ড্রিমলাইনার নিয়ে সতর্ক বিমান, ফ্লাইটের আগে করা হচ্ছে সর্বোচ্চ ইন্সপেকশন

- আপডেট সময় : ০১:২০:৫৩ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৭ জুন ২০২৫ ৬ বার পড়া হয়েছে
সম্প্রতি ভারতের এয়ার ইন্ডিয়ার একটি বোয়িং ৭৮৭-৮ ড্রিমলাইনার উড়োজাহাজ উড্ডয়নের কিছুক্ষণের মধ্যেই বিধ্বস্ত হয়। এই দুর্ঘটনার পর বিশ্বব্যাপী উড়োজাহাজ নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। এরই প্রেক্ষিতে, বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স তাদের বহরে থাকা ছয়টি ড্রিমলাইনার নিয়ে সর্বোচ্চ সতর্কতায় ফ্লাইট পরিচালনা করছে।
বিমানের ৬টি ড্রিমলাইনারে চলছে বাড়তি নজরদারি
বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের জনসংযোগ বিভাগের মহাব্যবস্থাপক এ বি এম রওশন কবীর জানান, ড্রিমলাইনার সতর্কতা নিশ্চিত করতে বিমান প্রকৌশল বিভাগ একাধিক কারিগরি সিস্টেমের মান যাচাই এবং পরীক্ষা শুরু করেছে। এর মধ্যে রয়েছে—
-
ইঞ্জিন ফুয়েল সিস্টেম
-
ইলেকট্রনিক ইঞ্জিন কন্ট্রোল
-
ইলেকট্রিক্যাল পাওয়ার সিস্টেম
-
হাইড্রোলিক সিস্টেম
-
এয়ার কন্ডিশনিং
-
ফ্লাইট কন্ট্রোল সিস্টেম
এছাড়া ইঞ্জিনের পাওয়ার অ্যাসুরেন্স চেক-ও সম্পন্ন করা হচ্ছে। রওশন কবীর বলেন, বোয়িং কোম্পানির যেকোনো নতুন নির্দেশনা পাওয়া মাত্রই তা তাৎক্ষণিকভাবে বাস্তবায়নের জন্য বিমান প্রস্তুত রয়েছে।
রক্ষণাবেক্ষণে কঠোর নিয়ম অনুসরণ
বর্তমানে বিমান বহরে রয়েছে চারটি বোয়িং ৭৮৭-৮ এবং দুটি ৭৮৭-৯ ড্রিমলাইনার, যেগুলো আন্তর্জাতিক রুটে চলাচল করে। প্রতিটি উড়োজাহাজ এয়ারক্রাফট মেইনটেন্যান্স প্রোগ্রাম অনুসারে রক্ষণাবেক্ষণ করা হয়, যা:
-
বোয়িং কোম্পানির নির্দেশনা
-
টাইপ সার্টিফিকেট হোল্ডার গাইডলাইন
-
বাংলাদেশ বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের অনুমোদিত পদ্ধতি অনুযায়ী চলে।
প্রতিটি রক্ষণাবেক্ষণ কাজ এক বা একাধিক টাইপ রেটেড প্রকৌশলীর তত্ত্বাবধানে সম্পন্ন হয়। কাজ শেষে প্রকৌশলী স্বাক্ষর করেন এবং পরে তা কোয়ালিটি অ্যাসিউরেন্স বিভাগ যাচাই করে সংরক্ষণ করে।
রিয়েল টাইম মনিটরিং: আগে থেকেই সতর্ক বার্তা
বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের এয়ারক্রাফট হেলথ ম্যানেজমেন্ট ও ইঞ্জিন হেলথ ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম প্রতিটি ড্রিমলাইনারের স্ট্যাটাস রিয়েল টাইমে পর্যবেক্ষণ করে। এতে যেকোনো সম্ভাব্য ত্রুটি আগেই শনাক্ত হয়ে যায়, এবং প্রতিরোধমূলক রক্ষণাবেক্ষণ নেওয়া সম্ভব হয়।
দুর্ঘটনার পেছনে কী?
গত ১২ জুন গুজরাটের আহমেদাবাদ বিমানবন্দর থেকে লন্ডনগামী এয়ার ইন্ডিয়া ফ্লাইট AI-171 উড্ডয়নের পরপরই বিধ্বস্ত হয়। বোয়িং ৭৮৭-৮ মডেলের এই উড়োজাহাজটিতে ২৪২ জন আরোহী ছিলেন, যাদের মধ্যে ২৪১ জন প্রাণ হারান। এরপর ভারত সরকার GENx ইঞ্জিন ব্যবহৃত সব ড্রিমলাইনারে অতিরিক্ত রক্ষণাবেক্ষণ নিশ্চিত করতে নির্দেশনা জারি করে।
বাংলাদেশেও ড্রিমলাইনার সতর্কতা জোরদার
এই ঘটনার পর বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স সতর্কতামূলক ব্যবস্থা আরও জোরদার করেছে। বিশেষ করে যাত্রী নিরাপত্তা নিশ্চিতে প্রতিটি ধাপে ড্রিমলাইনার সতর্কতা বাস্তবায়ন করছে তারা।
ড্রিমলাইনার সতর্কতা শুধু বিশ্বজুড়ে নয়, বাংলাদেশেও এখন একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের সময়োপযোগী ব্যবস্থা যাত্রী নিরাপত্তা এবং আস্থা বজায় রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে।