ঢাকা ০২:৪৫ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৩ নভেম্বর ২০২৫, ২৮ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ভোট দিতে চান ৯৭ শতাংশ তরুণ-তরুণী

অনলাইন ডেস্ক
  • আপডেট সময় : ১২:৪৬:২১ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৩ নভেম্বর ২০২৫
  • / 3

অনলাইন ডেস্ক: বাংলাদেশের আসন্ন জাতীয় নির্বাচনে ৯৭ দশমিক ২ শতাংশ তরুণ-তরুণী ভোট দিতে চান। তবে ৩০ শতাংশ তরুণ এখনো সিদ্ধান্ত নিতে পারেননি, আসন্ন জাতীয় নির্বাচনে তারা কোন রাজনৈতিক দলকে ভোট দেবেন।

এ ছাড়া ১৭ দশমিক ৭ শতাংশ তরুণ জানিয়েছেন, তারা তাদের পছন্দের দলের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক। বাংলাদেশ ইয়ুথ লিডারশিপ সেন্টার (বিওয়াইএলসি) পরিচালিত ‘ইয়ুথ ম্যাটার্স সার্ভে ২০২৫’-এ এই তথ্য উঠে এসেছে।

বুধবার (১২ নভেম্বর ) ঢাকার বিওয়াইএলসি সদর দপ্তরে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সার্ভের এ ফলাফল প্রকাশ করা হয়।

বিওয়াইএলসি জানিয়েছে, বাংলাদেশের তরুণ প্রজন্মের ভাবনা, রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গি ও আকাঙ্ক্ষা বোঝার লক্ষ্যে এই জরিপটি পরিচালিত হয়, যা সম্পূর্ণ সরাসরি সাক্ষাৎকারের মাধ্যমে সম্পন্ন করা হয়েছে।

অংশগ্রহণ ও প্রোফাইল : জরিপটি ২০২৫ সালের ১০ থেকে ২১ অক্টোবরের মধ্যে দেশের ৮টি বিভাগ, ২৭টি জেলা ও ১৭৫টি প্রাথমিক নমুনা ইউনিটে পরিচালিত হয়। এতে ১৮ থেকে ৩৫ বছর বয়সী মোট ২ হাজার ৫৪৫ জন তরুণ-তরুণী অংশ নেন।

এর মধ্যে গ্রামাঞ্চল থেকে ৫৬ দশমিক ৭ শতাংশ, শহরাঞ্চল থেকে ২৬ দশমিক ১ শতাংশ এবং উপশহর থেকে ১৭ দশমিক ২ শতাংশ অংশ নেন। লিঙ্গভিত্তিক হিসেবে পুরুষ ৫০ দশমিক ৪ শতাংশ এবং নারী ৪৯ দশমিক ৬ শতাংশ।
ভোটের আগ্রহ ও রাজনৈতিক পছন্দ : অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে ৮৯ শতাংশ নিবন্ধিত ভোটার এবং ৯৭ দশমিক ২ শতাংশ আগামী নির্বাচনে ভোট দিতে ইচ্ছুক। যারা ভোট দেবেন, তাদের মধ্যে রাজনৈতিক পছন্দে বিএনপি ১৯ দশমিক ৬ শতাংশ, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী (বিজেআই) ১৬ দশমিক ৯ শতাংশ, আওয়ামী লীগ ৯ দশমিক ৫ শতাংশ, ন্যাশনাল সিটিজেন পার্টি (এনসিপি) ৩ দশমিক ৬ শতাংশ, জাতীয় পার্টি (জাপা): শূন্য দশমিক ৪ শতাংশ, অন্যান্য ইসলামী দল ১ দশমিক ৫ শতাংশ, অন্যান্য দল শূন্য দশমিক ৭ শতাংশ, বাম দল শূন্য দশমিক শূন্য শতাংশ।

এখনও সিদ্ধান্তহীন ৩০ শতাংশ, জানাতে অনিচ্ছুক ১৭ দশমিক ৭ শতাংশ আওয়ামী লীগ নির্বাচনে অংশ নিলে, ৪৩ দশমিক ১ শতাংত তরুণ জানিয়েছেন, তারা ভোট দেবেন, আর ৫৬ দশমিক ৯ শতাং জানিয়েছেন তারা দেবেন না।

