রাজশাহীতে সৈনিক লীগের সভাপতির বিরুদ্ধে জমি দখল ও কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ

ওবায়দুল ইসলাম রবি, রাজশাহী: প্রধান মন্ত্রীর নাম ব্যবহার করে এবং দলীয় ব্যানারে প্রতারণার জাল বুনছে সৈনিকলীগ সভাপতি ও অবসরপ্রাপ্ত সেনা সদস্য জোবায়েদ । রাজশাহীর বাগমাড়া উপজেলা সেনা সদস্যের (অবসর প্রাপ্ত) বিরুদ্ধে সরকারী জমি দখল ও সেনাবাহিনীর চাকুরীরর প্রলোভন দেখিয়ে নগদ ১ কোটি অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে।

অভিযুক্ত জোবায়েদ হোসেনের বাড়ির বাইরের মূল ফটকে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর ছবি সম্বলিত ফেস্টুনে লেখা জোবায়েদ হোসেন, সভাপতি বঙ্গবন্ধু সৈনিক লীগ, বাগমারা উপজেলা শাখা- দেখিয়ে বলতেন, প্রধানমন্ত্রীর কাছের লোক এবং সেই সূত্রে বিভিন্ন দপ্তরের সরকারি কর্মকর্তাদের সাথে তার একটি সুসম্পর্ক রয়েছে। রাজশাহীর-৪ বাগমারা আসনের এমপি ইঞ্জিঃ এনামুল হকের একটি আন্তরিক সম্পর্ক রয়েছে। সরকারি রাস্তার জমি দখলকে কেন্দ্র করে বাগমাড়া সৈনিক লীগ সভাপতি জোবায়েদের বিরুদ্ধে গত ২৪শে আগস্ট রাজশাহী জেলা প্রশাসকের কাছে এলাকাবাসী অভিযোগ দায়ের করেন। জেলার বিভিন্ন উপজেলার ক্ষতিগ্রস্ত অসহায় ভুক্তভোগীরা অভিযুক্ত ব্যক্তির বিরুদ্ধে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বরাবর চাকুরী দেয়ার নামে অর্থ আত্মসাতের প্রসঙ্গেও একটি দরখাস্ত করা হয়েছে।

বাগমাড়া উপজেলার ১১ নং ইউপি চেয়ারম্যান মুনরুজ্জামান রঞ্জ, উপজেলার মাঝিগ্রামের আব্দুস সেবাহান, ভানসীপাড়ার আলতাফ হোসেনসহ অনেকে অভিযোগ করে গনামধ্যমকে বলেন, এই উপজেলার ১১ নম্বর গণিপুর ইউনিয়নের মাঝিগ্রামের ঘেতন সাঁই এর ছেলে জোবায়েদ হোসেন। তার বিরুদ্ধে সেনাবাহিনীতে চাকুরী দেয়ার প্রলোভন দেখিয়ে কোটি টাকা আত্মসাৎ এবং সরকারি রাস্তার জমি দখল করে নিজ বাড়ি নির্মাণের অভিযোগ রয়েছে। অভিযুক্ত ব্যাক্তির প্রতারণার ফাঁদে পড়ে অর্থনৈতিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত খেটে খাওয়া-গরীব নিম্নমধ্যবিত্ত পরিবারের মানুষ এখন হতাশায় ভুগছে।

স্থানয় গ্রামবাসীর গত ১৫ জুন বাগমারা উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর করা দরখাস্তের ভিত্তিতে এবং গত ২৯ জুন অভিযুক্ত ব্যাক্তি বাড়ির সামনে এলাকাবাসীর মানববন্ধন করে। পরে উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) সমস্যাগ্রস্ত স্থানে গত ২৭ শে জুলাই সরেজমিনে তদন্ত করেন। ওই স্থানে জরিপের ভিত্তিতে ওই ব্যাক্তিকে ২১ কার্য দিবসের মধ্যে তার সকল অবৈধ স্থাপনা সরিয়ে নেয়ার জন্য নির্দেশনা দেয়া হয়। কিন্তু সহকারী কমিশনার (ভুমি) পূর্ণ নির্দেশের তোয়াক্কা না করে স্বমহিমায় টিকে আছে তার অবৈধ্য স্থানে।

অভিযুক্ত জোবায়েদ তার বিরুদ্ধে আনিত সকল অভিযোগ অস্বিকার করে গনমাধ্যমকে বলেন, তিনি একজন সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত সদস্য। সেনা আদর্শেই তার পথ চলা তবে প্রতারক নয়। মিথ্যা ও বানেয়াট মামলা করে তাকে ফাঁসানো হয়েছে। প্রকৃত অর্থে সে নির্দোষ।

ইউএনও শরীফ আহমেদ এবং সহকারি কমিশনার (ভুমি) মাহমুদুল হাসান বলেন, প্রধান মন্ত্রীর ছবি অভিযুক্ত জোবায়েদের বাড়ি দেয়াল থেকে অপসারণ করা হয়েছে। অবৈধ্যভাবে প্রধান মন্ত্রীর নাম ব্যবহার করাসহ তার বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ আছে তা প্রশাসন ও আইন শৃঙ্খলা বাহিনী অবগত আছেন। ইতোপূর্বে তাকে আটক করে জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়েছিল। ৭০ দিন হাজতবাস করে বর্তমান সে জামিনে আছে। আইনি প্রক্রিয়ায় তার যথাযথ শাস্তি হবে বলে আশা করছেন সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।

Leave A Reply

Your email address will not be published.

Title