ঢাকা ০৪:০২ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২০ জুন ২০২৫, ৬ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
ভারি বর্ষণ-সমুদ্রের জোয়ারে বাঁশখালীর বেড়িবাঁধে ভাঙন25 ৩টি দিক থেকে ভাঙ্গায় তিনদিনব্যাপী জাতীয় ফল মেলার উদ্বোধন ইশরাক ইশরাক স্লোগান: নগর ভবনের ৫টি উত্তপ্ত বাস্তবতা ইরানি ক্ষেপণাস্ত্রের আঘাত: ইসরায়েলের ৩ গোপন সামরিক ঘাঁটিতে ধ্বংস জ্বালানি নিরাপত্তা ও বায়ু দূষণ কমাতে ৬৪০ মিলিয়ন ডলার অনুমোদন নিউইয়র্কে ঈদের ছুটিতে পরিবার নিয়ে সময় কাটাচ্ছেন রুনা খান25 যশোরে করোনায় আক্রান্ত আরেকজনের মৃত্যু25 টানা বৃষ্টিতে পটুয়াখালীসহ উপকূলীয় জনজীবন বিপর্যস্ত25 কুমারখালীতে সাংবাদিকদের সঙ্গে শেখ সাদীর মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত মেয়াদ উত্তীর্ণ ঔষধ রাখার অভিযোগে বীরগঞ্জে ৪টি ফার্মেসীতে ভ্রাম্যমাণ আদালতে জরিমানা25

করোনা মহামারির মধ্যেও বাংলাদেশের ইতিহাসে এক বছরে প্রবাসী আয়ে রেকর্ড

অনলাইন ডেস্ক
  • আপডেট সময় : ০৭:২১:৩০ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ৬ জুলাই ২০২১ ১১ বার পড়া হয়েছে

অনলাইন ডেস্ক : করোনা মহামারির মধ্যেও প্রবাসীরা সদ্য বিদায়ী অর্থবছরে (২০২০-২১) ২ হাজার ৪৭৭ কোটি ৭৭ লাখ ডলার (২ লাখ ১০ হাজার ৬১০ কোটি টাকা) পাঠিয়েছেন। বাংলাদেশের ইতিহাসে এক বছরে প্রবাসী আয়ে এটি রেকর্ড। বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ প্রতিবেদনে উঠে এসেছে এ তথ্য। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সরকারের নগদ প্রণোদনা ও করোনায় বিদেশ ভ্রমণ নিয়ন্ত্রণের কারণে অপ্রাতিষ্ঠানিক খাত থেকে বৈধ চ্যানেলে রেমিট্যান্স বেশি এসেছে। পাশাপাশি মহামারিতে এক ধরনের অনিশ্চয়তার কারণে প্রবাসীরা জমানো টাকা দেশে পাঠিয়ে দিচ্ছেন। সব মিলিয়ে রেমিট্যান্স প্রবাহ বেড়েছে।

জানতে চাইলে বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. সালেহ উদ্দিন আহমেদ যুগান্তরকে বলেন, প্রবাসীদের একটি অংশ রয়েছে যারা আয়ের সবটাই পাঠিয়ে দিচ্ছেন। এছাড়া টাকা পাঠানোর ক্ষেত্র বেড়েছে। সরকারের দেওয়া দুই শতাংশ নগদ প্রণোদনাও এর পেছনে কাজ করছে। এর ফলে অনেকে হুন্ডি থেকে বেরিয়ে ব্যাংকিং চ্যানেলে টাকা পাঠাচ্ছেন। করোনার মধ্যেও বিপুল অঙ্কের প্রবাসী আয় নিয়ে অনেকে প্রশ্ন তুলেছেন, এটা একদমই অমূলক নয়। এটি বাংলাদেশ ব্যাংক খতিয়ে দেখতে পারে। আমি মনে করি যেভাবেই আসুক, টাকা দেশে আসাটাই ইতিবাচক। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রতিবেদন বলছে, সদ্যবিদায়ী অর্থবছরের শেষ জুন মাসে প্রবাসীরা ১৯৪ কোটি ডলার রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন। এ নিয়ে বিদায়ী অর্থবছরে দেশে রেমিট্যান্স এসেছে ২ হাজার ৪৭৭ কোটি ৭৭ লাখ ডলার। এর মধ্যে ৬টি ব্যাংকের মাধ্যমে ৬১০ কোটি ৬২ লাখ ডলার, বিশেষায়িত দুই ব্যাংকের একটির মাধ্যমে ৪১ কোটি ৩০ লাখ ডলার, বেসরকারি ৪০টি বাণিজ্যিক ব্যাংকের মাধ্যমে ১ হাজার ৮১৪ কোটি ৪০ লাখ ডলার এবং বিদেশি ৯ ব্যাংকের মাধ্যমে এসেছে ১১ কোটি ৪৫ লাখ ডলার।

