আনোয়ারুল ইসলাম জুম্মা বহিষ্কার: পুঠিয়ায় বিএনপি নেতার সমর্থনে বিক্ষোভ ও মানববন্ধন

- আপডেট সময় : ০৪:০৭:২৪ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৩ জুন ২০২৫ ৮ বার পড়া হয়েছে
রাজশাহী, ১৩ জুন: আনোয়ারুল ইসলাম জুম্মা বহিষ্কার সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে রাজশাহীর পুঠিয়া উপজেলার নন্দনপুর বাজারে শুক্রবার দুপুরে বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছেন তার অনুসারী নেতাকর্মী ও সাধারণ জনগণ। বিএনপির সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান, রাজশাহী জেলা মৎস্যজীবী দলের সিনিয়র সহ-সভাপতি এবং উপজেলা বিএনপির সদস্য আনোয়ারুল ইসলাম জুম্মাকে দল থেকে বহিষ্কার করা হলে দলীয় নেতা-কর্মী এবং এলাকাবাসীর মধ্যে ক্ষোভ ও প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়।
কর্মসূচির আয়োজন
ঘণ্টাব্যাপী এই মানববন্ধনে কয়েক শতাধিক নেতা-কর্মী অংশগ্রহণ করেন। বক্তারা জোর দিয়ে বলেন, “আনোয়ারুল ইসলাম জুম্মা একজন ত্যাগী, সাহসী ও পরীক্ষিত বিএনপি নেতা। তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ ভিত্তিহীন, উদ্দেশ্যপ্রণোদিত এবং রাজনৈতিক প্রতিহিংসার ফসল।”
তারা অভিযোগ করেন, নন্দনপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মনোয়ার হোসেন মিম দীর্ঘদিন ধরে আওয়ামী লীগের ঘনিষ্ঠ হয়ে প্রতিষ্ঠানটিকে একটি রাজনৈতিক ঘাঁটিতে পরিণত করেন। শিক্ষার পরিবেশ নষ্ট করে সেখানে প্রতিদিন আওয়ামী লীগের মিছিল, মিটিং ও পরিকল্পনা চলতো। ৫ আগস্টের পর থেকে স্থানীয় জনগণ তাকে বিদ্যালয়ে ঢুকতে দেয়নি। সেই আক্রোশ থেকেই পরিকল্পিতভাবে জুম্মাকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে বলে বক্তাদের দাবি।
বক্তৃতায় অভিযোগ ও দাবি
মানববন্ধনে বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের নেতারা বলেন, “আনোয়ারুল ইসলাম জুম্মা বহিষ্কার আদেশ শুধু দলীয় শৃঙ্খলার নামে একটি ষড়যন্ত্রের অংশ। এর পেছনে আওয়ামী লীগের সহযোগীরা সক্রিয়। আমরা এই অবৈধ আদেশ অবিলম্বে প্রত্যাহারের দাবি জানাই।”
তারা আরো বলেন, “এটি শুধুমাত্র আনোয়ারুল জুম্মার বিরুদ্ধে নয়, এটি এলাকার তৃণমূল বিএনপির উপর চাপ প্রয়োগের কৌশল। যদি কেন্দ্রীয় নেতারা এই ভুল সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার না করেন, তাহলে আমরা সারা উপজেলায় কঠোর আন্দোলনে যাব।”
আনোয়ারুল ইসলাম জুম্মার প্রতিক্রিয়া
এক তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় বহিষ্কৃত বিএনপি নেতা আনোয়ারুল ইসলাম জুম্মা বলেন, “আমাকে দলীয় গঠনতন্ত্র লঙ্ঘনের অভিযোগে আজীবন বহিষ্কার করা হয়েছে। অথচ আমাকে কোনো কারণ দর্শানোর সুযোগ বা আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ দেওয়া হয়নি। এটি দুঃখজনক, নিয়ম বহির্ভূত এবং সম্পূর্ণ ষড়যন্ত্রমূলক।”
তিনি আরো বলেন, “আওয়ামী লীগের দোসরদের পুনর্বাসনের জন্য আমার মতো ত্যাগী নেতার বিরুদ্ধে ভিত্তিহীন প্রপাগান্ডা চালানো হচ্ছে। আমি এর তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি এবং কেন্দ্রীয় নেতাদের কাছে এই অন্যায়ের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি।”
প্রেক্ষাপট ও বহিষ্কার আদেশ
রাজশাহী জেলা বিএনপি গত ১১ জুন এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে আনোয়ারুল ইসলাম জুম্মাকে দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে আজীবন বহিষ্কার করে। এতে বলা হয়, তিনি দলের আদর্শ, সিদ্ধান্ত ও নীতিমালা লঙ্ঘন করেছেন। তবে বিস্তারিত কোনো কারণ প্রকাশ করা হয়নি, যা নিয়ে স্থানীয় নেতাকর্মীদের মধ্যে বিভ্রান্তি ও ক্ষোভ বিরাজ করছে।
আন্দোলনের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা
স্থানীয় নেতা-কর্মীরা জানিয়েছেন, যদি কেন্দ্রীয় নেতারা বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার না করেন, তাহলে তারা রাজপথে কঠোর কর্মসূচি ঘোষণার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। এর মধ্যে রয়েছে উপজেলা সদর ঘেরাও, জেলা কার্যালয়ে স্মারকলিপি প্রদান এবং ধারাবাহিক প্রতিবাদ কর্মসূচি। আন্দোলনের নেতৃত্বে রয়েছেন উপজেলার সাবেক ও বর্তমান বিএনপি নেতারা, যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল, ছাত্রদলসহ অঙ্গসংগঠনের সক্রিয় সদস্যরা।