, যার ফলে মারাত্মক রাজনৈতিক অস্থিরতা তৈরি হবে। তখন প্রশ্ন উঠবে সেনাবাহিনী নিয়ে–যা এখন আগের চেয়ে রাজনীতিতে হস্তক্ষেপে অনাগ্রহী। প্রশ্ন উঠেছে, তারা কি নির্বাচনের উপযুক্ত পরিবেশ না আসা পর্যন্ত নিয়ন্ত্রণ নেবে?
এমন জটিল পরিস্থিতির সম্ভাব্য পরিণতি এবং পরিস্থিতি সামাল দিতে সম্ভাব্য সেরা বিকল্প বিষয়ে কুগলম্যান তাঁর লেখার শেষে কিছু পরামর্শ দিয়েছেন। তিনি লিখেছেন, যদি সবাই শান্ত থাকে, তাহলে এমন পরিস্থিতিতে সেরা সম্ভাব্য পরিস্থিতি হলো–অন্তর্বর্তী সরকার কয়েকটি মূল সংস্কারের বিষয়ে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সম্মতি নিয়ে এগিয়ে যাবে। সেগুলোর বাস্তবায়নের একটি তারিখ নির্ধারণ করবে এবং নির্বাচনের একটি সময়সূচি ঘোষণা করবে। আশার কথা হলো, রাজনৈতিক দলগুলো ইতোমধ্যে কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে ঐকমত্যে পৌঁছাতে শুরু করেছে। এই পরিস্থিতি একটি শান্তিপূর্ণ রাজনৈতিক রূপান্তরের পথ সুগম করবে এবং ইউনুসের জন্য তাঁর বহুদিনের কাঙ্ক্ষিত ব্যক্তিগত জীবনে মসৃণভাবে ফিরে যাওয়ার পথ তৈরি করবে।