ভয়েস ফর রিফর্মের সহ-সমন্বয়ক ফাহিম মাশরুর বলেন, বাংলাদেশের তরুণদের মধ্যে উদ্যোক্তা হতে চাওয়ার প্রবণতা বাড়ছে। প্রায় ৪০ শতাংশ তরুণ উদ্যোক্তা হতে চায়। এর পেছনে বড় কারণ, চাকরির বাজারে সুযোগের ঘাটতি। তবে উদ্যোক্তা হওয়ার জন্য যে প্রস্তুতি বা প্রশিক্ষণ প্রয়োজন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো সেগুলো দিতে ব্যর্থ।

বিশিষ্ট মিডিয়া ব্যক্তিত্ব ডা. আব্দুন নূর তুষার বলেন, তরুণরা শিক্ষা, জীবিকা ও রাজনীতি নিয়ে ভাবে, হতাশাও ভোগ করে। কিন্তু তবুও দেশের ৬১.৭% তরুণ ভবিষ্যৎ নিয়ে আশাবাদী ও ইতিবাচক—বিওয়াইএলসির জরিপে সেটাই উঠে এসেছে।

বিওয়াইএলসির নির্বাহী পরিচালক তাহসিনাহ আহমেদ বলেন, ‘বাংলাদেশের তরুণ প্রজন্ম রাজনৈতিকভাবে সচেতন, সামাজিকভাবে জাগ্রত এবং দেশের ভবিষ্যৎ নিয়ে গভীরভাবে ভাবছে। তাদের কথা শোনা, সিদ্ধান্তগ্রহণ প্রক্রিয়ায় যুক্ত করা এবং তাদের মতানুযায়ী নীতিনির্ধারণ করা এখন ভীষণ জরুরি।’

বিওয়াইএলসির সিনিয়র এক্সিকিউটিভ জান্নাতুল মাওয়া বলেন, যারা ভবিষ্যতে রাষ্ট্রক্ষমতায় বা নীতিনির্ধারণ পর্যায়ে যাবেন, তাদের প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রতি আস্থা ফেরাতে মনোযোগ দেওয়া জরুরি।

বিওয়াইএলসির লিড ফ্যাকাল্টি মুনিরা সুলতানা বলেন, ‘আমাদের দেশের তরুণদের আছে একটি সুন্দর ভবিষ্যৎ গড়ার ক্ষমতা। তাদের শুধু সঠিক দক্ষতা অর্জন করতে হবে এবং উন্নতির সুযোগ কাজে লাগাতে হবে।’

নতুন প্রজন্মের অনলাইন টিভি

নিউজটি শেয়ার করুন

ট্যাগস :

ভোট দিতে চান ৯৭ শতাংশ তরুণ-তরুণী

আপডেট সময় : ১২:৪৬:২১ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৩ নভেম্বর ২০২৫

অনলাইন ডেস্ক: বাংলাদেশের আসন্ন জাতীয় নির্বাচনে ৯৭ দশমিক ২ শতাংশ তরুণ-তরুণী ভোট দিতে চান। তবে ৩০ শতাংশ তরুণ এখনো সিদ্ধান্ত নিতে পারেননি, আসন্ন জাতীয় নির্বাচনে তারা কোন রাজনৈতিক দলকে ভোট দেবেন।

এ ছাড়া ১৭ দশমিক ৭ শতাংশ তরুণ জানিয়েছেন, তারা তাদের পছন্দের দলের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক। বাংলাদেশ ইয়ুথ লিডারশিপ সেন্টার (বিওয়াইএলসি) পরিচালিত ‘ইয়ুথ ম্যাটার্স সার্ভে ২০২৫’-এ এই তথ্য উঠে এসেছে।

বুধবার (১২ নভেম্বর ) ঢাকার বিওয়াইএলসি সদর দপ্তরে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সার্ভের এ ফলাফল প্রকাশ করা হয়।

বিওয়াইএলসি জানিয়েছে, বাংলাদেশের তরুণ প্রজন্মের ভাবনা, রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গি ও আকাঙ্ক্ষা বোঝার লক্ষ্যে এই জরিপটি পরিচালিত হয়, যা সম্পূর্ণ সরাসরি সাক্ষাৎকারের মাধ্যমে সম্পন্ন করা হয়েছে।

অংশগ্রহণ ও প্রোফাইল : জরিপটি ২০২৫ সালের ১০ থেকে ২১ অক্টোবরের মধ্যে দেশের ৮টি বিভাগ, ২৭টি জেলা ও ১৭৫টি প্রাথমিক নমুনা ইউনিটে পরিচালিত হয়। এতে ১৮ থেকে ৩৫ বছর বয়সী মোট ২ হাজার ৫৪৫ জন তরুণ-তরুণী অংশ নেন।

