ঢাকা ০৭:০৯ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ০১ অগাস্ট ২০২৫, ১৭ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

বিয়েবাড়িতে ডাকাতি স্বর্ণালঙ্কার ও টাকা লুট, আতিয়ার আটক

বিয়েবাড়িতে ডাকাতি স্বর্ণালঙ্কার ও টাকা লুট আতিয়ার আটক

অনলাইন ডেস্ক
  • আপডেট সময় : ১০:২৮:৪৯ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৩১ জুলাই ২০২৫ ১০ বার পড়া হয়েছে

জেলা প্রতিনিধিঃ কুষ্টিয়ার খোকসা উপজেলায় গত ২০ জুলাই রাতে ভয়াবহ একটি ডাকাতির ঘটনা ঘটে। শিমুলিয়া ইউনিয়নের ইসলামপুর গ্রামে বিধান কুমার রায়ের বাড়িতে একদল সুসজ্জিত দুর্বৃত্ত প্রবেশ করে পরিবারের সবাইকে গৃহবন্দি করে, প্রায় ২ লাখ ৯৬ হাজার টাকার স্বর্ণালংকার ও নগদ টাকা লুট করে নেয়। এই ভয়াবহ ঘটনায় বিধান কুমার রায় বাদী হয়ে ২২ জুলাই রাতে খোকসা থানায় অজ্ঞাতনামা ১০-১২ জনের বিরুদ্ধে ডাকাতির একটি মামলা করেন।

ঘটনার পটভূমি ও গুরুত্ব
এই ডাকাতির ঘটনা বিশেষভাবে প্রভাব ফেলেছিল কারণ এটি ঘটেছিল প্রশাসনিক ব্যবস্থায় ঠিক ক’দিন আগে—বিধান কুমার রায়ের মেয়ের বিয়ের আগের রাতেই। একদিকে সামাজিক আনন্দ আর অন্যদিকে রাতভর চালানো ভয়াবহ নেপথ্য অপরাধ, যে দুই বিপরীত মেজাজের মিলন ঘটেছিল একটি বিয়েবাড়িতে।

গ্রেফতারের তথ্য ও তদন্ত প্রক্রিয়া
মঙ্গলবার (২৯ জুলাই) রাতে খোকসা থানার পুলিশ দল বিলজানি থেকে আসামি আতিয়ারের মণ্ডল (৩৫) কে গ্রেফতার করে। তিনি বরশোলা গ্রামের মন্টাজ মন্ডলের ছেলে। খোকসা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মঈনুল ইসলাম জানান, আতিয়ারের বিরুদ্ধে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ চলছে এবং আরও আসামির সন্ধানে পুলিশ মাঠে রয়েছে। ইতিমধ্যে মোট তিনজনকে আটক করা হয়েছে—চলমান তদন্তে গ্রেফতার তালিকা আরও বৃদ্ধি পেতে পারে।

প্রতিবেদন ও পুলিশি বিবৃতি
ওসি মঈনুল ইসলাম বলেন, “বিয়েবাড়িতে প্রয়োজনে গৃহকর্তা ও অতিথিদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দায়িত্বে থাকা সত্ত্বেও এ ধরনের ঘটনা ঘটে যাওয়ায় আমরা এটি গুরুত্বসহকারে দেখছি। আটক আতিয়ারের গ্রেফতারের মাধ্যমে আমাদের দুই ধাপ এগিয়েছে; বাকি আসামিদের দ্রুত সনাক্ত এবং গ্রেফতারের চেষ্টা অব্যাহত আছে।”

তিনি আরও বলেন, “বাড়িতে থাকা স্বর্ণালংকার, নগদ অর্থ ও খাদ্যসামগ্রীসহ মূল্যবান বস্তু যেসব এসেছে—সবই আজ পর্যন্ত হিসাব করা হয়েছে এবং ধারনার ভিত্তিতে মামলাটি চালানো হচ্ছে।”

