ঢাকা ১০:১৪ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৬ জুন ২০২৫, ২ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
অভিষেকেই খরুচে বোলিংয়ের বিশ্ব রেকর্ড আইরিশ বোলারের সাঈদা মুনা তাসনিম অর্থ পাচার: দুদকের জালে সাবেক হাইকমিশনার স্বাধীন বিচার বিভাগ থাকলে কোনো সরকার ফ্যাসিবাদী হতে পারবেনা: এ্যানি25 লক্ষ্মীপুরে আদালতে হাতাহাতির ঘটনায় দুই আইনজীবীর বিরুদ্ধে মামলা25 সচিবালয়ের কর্মচারী বিক্ষোভ: মঙ্গলবারও চলবে আন্দোলনের ২য় দিনের কর্মসূচি কলকাতায় নতুন সিনেমার শুটিং শুরু করলেন জয়া25 শেখ হাসিনাকে ট্রাইব্যুনালে হাজির হতে পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের নির্দেশ25 ওসিকে ডাকাতদলের সর্দার বললেন বিএনপি নেতা25 ২০২৫ শিক্ষাবর্ষে পাঠ্যবই ছাপায় নিম্নমানের কাগজ ব্যবহৃত হয়েছে25 মোস্তফা জামান বিএনপি বক্তব্য: শহীদ জিয়াউর রহমান ও খালেদা জিয়ার রাজনীতি ছিল ত্যাগের প্রতীক

লক্ষ্মীপুরে আদালতে হাতাহাতির ঘটনায় দুই আইনজীবীর বিরুদ্ধে মামলা25

লক্ষ্মীপুরে আদালতে হাতাহাতির ঘটনায় দুই আইনজীবীর বিরুদ্ধে মামলা25

মো হামিদুল হক মিশু
  • আপডেট সময় : ০৪:১৪:৪৮ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৬ জুন ২০২৫ ৫ বার পড়া হয়েছে

জেলা প্রতিনিধি : লক্ষ্মীপুরে সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত-৩-এর স্টেনোটাইপিস্ট মো. আশরাফুজ্জামানকে মারধরের ঘটনায় আইনজীবী আশিকুর রহমান ও মিরাজ উদ্দিনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন অতিরিক্ত চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট সদর আদালতের বিচারক আবু সুফিয়ান মোহাম্মদ নোমান।

সোমবার (১৬ জুন) দুপুরে চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের প্রশাসনিক কর্মকর্তা ইমারান হোসেন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। এর আগে রোববার (১৫ জুন) রাতে আহত আশরাফুজ্জামান বাদী হয়ে এ মামলা দায়ের করেন।

অভিযুক্ত আইনজীবী আশিক লক্ষ্মীপুর পৌর শহরের দক্ষিণ মজুপুর এলাকার আলী আজ্জমের ছেলে ও সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত-২-এর সহকারী সরকারি কৌঁসুলি (এপিপি) এবং মিরাজ রামগতি উপজেলার চরসীতা গ্রামের হরমুজুল হকের ছেলে।

এজাহার উল্লেখ করা হয়, ঈদের ছুটি শেষে রোববার আদালতের প্রথম কার্যদিবস ছিল। দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে অভিযুক্ত আইনজীবী মিরাজ ও আশিক সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত-৩-এর এজলাসে আসেন। একপর্যায়ে তারা চিৎকার চেচামেচি করে জোরপূর্বক বিচারপ্রার্থীদেরকে বের করে দেওয়ার চেষ্টা চালান। কিন্তু বিচারপ্রার্থীরা বের হতে অস্বীকার করেন। এতে অভিযুক্তরা এজলাসের দরজা বন্ধ করে দেন ও পরে লাথি মেরে দরজা ভেঙে ফেলার চেষ্টা করেন। এ সময় স্টেনোটাইপিস্ট আশরাফুজ্জামান ও জারিকারক আনোয়ার হোসেন সুমন তাদেরকে বাধা দেয়। এ ঘটনায় ক্ষিপ্ত হয়ে তারা আশরাফুজ্জামানের মাথায় আঘাত করেন। আইনজীবী আশিকের আঘাতের তার বাম চোখের কোনায় রক্তাক্ত জখম হয়। একপর্যায়ে তার পরনের জামা ছিঁড়ে ফেলেন। তাকে বাঁচাতে এলে জারিকারক সুমনও মারধরের শিকার হন।