একক ব্যাংক হিসাবে সবচেয়ে বেশি রেমিট্যান্স এসেছে বেরসকারি ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেডের মাধ্যমে, যার পরিমাণ ৭৪৫ কোটি ৭৬ লাখ ডলার। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ২৮২ কোটি ৩২ লাখ ডলার এসেছে অগ্রণী ব্যাংক, তৃতীয় ২৪৯ কোটি ডলার এসেছে ডাচ্-বাংলা ব্যাংক এবং সোনালী ব্যাংকের মাধ্যমে এসেছে ১৫৩ কোটি ডলার। অগ্রণী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মোহাম্মদ শামস উল ইসলাম যুগান্তরকে বলেন, সরকারি ৬ ব্যাংকের মধ্যে সর্বোচ্চ রেমিট্যান্স এনেছি আমরা। এছাড়া ৫৭টি ব্যাংকের মাধ্যমে এসেছে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ। এজন্য দিন-রাত পরিশ্রম করেছি। বিদেশে অগ্রণী রেমিট্যান্স অ্যাপ খুলেছি। যা বিদেশেই পুরস্কৃত হয়েছে।

এছাড়া প্রতি ঈদের আগে যারা রেমিট্যান্স পাঠান তাদের সরকার ঘোষিত দুই শতাংশ প্রণোদনার সঙ্গে অগ্রণী ব্যাংক আরও এক শতাংশ প্রণোদনা দিয়ে আসছে। সব মিলিয়ে রেমিট্যান্স বেড়েছে। ২০১৯-২০ অর্থবছরে এক হাজার ৮২০ কোটি ডলার বা ১৮ দশমিক ২ বিলিয়ন ডলার রেমিট্যান্স পাঠিয়েছিলেন প্রবাসীরা। অর্থবছর হিসাবে ওই অঙ্ক ছিল এর আগে বাংলাদেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ রেমিট্যান্স আহরণ। তারও আগে ২০১৮-১৯ অর্থবছরে দেশে রেমিট্যান্স আহরণের রেকর্ড হয়। ওই সময় ১ হাজার ৬৪২ কোটি ডলার রেমিট্যান্স দেশে আসে।

এদিকে রেমিট্যান্স প্রবাহ ঊর্ধ্বমুখী থাকায় ইতিবাচক অবস্থায় রয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংকের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ। ২৯ জুন দিন শেষে বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভের অঙ্ক দাঁড়িয়েছে ৪৬ দশমিক শূন্য ৮ বিলিয়ন ডলার বা প্রায় চার হাজার ৬০৮ কোটি ডলার; বাংলা?দেশি মুদ্রায় যার অঙ্ক তিন লাখ ৯১ হাজার ৬৯৭ কো?টি টাকা। প্রতি মাসে ৪ বিলিয়ন ডলার আমদানি ব্যয় হিসেবে মজুদ এ বৈদেশিক মুদ্রা দিয়ে সাড়ে ১১ মাসের আমদানি ব্যয় মেটানো সম্ভব। ২০১৯ সালের ১ জুলাই থেকে প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্সে ২ শতাংশ হারে প্রণোদনা দিচ্ছে সরকার। অর্থাৎ কোনো প্রবাসী ১০০ টাকা দেশে পাঠালে তার সঙ্গে আরও ২ টাকা যোগ করে মোট ১০২ টাকা পাচ্ছেন সুবিধাভোগী।

নতুন প্রজন্মের অনলাইন টিভি

নিউজটি শেয়ার করুন

আপলোডকারীর তথ্য
ট্যাগস :

করোনা মহামারির মধ্যেও বাংলাদেশের ইতিহাসে এক বছরে প্রবাসী আয়ে রেকর্ড

আপডেট সময় : ০৭:২১:৩০ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ৬ জুলাই ২০২১

অনলাইন ডেস্ক : করোনা মহামারির মধ্যেও প্রবাসীরা সদ্য বিদায়ী অর্থবছরে (২০২০-২১) ২ হাজার ৪৭৭ কোটি ৭৭ লাখ ডলার (২ লাখ ১০ হাজার ৬১০ কোটি টাকা) পাঠিয়েছেন। বাংলাদেশের ইতিহাসে এক বছরে প্রবাসী আয়ে এটি রেকর্ড। বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ প্রতিবেদনে উঠে এসেছে এ তথ্য। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সরকারের নগদ প্রণোদনা ও করোনায় বিদেশ ভ্রমণ নিয়ন্ত্রণের কারণে অপ্রাতিষ্ঠানিক খাত থেকে বৈধ চ্যানেলে রেমিট্যান্স বেশি এসেছে। পাশাপাশি মহামারিতে এক ধরনের অনিশ্চয়তার কারণে প্রবাসীরা জমানো টাকা দেশে পাঠিয়ে দিচ্ছেন। সব মিলিয়ে রেমিট্যান্স প্রবাহ বেড়েছে।

