ঢাকা ০২:১৪ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৭ জুলাই ২০২৫, ১২ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
কলাবাগানে ছয়তলা থেকে পড়ে স্কুলছাত্রের রহস্যজনক মৃত্যু বিমান দুর্ঘটনায় নিহত ৩৪: সংখ্যা বিভ্রান্তি ও নতুন ব্যাখ্যা প্রকাশ ঢাকায় ২৩ মি.মি. বৃষ্টি, সারা দেশে বজ্রসহ বৃষ্টির সম্ভাবনা থাইল্যান্ড কম্বোডিয়া যুদ্ধ বন্ধে ট্রাম্পের আহ্বান বিএনপির ২০২৪ সালের আয়-ব্যয়ের হিসাব নির্বাচন কমিশনে জমা দেশ গড়তে জুলাই পদযাত্রা কিশোরগঞ্জে: নতুন রাষ্ট্র গঠনের অঙ্গীকার নাহিদ ইসলামের ভাঙ্গায় জুলাই পুনর্জাগরণে সমাজ গঠনে শপথ অনুষ্ঠিত জুলাই পুনর্জাগরণে সমাজ গঠনে শপথ অনুষ্ঠিত সদরপুরে বিএনপি নেতা রাকিবের উপর হামলাকারীদের গ্রেপ্তার ও শাস্তির দাবিতে বিক্ষোভ নির্বাচনে এআই হুমকি: সিইসির সতর্ক বার্তা

বিমান দুর্ঘটনায় নিহত ৩৪: সংখ্যা বিভ্রান্তি ও নতুন ব্যাখ্যা প্রকাশ

অনলাইন ডেস্ক
  • আপডেট সময় : ০১:৫০:৫৬ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৭ জুলাই ২০২৫ ৫ বার পড়া হয়েছে

উত্তরার মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে ভয়াবহ বিমান দুর্ঘটনায় নিহতের সংখ্যা নিয়ে শুরু থেকেই কিছু বিভ্রান্তি তৈরি হয়। সিএমএইচ (সম্মিলিত সামরিক হাসপাতাল) থেকে প্রকাশিত ২৪ জুলাইয়ের তালিকায় মৃতের সংখ্যা ছিল ১৫। কিন্তু ২৭ জুলাই তারিখে প্রকাশিত হালনাগাদ তালিকায় সেই সংখ্যা ১৪ দেখানো হয়েছে। হালনাগাদ তথ্য অনুযায়ী দুর্ঘটনাটিতে সর্বমোট নিহতের সংখ্যা ৩৪।

রোববার (২৭ জুলাই) স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় কর্তৃক দুর্ঘটনায় নিহত শিক্ষার্থীদের তালিকা প্রকাশ করা হলে সেটি নিয়ে জনমনে প্রশ্ন ওঠে। এরপর পুনরায় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এবং সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলো ফরেনসিক তদন্তের ভিত্তিতে এ বিষয়ে বিস্তারিত ব্যাখ্যা দেওয়া হয়।

সিএমএইচ সূত্র জানায়, ২১ জুলাই দুর্ঘটনার পর মর্চুয়ারিতে মোট ১৫টি বডিব্যাগ গ্রহণ করা হয়। প্রাথমিকভাবে তুরাগ থানা পুলিশ এগুলোর সুরতহাল প্রতিবেদনে ১১টি সম্পূর্ণ মরদেহ, ২টি অপূর্ণাঙ্গ মরদেহ এবং ৫টি বিচ্ছিন্ন দেহাংশ শনাক্ত করে। এর মধ্যে ৯টি মরদেহ স্বজনরা তাৎক্ষণিকভাবে শনাক্ত করতে পারায়, ৮টি ২১ জুলাই এবং ১টি ২২ জুলাই হস্তান্তর করা হয়।

অবশিষ্ট ২টি মৃতদেহ, ২টি অপূর্ণাঙ্গ মরদেহ এবং ৫টি দেহাংশ নিয়ে শুরু হয় ফরেনসিক বিশ্লেষণ। ২২ জুলাই, সিআইডির ফরেনসিক টিম ঘটনাস্থল ও সিএমএইচ থেকে মোট ১৪টি নমুনা সংগ্রহ করে এবং পরিবারের পক্ষ থেকে নেয় ১১টি রেফারেন্স নমুনা। বিশ্লেষণ শেষে জানা যায়, যে বডিব্যাগটিতে ৫টি বিচ্ছিন্ন দেহাংশ ছিল, সেগুলো দুইজন শিক্ষার্থী- লামিয়া আক্তার সোনিয়া ও আফসানা আক্তার প্রিয়ার দেহের অংশবিশেষ। ফলে সেগুলো পৃথক পাঁচজন নয়, বরং দুটি মরদেহ হিসেবেই গণ্য হয়।

