ঢাকা ০৫:২৬ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২৩ জুলাই ২০২৫, ৭ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
মাইলস্টোন ট্র্যাজেডি: নিহতদের স্মর‌নে ও আহত‌দের সুস্থতা কামনায় নারায়ণগঞ্জ পূজা উদযাপন পরিষদের প্রার্থনা কুষ্টিয়া কুমারখালীতে বিমান দুর্ঘটনায় নিহতদের জন্য দোয়া মাহফিল রাশেদ খানের ক্ষোভ: ‘ইউনূস সরকার বৈষম্য ও বিভাজনকেই প্রতিষ্ঠা করছে’ মাইলস্টোন ট্র্যাজেডি: নির‌পেক্ষ ও উচ্চ পর্যা‌য়ের তদন্ত ক‌মি‌টি চায় জামায়াত বিমান বিধ্বস্তে নিহত তৌকির ইসলামের জানাজা রাজশাহীতে অনুষ্ঠিত উত্তরার দুর্ঘটনায় গভীর শোক প্রকাশ করলেন বিএনপি নেতা আবুল কাউসার আশা মাইলস্টোন শিক্ষার্থীদের ৬ দফা দাবি মেনে নেওয়া হয়েছে উত্তরায় বিমান দুর্ঘটনায় শিক্ষার্থীদের বাঁচাতে প্রাণ দিলেন মাহরীন চৌধুরী দৌলতপুরে ৩ কোটি ৫২ লাখ টাকার চায়না ও কারেন্ট জাল জব্দ নদীতে গোসলে নেমে নিখোঁজ সোহানা খাতুন, উদ্ধার অভিযান তীব্র

ফাইজার টিকা চোখের ক্ষতি করতে পারে: গবেষণা

অনলাইন ডেস্ক
  • আপডেট সময় : ১১:০১:৫৮ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২১ জুলাই ২০২৫ ১১ বার পড়া হয়েছে

ফাইজার-বায়োএনটেকের কোভিড-১৯ টিকা চোখের ক্ষতি করতে পারে বলে সতর্ক করেছেন বিজ্ঞানীরা। বিশেষ করে কর্নিয়া অর্থাৎ চোখের স্বচ্ছ সামনের অংশের ওপর এই টিকার ক্ষতিকর প্রভাব পড়তে পারে বলে নতুন এক গবেষণায় উঠে এসেছে।

এটি দীর্ঘমেয়াদে দৃষ্টিশক্তি হ্রাসের ঝুঁকিও তৈরি করতে পারে। গত শুক্রবার (১৮ জুলাই) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে প্রভাবশালী ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম ডেইলি মেইল।

সংবাদমাধ্যমটি বলছে, তুরস্কের একদল গবেষক ৬৪ জন মানুষের ওপর এই গবেষণা চালান। অংশগ্রহণকারীদের চোখের কর্নিয়ার অভ্যন্তরের স্তর — যাকে এন্ডোথেলিয়াম বলা হয় — তা তারা টিকা নেওয়ার আগে এবং দ্বিতীয় ডোজ নেওয়ার দুই মাস পর পরিমাপ করেন।

গবেষণায় দেখা যায়, দুই ডোজ টিকা নেওয়ার পর কর্নিয়া কিছুটা মোটা হয়ে যায়, চোখের এন্ডোথেলিয়াল কোষের সংখ্যা কমে যায় এবং কোষগুলোর আকারে বৈচিত্র্য বেড়ে যায়— যা সাধারণত চাপ, প্রদাহ বা কোষের মৃত্যু হওয়াকেই ইঙ্গিত করে।

স্বাস্থ্যবান মানুষের চোখে এই পরিবর্তনগুলো তেমন কোনো তাৎক্ষণিক সমস্যা সৃষ্টি না করলেও, যাদের চোখ আগে থেকেই দুর্বল, চোখে অস্ত্রোপচার হয়েছে বা কর্নিয়া প্রতিস্থাপন হয়েছে তাদের জন্য এটি ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে।

গবেষণাটি জানায়, কর্নিয়ার গড় পুরুত্ব ৫২৮ মাইক্রোমিটার থেকে বেড়ে ৫৪২ মাইক্রোমিটারে পৌঁছায়— যা প্রায় ২ শতাংশ বৃদ্ধি। এটি খুব বড় পরিবর্তন না হলেও দীর্ঘস্থায়ী হলে কর্নিয়ার স্বচ্ছতা কমে যেতে পারে, ফলে দেখা ঝাপসা হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে।