আসামির প্রোফাইল ও সামাজিক প্রভাব
প্রার্থী আতিয়ারের পারিবারিক পরিচয় জানার চেষ্টা চলছে কিন্তু স্থানীয়রা বলছেন, আতিয়ার এলাকায় সুপরিচিত নয় এবং সাধারণত বিদেশে কাজ করতেন বলে ধারণা। সামাজিকভাবে এ ধরনের অপরাধ এলাকায় আতঙ্ক সৃষ্টি করেছে, বিশেষ করে যখন এটি ঘটে এক আনন্দঘন সময়ে—বিয়ের দিন। প্রতিবেশী মানুষ জানায়, “এভাবে ঘটতে পারে বলে ভাবিনি; মনের আনন্দ জীবনের এই মুহূর্তে যেন ছিন্ন হয় গিয়েছিল।”

তদন্তের পরবর্তী ধাপ
আইন প্রক্রিয়া অনুযায়ী আগামি দিনে আদালতে আসামী উপস্থাপন করা হবে ও তদন্তের পরিপ্রেক্ষিতে গ্রেফতার সংখ্যা বাড়াতে পারে। পুলিশ বিলজানি এলাকা, বরশোলা গ্রাম ও সম্ভাব্য অন্য সংশ্লিষ্ট মুন্সিয়ানাশী এলাকায় সার্চ ও ছদ্মনামি গ্রুপ শনাক্তের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।

পুলিশ জানিয়েছে, এই মামলা যুক্ত করার জন্য প্রয়োজনীয় ভিশুয়াল প্রমাণ, স্বাক্ষী বিবৃতি ও সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করা হচ্ছে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আটক আসামি আতিয়ারের দেওয়া তথ্য থেকে বিষয়টি চূড়ান্ত করার চেষ্টা চলছে—যে তাঁর অন্য সহযোগীরা কোথায় লুকিয়ে আছে।

প্রভাবিত পরিবার ও প্রতিবেশীদের বক্তব্য
বিধান কুমার রায় বলেন, “বিয়েবাড়ির প্রস্তুতি চলছে আনন্দমুখর পরিবেশে, কিন্তু অসচ্ছল সময়েই এমন ঘটনার কবলে পড়ি—অসংখ্য স্বপ্ন আর মূল্যবান মুহূর্ত এক নিমেষে হারিয়ে যায়।” তার মেয়ে, যে বিয়ে উদ্যাপনের দিনটির অপেক্ষায় ছিল, এখন তিনি মানসিকভাবে বিচলিত, পরিবারের সকল সদস্যই অত্যন্ত সঙ্কটে রয়েছেন।

স্থানীয় অন্যরা বলছেন, “পুলিশ দ্রুত কার্যকর হলেও, এই ধরনের ঘটনা সামাজিক নিরাপত্তায় প্রশ্ন তোলে। বিষয়টি যেন প্রশাসন সামনে গুরুত্বের সাথে তুলে ধরেন।”

প্রতিরোধ ও ভবিষ্যৎ পদক্ষেপ
এ ধরনের ঘটনা প্রতিহত করার জন্য থানাগুলোকে বাড়তি নিরাপত্তা তদারকি বাড়ানোর আহ্বান করেছেন অনেকেই। বিশেষ করে বিয়েবাড়ি, পিকনিক, স্কুল-কলেজ অনুষ্ঠান, সামাজিক সমাবেশ যেখানে মূল্যবান সামগ্রী থাকে—সেখানে প্রাকৃতিক সতর্কতা ও পুলিশের উপস্থিতি শক্তিশালী করা যেতে পারে।

উপসংহার ও আহ্বান
খোকসা থানা পুলিশ আতিয়ারের গ্রেফতারের মাধ্যমে একটি বড় ধাপ এগিয়েছে, তবে পুরো বিষয়টি যেহেতু চলমান, তাই শক্তিশালী তদন্ত ছাড়া পুরো গল্পটা বন্ধ নয়। স্থানীয় সমাজ, প্রশাসন ও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী একীভূতভাবে কাজ করলে এমন সংবেদনশীল ঘটনা পুনরাবৃত্তি স্থানীয় নিরাপত্তা পরিবেশে বিরূপ প্রভাব প্রতিরোধ করা সম্ভব হবে। পাঠকদের কাছে আবেদন—যেকোন আপাত সন্দেহজনক কর্মকাণ্ড বা বিপদ সংকেত দেখলেই থানায় জানিয়ে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে।