আদালত সূত্র জানায়, গত ৬ জুন সদর মডেল থানায় লক্ষ্মীপুর জজ আদালতের আইনজীবী আবু তৈয়ব একটি চুরির মামলা দায়ের করেন। এতে রায়পুর প্রিন্সিপাল কাজী ফারুকী স্কুল অ্যান্ড কলেজের ইংরেজি বিভাগের প্রভাষক আহমেদ কাউসার উদ্দিন জামান ও ট্রাকচালক রুবেল হোসেন গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে ছিলেন। ৯ জুন তারা আদালতে জামিন প্রার্থনা করেন। সেখানে উল্লেখ করা হয়, মামলার বাদী আইনজীবী, এজন্য আদালতে আসামিদের পক্ষে কোনো আইনজীবী জামিন শুনানিতে অংশ নেননি। আইনজীবী না পেয়ে জামিন শুনানির জন্য আসামিরা লক্ষ্মীপুর লিগ্যাল এইড অফিসে আইনি সহায়তা চান। সেখান থেকে দুইজন আইনজীবীকে শুনানি করতে বলা হলেও তারা হেনস্তার ভয়ে জামিন শুনানিতে অংশ নেননি। ১০ জুন সিনিয়র জুড়িসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত-৩-এর বিচারক এম সাইফুল ইসলাম আসামিদের জামিন মঞ্জুর করেন। ওই ঘটনাকে কেন্দ্র করেই রোববার আইনজীবীরা আদালত বর্জনের ঘোষণা দেয়। এতে আদালতের কার্যক্রম চলাকালে তারা এসে বাধা সৃষ্টি করে। পরে তারা কর্মচারীদের ওপর হামলা চালান।

আইনজীবী আশিকুর রহমান বলেন, আদালত বর্জনের বিষয়ে জানাতে আমরা এজলাসে যাই। এ ঘটনায় স্টেনোটাইপিস্টসহ কর্মচারীরা আমাদের ওপর হামলা করেন। আমাকেই তারা প্রথম আঘাত করেছেন। আমি কাউকে আঘাত করিনি।

আইনজীবী মিরাজ উদ্দিন মুঠোফোনে বলেন, আমি ঘটনাস্থলে ছিলাম না। এরপরও আমাকে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে মামলায় জড়িয়ে দিয়েছে।

লক্ষ্মীপুর জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. রফিক উল্যাহ বলেন, আইনজীবীদের বিরুদ্ধে মামলার ঘটনাটি নিয়ে এখনো আমরা কোনো সিদ্ধান্ত নিইনি। মামলা নিয়ে অফিসিয়ালভাবে বসে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। আমাদের কার্যক্রম স্বাভাবিক রয়েছে। আমরা চাই না কোর্টের পরিস্থিতি উত্তপ্ত হোক।

নতুন প্রজন্মের অনলাইন টিভি

নিউজটি শেয়ার করুন

ট্যাগস :

লক্ষ্মীপুরে আদালতে হাতাহাতির ঘটনায় দুই আইনজীবীর বিরুদ্ধে মামলা25

লক্ষ্মীপুরে আদালতে হাতাহাতির ঘটনায় দুই আইনজীবীর বিরুদ্ধে মামলা25

আপডেট সময় : ০৪:১৪:৪৮ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৬ জুন ২০২৫

জেলা প্রতিনিধি : লক্ষ্মীপুরে সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত-৩-এর স্টেনোটাইপিস্ট মো. আশরাফুজ্জামানকে মারধরের ঘটনায় আইনজীবী আশিকুর রহমান ও মিরাজ উদ্দিনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন অতিরিক্ত চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট সদর আদালতের বিচারক আবু সুফিয়ান মোহাম্মদ নোমান।

সোমবার (১৬ জুন) দুপুরে চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের প্রশাসনিক কর্মকর্তা ইমারান হোসেন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। এর আগে রোববার (১৫ জুন) রাতে আহত আশরাফুজ্জামান বাদী হয়ে এ মামলা দায়ের করেন।

অভিযুক্ত আইনজীবী আশিক লক্ষ্মীপুর পৌর শহরের দক্ষিণ মজুপুর এলাকার আলী আজ্জমের ছেলে ও সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত-২-এর সহকারী সরকারি কৌঁসুলি (এপিপি) এবং মিরাজ রামগতি উপজেলার চরসীতা গ্রামের হরমুজুল হকের ছেলে।

