আন্দোলন থেকে জনদৃষ্টি ফেরাতে জঙ্গিবিরোধী অভিযানের নাটক: ফখরুল

নিজস্ব প্রতিবেদক: চলমান একদফা আন্দোলন থেকে জনদৃষ্টি সরাতে সরকার জঙ্গিবিরোধী অভিযানের নাটক সাজিয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

রোববার এক আলোচনা সভায় তিনি বলেন, ‘হঠাৎ এত বিস্ফোরক কোথা থেকে এলো, কারা কীভাবে আনল। আন্দোলন যখন তুঙ্গে ওঠে, তখন জঙ্গি নাটক অনুষ্ঠিত হয়। এ নিয়ে পশ্চিমা বিশ্বকে আবার সেই জুজুর ভয় দেখাবে, বলবে দেখো বাংলাদেশে আমরা যদি না থাকি জঙ্গি নিয়ন্ত্রণ করা যাবে না।’

ক্রীড়া সংগঠক আরাফাত রহমান কোকোর ৫৪তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষ্যে বাংলাদেশ ক্রীড়া উন্নয়ন পরিষদ ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি কার্যালয়ে আলোচনার আয়োজন করে।

পরিষদের সভাপতি ক্রীড়া সংগঠক আবদুস সালামের সভাপতিত্বে ও সাবেক ক্রিকেটার দেবব্রত পালের সঞ্চালনায় সভায় আরও বক্তব্য দেন অ্যাথলেটিক ফেডারেশনের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আলী ইমাম তপন, মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাবের সাবেক পরিচালক শরীফুল আলম, ক্রীড়া উন্নয়ন পরিষদের অতিরিক্ত মহাসচিব কাজী মহিউদ্দিন বুলবুল, ফুটবল ফেডারেশনের সাবেক সহসভাপতি মঞ্জুর হোসেন মালু, বিসিবির, সাবেক পরিচালক আল ফুয়াদ রেদোয়ান, সাবেক যুগ্ম সম্পাদক রফিকুল ইসলাম বাবু, ক্রীড়াবিদ শাহ আলম, ক্রীড়া সাংবাদিক মোজাম্মেল হক চঞ্চল, নাসিমুল হাসান দোদুল প্রমুখ। কোকোর জীবনী নিয়ে একটি স্মরণিকা এবং তার নামে ক্রীড়াঙ্গনে পুরস্কার প্রবর্তনের জন্য আয়োজকদের প্রতি আহ্বান জানান বিএনপি মহাসচিব।

সরকারের বিদায় আসন্ন মন্তব্য করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘অনেকে বলেন আপনার মুখে সবসময় এত হাসি দেখি কেন। আমি হাসি এজন্য যে, আমি পরিষ্কার দেখতে পারছি জনগণের উত্তাল তরঙ্গের মধ্য দিয়ে এই ভয়াবহ দানব সরে যাচ্ছে। দেশের মানুষ সরকারের পতন দেখতে চায়। আপনারা নিশ্চিত থাকুন পরিবর্তন আসছে। সত্য, সুন্দর ও গণতন্ত্রের জয় হবে ইনশাআল্লাহ।’

কুলাউড়ায় জঙ্গিবিরোধী অভিযানের প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘সরকার বেশ কূটকৌশলী। তার প্রমাণ হঠাৎ করে দেখা গেল কুলাউড়ায় জঙ্গিবিরোধী অভিযান। এত বিস্ফোরক, ডেটোনেটর, কী ভয়ানক ব্যাপার! এভাবে নাটক করতে করতে তারা এই জায়গায় এসে পৌঁছেছে।’

ডেঙ্গু পরিস্থিতি নিয়ে সরকারের কোনো উদ্বেগ নেই দাবি করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘বাংলাদেশে ডেঙ্গু পরিস্থিতি নিয়ে হাই অ্যালার্ট দেওয়া হচ্ছে। প্রতিদিন ১০ থেকে ১৪ জন করে মারা যাচ্ছে। কিন্তু সরকারের কথা শুনে একবারও মনে হয় না এ নিয়ে তাদের কোনো উদ্বেগ আছে। মুগদা হাসপাতালে মেঝের মধ্যে চিকিৎসা হচ্ছে। এত উন্নয়ন, মেগা প্রজেক্ট অথচ বাচ্চারা সঠিক চিকিৎসা পাচ্ছে না। এর কারণ জনগণের প্রতি সরকারের কোনো দায়বদ্ধতাই নেই। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে মানুষের জীবন দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে।’

ক্রীড়াঙ্গনে সরকারের ব্যাপক দলীয়করণের কারণে যোগ্য ও সত্যিকারের ক্রীড়াবিদ বেরিয়ে আসছে না অভিযোগ করে বিএনপি মহাসচিব, ‘আগে ইন্টারস্কুল অ্যাথলেটিক্স, ফুটবল, ভলিবল-হকি-ক্রিকেট প্রতিযোগিতা হতো। তা এখন আর হয় না। কিছু মানুষের হাতে রাষ্ট্রটা দখল হয়ে গেছে। তারা এই রাষ্ট্রকে নিজেদের পৈতৃক সম্পত্তি হিসাবে বিবেচনা করে। আন্তর্জাতিক ফুটবল ফেডারেশন (ফিফা) থেকে নির্দেশ আসার পরেও কেমন করে কর্মকর্তারা সেই দায়িত্বে থাকেন তা মাথায় আসে না। ফিফার টাকা মেরে খেয়েছে-এটা জাতির জন্য অত্যন্ত লজ্জার। আর রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণে বগুড়ার শহিদ চান্দু স্টেডিয়ামকে বাদ দেওয়া হয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘এই অবস্থার পরিবর্তন আনতে হলে গণতন্ত্র দরকার। অর্থাৎ কোনো ফ্যাসিস্টের হাতে কখনো কোনো দেশের মঙ্গল হয় না। এদের সবকিছুর মূলে হচ্ছে চুরি করা, লুট করা। কিন্তু ধর্মের কল একবার না একবার বাতাসে নড়েই। ওই বাতাসে নড়তে শুরু করেছে। এখন বাংলাদেশের মানুষ জেগে উঠেছে। তারা শেখ হাসিনা সরকারের পতন চায়।’

Leave A Reply

Your email address will not be published.

Title