যুক্তরাষ্ট্র সংঘাতে জড়াবে না, ধারণা ৬০ শতাংশ মার্কিনির
যুক্তরাষ্ট্র সংঘাতে জড়াবে না, ধারণা ৬০ শতাংশ মার্কিনির25

- আপডেট সময় : ০৯:৩৭:৪৩ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২০ জুন ২০২৫ ১ বার পড়া হয়েছে
অনলাইন ডেস্কঃ চলমান ইরান-ইসরায়েলের সংঘাতে যুক্তরাষ্ট্রের জড়ানো নিয়ে তর্কবির্তকের শেষ নেই। খোদ মার্কিন প্রেসিডেন্টের বক্তব্যে সংঘাতে জড়ানো আগুনে ঘি ঢেলেছে। তবে যুক্তরাষ্ট্রকে এ সংঘাতে দেখতে চান না মার্কিনিদের একটা বিরাট অংশ। খোদ ট্রাম্পের রাজনৈতিক দল রিপাবলিকানরাও যুদ্ধের বিরোধী।
সম্প্রতি ইরান-ইসরায়েল সংঘাতে যুক্তরাষ্ট্রের জড়ানো নিয়ে একটি জরিপ চালানো হয়েছে। দ্য ইকোনমিস্ট বা ইউগভ এ জরিপ চালায়। জরিপে অংশ নেওয়া ১৬ শতাংশ মার্কিনি মনে করেন, যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক বাহিনী এ সংঘাতে জড়াবে। পক্ষান্তরে ৬০ শতাংশ মনে করেন, সংঘাতে জড়াবে না। আর ২৪ শতাংশ বিষয়টি নিয়ে কোনো মন্তব্য করেনি।
দলের হিসাবে ৬৫ শতাংশ ডেমোক্র্যাট, ৬১ শতাংশ স্বাধীনচেতা রাজনীতিক ও ৫৩ শতাংশ রিপাবলিকান ইরান-ইসরায়েল সংঘাতে যুক্তরাষ্ট্রের জড়ানোর বিরোধী। জরিপটিতে অংশ নিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের ১ হাজার ৫১২ প্রাপ্ত বয়স্ক।
এদিকে ইরানের বিরুদ্ধে সম্ভাব্য মার্কিন হামলার ইঙ্গিতে ডোনাল্ড ট্রাম্পের সমর্থকদের মধ্যে বিভাজন দেখা দিয়েছে। মধ্যপ্রাচ্যে নতুন করে যুদ্ধে জড়ানোর শঙ্কায় তাঁর ‘মেক আমেরিকা গ্রেট অ্যাগেইন’ (মাগা) শিবিরের অনেকেই বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখাচ্ছেন। দ্বিতীয় মেয়াদে ট্রাম্পের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার পেছনে এ শিবিরের বড় ভূমিকা ছিল।
ট্রাম্পের ঘনিষ্ঠ ও প্রভাবশালী কিছু রিপাবলিকান নেতাও তাঁর এমন সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করছেন। অনুরোধ করছেন, যুক্তরাষ্ট্রকে এ যুদ্ধে না জড়াতে। এই ঘনিষ্ঠজন ও নেতাদের মধ্যে রয়েছেন প্রেসিডেন্টের সাবেক শীর্ষ উপদেষ্টা স্টিভ ব্যাননও। তিনি বরাবরই ট্রাম্পের ‘আমেরিকা ফার্স্ট’ দর্শনের অন্যতম মুখ।
ট্রাম্প প্রশাসনের ইরানবিষয়ক নীতির হঠাৎ মোড় ঘুরে যাওয়ায় তাঁরই সমর্থক ‘মাগা’ শিবিরের রক্ষণশীল অংশ উদ্বিগ্ন হয়ে উঠেছে। কয়েক সপ্তাহ আগেও ট্রাম্প যেখানে ইরানের সঙ্গে শান্তিপূর্ণ কূটনৈতিক সমঝোতার কথা বলছিলেন, এখন সেখানে ৩০ হাজার পাউন্ডের মার্কিন ‘বাঙ্কার বাস্টার’ বোমা ব্যবহার আলোচনায় আসছে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, ইরানবিরোধী পদক্ষেপে গেলে ট্রাম্প তাঁর নিজের শক্তিশালী শিবিরের বিরোধিতার মুখে পড়তে পারেন। এ সমর্থক শিবির মূলত তাঁর পররাষ্ট্রনীতি-সংক্রান্ত সতর্কতা ও যুদ্ধবিরোধী অবস্থানকে সমর্থন করেই পাশে ছিল। ইরান ইতোমধ্যে হুঁশিয়ারি দিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্র যদি হামলায় জড়ায়, তবে এর জন্য মার্কিনিদের চড়া মূল্য দিতে হবে। যদিও সেই মূল্য কী হবে, তা স্পষ্ট করেনি তেহরান।
ইরান-ইসরায়েল সংঘাতে যুক্তরাষ্ট্র জড়ালে, সেটি হবে বৈদেশিক ঝামেলায় যুক্ত হওয়ার ব্যাপারে ট্রাম্পের সতর্ক থাকার নীতির বিপরীত।
সংবিধান অনুযায়ী, তৃতীয় মেয়াদে প্রেসিডেন্ট পদে নির্বাচন করতে না পারলেও ২০১৬ ও ২০২৪ সালের নির্বাচনে জয়ী হতে সাহায্য করা ‘মাগা’ জোট ট্রাম্পের জন্য এখনও গুরুত্বপূর্ণ। এ জোটের মনোভাব ক্ষুণ্ন হলে তাঁর জনপ্রিয়তায় ধস নামতে পারে, যা ২০২৬ সালের মধ্যবর্তী নির্বাচনে কংগ্রেসে রিপাবলিকানদের নিয়ন্ত্রণ ধরে রাখার ক্ষেত্রেও প্রভাব ফেলতে পারে। খবর আনাদোলুর।