ঢাকা ১০:৩৫ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ০৫ অগাস্ট ২০২৫, ২১ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::

৩৬জুলাই উৎসবে গ্যাস বেলুন বিস্ফোরণে ১০ জন দগ্ধ, বার্ন ইনস্টিটিউটে ভর্তি

৩৬জুলাই উৎসবে গ্যাস বেলুন বিস্ফোরণে ১০ জন দগ্ধ, বার্ন ইনস্টিটিউটে ভর্তি

অনলাইন ডেস্ক
  • আপডেট সময় : ০৪:৩৯:৫৮ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৫ আগস্ট ২০২৫ ৭ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ ৩৬জুলাই উৎসবে গ্যাস বেলুন বিস্ফোরণে ১০ জন দগ্ধ, বার্ন ইনস্টিটিউটে ভর্তি, রাজধানী ঢাকার ব্যস্ততম এলাকা মানিক মিয়া এভিনিউতে গ্যাস বেলুন বিস্ফোরণের ঘটনায় অন্তত ১০ জন দগ্ধ হয়েছেন, মঙ্গলবার (৫ আগস্ট) বিকেল আনুমানিক ৩টার দিকে এ বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে, স্থানীয়রা তাৎক্ষণিকভাবে আহতদের উদ্ধার করে রাজধানীর জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের জরুরি বিভাগে নিয়ে যান।

জাতীয় বার্ন ইনস্টিটিউটের আবাসিক সার্জন ডা. শাওন বিন রহমান বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, “মানিক মিয়া এভিনিউ থেকে গ্যাস বেলুন বিস্ফোরণের ঘটনায় এখন পর্যন্ত ১০ জন দগ্ধ অবস্থায় আমাদের এখানে এসেছে। জরুরি বিভাগে তাদের চিকিৎসা চলছে।”

দগ্ধদের মধ্যে রয়েছেন— মাজহারুল ইসলাম (২৭),বিল্লাল (৪৫),ফাহাদ (২০), মো. মনসুর ইসলাম (৩৮), শরীফ (৩২), পলাশ (২১), মো. হাবিবুল্লাহ (২৩), মো. ইয়াসিন (২৫), মিশু (২৩), মিহাত (১৭) চিকিৎসা সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, আহতদের মধ্যে কয়েকজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। তাদের শরীরের বিভিন্ন অংশে তীব্র দগ্ধতা রয়েছে।

প্রত্যক্ষদর্শী ও এলাকাবাসীদের বরাতে জানা গেছে, বিকেলে সড়কের পাশে গ্যাস বেলুন বিক্রি করছিলেন কয়েকজন ব্যক্তি। এই বেলুন সাধারণত শিশুদের আনন্দ দিতে সড়কের ধারে বিক্রি করা হয়ে থাকে। হাইড্রোজেন বা অক্সিজেন গ্যাস ব্যবহার করে এসব বেলুন তৈরি করা হয়, যা অত্যন্ত দাহ্য এবং সামান্য স্পার্কেই বিস্ফোরিত হতে পারে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা বলেন, “বিকট শব্দে হঠাৎ বিস্ফোরণ ঘটে, কিছু বুঝে ওঠার আগেই চারপাশে আগুন ছড়িয়ে পড়ে। অনেকেই দগ্ধ হন। বেলুন বিক্রেতাদের গায়ে আগুন ধরে যায়, আশপাশে থাকা পথচারীরাও দগ্ধ হন।”

বার্ন ইনস্টিটিউটের অবস্থা ও চিকিৎসা পরিস্থিতি

জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে আহতদের দ্রুত চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, অধিকাংশ রোগীর শরীরের ১৫ থেকে ৩০ শতাংশ পর্যন্ত দগ্ধ হয়েছে। ইনস্টিটিউটের প্লাস্টিক সার্জারি বিভাগের চিকিৎসক দল নিবিড় পর্যবেক্ষণে রেখেছেন আহতদের।

হাসপাতালের পরিচালক অধ্যাপক ডা. সামন্ত লাল সেন বলেন, “আমরা চেষ্টা করছি রোগীদের সর্বোচ্চ চিকিৎসা দিতে। গরম ও দাহ্য পদার্থের বিস্ফোরণজনিত দগ্ধতা অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে। কিছু রোগীর অবস্থা গুরুতর। আমাদের টিম প্রস্তুত আছে।”

গাফিলতি ও দায় কার?