জানতে চাইলে বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. সালেহ উদ্দিন আহমেদ যুগান্তরকে বলেন, প্রবাসীদের একটি অংশ রয়েছে যারা আয়ের সবটাই পাঠিয়ে দিচ্ছেন। এছাড়া টাকা পাঠানোর ক্ষেত্র বেড়েছে। সরকারের দেওয়া দুই শতাংশ নগদ প্রণোদনাও এর পেছনে কাজ করছে। এর ফলে অনেকে হুন্ডি থেকে বেরিয়ে ব্যাংকিং চ্যানেলে টাকা পাঠাচ্ছেন। করোনার মধ্যেও বিপুল অঙ্কের প্রবাসী আয় নিয়ে অনেকে প্রশ্ন তুলেছেন, এটা একদমই অমূলক নয়। এটি বাংলাদেশ ব্যাংক খতিয়ে দেখতে পারে। আমি মনে করি যেভাবেই আসুক, টাকা দেশে আসাটাই ইতিবাচক। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রতিবেদন বলছে, সদ্যবিদায়ী অর্থবছরের শেষ জুন মাসে প্রবাসীরা ১৯৪ কোটি ডলার রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন। এ নিয়ে বিদায়ী অর্থবছরে দেশে রেমিট্যান্স এসেছে ২ হাজার ৪৭৭ কোটি ৭৭ লাখ ডলার। এর মধ্যে ৬টি ব্যাংকের মাধ্যমে ৬১০ কোটি ৬২ লাখ ডলার, বিশেষায়িত দুই ব্যাংকের একটির মাধ্যমে ৪১ কোটি ৩০ লাখ ডলার, বেসরকারি ৪০টি বাণিজ্যিক ব্যাংকের মাধ্যমে ১ হাজার ৮১৪ কোটি ৪০ লাখ ডলার এবং বিদেশি ৯ ব্যাংকের মাধ্যমে এসেছে ১১ কোটি ৪৫ লাখ ডলার।

একক ব্যাংক হিসাবে সবচেয়ে বেশি রেমিট্যান্স এসেছে বেরসকারি ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেডের মাধ্যমে, যার পরিমাণ ৭৪৫ কোটি ৭৬ লাখ ডলার। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ২৮২ কোটি ৩২ লাখ ডলার এসেছে অগ্রণী ব্যাংক, তৃতীয় ২৪৯ কোটি ডলার এসেছে ডাচ্-বাংলা ব্যাংক এবং সোনালী ব্যাংকের মাধ্যমে এসেছে ১৫৩ কোটি ডলার। অগ্রণী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মোহাম্মদ শামস উল ইসলাম যুগান্তরকে বলেন, সরকারি ৬ ব্যাংকের মধ্যে সর্বোচ্চ রেমিট্যান্স এনেছি আমরা। এছাড়া ৫৭টি ব্যাংকের মাধ্যমে এসেছে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ। এজন্য দিন-রাত পরিশ্রম করেছি। বিদেশে অগ্রণী রেমিট্যান্স অ্যাপ খুলেছি। যা বিদেশেই পুরস্কৃত হয়েছে।

এছাড়া প্রতি ঈদের আগে যারা রেমিট্যান্স পাঠান তাদের সরকার ঘোষিত দুই শতাংশ প্রণোদনার সঙ্গে অগ্রণী ব্যাংক আরও এক শতাংশ প্রণোদনা দিয়ে আসছে। সব মিলিয়ে রেমিট্যান্স বেড়েছে। ২০১৯-২০ অর্থবছরে এক হাজার ৮২০ কোটি ডলার বা ১৮ দশমিক ২ বিলিয়ন ডলার রেমিট্যান্স পাঠিয়েছিলেন প্রবাসীরা। অর্থবছর হিসাবে ওই অঙ্ক ছিল এর আগে বাংলাদেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ রেমিট্যান্স আহরণ। তারও আগে ২০১৮-১৯ অর্থবছরে দেশে রেমিট্যান্স আহরণের রেকর্ড হয়। ওই সময় ১ হাজার ৬৪২ কোটি ডলার রেমিট্যান্স দেশে আসে।

এদিকে রেমিট্যান্স প্রবাহ ঊর্ধ্বমুখী থাকায় ইতিবাচক অবস্থায় রয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংকের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ। ২৯ জুন দিন শেষে বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভের অঙ্ক দাঁড়িয়েছে ৪৬ দশমিক শূন্য ৮ বিলিয়ন ডলার বা প্রায় চার হাজার ৬০৮ কোটি ডলার; বাংলা?দেশি মুদ্রায় যার অঙ্ক তিন লাখ ৯১ হাজার ৬৯৭ কো?টি টাকা। প্রতি মাসে ৪ বিলিয়ন ডলার আমদানি ব্যয় হিসেবে মজুদ এ বৈদেশিক মুদ্রা দিয়ে সাড়ে ১১ মাসের আমদানি ব্যয় মেটানো সম্ভব। ২০১৯ সালের ১ জুলাই থেকে প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্সে ২ শতাংশ হারে প্রণোদনা দিচ্ছে সরকার। অর্থাৎ কোনো প্রবাসী ১০০ টাকা দেশে পাঠালে তার সঙ্গে আরও ২ টাকা যোগ করে মোট ১০২ টাকা পাচ্ছেন সুবিধাভোগী।