এই ফলাফলের ভিত্তিতে সিএমএইচে সংরক্ষিত মৃতদেহের প্রকৃত সংখ্যা দাঁড়ায় ৫টি। এদের সঙ্গে আগেই হস্তান্তর হওয়া ৯টি মরদেহ মিলিয়ে চূড়ান্ত সংখ্যা দাঁড়ায় ১৪, যা ২৭ জুলাইয়ের হালনাগাদ তালিকায় প্রতিফলিত হয়। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর এক চিঠির মাধ্যমে এই সংশোধিত তথ্য নিশ্চিত করে।

এদিকে সর্বশেষ স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের প্রতিবেদন অনুযায়ী, দুর্ঘটনায় এখন পর্যন্ত মোট ১১২ জন ভুক্তভোগী শনাক্ত হয়েছেন। এর মধ্যে ৭৮ জন আহত হয়ে ভর্তি ছিলেন এবং ৩৪ জন মারা গেছেন।

বিভিন্ন হাসপাতালে মৃত ও আহতদের সংখ্যা নিম্নরূপ

• জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউট : ৬৬ জন ভর্তি, ১৭ জন মৃত্যু

• সম্মিলিত সামরিক হাসপাতাল (সিএমএইচ) : ১১ জন ভর্তি, ১৪ জন মৃত্যু

• ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল : ১ জন ভর্তি

• টঙ্গী জেনারেল হাসপাতাল : ১ জন মৃত্যু (অজ্ঞাত)

• ইউনাইটেড হাসপাতাল : ১ জন মৃত্যু

• জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল : ১ জন মৃত্যু

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, শুরুতে প্রাপ্ত দেহাবশেষগুলো আলাদাভাবে মরদেহ হিসেবে বিবেচনায় নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু ডিএনএ বিশ্লেষণের মাধ্যমে নিশ্চিত হওয়া গেছে, কিছু অংশ একই ব্যক্তির। এতে মৃতের সংখ্যায় পার্থক্য এসেছে।

প্রসঙ্গত, বিমান দুর্ঘটনার ভয়াবহতা, দেহাবশেষের অপ্রতুলতা এবং স্বজনদের মানসিক পরিস্থিতি- সবমিলিয়ে এই ঘটনায় মৃতের সংখ্যা নিরূপণে সময় লেগেছে। তবে ফরেনসিক পরীক্ষার মাধ্যমে নিশ্চিত হওয়া গেছে, দুর্ঘটনায় মোট ৩৪ জন মারা গেছেন, যার মধ্যে সিএমএইচে মৃত্যুর সংখ্যা এখন ১৪।

নতুন প্রজন্মের অনলাইন টিভি

নিউজটি শেয়ার করুন

ট্যাগস :

বিমান দুর্ঘটনায় নিহত ৩৪: সংখ্যা বিভ্রান্তি ও নতুন ব্যাখ্যা প্রকাশ

আপডেট সময় : ০১:৫০:৫৬ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৭ জুলাই ২০২৫

উত্তরার মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে ভয়াবহ বিমান দুর্ঘটনায় নিহতের সংখ্যা নিয়ে শুরু থেকেই কিছু বিভ্রান্তি তৈরি হয়। সিএমএইচ (সম্মিলিত সামরিক হাসপাতাল) থেকে প্রকাশিত ২৪ জুলাইয়ের তালিকায় মৃতের সংখ্যা ছিল ১৫। কিন্তু ২৭ জুলাই তারিখে প্রকাশিত হালনাগাদ তালিকায় সেই সংখ্যা ১৪ দেখানো হয়েছে। হালনাগাদ তথ্য অনুযায়ী দুর্ঘটনাটিতে সর্বমোট নিহতের সংখ্যা ৩৪।

রোববার (২৭ জুলাই) স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় কর্তৃক দুর্ঘটনায় নিহত শিক্ষার্থীদের তালিকা প্রকাশ করা হলে সেটি নিয়ে জনমনে প্রশ্ন ওঠে। এরপর পুনরায় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এবং সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলো ফরেনসিক তদন্তের ভিত্তিতে এ বিষয়ে বিস্তারিত ব্যাখ্যা দেওয়া হয়।

