ঢাকা ০১:২০ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৯ নভেম্বর ২০২৫, ৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

মোরসালিনের গোলে ভারত-বধের অপেক্ষা ফুরাল বাংলাদেশের

অনলাইন ডেস্ক
  • আপডেট সময় : ১১:১৬:৪৬ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৮ নভেম্বর ২০২৫
  • / 4

জয় যেন মরীচিকা ছিল বাংলাদেশের জন্য। বারবার হাতছানি দিয়ে ডেকেও ধরা দিচ্ছিল না। আজ ঘরের মাঠে সেই মরীচিকাকে বোতলবন্দি করেছেন হামজা চৌধুরী-শেখ মোরসালিনরা।

মোরসালিনের জয়সূচক গোলে জয় নিশ্চিত হওয়ার পর তাই আনন্দটা ছিল দেখার মতো।

মাঠের মাঝখানে খেলোয়াড়-কোচরা একসঙ্গে হয়ে উল্লাসে ফেটে পড়েন। দীর্ঘ প্রতীক্ষিত জয় বলে কথা। ১-০ গোলের এই জয়ে ২২ বছরের অপেক্ষা ফুরিয়েছে বাংলাদেশ। সর্বশেষ ২০০৩ সালে সাফ চ্যাম্পিয়নশিপে ভারতের বিপক্ষে মতিউর মুন্নার গোল্ডেন গোলে জয় পেয়েছিল বাংলাদেশ।

আজ ফিরেই বাজিমাত করেছেন মোরসালিন। জাতীয় স্টেডিয়ামের ২৩ হাজার ৭১২ জন দর্শককে শুরুতেই আনন্দে ভাসিয়েছেন চোটের কারণে নেপালের বিপক্ষে না থাকা বাংলাদেশি ফরোয়ার্ড। ঠাণ্ডা মাথার দুর্দান্ত এক ফিনিশিংয়ে। ১১ মিনিটে ভারতের গোলকিপার গুরপ্রীত সিং সান্ধুর দুই পায়ের ফাঁক দিয়ে আলতো টোকায় বলকে জালে জড়ান। গোলটি তার ক্যারিয়ারের সপ্তম।

রাকিব হোসেনের পাসটাও ছিল দুর্দান্ত। বাঁ-প্রান্ত দিয়ে দুরন্ত গতিতে প্রতিপক্ষের এক খেলোয়াড়কে ছিটকে ফেলে শেষ মুহূর্তে ডান পায়ে পাস বাড়ান তিনি। তা থেকে বাংলাদেশকে এগিয়ে নিতে ভুল করেননি মোরসালিন। গোলের সেই আনন্দ পরে পুরো গ্যালারিতে সংক্রমণের মতো ছড়িয়ে পড়ে।

গোল পাওয়ার পর আরো কয়েকটি আক্রমণ সাজিয়েছিল বাংলাদেশ। তবে সেসব গোল পাওয়ার মতো ছিল না। অন্যদিকে ভারত সমতায় ফেরার সুবর্ণ সুযোগটা পেয়েছিল ম্যাচের ৩১ মিনিটে। গোলবার ছেড়ে বল ক্লিয়ার করতে গিয়ে ভারতের এক খেলোয়াড়কে বল দেন গোলরক্ষক মিতুল মারমা।

গোলবারে শটও ‍নিয়েছিলেন ভারতীয় খেলোয়াড়। তবে জালে জড়ানোর আগে হেডে ক্লিয়ার করেন হামজা। অন্যদিকে ৪২তম মিনিটে দ্বিতীয় গোলের সুযোগ পেয়েছিল বাংলাদেশ। বক্সের বাইরে থেকে শটও নিয়েছিলেন হামজা। তবে তার ভলি অল্পের জন্য বাইরে দিয়ে যায়। রক্ষণ থেকে আক্রমণ—সব জায়গায় ছিলেন লেস্টার সিটির মিডফিল্ডার। পরে আর কোনো গোল না হলে এশিয়ান কাপ বাছাইপর্বের ম্যাচে ১-০ ব্যবধানে বিরতিতে যায় বাংলাদেশ। পরে সেই ব্যবধানেই বাছাইপর্বের পঞ্চম ম্যাচে জয় পেয়েছে বাংলাদেশ।