এই ঘটনায় প্রশ্ন উঠেছে—পথচারি জনবহুল এলাকায় এমন দাহ্য গ্যাস ব্যবহার করে বেলুন বিক্রি কেন? কে বা কারা এ ধরনের বিপজ্জনক পন্থায় ব্যবসা করে যাচ্ছে দিনের পর দিন, এবং কেন সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বিষয়টি এড়িয়ে যাচ্ছে?

বিশেষজ্ঞদের মতে, হাইড্রোজেন গ্যাস অত্যন্ত দাহ্য ও বিপজ্জনক। সাধারণত হেলিয়াম গ্যাস নিরাপদ হলেও তা ব্যয়বহুল হওয়ায় অনেক বিক্রেতা হাইড্রোজেন ব্যবহার করেন। এতে মারাত্মক ঝুঁকি তৈরি হয়, বিশেষ করে শিশু ও জনবহুল এলাকায়।

নাগরিকদের উদ্বেগ ও প্রতিক্রিয়া

সামাজিক মাধ্যমে ইতোমধ্যে এই ঘটনা নিয়ে প্রতিক্রিয়া জানাচ্ছেন অনেকেই। কেউ বলছেন, “বেলুন বিক্রেতাদের লাইসেন্স আছে কি না, তা দেখা দরকার।” আবার কেউ লিখেছেন, “ছোটদের আনন্দ দিতে গিয়ে বড় দুঃখের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে বেলুন। প্রশাসনের কঠোর নজরদারি দরকার।”

নিরাপত্তা নিশ্চিত না হলে আরও বিপদ

রাজধানীর মতো জনঘনত্বপূর্ণ এলাকায় এমন ঘটনায় বড় ধরনের প্রাণহানির আশঙ্কা থাকতেও পারে। নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞরা বলছেন, রাস্তার পাশে বিস্ফোরক গ্যাস ব্যবহার করে বেলুন তৈরি ও বিক্রি সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করা উচিত। পাশাপাশি, প্রশাসন ও আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে এ বিষয়ে নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করতে হবে।

নতুন প্রজন্মের অনলাইন টিভি

নিউজটি শেয়ার করুন

৩৬জুলাই উৎসবে গ্যাস বেলুন বিস্ফোরণে ১০ জন দগ্ধ, বার্ন ইনস্টিটিউটে ভর্তি

৩৬জুলাই উৎসবে গ্যাস বেলুন বিস্ফোরণে ১০ জন দগ্ধ, বার্ন ইনস্টিটিউটে ভর্তি

আপডেট সময় : ০৪:৩৯:৫৮ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৫ আগস্ট ২০২৫

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ ৩৬জুলাই উৎসবে গ্যাস বেলুন বিস্ফোরণে ১০ জন দগ্ধ, বার্ন ইনস্টিটিউটে ভর্তি, রাজধানী ঢাকার ব্যস্ততম এলাকা মানিক মিয়া এভিনিউতে গ্যাস বেলুন বিস্ফোরণের ঘটনায় অন্তত ১০ জন দগ্ধ হয়েছেন, মঙ্গলবার (৫ আগস্ট) বিকেল আনুমানিক ৩টার দিকে এ বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে, স্থানীয়রা তাৎক্ষণিকভাবে আহতদের উদ্ধার করে রাজধানীর জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের জরুরি বিভাগে নিয়ে যান।

জাতীয় বার্ন ইনস্টিটিউটের আবাসিক সার্জন ডা. শাওন বিন রহমান বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, “মানিক মিয়া এভিনিউ থেকে গ্যাস বেলুন বিস্ফোরণের ঘটনায় এখন পর্যন্ত ১০ জন দগ্ধ অবস্থায় আমাদের এখানে এসেছে। জরুরি বিভাগে তাদের চিকিৎসা চলছে।”

দগ্ধদের মধ্যে রয়েছেন— মাজহারুল ইসলাম (২৭),বিল্লাল (৪৫),ফাহাদ (২০), মো. মনসুর ইসলাম (৩৮), শরীফ (৩২), পলাশ (২১), মো. হাবিবুল্লাহ (২৩), মো. ইয়াসিন (২৫), মিশু (২৩), মিহাত (১৭) চিকিৎসা সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, আহতদের মধ্যে কয়েকজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। তাদের শরীরের বিভিন্ন অংশে তীব্র দগ্ধতা রয়েছে।