এজাহার উল্লেখ করা হয়, ঈদের ছুটি শেষে রোববার আদালতের প্রথম কার্যদিবস ছিল। দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে অভিযুক্ত আইনজীবী মিরাজ ও আশিক সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত-৩-এর এজলাসে আসেন। একপর্যায়ে তারা চিৎকার চেচামেচি করে জোরপূর্বক বিচারপ্রার্থীদেরকে বের করে দেওয়ার চেষ্টা চালান। কিন্তু বিচারপ্রার্থীরা বের হতে অস্বীকার করেন। এতে অভিযুক্তরা এজলাসের দরজা বন্ধ করে দেন ও পরে লাথি মেরে দরজা ভেঙে ফেলার চেষ্টা করেন। এ সময় স্টেনোটাইপিস্ট আশরাফুজ্জামান ও জারিকারক আনোয়ার হোসেন সুমন তাদেরকে বাধা দেয়। এ ঘটনায় ক্ষিপ্ত হয়ে তারা আশরাফুজ্জামানের মাথায় আঘাত করেন। আইনজীবী আশিকের আঘাতের তার বাম চোখের কোনায় রক্তাক্ত জখম হয়। একপর্যায়ে তার পরনের জামা ছিঁড়ে ফেলেন। তাকে বাঁচাতে এলে জারিকারক সুমনও মারধরের শিকার হন।

আদালত সূত্র জানায়, গত ৬ জুন সদর মডেল থানায় লক্ষ্মীপুর জজ আদালতের আইনজীবী আবু তৈয়ব একটি চুরির মামলা দায়ের করেন। এতে রায়পুর প্রিন্সিপাল কাজী ফারুকী স্কুল অ্যান্ড কলেজের ইংরেজি বিভাগের প্রভাষক আহমেদ কাউসার উদ্দিন জামান ও ট্রাকচালক রুবেল হোসেন গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে ছিলেন। ৯ জুন তারা আদালতে জামিন প্রার্থনা করেন। সেখানে উল্লেখ করা হয়, মামলার বাদী আইনজীবী, এজন্য আদালতে আসামিদের পক্ষে কোনো আইনজীবী জামিন শুনানিতে অংশ নেননি। আইনজীবী না পেয়ে জামিন শুনানির জন্য আসামিরা লক্ষ্মীপুর লিগ্যাল এইড অফিসে আইনি সহায়তা চান। সেখান থেকে দুইজন আইনজীবীকে শুনানি করতে বলা হলেও তারা হেনস্তার ভয়ে জামিন শুনানিতে অংশ নেননি। ১০ জুন সিনিয়র জুড়িসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত-৩-এর বিচারক এম সাইফুল ইসলাম আসামিদের জামিন মঞ্জুর করেন। ওই ঘটনাকে কেন্দ্র করেই রোববার আইনজীবীরা আদালত বর্জনের ঘোষণা দেয়। এতে আদালতের কার্যক্রম চলাকালে তারা এসে বাধা সৃষ্টি করে। পরে তারা কর্মচারীদের ওপর হামলা চালান।

আইনজীবী আশিকুর রহমান বলেন, আদালত বর্জনের বিষয়ে জানাতে আমরা এজলাসে যাই। এ ঘটনায় স্টেনোটাইপিস্টসহ কর্মচারীরা আমাদের ওপর হামলা করেন। আমাকেই তারা প্রথম আঘাত করেছেন। আমি কাউকে আঘাত করিনি।

আইনজীবী মিরাজ উদ্দিন মুঠোফোনে বলেন, আমি ঘটনাস্থলে ছিলাম না। এরপরও আমাকে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে মামলায় জড়িয়ে দিয়েছে।

লক্ষ্মীপুর জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. রফিক উল্যাহ বলেন, আইনজীবীদের বিরুদ্ধে মামলার ঘটনাটি নিয়ে এখনো আমরা কোনো সিদ্ধান্ত নিইনি। মামলা নিয়ে অফিসিয়ালভাবে বসে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। আমাদের কার্যক্রম স্বাভাবিক রয়েছে। আমরা চাই না কোর্টের পরিস্থিতি উত্তপ্ত হোক।