এছাড়াও দেখা যায়, কর্নিয়ার স্বচ্ছতা ধরে রাখার জন্য দায়ী এন্ডোথেলিয়াল কোষের গড় সংখ্যা কমে প্রতি বর্গমিলিমিটারে ২ হাজার ৫৯৭ থেকে ২ হাজার ৩৭৮ কোষে নেমে আসে, যা প্রায় ৮ শতাংশ হ্রাস। যদিও এই সংখ্যা এখনো নিরাপদ সীমার মধ্যে রয়েছে, তবে যাদের কোষ সংখ্যা আগে থেকেই কম, তাদের জন্য এটি চিন্তার কারণ হতে পারে।

সাধারণত এন্ডোথেলিয়াল কোষগুলো ছয়কোনা (হেক্সাগোনাল) হয়ে ঘনভাবে লেগে থাকে। গবেষণায় দেখা যায়, টিকা নেওয়ার পর এই ছয়কোনা কোষের অনুপাত ৫০ শতাংশ থেকে কমে ৪৮ শতাংশে নেমে আসে। কোষগুলোর আকারে পার্থক্য নির্দেশকারী কোইফিসিয়েন্ট অব ভ্যারিয়েশন ৩৯ থেকে বেড়ে ৪২ হয়, যা কোষগুলোর মধ্যে অস্বাভাবিকতার বিষয়টি ইঙ্গিত করে।
গবেষকরা বলেন, এই ধরনের পরিবর্তন ইঙ্গিত দেয় যে কোষগুলো কোনো ধরনের চাপ বা প্রদাহের প্রতিক্রিয়া দেখাচ্ছে। যদিও এ মুহূর্তে দৃষ্টিশক্তিতে কোনো সমস্যা দেখা যায়নি, তবে দীর্ঘমেয়াদে এটি প্রভাব ফেলতে পারে কিনা, তা জানতে আরও গবেষণা দরকার।

ডেইলি মেইল বলছে, গবেষণায় অংশ নেওয়া প্রত্যেকের চোখে টিকা নেওয়ার আগে এবং পরে সিরিয়াস কর্নিয়াল টোপোগ্রাফি এবং তোমে ইএম-৪০০০ স্পেকুলার মাইক্রোস্কোপি যন্ত্র দিয়ে কর্নিয়ার পুরুত্ব, কোষের গঠন ও স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হয়। চোখের দৃষ্টি, চোখের চাপ ও সামগ্রিক স্বাস্থ্য পরীক্ষাও করা হয়।

গবেষকরা অবশ্য এখনই টিকা না নেওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন না। তবে যাদের চোখে আগে থেকেই সমস্যা আছে, তাদের জন্য কর্নিয়ার অবস্থা নজরদারির আওতায় রাখার পরামর্শ দিয়েছেন তারা।

নতুন প্রজন্মের অনলাইন টিভি

নিউজটি শেয়ার করুন

ট্যাগস :

ফাইজার টিকা চোখের ক্ষতি করতে পারে: গবেষণা

আপডেট সময় : ১১:০১:৫৮ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২১ জুলাই ২০২৫

ফাইজার-বায়োএনটেকের কোভিড-১৯ টিকা চোখের ক্ষতি করতে পারে বলে সতর্ক করেছেন বিজ্ঞানীরা। বিশেষ করে কর্নিয়া অর্থাৎ চোখের স্বচ্ছ সামনের অংশের ওপর এই টিকার ক্ষতিকর প্রভাব পড়তে পারে বলে নতুন এক গবেষণায় উঠে এসেছে।

এটি দীর্ঘমেয়াদে দৃষ্টিশক্তি হ্রাসের ঝুঁকিও তৈরি করতে পারে। গত শুক্রবার (১৮ জুলাই) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে প্রভাবশালী ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম ডেইলি মেইল।

সংবাদমাধ্যমটি বলছে, তুরস্কের একদল গবেষক ৬৪ জন মানুষের ওপর এই গবেষণা চালান। অংশগ্রহণকারীদের চোখের কর্নিয়ার অভ্যন্তরের স্তর — যাকে এন্ডোথেলিয়াম বলা হয় — তা তারা টিকা নেওয়ার আগে এবং দ্বিতীয় ডোজ নেওয়ার দুই মাস পর পরিমাপ করেন।