সিএমএইচ সূত্র জানায়, ২১ জুলাই দুর্ঘটনার পর মর্চুয়ারিতে মোট ১৫টি বডিব্যাগ গ্রহণ করা হয়। প্রাথমিকভাবে তুরাগ থানা পুলিশ এগুলোর সুরতহাল প্রতিবেদনে ১১টি সম্পূর্ণ মরদেহ, ২টি অপূর্ণাঙ্গ মরদেহ এবং ৫টি বিচ্ছিন্ন দেহাংশ শনাক্ত করে। এর মধ্যে ৯টি মরদেহ স্বজনরা তাৎক্ষণিকভাবে শনাক্ত করতে পারায়, ৮টি ২১ জুলাই এবং ১টি ২২ জুলাই হস্তান্তর করা হয়।

অবশিষ্ট ২টি মৃতদেহ, ২টি অপূর্ণাঙ্গ মরদেহ এবং ৫টি দেহাংশ নিয়ে শুরু হয় ফরেনসিক বিশ্লেষণ। ২২ জুলাই, সিআইডির ফরেনসিক টিম ঘটনাস্থল ও সিএমএইচ থেকে মোট ১৪টি নমুনা সংগ্রহ করে এবং পরিবারের পক্ষ থেকে নেয় ১১টি রেফারেন্স নমুনা। বিশ্লেষণ শেষে জানা যায়, যে বডিব্যাগটিতে ৫টি বিচ্ছিন্ন দেহাংশ ছিল, সেগুলো দুইজন শিক্ষার্থী- লামিয়া আক্তার সোনিয়া ও আফসানা আক্তার প্রিয়ার দেহের অংশবিশেষ। ফলে সেগুলো পৃথক পাঁচজন নয়, বরং দুটি মরদেহ হিসেবেই গণ্য হয়।

এই ফলাফলের ভিত্তিতে সিএমএইচে সংরক্ষিত মৃতদেহের প্রকৃত সংখ্যা দাঁড়ায় ৫টি। এদের সঙ্গে আগেই হস্তান্তর হওয়া ৯টি মরদেহ মিলিয়ে চূড়ান্ত সংখ্যা দাঁড়ায় ১৪, যা ২৭ জুলাইয়ের হালনাগাদ তালিকায় প্রতিফলিত হয়। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর এক চিঠির মাধ্যমে এই সংশোধিত তথ্য নিশ্চিত করে।

এদিকে সর্বশেষ স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের প্রতিবেদন অনুযায়ী, দুর্ঘটনায় এখন পর্যন্ত মোট ১১২ জন ভুক্তভোগী শনাক্ত হয়েছেন। এর মধ্যে ৭৮ জন আহত হয়ে ভর্তি ছিলেন এবং ৩৪ জন মারা গেছেন।

বিভিন্ন হাসপাতালে মৃত ও আহতদের সংখ্যা নিম্নরূপ

• জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউট : ৬৬ জন ভর্তি, ১৭ জন মৃত্যু

• সম্মিলিত সামরিক হাসপাতাল (সিএমএইচ) : ১১ জন ভর্তি, ১৪ জন মৃত্যু

• ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল : ১ জন ভর্তি

• টঙ্গী জেনারেল হাসপাতাল : ১ জন মৃত্যু (অজ্ঞাত)

• ইউনাইটেড হাসপাতাল : ১ জন মৃত্যু

• জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল : ১ জন মৃত্যু

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, শুরুতে প্রাপ্ত দেহাবশেষগুলো আলাদাভাবে মরদেহ হিসেবে বিবেচনায় নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু ডিএনএ বিশ্লেষণের মাধ্যমে নিশ্চিত হওয়া গেছে, কিছু অংশ একই ব্যক্তির। এতে মৃতের সংখ্যায় পার্থক্য এসেছে।

প্রসঙ্গত, বিমান দুর্ঘটনার ভয়াবহতা, দেহাবশেষের অপ্রতুলতা এবং স্বজনদের মানসিক পরিস্থিতি- সবমিলিয়ে এই ঘটনায় মৃতের সংখ্যা নিরূপণে সময় লেগেছে। তবে ফরেনসিক পরীক্ষার মাধ্যমে নিশ্চিত হওয়া গেছে, দুর্ঘটনায় মোট ৩৪ জন মারা গেছেন, যার মধ্যে সিএমএইচে মৃত্যুর সংখ্যা এখন ১৪।