এর মধ্যে গ্রামাঞ্চল থেকে ৫৬ দশমিক ৭ শতাংশ, শহরাঞ্চল থেকে ২৬ দশমিক ১ শতাংশ এবং উপশহর থেকে ১৭ দশমিক ২ শতাংশ অংশ নেন। লিঙ্গভিত্তিক হিসেবে পুরুষ ৫০ দশমিক ৪ শতাংশ এবং নারী ৪৯ দশমিক ৬ শতাংশ।
ভোটের আগ্রহ ও রাজনৈতিক পছন্দ : অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে ৮৯ শতাংশ নিবন্ধিত ভোটার এবং ৯৭ দশমিক ২ শতাংশ আগামী নির্বাচনে ভোট দিতে ইচ্ছুক। যারা ভোট দেবেন, তাদের মধ্যে রাজনৈতিক পছন্দে বিএনপি ১৯ দশমিক ৬ শতাংশ, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী (বিজেআই) ১৬ দশমিক ৯ শতাংশ, আওয়ামী লীগ ৯ দশমিক ৫ শতাংশ, ন্যাশনাল সিটিজেন পার্টি (এনসিপি) ৩ দশমিক ৬ শতাংশ, জাতীয় পার্টি (জাপা): শূন্য দশমিক ৪ শতাংশ, অন্যান্য ইসলামী দল ১ দশমিক ৫ শতাংশ, অন্যান্য দল শূন্য দশমিক ৭ শতাংশ, বাম দল শূন্য দশমিক শূন্য শতাংশ।

এখনও সিদ্ধান্তহীন ৩০ শতাংশ, জানাতে অনিচ্ছুক ১৭ দশমিক ৭ শতাংশ আওয়ামী লীগ নির্বাচনে অংশ নিলে, ৪৩ দশমিক ১ শতাংত তরুণ জানিয়েছেন, তারা ভোট দেবেন, আর ৫৬ দশমিক ৯ শতাং জানিয়েছেন তারা দেবেন না।

ভয়েস ফর রিফর্মের সহ-সমন্বয়ক ফাহিম মাশরুর বলেন, বাংলাদেশের তরুণদের মধ্যে উদ্যোক্তা হতে চাওয়ার প্রবণতা বাড়ছে। প্রায় ৪০ শতাংশ তরুণ উদ্যোক্তা হতে চায়। এর পেছনে বড় কারণ, চাকরির বাজারে সুযোগের ঘাটতি। তবে উদ্যোক্তা হওয়ার জন্য যে প্রস্তুতি বা প্রশিক্ষণ প্রয়োজন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো সেগুলো দিতে ব্যর্থ।

বিশিষ্ট মিডিয়া ব্যক্তিত্ব ডা. আব্দুন নূর তুষার বলেন, তরুণরা শিক্ষা, জীবিকা ও রাজনীতি নিয়ে ভাবে, হতাশাও ভোগ করে। কিন্তু তবুও দেশের ৬১.৭% তরুণ ভবিষ্যৎ নিয়ে আশাবাদী ও ইতিবাচক—বিওয়াইএলসির জরিপে সেটাই উঠে এসেছে।

বিওয়াইএলসির নির্বাহী পরিচালক তাহসিনাহ আহমেদ বলেন, ‘বাংলাদেশের তরুণ প্রজন্ম রাজনৈতিকভাবে সচেতন, সামাজিকভাবে জাগ্রত এবং দেশের ভবিষ্যৎ নিয়ে গভীরভাবে ভাবছে। তাদের কথা শোনা, সিদ্ধান্তগ্রহণ প্রক্রিয়ায় যুক্ত করা এবং তাদের মতানুযায়ী নীতিনির্ধারণ করা এখন ভীষণ জরুরি।’

বিওয়াইএলসির সিনিয়র এক্সিকিউটিভ জান্নাতুল মাওয়া বলেন, যারা ভবিষ্যতে রাষ্ট্রক্ষমতায় বা নীতিনির্ধারণ পর্যায়ে যাবেন, তাদের প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রতি আস্থা ফেরাতে মনোযোগ দেওয়া জরুরি।

বিওয়াইএলসির লিড ফ্যাকাল্টি মুনিরা সুলতানা বলেন, ‘আমাদের দেশের তরুণদের আছে একটি সুন্দর ভবিষ্যৎ গড়ার ক্ষমতা। তাদের শুধু সঠিক দক্ষতা অর্জন করতে হবে এবং উন্নতির সুযোগ কাজে লাগাতে হবে।’