করোনা পজেটিভ নার্স দিয়ে হাসপাতালে সেবা দেয়ার অভিযোগ, ঝুঁকিতে রোগীরা

লালমনিরহাট প্রতিনিধি: লালমনিরহাট সদর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের অসচেতনতায় করোনা পজেটিভ নার্স দিয়ে রোগীদের চিকিৎসা সেবা দেয়ার অভিযোগ উঠেছে। এতে করোনা ঝুঁকিতে পড়েছেন চিকিৎসা সেবা নিতে আসা রোগী ও তাদের আত্মীয়-স্বজনরা।

সরেজমিন সোমবার (১৭আগষ্ট) দুপুরে লালমনিরহাট ১০০ শয্যা হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডে গিয়ে দেখা যায়, হাসপাতালের সিনিয়র সহকারী নার্স শারমিন আফরোজ জ্বর ও কাশি নিয়েও রোগীদের সেবা দিচ্ছেন। জানাগেছে, তিনি গত ২৬ জুলাই জ্বর ও কাশি নিয়ে করোনা পরীক্ষার জন্য নমুনা দিয়েছেন। রিপোর্ট না আসা পর্যন্ত কোয়ারেন্টাইনে থাকার কথা থাকলেও তিনি ডিউটি করছেন শিশু ওয়ার্ডে। এরপর গত ২আগস্ট তার রিপোর্ট পজিটিভ আসলে হোম আইসোলেশনে থাকেন তিনি। কিন্তু সুস্থ হওয়ার আগেই লালমনিরহাট সদর হাসপাতালের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে তাকে ৯আগস্ট থেকে হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডে ডিউটি করতে হচ্ছে।

ঘটনা এখানেই শেষ নয়, করোনা আক্রান্ত রোগীকে যে মেশিন দিয়ে প্রেসার মাপা হয়, ওই একই মেশিন দিয়ে সাধারণ রোগীরও প্রেসার মাপছেন হাসপাতালের ইমার্জেন্সি বিভাগ। এমনকি হাসপাতালের প্রবেশ পথে সবার হাত ধোয়ার জন্য খালি পানির ড্রাম থাকলেও নেই সেখানে সাবান ও পানির ব্যবস্থা।

হাসপাতালে আসা নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক নারী রোগী বলেন, তিনি হাসপাতালের সিনিয়র কনসালটেন্ট (কার্ডিওলজি) ডা. শংকর কুমার সাহার পরামর্শে হাসপাতালের ইমার্জেন্সি বিভাগে প্রেসার মাপতে আসেন। কিন্তু তিনি জানতে পারেন, করোনা আক্রান্ত রোগীদের প্রেসার মাপার জন্য যে মেশিন ব্যবহার করা হচ্ছে, সে মেশিন জীবাণুনাশক দিয়ে পরিষ্কার না করেই আবার ওই মেশিন দিয়ে সাধারণ রোগীদের প্রেসার মাপা হচ্ছে। এতে করোনায় আক্রান্তের সম্ভাবনা থাকায় তিনি প্রেসার না মেপেই হাসপাতাল ত্যাগ করেন।

এ ব্যাপারে হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডের সিনিয়র সহকারী নার্স শারমিন আফরোজ জানান, তিনি এখনো পুরোপুরি সুস্থ নন। তার অসুস্থ্যতার কথা হাসপাতালের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে একাধিকবার জানালেও তাকে ডিউটি দেয়া হয়েছে। তাই তিনি চাকরি বাঁচাতে বাধ্য হয়ে ডিউটি করছেন।
হাসপাতালের তত্ত¡াবধায়ক ডা. মো. সিরাজুল ইসলাম জানান, করোনা পজিটিভ এমন কোনো নার্স শুধু শিশু ওয়ার্ডে নয়, কোনো ওয়ার্ডেই ডিউটি করতে পারবে না। তবে যদি করোনা পজিটিভ কেউ ডিউটি করে থাকে, সে বিষয়টি তার জানা নেই।

লালমনিরহাট সিভিল সার্জন ডা. নির্মলদু রায় এ বিষযে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেয়ার আশ^াস দিয়ে বলেন, করোনা নমুনা দেয়ার পর বা রিপোর্ট পজিটিভ আসার পর তা গোপন রেখে কেউ যদি কর্মস্থানে যোগদান করে এটা তার অজ্ঞতা। আর অসুস্থ অবস্থায় কানোভাবেই কাউকে ডিউটি দেয়া হয় না বলেও তিনি দাবী করেন।

Leave A Reply

Your email address will not be published.

Title