নতুন প্রজন্মের অনলাইন টিভি

নিউজটি শেয়ার করুন

বিয়েবাড়িতে ডাকাতি স্বর্ণালঙ্কার ও টাকা লুট, আতিয়ার আটক

বিয়েবাড়িতে ডাকাতি স্বর্ণালঙ্কার ও টাকা লুট আতিয়ার আটক

আপডেট সময় : ১০:২৮:৪৯ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৩১ জুলাই ২০২৫

জেলা প্রতিনিধিঃ কুষ্টিয়ার খোকসা উপজেলায় গত ২০ জুলাই রাতে ভয়াবহ একটি ডাকাতির ঘটনা ঘটে। শিমুলিয়া ইউনিয়নের ইসলামপুর গ্রামে বিধান কুমার রায়ের বাড়িতে একদল সুসজ্জিত দুর্বৃত্ত প্রবেশ করে পরিবারের সবাইকে গৃহবন্দি করে, প্রায় ২ লাখ ৯৬ হাজার টাকার স্বর্ণালংকার ও নগদ টাকা লুট করে নেয়। এই ভয়াবহ ঘটনায় বিধান কুমার রায় বাদী হয়ে ২২ জুলাই রাতে খোকসা থানায় অজ্ঞাতনামা ১০-১২ জনের বিরুদ্ধে ডাকাতির একটি মামলা করেন।

ঘটনার পটভূমি ও গুরুত্ব
এই ডাকাতির ঘটনা বিশেষভাবে প্রভাব ফেলেছিল কারণ এটি ঘটেছিল প্রশাসনিক ব্যবস্থায় ঠিক ক’দিন আগে—বিধান কুমার রায়ের মেয়ের বিয়ের আগের রাতেই। একদিকে সামাজিক আনন্দ আর অন্যদিকে রাতভর চালানো ভয়াবহ নেপথ্য অপরাধ, যে দুই বিপরীত মেজাজের মিলন ঘটেছিল একটি বিয়েবাড়িতে।

গ্রেফতারের তথ্য ও তদন্ত প্রক্রিয়া
মঙ্গলবার (২৯ জুলাই) রাতে খোকসা থানার পুলিশ দল বিলজানি থেকে আসামি আতিয়ারের মণ্ডল (৩৫) কে গ্রেফতার করে। তিনি বরশোলা গ্রামের মন্টাজ মন্ডলের ছেলে। খোকসা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মঈনুল ইসলাম জানান, আতিয়ারের বিরুদ্ধে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ চলছে এবং আরও আসামির সন্ধানে পুলিশ মাঠে রয়েছে। ইতিমধ্যে মোট তিনজনকে আটক করা হয়েছে—চলমান তদন্তে গ্রেফতার তালিকা আরও বৃদ্ধি পেতে পারে।

প্রতিবেদন ও পুলিশি বিবৃতি
ওসি মঈনুল ইসলাম বলেন, “বিয়েবাড়িতে প্রয়োজনে গৃহকর্তা ও অতিথিদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দায়িত্বে থাকা সত্ত্বেও এ ধরনের ঘটনা ঘটে যাওয়ায় আমরা এটি গুরুত্বসহকারে দেখছি। আটক আতিয়ারের গ্রেফতারের মাধ্যমে আমাদের দুই ধাপ এগিয়েছে; বাকি আসামিদের দ্রুত সনাক্ত এবং গ্রেফতারের চেষ্টা অব্যাহত আছে।”

তিনি আরও বলেন, “বাড়িতে থাকা স্বর্ণালংকার, নগদ অর্থ ও খাদ্যসামগ্রীসহ মূল্যবান বস্তু যেসব এসেছে—সবই আজ পর্যন্ত হিসাব করা হয়েছে এবং ধারনার ভিত্তিতে মামলাটি চালানো হচ্ছে।”

