বগুড়া বিয়াম মডেল স্কুল ও কলেজের ৮ শিক্ষকের বিরুদ্ধে মামলা

বগুড়া বিয়াম মডেল স্কুল ও কলেজের ৮ শিক্ষকের বিরুদ্ধে মামলা

নিজস্ব প্রতিবেদক : বগুড়া বিয়াম মডেল স্কুল ও কলেজে ত্রাস সৃষ্টি করে শিশু শিক্ষার্থীসহ বাস ভাঙচুর, চালকদের মারপিট ও জখম করার অভিযোগে কর্মরত ৮ শিক্ষকের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে।
আহতরা সরকারি মোহাম্মদ আলী হাসপাতালসহ বিভিন্ন হাসপাতাল ও ক্লিনিকে চিকিৎসা গ্রহণ করেছেন।

রবিবার (৪ মে) বিকেলে সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এসএম মঈনুদ্দীন মামলা দায়েরের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

তিনি জানান, জেলা শহরের পুলিশ লাইন এলাকার ভুক্তভোগী অভিভাবক টিএম মামুন বাদি হয়ে শনিবার রাতে এই দণ্ডবিধির ১৪৩/৩২৩/৩২৫/৩০৭/৪২৭/৫০৬/৩৪ তৎসহ ১৮৬০ খ্রিস্টাব্দের ৪/৫ আইনশৃঙ্খলা বিঘ্নকারী অপরাধ (দ্রুতবিচার) আইন-২০০২ ধারায় মামলাটি করেন।

মামলায় সহকারী শিক্ষক মো. আব্দুর রাজ্জাক (বাংলা), মো. শহিদুল ইসলাম (ইংরেজি), মাহবুবুর আলম টুটুল (রাষ্ট্রবিজ্ঞান), মোহাম্মদ ইসরাফিল হোসেন (ইসলাম শিক্ষা), মো. জহুরুল ইসলাম (আইসিটি), মো. আবু হানিফা (সাধারণ শিক্ষক), সহকারী অধ্যাপক মো. শফিকুল ইসলাম (গণিত) ও প্রভাষক মো. আনিসুজ্জামান (বাংলা) সহ ৪০/৫০ জন অজ্ঞাত পরিচয় ব্যক্তিকে আসামি করা হয়েছে।

মামলায় বাদির অভিযোগ, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রহরী (গার্ড) মাসুদ রানাকে বদলি করাকে কেন্দ্র করে ওই ৮ শিক্ষক বহিরাগত লোকদের নিয়ে বেআইনি জনতায় দলবদ্ধ হয়ে লাঠিসোঁটা, লোহার রড ও দেশীয় অস্ত্রসহ ত্রাস সৃষ্টি করে গত ২৮ এপ্রিল সকাল সাড়ে ১১ টার দিকে শোডাউন ও ত্রাস সৃষ্টি করে সংঘবদ্ধভাবে বিয়াম মডেল স্কুল ও কলেজে হত্যার উদ্দেশ্যে বেআইনি বল প্রয়োগ ও হামলা করে। হামলায় কোমলমতি শিশু শিক্ষার্থীদের কিলঘুষি মেরে আটক রাখে এবং শিক্ষার্থী বহনের জন্য বাসচালক ও তাদের সহযোগীদের ওপর হামলা করে।

এ সময় আসামিরা বাস ভাঙচুর করে আতঙ্কের সৃষ্টি করে।

হামলায় পাঠদানরত অনেক ছাত্রছাত্রীসহ বাদীর অধ্যয়নরত শিশু সন্তান বুকে ও পিঠে আঘাতপ্রাপ্ত হয়ে অসুস্থ হয়ে বমি করে। একই সময় বিয়াম মডেল স্কুল ও কলেজের বাসচালক ওয়াজেদ আলী মাথায়, আব্দুল মান্নান ঘাড়ে এবং নুরু মিয়া হাতে আঘাত পেয়ে ফোলা ও জখমপ্রাপ্ত হন। সে সময়ে উপস্থিত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অনেকেই জানেন এবং সিসিটিভি ফুটেজে ঘটনার ভিডিও ফুটেজ সংরক্ষিত রয়েছে।
বগুড়ার পুলিশ সুপার জেদান আল মুসা জানান, বিয়াম মডেল স্কুল ও কলেজ শুধু বগুড়া নয়, গোটা উত্তরাঞ্চলের অন্যতম সেরা বিদ্যাপীঠ।

শৃঙ্খলা ভঙ্গকারী গুটিকয়েক শিক্ষকদের জন্য গোটা প্রতিষ্ঠানের ক্ষতি হতে দেওয়া যাবে না। দ্রুত অপরাধীদের গ্রেপ্তার করে বিচারের মুখোমুখি করা হবে।
প্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষ মুহাম্মদ মুস্তাফিজুর রহমান জানান, তৎকালীন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব তারেক রহমান শহরের নিশিন্দারায় বিয়াম মডেল স্কুল ও কলেজের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। প্রতিষ্ঠানটি ২০০৫ খ্রিস্টাব্দের ২৪ এপ্রিল শিক্ষা কার্যক্রম শুরু করে এবং ২০০৮ সালে সকল পাবলিক পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে। ভিন্ন রাজনৈতিক মতাদর্শের কয়েকজন শিক্ষক বেআইনি কোচিং ব্যবসাকে গতিশীল করতে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বিশৃঙ্খল পরিবেশ তৈরির চেষ্টা করছে।

ঘটনার দিন (২৮ এপ্রিল) পুলিশ ও সেনাসদস্যদের হস্তক্ষেপ এর জন্য বড় ধরনের নাশকতা থেকে রক্ষা পেয়েছে প্রতিষ্ঠানটি।
বগুড়ার জেলা প্রশাসক ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সভাপতি হোসনা আফরোজা জানান, বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব অ্যাডমিনিস্ট্রেশন অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট (বিয়াম) ফাউন্ডেশন পরিচালিত প্রতিষ্ঠান নীতিমালা-২০২১ অমান্য করে ওই শিক্ষকরা সাংবাদিক সম্মেলন ও মানববন্ধন করেছেন। আইনগত জটিলতা এড়াতে তারা ২৮ এপ্রিলের ধ্বংসাত্মক কর্মকাণ্ডকে বিদ্যালয় জাতীয়করণের দাবি বলে চালানোর চেষ্টা করছেন। যা আইন ও বিধির সুষ্পষ্ট লঙ্ঘন। তাদেরকে কারণ দর্শানো নোটিশ দেওয়া হয়েছে। শিগগিরই শিক্ষকদের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত ফৌজদারি মামলা এবং কারণ দর্শানো নোটিশ বিষয়ে আইনগত চূড়ান্ত পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।

Leave A Reply

Your email address will not be published.

Title