প্রত্যক্ষদর্শী ও এলাকাবাসীদের বরাতে জানা গেছে, বিকেলে সড়কের পাশে গ্যাস বেলুন বিক্রি করছিলেন কয়েকজন ব্যক্তি। এই বেলুন সাধারণত শিশুদের আনন্দ দিতে সড়কের ধারে বিক্রি করা হয়ে থাকে। হাইড্রোজেন বা অক্সিজেন গ্যাস ব্যবহার করে এসব বেলুন তৈরি করা হয়, যা অত্যন্ত দাহ্য এবং সামান্য স্পার্কেই বিস্ফোরিত হতে পারে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা বলেন, “বিকট শব্দে হঠাৎ বিস্ফোরণ ঘটে, কিছু বুঝে ওঠার আগেই চারপাশে আগুন ছড়িয়ে পড়ে। অনেকেই দগ্ধ হন। বেলুন বিক্রেতাদের গায়ে আগুন ধরে যায়, আশপাশে থাকা পথচারীরাও দগ্ধ হন।”

বার্ন ইনস্টিটিউটের অবস্থা ও চিকিৎসা পরিস্থিতি

জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে আহতদের দ্রুত চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, অধিকাংশ রোগীর শরীরের ১৫ থেকে ৩০ শতাংশ পর্যন্ত দগ্ধ হয়েছে। ইনস্টিটিউটের প্লাস্টিক সার্জারি বিভাগের চিকিৎসক দল নিবিড় পর্যবেক্ষণে রেখেছেন আহতদের।

হাসপাতালের পরিচালক অধ্যাপক ডা. সামন্ত লাল সেন বলেন, “আমরা চেষ্টা করছি রোগীদের সর্বোচ্চ চিকিৎসা দিতে। গরম ও দাহ্য পদার্থের বিস্ফোরণজনিত দগ্ধতা অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে। কিছু রোগীর অবস্থা গুরুতর। আমাদের টিম প্রস্তুত আছে।”

গাফিলতি ও দায় কার?

এই ঘটনায় প্রশ্ন উঠেছে—পথচারি জনবহুল এলাকায় এমন দাহ্য গ্যাস ব্যবহার করে বেলুন বিক্রি কেন? কে বা কারা এ ধরনের বিপজ্জনক পন্থায় ব্যবসা করে যাচ্ছে দিনের পর দিন, এবং কেন সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বিষয়টি এড়িয়ে যাচ্ছে?

বিশেষজ্ঞদের মতে, হাইড্রোজেন গ্যাস অত্যন্ত দাহ্য ও বিপজ্জনক। সাধারণত হেলিয়াম গ্যাস নিরাপদ হলেও তা ব্যয়বহুল হওয়ায় অনেক বিক্রেতা হাইড্রোজেন ব্যবহার করেন। এতে মারাত্মক ঝুঁকি তৈরি হয়, বিশেষ করে শিশু ও জনবহুল এলাকায়।

নাগরিকদের উদ্বেগ ও প্রতিক্রিয়া

সামাজিক মাধ্যমে ইতোমধ্যে এই ঘটনা নিয়ে প্রতিক্রিয়া জানাচ্ছেন অনেকেই। কেউ বলছেন, “বেলুন বিক্রেতাদের লাইসেন্স আছে কি না, তা দেখা দরকার।” আবার কেউ লিখেছেন, “ছোটদের আনন্দ দিতে গিয়ে বড় দুঃখের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে বেলুন। প্রশাসনের কঠোর নজরদারি দরকার।”

নিরাপত্তা নিশ্চিত না হলে আরও বিপদ

রাজধানীর মতো জনঘনত্বপূর্ণ এলাকায় এমন ঘটনায় বড় ধরনের প্রাণহানির আশঙ্কা থাকতেও পারে। নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞরা বলছেন, রাস্তার পাশে বিস্ফোরক গ্যাস ব্যবহার করে বেলুন তৈরি ও বিক্রি সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করা উচিত। পাশাপাশি, প্রশাসন ও আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে এ বিষয়ে নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করতে হবে।