গোল শোধ দিতে মরিয়া ভারত অবশ্য দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই চাপ বাড়ায়। দ্বিতীয়ার্ধের প্রথম ৫ মিনিটে দুইবার সমতায় ফেরার সুযোগ তৈরি করেছিল। তবে প্রতিবারই পোস্টের কাছ ঘেঁষে যায়।

৭০ মিনিটে বাংলাদেশকে রক্ষা করেন মিতুল। বক্সের বাইরে থেকে শট নিয়েছিলেন মোহাম্মেদ সানান। তবে অভিষিক্ত ফরোয়ার্ডের শট বাঁ-দিকে ঝাঁপিয়ে প্রতিহত করেন বাংলাদেশি গোলরক্ষক। ৮২ মিনিটে পেনাল্টির আবেদন করেছিল বাংলাদেশের খেলোয়াড়রা। তবে আবেদনে সাড়া দেননি রেফারি। তার আগে ৭৮ মিনিটে তপু বর্মণের দুর্বল শট ধরে ফেলেন ভারতের গোলরক্ষক।

যোগ করা সময়ে আরেকবার বাংলাদেশকে রক্ষা করেন মিতুল। তৃতীয় মিনিটে প্রতিপক্ষের এক খেলোয়াড়ের দূরপাল্লার শট তালুবন্দি করে। শেষ সময়ে অবশ্য ভুল করেই বসেছিলেন তিনি। তবে দ্বিতীয় চেষ্টায় বল ধরে বাংলাদেশকে বিপদমুক্ত করেন। পরে প্রতিআক্রমণে দ্বিতীয় গোলের সুযোগ পেয়েছিল বাংলাদেশ। সেই গোল না পেলেও বহুল প্রতীক্ষিত জয় নিয়ে ঠিকই মাঠ ছেড়েছে বাংলাদেশ।

নতুন প্রজন্মের অনলাইন টিভি

নিউজটি শেয়ার করুন

ট্যাগস :

মোরসালিনের গোলে ভারত-বধের অপেক্ষা ফুরাল বাংলাদেশের

আপডেট সময় : ১১:১৬:৪৬ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৮ নভেম্বর ২০২৫

জয় যেন মরীচিকা ছিল বাংলাদেশের জন্য। বারবার হাতছানি দিয়ে ডেকেও ধরা দিচ্ছিল না। আজ ঘরের মাঠে সেই মরীচিকাকে বোতলবন্দি করেছেন হামজা চৌধুরী-শেখ মোরসালিনরা।

মোরসালিনের জয়সূচক গোলে জয় নিশ্চিত হওয়ার পর তাই আনন্দটা ছিল দেখার মতো।

মাঠের মাঝখানে খেলোয়াড়-কোচরা একসঙ্গে হয়ে উল্লাসে ফেটে পড়েন। দীর্ঘ প্রতীক্ষিত জয় বলে কথা। ১-০ গোলের এই জয়ে ২২ বছরের অপেক্ষা ফুরিয়েছে বাংলাদেশ। সর্বশেষ ২০০৩ সালে সাফ চ্যাম্পিয়নশিপে ভারতের বিপক্ষে মতিউর মুন্নার গোল্ডেন গোলে জয় পেয়েছিল বাংলাদেশ।

আজ ফিরেই বাজিমাত করেছেন মোরসালিন। জাতীয় স্টেডিয়ামের ২৩ হাজার ৭১২ জন দর্শককে শুরুতেই আনন্দে ভাসিয়েছেন চোটের কারণে নেপালের বিপক্ষে না থাকা বাংলাদেশি ফরোয়ার্ড। ঠাণ্ডা মাথার দুর্দান্ত এক ফিনিশিংয়ে। ১১ মিনিটে ভারতের গোলকিপার গুরপ্রীত সিং সান্ধুর দুই পায়ের ফাঁক দিয়ে আলতো টোকায় বলকে জালে জড়ান। গোলটি তার ক্যারিয়ারের সপ্তম।

