ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যান রক্ষায় হাইকোর্টে রিট

নিজস্ব প্রতিবেদক: ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের মূল নকসার সঙ্গে অসংগতিপূর্ণ স্থাপনা উচ্ছেদ, উদ্যান সংরক্ষণ এবং স্বাধীনতা যুদ্ধের স্মৃতি বিজড়িত ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানকে মূলরুপে রাখার নির্দেশনা চেয়ে রবিবার হাইকোর্টে রিট আবেদন করেছেন পরিবেশবাদী ছয়টি সংগঠন ও একজন ব্যক্তি। আগামী ১৯ মে বিচারপতি ফারাহ মাহবুবের নেতৃত্বাধীন হাইকোর্ট বেঞ্চে এ রিট আবেদনের ওপর শুনানি হবে বলে জানিয়েছেন বেলার আইনজীবী অ্যাডভোকেট সাঈদ আহমেদ কবির।

রিট আবেদনে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে স্বাধীনতা স্তম্ভ নির্মানের (তৃতীয় প্রকল্প) নামে পুরাতন ও ঐতিহাসিক গাছ কেটে প্রকল্প নির্মান কেন অবৈধ ও অসাংবিধানিক ঘোষনা করা হবে না, মূল নকসার বাইরে বানিজ্যিক স্থাপনা নির্মান কেন বেআইনি ঘোষনা করা হবে না, এরইমধ্যে যেসব স্থাপনা নির্মান করা হয়েছে তা কেন অপসারণের নির্দেশ দেওয়া হবে না এবং ঢাকা মহানগরের মাস্টার প্লানের যেভাবে রয়েছে সেভাবে উদ্যান সংরক্ষণ করতে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না তা জানতে চেয়ে রুল জারির আরজি জানানো হয়েছে। একইসঙ্গে বানিজ্যিক স্থাপনা নির্মানের জন্য গাছ কাটা বন্ধ রাখার নির্দেশনা চাওয়া হয়েছে। পাশাপাশি যেসব গাছ কাটা হয়েছে তার পরিবর্তে ৩ গুন গাছ লাগানোর নির্দেশনা চাওয়া হয়েছে। এসব বিষয়ে গত ৬ মে পাঠানো আইনি নোটিশের পরও কোনো পদক্ষেপ না নেওয়ায় রিট আবেদন করা হয় বলে জানান রিট আবেদনকারীপক্ষ।

রিট আবেদনকারীরা হলো-বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতি (বেলা), অ্যাসোসিয়েশন ফর ল্যান্ড রিফরমস এ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (এএলআরডি), নিজেরা করি, বাংলাদেশ লিগ্যাল এইড এ্যান্ড সার্ভিসেস ট্রাস্ট (ব্লাস্ট), বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা), আইন ও শালিস কেন্দ্র (আসক) এবং স্থপতি মোবাশ্বের হোসেন। গতকাল হাইকোর্টের সংশ্লিস্ট শাখায় এ রিট আবেদন দাখিল করা হয়।

রিট আবেদনে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র; গৃহায়ণ ও গণপূর্ত সচিব; পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় সচিব; মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব; প্রধান বন সংরক্ষক; রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ(রাজউক) চেয়ারম্যান; পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ও গণপূর্ত অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলীকে বিবাদী করা হয়েছে।

রিট আবেদনে বলা হয়েছে, ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের শতবর্ষী পুরানো গাছ কেটে বিলুপ্তপ্রায় পাখির আশ্রয়স্থল ও আবাসের স্থান ধ্বংস করে বায়ু দূষণের শীর্ষে থাকা মহানগরীকে আরো নাজুক অবস্থায় ফেলা হচ্ছে। রিট আবেদনে বলা হয়েছে, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের পরিকল্পিত এবং গণপূর্ত অধিদপ্তর কর্তৃক বাস্তবায়নাধীন প্রকল্পের পরিবেশগত ছাড়পত্র নেই। উপরন্ত উদ্যানের সবুজকে ধ্বংস করা প্রকারান্তরে উদ্যানকে ধ্বংস করার ও তার শ্রেণি পরিবর্তনের শামিল যা ২০০০ সালের

৩৬ নম্বর আইনের (জলাধার সংরক্ষণ আইন) পরিপন্থী। একই আইন অনুযায়ী উদ্যান হিসেবে চিহ্নিত ও ব্যবহৃত কোনো ভূমির শ্রেণি পরিবর্তন করা যাবে না বা অন্য কোনো উদ্দেশ্যে ব্যবহার করা যাবে না বা অন্য কোনো উদ্দেশ্যে ব্যবহারের জন্য হস্তান্তরও করা যাবে না। আবেদনে বলা হয়, এরইমধ্যে যতটুকু নির্মাণ কাজ করা হয়েছে তা হাইকোর্টের রায়ের পরিপন্থী।

Leave A Reply

Your email address will not be published.

Title