আসামির প্রোফাইল ও সামাজিক প্রভাব
প্রার্থী আতিয়ারের পারিবারিক পরিচয় জানার চেষ্টা চলছে কিন্তু স্থানীয়রা বলছেন, আতিয়ার এলাকায় সুপরিচিত নয় এবং সাধারণত বিদেশে কাজ করতেন বলে ধারণা। সামাজিকভাবে এ ধরনের অপরাধ এলাকায় আতঙ্ক সৃষ্টি করেছে, বিশেষ করে যখন এটি ঘটে এক আনন্দঘন সময়ে—বিয়ের দিন। প্রতিবেশী মানুষ জানায়, “এভাবে ঘটতে পারে বলে ভাবিনি; মনের আনন্দ জীবনের এই মুহূর্তে যেন ছিন্ন হয় গিয়েছিল।”

তদন্তের পরবর্তী ধাপ
আইন প্রক্রিয়া অনুযায়ী আগামি দিনে আদালতে আসামী উপস্থাপন করা হবে ও তদন্তের পরিপ্রেক্ষিতে গ্রেফতার সংখ্যা বাড়াতে পারে। পুলিশ বিলজানি এলাকা, বরশোলা গ্রাম ও সম্ভাব্য অন্য সংশ্লিষ্ট মুন্সিয়ানাশী এলাকায় সার্চ ও ছদ্মনামি গ্রুপ শনাক্তের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।

পুলিশ জানিয়েছে, এই মামলা যুক্ত করার জন্য প্রয়োজনীয় ভিশুয়াল প্রমাণ, স্বাক্ষী বিবৃতি ও সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করা হচ্ছে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আটক আসামি আতিয়ারের দেওয়া তথ্য থেকে বিষয়টি চূড়ান্ত করার চেষ্টা চলছে—যে তাঁর অন্য সহযোগীরা কোথায় লুকিয়ে আছে।

প্রভাবিত পরিবার ও প্রতিবেশীদের বক্তব্য
বিধান কুমার রায় বলেন, “বিয়েবাড়ির প্রস্তুতি চলছে আনন্দমুখর পরিবেশে, কিন্তু অসচ্ছল সময়েই এমন ঘটনার কবলে পড়ি—অসংখ্য স্বপ্ন আর মূল্যবান মুহূর্ত এক নিমেষে হারিয়ে যায়।” তার মেয়ে, যে বিয়ে উদ্যাপনের দিনটির অপেক্ষায় ছিল, এখন তিনি মানসিকভাবে বিচলিত, পরিবারের সকল সদস্যই অত্যন্ত সঙ্কটে রয়েছেন।

স্থানীয় অন্যরা বলছেন, “পুলিশ দ্রুত কার্যকর হলেও, এই ধরনের ঘটনা সামাজিক নিরাপত্তায় প্রশ্ন তোলে। বিষয়টি যেন প্রশাসন সামনে গুরুত্বের সাথে তুলে ধরেন।”

প্রতিরোধ ও ভবিষ্যৎ পদক্ষেপ
এ ধরনের ঘটনা প্রতিহত করার জন্য থানাগুলোকে বাড়তি নিরাপত্তা তদারকি বাড়ানোর আহ্বান করেছেন অনেকেই। বিশেষ করে বিয়েবাড়ি, পিকনিক, স্কুল-কলেজ অনুষ্ঠান, সামাজিক সমাবেশ যেখানে মূল্যবান সামগ্রী থাকে—সেখানে প্রাকৃতিক সতর্কতা ও পুলিশের উপস্থিতি শক্তিশালী করা যেতে পারে।

উপসংহার ও আহ্বান
খোকসা থানা পুলিশ আতিয়ারের গ্রেফতারের মাধ্যমে একটি বড় ধাপ এগিয়েছে, তবে পুরো বিষয়টি যেহেতু চলমান, তাই শক্তিশালী তদন্ত ছাড়া পুরো গল্পটা বন্ধ নয়। স্থানীয় সমাজ, প্রশাসন ও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী একীভূতভাবে কাজ করলে এমন সংবেদনশীল ঘটনা পুনরাবৃত্তি স্থানীয় নিরাপত্তা পরিবেশে বিরূপ প্রভাব প্রতিরোধ করা সম্ভব হবে। পাঠকদের কাছে আবেদন—যেকোন আপাত সন্দেহজনক কর্মকাণ্ড বা বিপদ সংকেত দেখলেই থানায় জানিয়ে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে।