ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় হেফাজতের তাণ্ডব: আরো ৩০ জন গ্রেপ্তার

নিজস্ব প্রতিবেদক: ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় হেফাজতের তাণ্ডবের সময় শহরজুড়ে ব্যাপক ভাংচুর ও অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় দায়েরকৃত মামলায় আরো ৩০ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। শনিবার রাতে জেলার বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।

পুলিশের দাবি, গ্রেপ্তাররা সবাই হেফাজতে ইসলামের কর্মী-সমর্থক। এনিয়ে তাণ্ডবের ঘটনায় মোট ২৯৮ জন গ্রেপ্তার হয়েছে।

রোববার সকালে জেলা পুলিশের বিশেষ শাখা থেকে গনমাধ্যম কমীদের্র কাছে পাঠানো প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, হেফাজতের তাণ্ডবের ঘটনায় জড়িত আরো ৩০জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এরা সবাই হেফাজতে ইসলামের কর্মীসমর্থক। এনিয়ে এসব ঘটনায় মোট ২৯৮ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়।

এদিকে তাণ্ডবের ঘটনায় জেলার বিভিন্ন থানায় মোট ৫৬টি মামলা দায়ের করা হয়েছে। এর মধ্যে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর মডেল থানায় ৪৯টি, আশুগঞ্জ থানায় ৪টি, সরাইল থানায় ২টি এবং আখাউড়া রেলওয়ে থানায় ১টি। ৫৬টি মামলায় এজাহারনামীয় ৪১৪ জনসহ অজ্ঞাত প্রায় ৩৫ হাজার জনকে আসামি করা হয়েছে। পুলিশ শনিবার রাত পর্যন্ত মামলার ২৯৮ জন আসামিকে গ্রেপ্তার করে।

এ ব্যাপারে জেলা পুলিশের বিশেষ শাখার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ইমতিয়াজ আহমেদ বলেন, পুলিশ আসামিদের ভিডিও ফুটেজ ও স্থিরচিত্র দেখে তাদের গ্রেপ্তার করেছে।

প্রসঙ্গত, স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীর অনুষ্ঠানে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বাংলাদেশ সফরের প্রতিবাদে হেফাজতে ইসলামের নেতাকর্মীরা গত ২৬ থেকে ২৮ মার্চ পর্যন্ত ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ব্যাপক ধ্বংসাত্মক কার্যকলাপ চালায়। এসময় হামলাকারীরা ব্রাহ্মণবাড়িয়া রেলওয়ে স্টেশন, পৌরসভা কার্যালয়, সুর সম্রাট দ্যা আলাউদ্দিন সঙ্গীতাঙ্গন, সদর উপজেলা ভূমি কার্যালয়, সুর সম্রাট আলাউদ্দিন খাঁ পৌর মিলনায়তন, জেলা ক্রীড়া সংস্থার কার্যালয়, পুলিশ সুপারের কার্যালয়, সিভিল সার্জনের কার্যালয়, জেলা মৎস্য অফিস, সার্কিট হাউজ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেসক্লাব, মাতৃ সদন, সরকারি গণগ্রন্থাগার, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আল-মামুন সরকারের বাসভবন, জেলা শিল্পকলা একাডেমি, বঙ্গবন্ধু স্কয়ারে স্থাপিত বঙ্গবন্ধুর দু’টি ম্যুরালসহ তিনটি ম্যুরাল, শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত ভাষা চত্বরে উন্নয়ন মেলার প্যান্ডেল, একই চত্বরে থাকা শহর সমাজসেবা প্রকল্পের অফিস, মুক্তিযোদ্ধা সংহতি পরিষদের অফিস, পৌর মেয়রের বাসভবন, সার্কিট হাউজ, হাইওয়ে থানা ভবন, ইউনিভার্সিটি অব ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ক্যাম্পাস, হিন্দু সম্প্রদায়ের ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান আনন্দময়ী কালীবাড়ি, জেলা ছাত্রলীগের সভাপতির বাসভবন, জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদকের বাসভবন, আশুগঞ্জ টোলপ্লাজা, সুহিলপুর ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়সহ সরকারি ও বেসরকারি প্রায় অর্ধশতাধিক স্থাপনায় হামলা চালিয়ে ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগ করে।

Leave A Reply

Your email address will not be published.

Title