গবেষণায় দেখা যায়, দুই ডোজ টিকা নেওয়ার পর কর্নিয়া কিছুটা মোটা হয়ে যায়, চোখের এন্ডোথেলিয়াল কোষের সংখ্যা কমে যায় এবং কোষগুলোর আকারে বৈচিত্র্য বেড়ে যায়— যা সাধারণত চাপ, প্রদাহ বা কোষের মৃত্যু হওয়াকেই ইঙ্গিত করে।

স্বাস্থ্যবান মানুষের চোখে এই পরিবর্তনগুলো তেমন কোনো তাৎক্ষণিক সমস্যা সৃষ্টি না করলেও, যাদের চোখ আগে থেকেই দুর্বল, চোখে অস্ত্রোপচার হয়েছে বা কর্নিয়া প্রতিস্থাপন হয়েছে তাদের জন্য এটি ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে।

গবেষণাটি জানায়, কর্নিয়ার গড় পুরুত্ব ৫২৮ মাইক্রোমিটার থেকে বেড়ে ৫৪২ মাইক্রোমিটারে পৌঁছায়— যা প্রায় ২ শতাংশ বৃদ্ধি। এটি খুব বড় পরিবর্তন না হলেও দীর্ঘস্থায়ী হলে কর্নিয়ার স্বচ্ছতা কমে যেতে পারে, ফলে দেখা ঝাপসা হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে।

এছাড়াও দেখা যায়, কর্নিয়ার স্বচ্ছতা ধরে রাখার জন্য দায়ী এন্ডোথেলিয়াল কোষের গড় সংখ্যা কমে প্রতি বর্গমিলিমিটারে ২ হাজার ৫৯৭ থেকে ২ হাজার ৩৭৮ কোষে নেমে আসে, যা প্রায় ৮ শতাংশ হ্রাস। যদিও এই সংখ্যা এখনো নিরাপদ সীমার মধ্যে রয়েছে, তবে যাদের কোষ সংখ্যা আগে থেকেই কম, তাদের জন্য এটি চিন্তার কারণ হতে পারে।

সাধারণত এন্ডোথেলিয়াল কোষগুলো ছয়কোনা (হেক্সাগোনাল) হয়ে ঘনভাবে লেগে থাকে। গবেষণায় দেখা যায়, টিকা নেওয়ার পর এই ছয়কোনা কোষের অনুপাত ৫০ শতাংশ থেকে কমে ৪৮ শতাংশে নেমে আসে। কোষগুলোর আকারে পার্থক্য নির্দেশকারী কোইফিসিয়েন্ট অব ভ্যারিয়েশন ৩৯ থেকে বেড়ে ৪২ হয়, যা কোষগুলোর মধ্যে অস্বাভাবিকতার বিষয়টি ইঙ্গিত করে।
গবেষকরা বলেন, এই ধরনের পরিবর্তন ইঙ্গিত দেয় যে কোষগুলো কোনো ধরনের চাপ বা প্রদাহের প্রতিক্রিয়া দেখাচ্ছে। যদিও এ মুহূর্তে দৃষ্টিশক্তিতে কোনো সমস্যা দেখা যায়নি, তবে দীর্ঘমেয়াদে এটি প্রভাব ফেলতে পারে কিনা, তা জানতে আরও গবেষণা দরকার।

ডেইলি মেইল বলছে, গবেষণায় অংশ নেওয়া প্রত্যেকের চোখে টিকা নেওয়ার আগে এবং পরে সিরিয়াস কর্নিয়াল টোপোগ্রাফি এবং তোমে ইএম-৪০০০ স্পেকুলার মাইক্রোস্কোপি যন্ত্র দিয়ে কর্নিয়ার পুরুত্ব, কোষের গঠন ও স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হয়। চোখের দৃষ্টি, চোখের চাপ ও সামগ্রিক স্বাস্থ্য পরীক্ষাও করা হয়।

গবেষকরা অবশ্য এখনই টিকা না নেওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন না। তবে যাদের চোখে আগে থেকেই সমস্যা আছে, তাদের জন্য কর্নিয়ার অবস্থা নজরদারির আওতায় রাখার পরামর্শ দিয়েছেন তারা।