রাকিব হোসেনের পাসটাও ছিল দুর্দান্ত। বাঁ-প্রান্ত দিয়ে দুরন্ত গতিতে প্রতিপক্ষের এক খেলোয়াড়কে ছিটকে ফেলে শেষ মুহূর্তে ডান পায়ে পাস বাড়ান তিনি। তা থেকে বাংলাদেশকে এগিয়ে নিতে ভুল করেননি মোরসালিন। গোলের সেই আনন্দ পরে পুরো গ্যালারিতে সংক্রমণের মতো ছড়িয়ে পড়ে।

গোল পাওয়ার পর আরো কয়েকটি আক্রমণ সাজিয়েছিল বাংলাদেশ। তবে সেসব গোল পাওয়ার মতো ছিল না। অন্যদিকে ভারত সমতায় ফেরার সুবর্ণ সুযোগটা পেয়েছিল ম্যাচের ৩১ মিনিটে। গোলবার ছেড়ে বল ক্লিয়ার করতে গিয়ে ভারতের এক খেলোয়াড়কে বল দেন গোলরক্ষক মিতুল মারমা।

গোলবারে শটও ‍নিয়েছিলেন ভারতীয় খেলোয়াড়। তবে জালে জড়ানোর আগে হেডে ক্লিয়ার করেন হামজা। অন্যদিকে ৪২তম মিনিটে দ্বিতীয় গোলের সুযোগ পেয়েছিল বাংলাদেশ। বক্সের বাইরে থেকে শটও নিয়েছিলেন হামজা। তবে তার ভলি অল্পের জন্য বাইরে দিয়ে যায়। রক্ষণ থেকে আক্রমণ—সব জায়গায় ছিলেন লেস্টার সিটির মিডফিল্ডার। পরে আর কোনো গোল না হলে এশিয়ান কাপ বাছাইপর্বের ম্যাচে ১-০ ব্যবধানে বিরতিতে যায় বাংলাদেশ। পরে সেই ব্যবধানেই বাছাইপর্বের পঞ্চম ম্যাচে জয় পেয়েছে বাংলাদেশ।

গোল শোধ দিতে মরিয়া ভারত অবশ্য দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই চাপ বাড়ায়। দ্বিতীয়ার্ধের প্রথম ৫ মিনিটে দুইবার সমতায় ফেরার সুযোগ তৈরি করেছিল। তবে প্রতিবারই পোস্টের কাছ ঘেঁষে যায়।

৭০ মিনিটে বাংলাদেশকে রক্ষা করেন মিতুল। বক্সের বাইরে থেকে শট নিয়েছিলেন মোহাম্মেদ সানান। তবে অভিষিক্ত ফরোয়ার্ডের শট বাঁ-দিকে ঝাঁপিয়ে প্রতিহত করেন বাংলাদেশি গোলরক্ষক। ৮২ মিনিটে পেনাল্টির আবেদন করেছিল বাংলাদেশের খেলোয়াড়রা। তবে আবেদনে সাড়া দেননি রেফারি। তার আগে ৭৮ মিনিটে তপু বর্মণের দুর্বল শট ধরে ফেলেন ভারতের গোলরক্ষক।

যোগ করা সময়ে আরেকবার বাংলাদেশকে রক্ষা করেন মিতুল। তৃতীয় মিনিটে প্রতিপক্ষের এক খেলোয়াড়ের দূরপাল্লার শট তালুবন্দি করে। শেষ সময়ে অবশ্য ভুল করেই বসেছিলেন তিনি। তবে দ্বিতীয় চেষ্টায় বল ধরে বাংলাদেশকে বিপদমুক্ত করেন। পরে প্রতিআক্রমণে দ্বিতীয় গোলের সুযোগ পেয়েছিল বাংলাদেশ। সেই গোল না পেলেও বহুল প্রতীক্ষিত জয় নিয়ে ঠিকই মাঠ ছেড়েছে বাংলাদেশ।