পারমাণবিক অস্ত্রে এগিয়ে পাকিস্তান নাকি ভারত?

পারমাণবিক অস্ত্রে এগিয়ে পাকিস্তান নাকি ভারত?

অনলাইন ডেস্ক : ভারত নিয়ন্ত্রিত জম্মু ও কাশ্মীরের জনপ্রিয় পর্যটনকেন্দ্র পেহেলগামে বন্দুকধারীদের হামলায় ২৬ জন নিহত হওয়ার পর থেকে ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে উত্তেজনা বেড়ে গেছে। কাশ্মীর হামলা নিয়ে প্রতিবেশী দুই দেশ পাল্টাপাল্টি নানা পদক্ষেপ নিয়েছে, পাশাপাশি দেশ দুটি সামরিকভাবেও সংঘাতে জড়িয়ে পড়তে পারে বলে অনেকর আশঙ্কা করা হচ্ছিল। এবার পাল্টাপাল্টি হামলায় গড়িয়েছে দুই দেশের উত্তেজনা।

মধ্যরাতে পাকিস্তান শাসিত কাশ্মীর এবং পাকিস্তানের ওপর ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে ভারত।

এই হামলায় অন্তত ৮ জন নিহত এবং ৩৫ জন আহত হয়েছে। পাকিস্তানের আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তরের (আইএসপিআর) মহাপরিচালক লেফটেন্যান্ট জেনারেল আহমেদ শরীফ চৌধুরী এ তথ্য জানিয়েছেন। এ ছাড়া ভারতের ৫ যুদ্ধবিমান ভূপাতিত করার দাবি পাকিস্তানের।

এমন পরিস্থিতিতে ভারত–পাকিস্তানের সামরিক সক্ষমতার বিষয়টি নিয়ে আলোচনা চলছে।

‘গ্লোবাল ফায়ারপাওয়ার ইনডেক্স (জিএফপি) ২০২৫’-এর তালিকায় সামগ্রিকভাবে ভারত রয়েছে চতুর্থ অবস্থানে এবং পাকিস্তান রয়েছে ১২তম স্থানে। ভারতের শক্তিমত্তা স্কোর ০.১১৮৪ এবং পাকিস্তানের স্কোর ০.২৫১৩। উল্লেখ্য, স্কোর যত কম, শক্তি তত বেশি।

‘গ্লোবাল ফায়ারপাওয়ার সূচক (জিএফপি) ২০২৫’ অনুসারে করা ওই প্রতিবেদনটিতে আরো বলা হয়েছে, ভারতের শক্তিশালী অবস্থানের পেছনে রয়েছে শক্তিশালী জনসংখ্যা, বিশাল প্রতিরক্ষা বাজেট এবং বৈচিত্র্যময় সামরিক সম্পদের প্রতিফলন।

অন্যদিকে পাকিস্তান ছোট অর্থনীতির কারণে নানা সীমাবদ্ধতা ও বৈদেশিক সরবরাহকারী, বিশেষ করে চীনের ওপর নির্ভরশীলতা রয়েছে। ফলে নির্দিষ্ট খাতগুলোয় প্রতিযোগিতামূলক অবস্থানে রয়েছে দেশটি।

পারমাণবিক শক্তি

পারমাণবিক অস্ত্রে এগিয়ে আছে পাকিস্তান। ভারত ও পাকিস্তান—উভয় দেশই পারমাণবিক অস্ত্রের অধিকারী, এবং তাদের প্রতিরক্ষা কৌশলে এই ক্ষমতা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে ভারত।

ভারতের ঘরে রয়েছে আনুমানিক ১৩০ থেকে ১৪০টি পারমাণবিক অস্ত্র।

এসব অস্ত্র বহনে রয়েছে আধুনিক ডেলিভারি সিস্টেম—যেমন অগ্নি-থ্রি ও অগ্নি-ফাইভ ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র (যার পাল্লা ৩ হাজার থেকে ৫ হাজার কিলোমিটার), মিরাজ ২০০০ ও রাফায়েল যুদ্ধবিমান, এবং সমুদ্রভিত্তিক প্রতিরক্ষায় পারমাণবিক সাবমেরিন আইএনএস আরিহান্ট। ভারত “নো ফার্স্ট ইউজ” (এনএফইউ) নীতিতে অটল—অর্থাৎ যুদ্ধ পরিস্থিতিতেও প্রথমে পারমাণবিক হামলা না চালানোর অঙ্গীকার রয়েছে তাদের। তবে কোনো পারমাণবিক হামলার শিকার হলে ভারত ব্যাপক ও কঠোর প্রতিশোধমূলক হামলার পক্ষে।

পাকিস্তান

পাকিস্তানের পারমাণবিক অস্ত্রের সংখ্যা আরও বেশি—১৪০ থেকে ১৫০টির মধ্যে। ডেলিভারি ব্যবস্থায় রয়েছে শাহিন-টু ও শাহিন-থ্রি ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র, এফ-১৬ যুদ্ধবিমান এবং বাবর ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র। পাকিস্তান অনুসরণ করে ‘ফুল-স্পেকট্রাম ডেটারেন্স’ নীতি—এই কৌশলের আওতায় দেশটি প্রয়োজনে যুদ্ধের সময়ই আগেভাগে পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহার করতে পারে।

দুই দেশের এই পারমাণবিক সক্ষমতা কেবল প্রতিরক্ষা নয়, কৌশলগত চাপ ও পাল্টা জবাবের রাজনীতিকেও জটিল করে তুলেছে।

সূত্র : গ্লোবাল ফায়ারপাওয়ার সূচক ২০২৫

Leave A Reply

Your email address will not be published.

Title